Lucky Number : বেঁচে যাওয়া সংখ্যা
নাম্বার থিওরি বা সংখ্যাতত্ত্বে একটি Lucky Number হচ্ছে একসেট বা একদল সংখ্যার মধ্যকার একটি স্বাভাবিক সংখ্যা, যা একটি চালনি বা ওধণশণ Sieve Sieve of Eratosthenes -এর সমার্থক) দিয়ে চালা দিয়ে বের করে আনা হয়, যা সৃষ্টি করে কতগুলো মৌলিক সংখ্যা৷
ধরি আমরা স্বাভাবিক পূর্ণ সংখ্যা ১ থেকে শুরু করে একসেট সংখ্যা নিই : ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫৷
এখন এ থেকে আমরা প্রথমটি রেখে দ্বিতীয়টি অর্থাত্ প্রত্যেক দ্বিতীয় সংখ্যা অর্থাত্ জোড় সংখ্যা কেটে দিলে আমাদের থাকবে : ১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩, ১৫, ১৭, ১৯, ২১, ২৩, ২৫৷
নতুন পাওয়া সংখ্যা ধারায় দ্বিতীয় সংখ্যা হচ্ছে ৩৷ এ থেকে প্রতি তৃতীয় সংখ্যা কেটে দিলে বাকি থাকবে : ১, ৩, ৭, ৯, ১৩, ১৫, ১৯, ২১, ২৫৷
এ ধারায় তৃতীয় সার্ভাইভিং নাম্বার বা বেঁচে যাওয়া সংখ্যা ৭৷ অতএব এখন পাওয়া এ ধারা থেকে প্রত্যেক সপ্তম সংখ্যা কেটে দিতে হবে, এবং এ কাজটি সম্পাদনের পর ধারাটি দাঁড়াবে এমন : ১, ৩, ৭, ৯, ১৩, ১৫, ২১, ২৫৷ এবার এ ধারায় চতুর্থ বেঁচে যাওয়া সংখ্যা হচ্ছে ৯৷ এখন প্রত্যেক নবম সংখ্যা বাদ দিলে নতুন ধারাটি হবে আগেরটির মতোই : ১, ৩, ৭, ৯, ১৩, ১৫, ২১, ২৫৷
এভাবে আরো বেশি সংখ্যা নিয়ে শুরু করে অব্যাহতভাবে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করলে বেঁচে যাওয়া সংখ্যা বা সার্ভাইভিং নাম্বারস তথা লাকি নাম্বারগুলো হবে এমন : ১, ৩, ৭, ৯, ১৩, ১৫, ২১, ২৫, ৩১, ৩৩, ৩৭, ৪৩, ৪৯, ৫১, ৬৩, ৬৭, ৬৯, ৭৩, ৭৫, ৭৯, ৮৭, ৯৩, ৯৯৷
এই ধারার প্রত্যেকটি সংখ্যা এক-একটি লাকি নাম্বার৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই লাকি নাম্বারের বাংলা নাম কী দেয়া যেতে পারে৷ শাব্দিক বিবেচনা থেকে কেউ হয়তো লাকি নাম্বার-এর বাংলা নাম ভাগ্যবান সংখ্যা কিংবা শুভ সংখ্যা দিতে পানে৷ কিন্তু এতে একটি বিপত্তি হতে পারে৷ কারণ Fortunate number বলে আরেক ধরনের সংখ্যা রয়েছে, যা লাকি নাম্বার থেকে একটু আলাদা৷ তাই ভাগ্যবান সংখ্যা বা শুভ সংখ্যা নামটি বাংলায় গ্রহণ কলে তা অনেক সময় ফরচুনেট নাম্বারের সাথে তালগোল পাকিয়ে যেতে পারে৷ তাই আমার বিবেচনায় লাকি নাম্বার-এর বাংলা নাম বেঁচে যাওয়া সংখ্যা দেয়াই শ্রেয় মনে করি৷ মনে রাখতে হবে, ফরচুনেট নাম্বারের আবিষ্কারক Reo Frankline Fortune, তাই এর নাম Fortunate সংখ্যা৷ এর বাংলা নাম আমরা নিদেনপক্ষে দিতে পারি ফরচুনীয় সংখ্যা৷ তনে ইংরেজি নামের সাথে মিলিয়ে বাংলায়ও ফরচুনেট নাম্বার বলাই শ্রেয়৷ Stanislaw Ulam ১৯৫৫ সালের দিকে প্রথমবারের মতো লাকি নাম্বার নিয়ে আলোচনা করেন৷ তিনিই এসব সংখ্যার নাম Lucky রানে৷ কারণ, ঐতিহাসিক Josephus-এর বলা গল্পের সাথে এর একটা যোগসূত্র আছে৷
