বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করে এ সম্পর্কে জনসচেতনতা ও আগ্রহ সৃষ্টি করতে ১৯৯৩ সাল থেকে প্রায় প্রতিবছরই বাংলাদেশের প্রযুক্তিপণ্যের সেবাদাতা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন বিসিএস তথা বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি কমপিউটার মেলার আয়োজন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭-২১ নভেম্বর ঢাকার আগারগাঁয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত হয় ৫ দিনব্যাপী মেলা বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড ২০০৮। মেলার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় বা থিম ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য বা টুয়ার্ডস ডিজিটাল বাংলাদেশ। তথ্যপ্রযুক্তির এ মেলার আয়োজনে। সহযোগিতাযোগায় বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল। বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড ২০০৮-এ কমপিউটার ও কমপিউটার সামগ্রীর পাশাপাশি প্রদর্শিত হয় নিত্যনতুন প্রযুক্তির মোবাইল ফোনসেটসহ আধুনিক জীবনের প্রয়োজনীয় নানা প্রযুক্তিপণ্য। আর সে কারণেই বিসিএস কমপিউটার শোর পরিবর্তে এবারের মেলার নাম দেয়া হয় বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড ২০০৮।
এ যাবৎ বিসিএস আয়োজিত কমপিউটার মেলাগুলোর মধ্যে বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড ২০০৮ ছিল সবচেয়ে বড় পরিসরের মেলা। বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের মূলভবনের সামনে খোলা প্রাঙ্গণেও বিশাল আকারে দুটি প্যান্ডেল ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল মেলার আয়োজনে। এর একটি ছিল প্যাভিলিয়ন জোন এবং পাশের প্যান্ডেল টানা অংশে ছিল বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার, কমপিউটার গেম খেলা আর ক্যুইজ প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজন। বাংলাদেশ-চীন মৈত্রীর সম্মেলন কেন্দ্রের মূল ভবনের ভেতরে স্থাপন করা হয় স্টল জোন। সব মিলিয়ে মেলার স্টল সংখ্যা ছিল ৭৬টি, প্যাভিলিয়ন ২৩টি এবং মিনি স্টল ৪টি। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ৬৯টি। স্টল জোনকে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ডিজিটাল ছবি ও সফটওয়্যার ইত্যাদি উপজোনে ভাগ করা হয়েছিল। অগ্নি অনলাইন পুরো মেলা প্রাঙ্গণে দেয় ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ও বিনামূল্যে গেম খেলার সুযোগ। প্রদর্শনী ও মেলা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার মৎস্য ও পশুপালন এবং বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী মানিক লাল সমাদ্দার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মঞ্জুরুল আলম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির সভাপতি মোসত্মাফা জববার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, বিসিএস, বেসিস ও আইএসপিএবির পরিচালকবৃন্দসহ আইসিটির খাতের উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, বিশ্বায়ন ও স্বয়ংক্রিয়তার এ যুগে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব এখন আমাদের হাতের মুঠোয় পাওয়ার অপার সুযোগ এসেছে। সর্বক্ষেত্রে