• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার মেলা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মোহাম্মদ ইশতিয়াক জাহান
ইমেইল:rony446@yahoo.com:
মোট লেখা:৮৮
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সফটওয়্যার
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার মেলা


তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের জনপ্রিয়তা এবং সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যকে সামনে রেখে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের হার্ডওয়্যার অ্যান্ড সফটওয়্যার ক্লাব আয়োজন করে এই আইটি মেলা ২০০৮৷ ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা৷ এর প্রতিফলন দেখা গেছে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লিখিত এ ক্লাবে৷

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি প্রফেসর ড. সিকান্দার আলী৷ বিশেষ অতিথি ছিলেন বুয়েটের কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ৷ প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথি ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে তাদের বক্তব্য রাখেন৷ ড. সিকান্দার আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শুধু এ ধরনের মেলার মধ্যেই বেঁধে রাখলে চলবে না বরং এর মাধ্যমে স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে হবে৷ ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, আমাদের দেশে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার ও ব্যাপকতা বাড়ছে খুবই ধীরে৷ মেলায় শিক্ষার্থীদের নিজেদের তৈরি করা মোট ৩২টি যন্ত্র ও সফটওয়্যার প্রকল্প দেখানো হয়৷

মেলার উল্লেখযোগ্য হার্ডওয়্যার প্রজেক্ট

১. ইলেক্ট্রনিক ইনভার্টার :

ডিসি লেবেলের কারেন্টকে খুব সহজে এবং কম খরচে এসি লেবেলে কনভার্ট করা নিয়ে এই প্রজেক্ট, যা অনেকটা আইপিএস হিসেবে খুব সহজেই ব্যবহার করা যাবে৷

২. অটোমেটিক লাইট কন্ট্রোল :

দিনের আলো কম বা বেশি হওয়ার ওপর নির্ভর করে লাইট জ্বলবে বা নিভবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে৷

৩. অটোমেটিক টেম্পারেচার কন্ট্রোল ফ্যান :

গরমের জন্য বানানো এই প্রজেক্টটি দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্যানকে কন্ট্রোল করা যাবে৷ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ঠিক করে দেয়া যাবে কত ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়লে বা কমলে ফ্যানটি চালু হবে৷

৪. ইন্টেলিজেন্ট বাথরুম লাইট কন্ট্রোল :

প্রজেক্টটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কেউ বাথরুমে প্রবেশ করলে লাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলবে বা বাথরুম থেকে বের হয়ে আসলে লাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিভবে৷

৫. অটোমেটিক ট্যাপ কন্ট্রোল :

পানির অপচয় রোধ করার জন্য এই প্রজেক্টটি৷ প্রজেক্টি ব্যবহার করার ফলে কেউ যদি পানির ট্যাপ অফ করতে ভুলে যান, তাহলে ট্যাপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে৷

৬. পিউপল এন্ট্রি-এক্সিট কাউন্টার :

এই প্রজেক্টটি দিয়ে যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা মার্কেটের কর্তৃপক্ষ খুব সহজে গণনা করতে পারবেন কতজন মানুষ প্রতিদিন মার্কেটে প্রবেশ করছেন এবং কতজন বের হয়ে গেছেন৷

৭. ইলেক্ট্রিসিটি ফ্রম লেমন :

খুব সহজে লেবু থেকে ইলেক্ট্রিসিটি উত্পন্ন করার কৌশল দেখানো হয়েছে এই প্রজেক্টটিতে৷

৮. লিকুইড লেভেল মনিটর :

বাসাবাড়িতে অনেকেই পানির মোটর চালু করে তা সময়মতো বন্ধ করতে ভুলে যান, তাদের কথা চিন্তা করে এই প্রজেক্ট৷ এর ফলে ট্যাঙ্কে পানি ভরার সাথে সাথে মোটর বন্ধ হয়ে যাবে৷

মেলার উল্লেখযোগ্য সফটওয়্যার প্রজেক্ট

১. কমপিউটারাইজড পিরিওডিক টেবল :

কেমিস্ট্রির বিভিন্ন অম্ল, ক্ষার, এলিমেন্টরে বিভিন্ন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে এই সফটওয়্যারটি৷

২. মোবাইলভিত্তিক ভোটিং সিস্টেম :

জাতীয় ভোটিং সিস্টেমকে সহজ করার জন্য তৈরি হয়েছে এই সফটওয়্যারটি, যা দিয়ে খুব সহজে একজন নাগরিক তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন মোবাইলভিত্তিক ভোটিং সিস্টেমের মাধ্যমে৷