লাকি নাম্বারগুলো মৌলিক সংখ্যার কিছু গুণাবলী প্রদর্শন করে৷ এগুলোর Prime number theorem অনুযায়ী asymptotic behaviour প্রদর্শন করে৷ Godbacths Conjecture -৩ এগুলোতে সম্প্রসারিত করা হয়েছে৷ এসব লাকি নাম্বারের সাথে প্রাইম নাম্বারের আপাত সংযোগের কারণে কিছু কিছু গণিতবিদের পরামর্শ হচ্ছে- এসব গুণাবলী পাওয়া যেতে পারে আরো বড় বড় ধরনের সংখ্যাসেটে সুনির্দিষ্ট অজানা ধরনের চালনির মাধ্যমে, যদিও এ কনজেকচারের জন্য তত্ত্বগত ভিত্তি খুব কমই আছে৷ Twin Lucky number এবং Twin Primes একই ফ্রিকোয়েন্সিতে দেখা যায়৷
আর Lucky Prime হচ্ছে সেই লাকি নাম্বার, যেটি একই সাথে প্রাইম নাম্বারও৷ অনেক অসীম লাকি প্রাইম নাম্বার আছে কি না তা কারো জানা নেই৷ প্রথম দিকের কিছু লাকি প্রাইম নাম্বার হলো : ৩, ৭, ১৩, ৩১, ৩৭, ৪৩, ৬৭, ৭৩, ৭৯, ১২৭, ১৫১, ১৬৩, ১৯৩ ৷
.................................................................................
Fortunate Number : ফরচুনীয় সংখ্যা
ফরচুনেট নাম্বার আর লাকি নাম্বার যে এক নয়, তা বুঝার জন্য ফরচুনেট নাম্বারের সাথে একটু পরিচিত হওয়া দরকার৷
প্রদত্ত কোনো ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা n-এর জন্য ফরচুনেট নাম্বার হচ্ছে সবচেয়ে ছোট পূর্ণসংখ্যা m, যা একের চেয়ে বড় এবং Pn#+m হচ্ছে একটি প্রাইম মৌলিক সংখ্যা৷ এখানে প্রাইমরিয়েল নামে পরিচিত Pn# হচ্ছে প্রথম n সংখ্যক প্রাইম নাম্বার বা মৌলিক সংখ্যার গুণফল৷
ইংরেজিতে ফরচুনেট নাম্বারের সংখ্যা দেয়া হয় এভাবে : A Fortunate Number for a given positive integer is the smallest integer m>1 Such that Pn# + m is prime, where primerial Pn# is the product of first n prime numbers. এবার ফরচুনেট নাম্বারের একটা উদাহরণ দিই৷ সপ্তম ফরচুনেট নাম্বার পেতে হলে প্রথমেই বের করে নিতে হবে প্রথম ৭টি প্রাইম নাম্বার বা মৌলিক সংখ্যার গুণফল৷ আমাদের প্রথম ৭টি মৌলিক সংখ্যা হচ্ছে ২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭৷ এগুলোর গুণফল ৫১০৫১০৷ অর্থাত্ Pn# = ৫১০৫১০৷ এর সাথে ২ যোগ করলে আরেকটি জোড় সংখ্যা পাবো, অর্থাত্ ভে#+ব একটি মৌলিক সংখ্যা হবে না৷ ২-এর বদলে ৩ যোগ করলে পাবো ৫১০৫১৩, যা ৩ দিয়ে বিভাজ্য, অতএব এক্ষেত্রেও Pn#+m একটি মৌলিক সংখ্যা হবে না৷ এভাবে ১ বার বার বাড়িয়ে ১৮ পর্যন্ত সংখ্যা ৫১০৫১০-এর সাথে যোগ করলে কোনো যোগফলই অর্থাত্ Pn#+m -এর মান একটি মৌলিক সংখ্যা হবে না৷ তবে Pn# ১৯-এর মান পাবো ৫১০৫১৯, যা একটি মৌলিক সংখ্যা৷ অতএব ১৯ হচ্ছে একটি ফরচুনেট নাম্বার, আর এটি হচ্ছে সপ্তম ফরচুনেট নাম্বার৷ অতএব এটুকু স্পষ্ট ফরচুনেট নাম্বার আর লাকি নাম্বার এক নয়৷