এ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করে আমরা আমাদের দারিদ্র্য বিমোচনসহ জাতীয় উন্নয়ন প্রয়াস পেতে পারি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সেদিকে লক্ষ রেখে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে, ইতোপূর্বে প্রণীত আইসিটি পলিসি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পর্যালোচনা করে পুনঃপ্রণয়নের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির ভাষণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএমএ ফায়েজ বলেন, আমাদের আগামীর পথযাত্রায় তথ্যপ্রযুক্তি অন্যতম বাহক। দেশকে গতিশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক জ্ঞান। বিটিআরসির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মঞ্জুরুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, আগামী বছরের প্রথম ভাগেই মোবাইল ফোনের তৃতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিচালনার লাইসেন্স দেয়া হবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তারহীন ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক চালু করার আহবান জানান। বিসিএস সভাপতি মোসত্মাফা জববার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিকে শিক্ষার মূল বাহন হিসেবে ব্যবহারের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, প্রযুক্তির যথাযথ শিক্ষার ব্যবস্থা করা গেলে তবেই আমাদের স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
প্রদর্শনী
প্যাভিলিয়ন : মেলায় উন্মুক্ত স্থানে সাজানো হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ২৩টি প্যাভিলিয়ন। এসব প্যাভিলিয়নে দেশের বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান প্রদর্শন করে সর্বশেষ বাজারে আসা নানা প্রযুক্তিপণ্য। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের স্টলেই ছিল ক্রেতাদের জন্য বিশেষ ছাড়।
বিসিএস আইসিটি মেলায় সেরা প্যাভিলিয়ন হিসেবে এইচপি পুরস্কৃত হয়।
প্রদশর্নীতে আসা অসংখ্য দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এইচপির নতুন নতুন প্রিন্টার, পার্সোনাল কমপিউটার এবং নোটবুকগুলো। এইচপির বর্ণিল প্যাভিলিয়নটিতে প্রদর্শিত হয়েছে এইচপির পার্সোনাল সিস্টেম গ্রুপ (পিএসজি) এবং ইমেজিং অ্যান্ড প্রিন্টিং গ্রুপ (আইপিজি)-এর নতুন নতুন সব আকর্ষণীয় পণ্যসামগ্রী।
এর মধ্যে পিএসজির প্রদর্শিত পণ্যসমূহের মধ্যে ছিল- এইচপি কমপ্যাক প্রেসারিও সিকিউ ৪০, এইচপি কমপ্যাক প্রেসারিও সিকিউ ৪৫, এইচপি কমপ্যাক, প্রেসারিও সিকিউ ৬০, এইচপি প্যাভিলিয়ন ডিভি ২৭০০, এইচপি প্যাভিলিয়ন ডিভি ৬৭০০, এইচপি প্যাভিলিয়ন এ ৬৫১৭১ হোম পিসি, এইচপি প্যাভিলিয়ন জি৩৪১৭১ হোম পিসি, এইচপি মিনি, এইচপি ডব্লিউ ১৭০১ এলসিডি মনিটর এইচপি এমএক্স ৭০৫ সিআরটি মনিটর। অন্যদিকে এইচপি আইপিজির প্রদর্শিত পণ্যসমূহের মধ্যে ছিল- এইচপি ডেস্কজেট ডি ১৫৬০ প্রিন্টার, এইচপি ফটোস্মার্ট সি৫২৮০ অল-ইন-ওয়ান, এইচপি ফটোস্মার্ট সি৪৪৮০ অল-ইন-ওয়ান, এইচপি অফিসজেট কে৭১০০ প্রিন্টার, এইচপি অফিসজেট ৪৭৫৫ অল-ইন-ওয়ান, এইচপি স্ক্যানজেট জি৪০১০ ফটোস্ক্যানার, এইচপি স্ক্যানজেট ২৪১০ ফটোস্ক্যানার, এইচপি স্ক্যানজেট জি৩১১০ ফটোস্ক্যানার, এইচপি লেজারজেট পি১০০৫ প্রিন্টার, এইচপি লেজারজেট পি১৫০৫ প্রিন্টার, এইচপি লেজারজেট পি২০১৫ প্রিন্টার, এইচপি লেজারজেট পি ৩০০৫ প্রিন্টার, এইচপি কালার লেজারজেট সিপি ১৫১৫ এন প্রিন্টার এবং এইচপি কালার লেজারজেট সিপি ৩৫০৫ প্রিন্টার।
