বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি তথা বিসিএস কার্যনির্বাহী কমিটি : ২০০৮-০৯ গঠনের জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন স্যাটকম কমপিউটার্সের স্বদেশ রঞ্জন সাহা এবং এ বোর্ডের সদস্যরা হলেন : কমপিউটার ভ্যালির আসাদুজ্জামান খান ও গ্রামীণ সাইবারনেটের আজহার এইচ চৌধুরী৷ আপীল বোর্ডে চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওর্য়াকের এসএম ইকবাল এবং সদস্যরা হলেন : এফবিসিসিআই-এর পরিচালক আক্তারুজ্জামান মঞ্জু ও কমপিউটার সোর্সের এএইচএম মাহফুজুল আরিফ৷ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ৩৩৫৷ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ২৭৫ জন৷ এর মধ্যে বাতিল হয় ৭ ভোট৷ সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী ৭ প্রার্থীর মধ্য থেকে কর্মকর্তা নির্বাচনের জন্য ১৭ ডিসেম্বর সমিতির সচিবালয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ কার্যনির্বাহী কমিটির পদ বণ্টনের নির্বাচন শেষে নির্বাচনী বোর্ড ও আপীল বোর্ডের সদস্য, বিসিএস কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী, বিসিএস সদস্য এবং সাংবাদিকদের উপ িস্থতিতে স্বদেশ রঞ্জন সাহা ফলাফল ঘোষণা করেন৷ নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তারা হলেন- আনন্দ কমপিউটারসের মোস্তাফা জব্বার, সভাপতি, প্রাপ্ত ভোট ১৭১৷ ইন্টারন্যাশনাল কমপিউটার ভিশনের এ. টি. শফিক উদ্দিন আহম্মদ, সহ-সভাপতি, প্রাপ্ত ভোট ১৮৯৷ স্মার্ট টেকনোলজিসের মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, মহাসচিব, প্রাপ্ত ভোট ১৪৬৷ আতাজ ট্রেড সিস্টেমসের কাজী আশরাফুল আলম, যুগ্ম-মহাসচিব, প্রাপ্ত ভোট ১৪৩৷ ইপসিলন সিস্টেমস্ অ্যান্ড সলিউশনের মো: শাহিদ-উল-মুনীর, কোষাধ্যক্ষ, প্রাপ্ত ভোট ১৫৪৷ টেক ভ্যালি কমপিউটারেস্র মো: মঈনুল ইসলাম, পরিচালক, প্রাপ্ত ভোট ১৪৫ ও কমপিউটার পয়েন্টের ইউসুফ আলী শামীম, পরিচালক, প্রাপ্ত ভোট ১৩৯৷
বিসিএস বার্ষিক সাধারণ সভা ২০০৭ স্থানীয় একটি হোলে সাবেক সভাপতি মো: ফয়েজউল্যাহ্ খানের সভাপতিত্বে ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়৷ সাবেক মহাসচিব ইউসুফ আলী শামীম ২০০৭ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং কোষাধ্যক্ষ কাজী আশরাফুল আলম বিগত বছরের জন্য সমিতির বাজেট পেশ করেন৷ বার্ষিক সাধারণ সভায় মো: ফয়েজউল্যাহ্ খানের অনুরোধে স্বদেশ রঞ্জন সাহা নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং নতুন কমিটি বিদায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহন করেন।
বিসিএস কার্যালয়ে ১ জানুয়ারি ২০০৮ নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি মোস্তাফা জব্বার সভায় সভাপতিত্ব করেন৷ প্রথম সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- কার্যনির্বাহী কমিটির নিয়মিত সভা প্রতিমাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবার বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে৷
২০০৮-০৯ মেয়াদের জন্য ৭ সদস্যবিশিষ্ট সমিতির উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়৷ উপদেষ্টারা হলেন- শেখ আব্দুল আজিজ, মো: আক্তারুজ্জামান মঞ্জু, হাবিবউল্লাহ্ নেয়ামুল করিম, মো: ফয়েজউল্যাহ্ খান, স্বদেশ রঞ্জন সাহা, মোস্তাফা জব্বার ঝ মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম৷