প্রথম দিককার প্রাইমরিয়েলের জন্য ফরচুনেট নাম্বারগুলো হচ্ছে : ৩, ৫, ৭, ১৩, ২৩, ১৭, ১৯, ২৩, ৩৭, ৬১, ৬৭, ৬১, ৭১, ৪৭, ১০৭, ৫৯, ৬১, ১০৯ ইত্যাদি৷
ফরচুনেট নাম্বারগুলোকে নিউমারিক্যাল অর্ডার বা সংখ্যাগত বিবেচনায় সাজালে ও বার বার আসাগুলো বাদ দিয়ে লিখলে পাবো : ৩, ৫, ৭, ১৩, ১৭, ১৯, ২৩, ৩৭, ৪৭, ৫৯, ৬১, ৬৭, ৭১, ৭৯, ৮৯, ১০১, ১০৩, ১০৭, ১০৯, ১২৭, ১৬১, ১৬৩, ১৬৭, ১৯১, ১৯৭, ১৯৯৷
আমরা জেনেছি, Reo Frankline Fortune এই সংখ্যাটি আবিষ্কার করেন৷ তাই এর নাম ফরচুনেট নাম্বার৷ বাংলায় যাকে বলা যেতে পারে ফরচুনীয় সংখ্যা৷ অবশ্যই আমরা কেউ যেনো ভুল করে এর নাম ভাগ্যবান সংখ্যা না দিই৷ রিও ফ্র্যাঙ্কলিন ফরচুরে জন্ম ১৯০৩ সালে৷ মৃত্যু ১৯৭৯ সালে৷ তিনি ছিলেন এক অ্যানথ্রোপলজিস্ট তথা নৃ-বিজ্ঞানী৷ বিয়ে করেন Margaret Meal -কে৷ ফরচুন আন্দাজ করেছিলেন কোনো ফরচুন নাম্বারই কম্পোজিট নাম্বার নয়৷ উল্লেখ্য, একটি ফরচুনেট প্রাইম নাম্বার হচ্ছে একটি প্রাইম নাম্বার৷ এই ২০০৮ সাল পর্যন্ত সময়ে জানা ফরচুনেট নাম্বারগুলোর সবই ফরচুনেট প্রাইম৷
গণিতদাদু
................................................................................
বলুন তো কার ছবি : ২৫
এ গণিতবিদের জন্ম ফ্রান্সের টোরস-এ৷ তরুণ বয়সে সেনাবাহিনীতে কাজ করার সময় আগ্রহী হন গণিতে৷ তার প্রাথমিক অবদান বিশ্লেষণ জ্যামিতিতে ও থিওরি অব ভরটিসেস৷ তার গবেষণা রচনা করে অ্যানালাইটিক্যাল জ্যামিতির ভিত্তি৷ তিনি আলোকপাত করেন দ্বিমাত্রিক রেক্টেঙ্গুলার কো-অর্ডিনেট সিস্টেমের ওপর৷ তা সত্ত্বেও তিনি অবগত ছিলেন স্থানের ত্রিমাত্রিক উপস্থাপনের ব্যাপারে৷ তিনি পলিনমিয়েলের ধনাত্মক ও ঋণাত্মক মূল বা রুটের চিহ্নের সূত্র বের করেন৷ নিউটন একই ধরনের সূত্র বের করতে চেষ্টা করেছিলেন কমপ্লেক্স রুটের জন্য৷ শক্তির খাত প্রকাশের নোটেশন উদ্ভাবন করেন তিনি৷ তিনি এক সময় চেষ্টা করেন ইউনিভার্সের ফিজিক্যাল থিওরি দেয়ার জন্য৷ ফলে চার্চের সাথে এর দ্বন্দ্ব বাধবে বলে তিনি এ তত্ত্ব দেয়া থেকে বিরত থাকেন৷ তবে তিনি প্রকৃতিবিষয়ক যে ১০টি তত্ত্ব দেন, তার ৮টিই ছিল ভুল৷ তাছাড়া প্রথম দুটি প্রায় একই ছিল- নিউটনের তত্ত্বের মতো