৩. ওয়েবভিত্তিক টিকেটিং সিস্টেম :

বিভিন্ন রুটের বাস মালিকদের জন্য বানানো এই সফটওয়্যার দিয়ে অনলাইনে ওয়েবের মাধ্যমে টিকেট অগ্রিম বুকিং বা কেনা বা টিকেটটি বাতিল করা যাবে৷

৪. মাইক্রো ক্রেডিট সিস্টেম :

অনলাইনে ক্রেডিট সিস্টেমের ব্যবহার নিয়ে এই সফটওয়্যারটি, যা দিয়ে একজন গ্রাহক অনলাইনে ক্রেডিট সিস্টেম ব্যবহার করে ঋণের ব্যবস্থা করতে পারবেন৷

৫. কমপিউটারাইজড আইসি ডিটেকশন :

কোনো আইসির তথা ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের মান, কোনো গেট এবং বিভিন্ন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই প্রজেক্টটি দিয়ে যেকোনো আইসির তথ্য বের করা যাবে৷

৬. ল্যাব ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার :

সার্কিট বা ডিজিটাল ল্যাবের পার্টসের সঠিক ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে এই সফটওয়্যারটি বানানো হয়েছে৷

এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের ডেভেলপ করা নম্বর ট্রান্সলেশন, অডিও প্লেয়ার, ডাউনলোড ম্যানেজার, সায়েন্টেফিক ক্যালকুলেটর, কার্সর ডিজাইন, মুভিং স্ক্রিন, জিপিএ ক্যালকুলেশন, মোশন মিডিয়া নিয়ে নানা ধরনের সফটওয়্যার এ মেলায় প্রদর্শিত হয়৷

ইউনিভার্সিটির প্রজেক্টের ওপর ভিত্তি করে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের ফল প্রকাশ করা হয়৷ সুষ্ঠুভাবে ফল প্রকাশ করার জন্য এই ইউনিভার্সিটির সাবেক দুজন শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো হয়৷ এরা হলেন সহকারী অধ্যাপক ইকবাল বাহার চৌধুরী এবং সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মামুন ইলাহী৷ তাদেরকে সহযোগিতা করেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই ডিপার্টমেন্টের প্রাক্তন কৃতী ছাত্র আরিফ রেজা আনওয়ারী, যিনি বিভিন্ন মেলায় অংশ নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গৌরব বয়ে আনেন৷৷

ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ফলাফল সন্ধ্যার পর প্রকাশ করা হয়৷ যেখানে হার্ডওয়্যার বিভাগের প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন কবির হোসেন, শিল্পী সরকার, নুসরাত শারমিন, সুমন সরকার, সফিকুর রহমান ও ফারহাদ হোসেন৷ এই ছয়জনের গ্রুপের প্রজেক্ট হলো ইলেক্ট্রিক ইনভার্টার৷ তায়ফুর রহমান টলস্টয় অটোমেটিক লাইটিং কন্ট্রোল প্রজেক্টের জন্য দ্বিতীয় পুরস্কার পান৷ উল্লেখ্য তিনি অটোমেটিক ট্যাপ কন্ট্রোলের জন্য তৃতীয় পুরস্কারটিও লাভ করেন৷ সফটওয়্যার বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন আশরাফুল আবেদিন৷ তার প্রজেক্টটি ছিল কমপিউটারাইজড পিরিওডিক টেবল সফটওয়্যার৷ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন দীপঙ্কর রায় এবং নাহিদা সুলতানা চৌধুরী৷ তাদের প্রজেক্ট ছিল মাইক্রো ক্রেডিট সিস্টেম সফটওয়্যার৷ তৃতীয় স্থান অর্জন করেন ফরহাদ হোসেইন এবং আইনুন্নাহার তাদের ডেভেলপ করা অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারের জন্য৷

মেলা শেষে সিএসই ডিপার্টমেন্টের প্রধান সহযোগী প্রফেসর ড. ফয়েজ খান ছাত্রছাত্রীদের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য প্রতি বছর এই ধরনের মেলার আয়োজন করার ইচ্ছে পোষণ করেন এবং মেলায় আগত সব অতিথি এবং ছাত্রছাত্রীদের ধন্যবাদ জানিয়ে মেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন৷
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
২০০৮ - ফেব্রুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস