লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মোহাম্মদ ইশতিয়াক জাহান
ইমেইল:rony446@yahoo.com:
মোট লেখা:৮৮
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - ফেব্রুয়ারী
আইপি অ্যাড্রেসিং
নেটওয়ার্ক বা নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে কমপিউটার জগৎ-এ অনেকবারই আলোচনা করা হয়েছে৷ কিন্তু এই নেটওয়ার্কিংয়ের সবচেয়ে দরকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ইন্টারনেট প্রটোকল- যার সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে আইপি (IP)৷ দুই বা ততোধিক কমপিউটারের মধ্যে নেটওয়ার্কিং করতে এই আইপি অ্যাড্রেসের প্রয়োজন পড়ে অথবা ইন্টারনেটে সংযোগের ক্ষেত্রেও আইপি অ্যাড্রেসের প্রয়োজন পড়ে৷ প্রতিটি কমপিউটারে একটি ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস থাকে বা নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে প্রতিটি নেটওয়ার্কের কমপিউটারে একটি করে ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার হয়ে থাকে৷ আইপি অ্যাড্রেস দিয়ে নেটওয়ার্কের কমপিউটারকে চেনা যায়৷ এই আইপি অ্যাড্রেস নিয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে৷
প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেস হচ্ছে ৩২ বিটবিশিষ্ট৷ আইপি অ্যাড্রেসকে ডটেট ডেসিমেল পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়৷ যেমন : 192.168.1.72 এখানে এই আইপি অ্যাড্রেসকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে কারণ আইপি অ্যাড্রেস চার বাইট বা ৩২ বিট হয় এবং প্রতিটি বাইটের সর্বোচ্চ রেঞ্জ হয় ২৮=২৫৬ অর্থাৎ প্রতি বাইট হচ্ছে ৮ বিট৷
প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেসকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়৷
১. নেটওয়ার্ক আইডি (ID) এবং
২. হোস্ট আইডি (ID).
১. নেটওয়ার্ক আইডি :
নেটওয়ার্ক আইডি দিয়ে প্রকাশ করা হয় প্রতিটি আইপি ব্লকে সর্বোচ্চ কতগুলো নেটওয়ার্ক তৈরি করা যাবে৷
২. হোস্ট আইডি :
হোস্ট আইডি দিয়ে প্রকাশ করা হয় প্রতিটি নেটওয়ার্ক আইডিতে কতগুলো করে কমপিউটার বা হোস্টের মাঝে নেটওয়ার্ক স্থাপন করা যাবে৷
আইপি অ্যাড্রেস ক্লাস
আইপি অ্যাড্রেসকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে৷ যেমন : ক. Class A,
খ. Class B,
গ. Class C,
ঘ. Class D,
ঙ. Class E৷
সাধারণত Class A, Class B, Class C আইপি অ্যাড্রেস হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ আর Class D -কে মাল্টিকাস্ট অ্যাড্রেস এবং Class E -কে রিজার্ভড অ্যাডেস হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷
Class A অ্যাড্রেস
Class A অ্যাড্রেসে ৮ বিট নেটওয়ার্ক অংশ এবং ২৪ বিট হোস্ট অংশ হিসেবে ভাগ করা হয়৷ ৩২ বিট অ্যাড্রেসকে ৪ বাইটে বিভক্ত করা হয়ে থাকে যার প্রথম বাইট দিয়ে চিহ্নিত করা হয় আইপি অ্যাড্রেসটি কোন ক্লাসের৷ Class A -এর ভেলিড (Valid) নেটওয়ার্কঅ্যাড্রেসেররেঞ্জ হচ্ছে ১ থেকে ১২৬৷ অর্থাৎ Class A -এর ১২৬টি নেটওয়ার্কের প্রতিটি নেটওয়ার্কে ১৬,৭৭৪, ২১৪টি ভেলিড হোস্ট ব্যবহার করা যাবে৷ OK নেটওয়ার্ক আইডি হিসেবে ব্যবহার করা যায় না৷ ১২৭-কে লুপব্যাক ফাংশনের রিজার্ভড আইপি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷
উদাহরণ : 10, 20, 30, 40 এই আইপি অ্যাড্রেসের 10 হলো নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস, আর 20, 30, 40 হলো হোস্ট বা নোড অ্যাড্রেস৷ 10 নেটওয়ার্কের ভেলিড অ্যাড্রেস হচ্ছে 10.0.0.1 থেকে 10.255.255.254৷ এখানে 10.0.0.0 এই অ্যাড্রেসটি নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস এবং 10.255.255.255 এই অ্যাড্রেসটি ব্রডকাস্ট অ্যাড্রেস হিসেবে ব্যবহার হয়৷