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য এইচপি প্রত্যেক দিন ক্যুইজ প্রতিযোগিতার ব্যবস্থার করে। ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেরকে আকর্ষণীয় পুরস্কার দেয়া হয়।
স্মার্ট টেকনোলজিস-এর প্যাভিলিয়েনকে সাজানো হয়েছিল স্যামসাং-এর বিভিন্ন মডেল ও কনফিগারেশনের লেজার ও মাল্টিফাংশন ডিভাইস, বিভিন্ন সাইজ ও রেজ্যুলেশনের স্যামসাং এলসিডি ও স্যামসাং টি মনিটরসহ একাধিক মডেলের গিগাবাইটের মাদারবোর্ড ও নোটবুক পিসি, টুইনমোস-এর বিভিন্ন ধরনের ইউএসবি ডিস্ক, এইচপি প্যাভিলিয়ন পিসি ইত্যাদি প্রযুক্তিপণ্য দিয়ে। মেলায় গোল্ড স্পন্সর এসার-এর প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত হয় ইন্টেল সেলেরন মোবাইল প্রসেসর ও ইন্টেল সেন্ট্রিনো ডুয়ো প্রসেসরবিশিষ্ট বিভিন্ন কনফিগারেশন ও মডেলের এসার নোটবুক। এক্সিকিউটিভ টেকনোলজিস এসার নোটবুকের বাংলাদেশের অনুমোদিত পূর্ণবিক্রেতা।
এ মেলার আরেক গোল্ড স্পন্সর বেনকিউ। বাংলাদেশে বেনকিউ-এর অনুমোদিত পরিবেশক ডিস্ট্রিবিউটর কম ভ্যালী। এ মেলায় বেনকিউ-এর প্রধান আকর্ষণ ছিল বেনকিউ-এর ইন্টেল ডুয়ো প্রসেসর ও ইন্টেল সেন্ট্রিনো প্রসেসরবিশিষ্ট বিভিন্ন কনফিগারেশনের নোটবুক-জয়বুক। এছাড়াও বেনকিউ-এর বিভিন্ন ধরনের ওয়াইড স্ক্রিন মনিটর কীবোর্ড, মাউস, সিডি/ডিভিডি মিডিয়া, প্রজেক্টর ইত্যাদি প্রদর্শিত হয় এ মেলায়।
সিলভার স্পন্সর এওসি মেলায় প্রদর্শিত করে বিভিন্ন মডেলের এলসিডি মনিটর। মেলার আরেক সিলভার স্পন্সর হিটাচি প্রদর্শন করে বিভিন্ন ক্ষমতার হার্ডড্রাইভ।
কমপিউটার সোর্সের প্যাভিলিয়নের শোভা ছিল ফুজিৎসু ব্র্যান্ডের বিভিন্ণ মডেলের নোটবুক, ডিজিটাল ক্যামেরা, বিভিন্ন মডেল ও কনফিগারেশনের এইচপি কমপ্যাক নোটবুক, এইচপি কমপ্যাক প্রেসারিও, এইচপি প্যাভিলিয়ন নোটবুক, বিভিন্ন সাইজ ও রেজ্যুলেশনের ফিলিপস ব্র্যান্ডের এলসিডি মনিটর ও পেনড্রাইভ। এছাড়া লেক্সমার্ক ব্র্যান্ডের ইঙ্কজেট, লেজার ও মাল্টিফাংশন প্রিন্টারও প্রদর্শিত হয়।
গ্লোবাল ব্র্যান্ডের প্যাভিলিয়নের প্রধান আকর্ষণ ছিল ব্রাদার ব্র্যান্ডের বিভিন্ন কনফিগারেশন ও রেজ্যুলেশনের লেজার ও মাল্টিফাংশন প্রিন্টার প্রদর্শন। গ্লোবাল ব্র্যান্ড ব্রাদার প্রিন্টারের অথরাইজড ডিস্ট্রিবিউটর। এই প্যাভিলিয়নের আরেকটি আকর্ষণীয় পণ্য ছিল আসুসের বিভিন্ন মডেলের পিডিএ ও বিভিন্ন কনফিগারেশনের ই-পিসি, ই-বক্স এবং আসুসের বিভিন্ন মডেল ও কনফিগারেশনের নোটবুক।
মাল্টিলিঙ্কের প্যাভিলিয়নের আকর্ষণ ছিল ইন্টেল কোর টু ডুয়ো প্রসেসরবিশিষ্ট এইচপি কমপ্যাক প্রেসারিও ব্র্যান্ডের একাধিক মডেল ও কনফিগারেশনের নোটবুক। কয়েকটি মডেল ও কনফিগারেশন এইচপি ডেস্কজেট, এইচপি লেজারজেট, মাল্টিফাংশন প্রিন্টার ও এইচপি স্ক্যানার। এছাড়া মাল্টিলিঙ্ক তাদের প্যাভিলিয়নে নিজেদের ডেভেলপ করা ইআরপি সফটওয়্যারের প্রচারণা চালায়।
আইওইর প্যাভিলিয়নের আকর্ষণ ছিল এমারসন ইউপিএস, নেটওয়ার্ক পাওয়ার সলিউশন, পেপার ও ডাটা শ্রেডার এবং ডকুমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
ক্যাননের প্যাভিলিয়নের প্রধান আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন সুবিধা সংবলিত মডেলের ডিজিটাল ক্যামেরা। ক্যামকর্ডার, ইঙ্কজেট প্রিন্টার, মাল্টিফাংশন প্রিন্টার, ফ্ল্যাটকেড স্ক্যানার, লেজার প্রিন্টার মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও লার্জ ফরমেটিং প্রিন্টার।
ইন্টারন্যাশনাল অফিস মেশিনস তথা আইওএম-এর স্টলকে আকর্ষণীয় সাজে সজ্জিত করা হয়েছিল তোশিবা ব্র্যান্ডের ইন্টেল সেলেরন সেন্ট্রিনো ও পেন্টিয়াম ডুয়াল কোর প্রসেসরবিশিষ্ট স্যাটেলাইট সিরিজের কয়েকটি মডেলের নোটবুক প্রটোজি ও টেকরা সিরিজের কয়েকটি নোটবুক দিয়ে। এছাড়া এ প্যাভিলিয়নে ছিল ডকুমেন্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য ইডিএমএস এবং ডকুমেন্ট ও কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট ই-স্টুডিও।
স্পিড টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্যাভিলিয়নের আকর্ষণ ছিল পিকিউআই ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ক্ষমতার মেমরি মডিউল ও ইউএসবি ফ্ল্যাশড্রাইভ, অ্যালবাট্রন ব্র্যান্ডের মাদারবোর্ড ও ভিজিএ কার্ড, এলটেক লেন্সিং স্পিকার ও স্কেনিং।
বিজনেস লিঙ্ক কমপিউটারস মেলায় এনেছিল প্লাসটেক ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের স্ক্যানার, বায়োস্টার ব্র্যান্ডের মাদারবোর্ড, তাইওয়ানের তৈরি আইডিয়াল ইউপিএস ও বিভিন্ন কনফিগারেশনের বিলিঙ্ক পিসি।
সান কমপিউটার-এর প্যাভিলিয়নের আকর্ষণ ছিল কামাসনিক ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের স্পিকার।
আকিজ কমপিউটার-এর প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত হয়েছিল এনইসি নোটবুক ও আকিজ ব্র্যান্ডের বিভিন্ন কনফিগারেশনের পিসি।জিক্সেল প্যাভিলিয়নে ছিল বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক পণ্য।
বিজনেস ল্যান্ড লিমিটেড মেলায় প্রদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক পণ্য, ফক্সকন ব্র্যান্ডের মাদারবোর্ড ও ফক্সকন মাদারবোর্ড সংবলিত বিভিন্ন কনফিগারেশনের পিসি, মভিডাটা ব্র্যান্ডের ইউএসবি ও ওয়্যারলেস কার্ড। স্পেকট্রাম কনসোর্টিয়াম-এর প্যাভিলিয়নে ছিল ডি-লিঙ্কের বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক পণ্য ও এইসির বিভিন্ন ক্ষমতার ইউপিএস।
মেলার ভেতরের মূল ভবনে বিভিন্ন স্টলে প্রদর্শিত হয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নোটবুক। ডিজিটাল ক্যামেরা, ডেস্কটপ পিসি, ইউপিএস, আইপিএস ইত্যাদি।
ফ্লোরা-র স্টলে প্রদর্শন করা হয় অলিম্পাস ও নিকন ব্র্যান্ডের বিভিন্ন কার্যকর ক্ষমতার একাধিক মডেলের ডিজিটাল ক্যামেরা, এপসনের বিভিন্ন রেজ্যুলেশনের ডট ম্যাট্রিক্স, স্টাইলাস, লেজার প্রিন্টার, এপসন স্ক্যানার ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর। ফ্লোরার স্টলে ছিল বিভিন্ন স্পেসিফিকেশনের এইচপি ডেস্কজেট, এইচপি অফিসজেট ও এইচপি ফটোস্মার্ট প্রিন্টার। এই স্টলের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্লোরা পিসি ও ডেল ব্র্যান্ডের নোটবুক।
আরএম সিস্টেম এ মেলায় তাদের স্টলে প্রদর্শন করে এপলের আইপড শাফল, আইপড ন্যানো, আইপড ক্ল্যাসিক, আইপড টাচ ইত্যাদি। হাসি ব্র্যান্ডের বিভিন্ন কনফিগারেশনের নোটবুক প্রদর্শন করে ইভারমার্চ।
জেএএন অ্যাসোসিয়েট-এর স্টলের প্রধান আকর্ষণ ছিল ক্যাননের বিভিন্ন মডেল ও কার্যকর ক্ষমতার ডিজিটাল ক্যামেরা, ক্যামকর্ডার, ইঙ্কজেট মাল্টিফাংশন প্রিন্টার, ফ্ল্যাটবেড স্ক্যানার, লেজার প্রিন্টার, ডকুমেন্ট স্ক্যানার মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, লার্জ ফরমেটিং প্রিন্টার ইত্যাদি।
কম ভ্যালী-র স্টলের প্রধান আকর্ষণ ছিল বেনকিউ জয়বুক সিরিজের বিভিন্ন কনফিগারেশন ও মডেলের ল্যাপটপ, জয়বুক ল্যাপটপ। কমপিউটার ভিলেজ মেলায় নিয়ে আসে ভিশন ব্র্যান্ডের কমপিউটার পণ্যসামগ্রী। এই ব্র্যান্ডের পণ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে কেসিং, কীবোর্ড, মাউস ইত্যাদি।
সমাপনী অনুষ্ঠান
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ২১ নভেম্বর ২০০৮-এ শেষ হয় বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড ২০০৮। সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতে বিসিএস সভাপতি মোসত্মাফা জববার প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিদের ফুলের তোড়া এবং সম্মাননা ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করেন। প্রধান অতিথি বাণিজ্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, প্রযুক্তিগতভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নই নয়, তথ্য এবং যোগাযোগপ্রযুক্তিতে ক্ষমতা বা জনগোষ্ঠী সৃষ্টিই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। তিনি এরকম একটি বর্ণাঢ্য আয়োজনের জন্য বিসিএস-এর প্রশংসা করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিসিএস সভাপতি মোসত্মাফা জববার বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির সাফল্যগাথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন দেশকে নিয়ে যেতে পারে সমসাময়িক বিশ্বের সামনে। বিশেষ অতিথির ভাষণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএমএম সফিউল্লাহ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজন তিনটি বিষয়ের নিশ্চয়তা : ০১. কমপিউটার, ০২. ইন্টারনেট এবং ০৩. তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা।
বিশেষ অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (এফটিএ)-র যুগ্ম সচিব মোসত্মাফা মহিউদ্দিন বলেন, আইসিটির সম্প্রসারণ দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও রফতানি বাড়াতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান, স্পন্সর, শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়ন ও স্টল ডেকোরেশন এবং বিসিএস কর্মকর্তাদের ক্রেস্ট ও সম্মাননা দেয়া হয়। এ বছর শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়ন সাজানোয় প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে হিউলেট প্যাকার্ড তথা এইচপি (হংকং) লি., তোশিবা এবং ক্যানন। এইচপির প্যাভিলিয়নের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল ইনপেইস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড।
আর স্টল সাজানোর জন্য প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে ইন্টেল করপোরেশন, বাংলাদেশ অনলাইন এবং আরএম সিস্টেমস।
মেলায় অনুষ্ঠিত শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় তিনটি বিভাগে মোট ১৯ জন বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিচারকরা।
কজ ওয়েব