Class A -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ সর্বোচ্চ ১২৬৷
Class A -এর ডিফল্ট সাবনেট মাস্ক হলো : ২৫৫.০.০.০৷
Class B অ্যাড্রেস
Class B অ্যাড্রেসে ১৬ বিট নেটওয়ার্ক অংশ এবং ১৬ বিট হোস্ট অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ Class B -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ১২৮ থেকে ১৯১ যা বাইনারি হিসেবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে৷ Class B -তে সর্বোচ্চ ১৬৩৮৪টি নেটওয়ার্ক এবং প্রতিটি নেটওয়ার্কে ৬৫৫৩৪টি ভেলিড হোস্ট ব্যবহার করা যাবে৷
প্রথম বাইটে ৬৪টি নেটওয়ার্ক আইডি৷ দ্বিতীয় বাইটে ২৫৬টি নেটওয়ার্ক আইডি৷ মোট নেটওয়ার্ক আইডি =৬৪*২৫৬=১৬৩৮৪৷
হোস্ট আইডিতে সব ০ বা ১ হতে পারবে না৷ তাই ২টি হোস্টকে বাদ দিতে হয়৷
মোট হোস্ট আইডি =(২১৬-২)=৬৫৫৩৪
উদাহরণ : Class B - প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ১২৮ থেকে ১৯১৷ উদাহরণস্বরূপ Class B -এর একটি আইপি অ্যাড্রেস ধরি, 172. 16.1.80৷ এখানে ১৭২. ১৬ দিয়ে নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস এবং ১. ৮০ দিয়ে হোস্ট বা নোড অ্যাড্রেসকে চিহ্নিত করে৷
Class B -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ সর্বোচ্চ ১৯১ হলেও দ্বিতীয় বাইটের রেঞ্জ ০ থেকে ২৫৫ হতে পারবে৷
তৃতীয় এবং চতুর্থ বাইট দিয়ে Class B -এর হোস্ট অ্যাড্রেসকে বুঝানো হয়ে থাকে৷ উপরের উদাহরণের 172.16.0.0 হলো নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস এবং 172.16.255.255 হলো ব্রডকাস্ট অ্যাড্রেস৷ আর ভেলিড হোস্টের রেঞ্জ হচ্ছে 172.16.0.1 থেকে 172.16.255.254৷
Class B -এর ডিফল্ট সাবনেট মাস্ক : 255. 255.0.0৷
Class C অ্যাড্রেস
Class C অ্যাড্রেসে ২৪ বিট নেটওয়ার্ক আইডি এবং ৮ বিট হোস্ট আইডি হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ Class C -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ ১৯২ থেকে ২২৩ অর্থাৎ Class C -এর প্রথম বাইটে সর্বোচ্চ ৩২টি নেটওয়ার্ক আইডি হতে পারবে৷ পরের দুই বাইটে ২৫৬টি করে নেটওয়ার্ক আইডি হবে৷ মোট নেটওয়ার্ক সংখ্যা =৩২ * ২৫৬ *২৫৬=২০৯৭১৫২৷
Class C -এর হোস্ট সংখ্যা (২৮-২)=২৫৪টি ভেলিডহোস্ট৷ উদাহরণ : Class C -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ১৯২ থেকে ২২৩৷ উদাহরণস্বরূপ Class C -এর একটি আইপি অ্যাড্রেস ধরি, 192.168.100.80 যার 192.168.100 হলো নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস এবং ৪০ হলো হোস্ট বা নোড অ্যাড্রেস৷
এই অ্যাড্রেসের নেটওয়ার্ক আইডি হলো 192.168.100.0 এবং ব্রডকাস্ট অ্যাড্রেস হলো 192.168.100.255৷ আর ভেলিড হোস্টের রেঞ্জ হচ্ছে 192.168.100.1 থেকে 192.168.100.254৷
Class C -এর ডিফল্ট সাবনেট মাস্ক : ২৫৫. ২৫৫. ২৫৫.০৷
Class D অ্যাড্রেস
Class D মাল্টিকাস্ট গ্রুপের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে, যার প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ২২৪ থেকে ২৩৯৷
Class E অ্যাড্রেস
Class E রিজার্ভ আইপি হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে, যার প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫৫৷ সাধারণত Class A,B,C-এর আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহৃত হয়৷ কোন নেটওয়ার্কে কোন Class-এর আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করতে হবে তা পুরোপুরি নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওপর নির্ভর করবে৷
পরবর্তী সংখ্যায় সাবনেটিংয়ের সাবনেট মাস্ক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে৷ আইপি অ্যাড্রেসের মতো সাবনেটিং এবং সাবনেট মাস্কও গুরুত্বপূর্ণ৷
ফিডব্যাক : rony446@yahoo.com