চিত্র : নবনির্বাচিত বিসিএস-এর কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তারা বাঁ থেকে মো: মঈনুল ইসলাম, মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, ইউসুফ আলী শামীম, মোস্তাফা জব্বার, এ. টি. শফিক উদ্দিন আহম্মদ, মো: শাহিদ-উল-মুনীর ও কাজী আশরাফুল আলম
সমিতির ২০০৮-০৯ মেয়াদের জন্য মঢ়ীস স্থায়ী কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সেগুলো হলো : সদস্যপদ অনুমোদন স্থায়ী কমিটি, ক্রয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি, কর, মল্যসংযোজন কর ও শুল্ক বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, আন্তজাতিক বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, আইন, নীতি, আইপিআর ও সালিশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, ব্যবসায় উন্নয়ন স্থায়ী কমিটি, অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটি, অর্থায়ন বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, প্রকল্প উন্নয়ন বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, সামাজিক ও বিনোদন বিষয়ক স্থায়ী কমিটি এবং সেবা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি৷ এসব স্থায়ী কমিটির মধ্যে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে দুটি কমিটি গঠিত হয়৷ এর একটি হছে সদস্যপদ অনুমোদন স্থায়ী কমিটি৷ যার চেয়ারম্যান এ. টি. শফিক উদ্দিন আহম্মদ, সদস্যরা হচ্ছেন কাজী আশরাফুল আলম, মো: শাহিদ-উল-মুনীর ও ইউসুফ আলী শামীম৷ অপরটি হচ্ছে ক্রয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি৷ এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, সদস্যরা হচ্ছেন কাজী আশরাফুল আলম ও মো: শাহিদ-উল-মুনীর৷
অন্যান্য স্থায়ী কমিটি গঠনের জন্য সমিতির সব সদস্যের আগ্রহ প্রকাশ আহ্বান জানিয়ে অবিলম্বে তাদের কাছে ই-মেইল করা হবে৷ তাদের আগ্রহের ভিত্তিতে শিগগিরই কমিটিগুলো গঠন করা হবে৷
নবনির্বাচিত বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বললেন
২০ বছর আগে আমি যখন কাকতালীয়ভাবে কমপিউটার শিল্পে আসি, তখন এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাও ছিল না৷ তখন একটাই স্বপ্ন ছিল মুদ্রণ শিল্পে কাজ করবো এবং তাতে যেনো কমপিউটার ব্যবহার করতে পারি, বাংলা ব্যবহার করতে পারি৷ ১৯৮৭ সালে শুরু করে ১৯৮৮ সালে বিজয় কী বোর্ড সফটওয়্যার প্রকাশের মাধ্যমে আমার সে স্বপ্ন পূরণ হয়৷ এরপর সমিতির সাথে যুক্ত হই এবং স্বপ্নটাও আস্তে আস্তে দেশের সাথে সম্পৃক্ত হয়৷ কমপিউটার জগৎ-এর সাথে আমার এক জায়গাতে মিল আছে- জনগণের হাতে কমপিউটার চাই স্লোগান এর প্রথম কাজ হয় ১৯৯৭ সালে কমপিউটারের ওপর ভ্যাট তুলে নেয়ার মধ্য দিয়ে, যা ১৯৯৮ সালে বাস্তবায়ন করা হয়৷
দশ বছর পর আবার সভাপতি হয়ে কমপিউটার সমিতিতে এসেছি৷ বিসিএস সভাপতি হিসেবে আমি একটিডিজিটাল বাংলাদেশ চাই৷ বিসিএস-এর লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাশে গড়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করা এবং আমি কমপিউটার সমিতিকে এজন্য একটা প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে চাই৷ কারণ, এটি হচ্ছে জাতীয় পর্যায়ের তথ্যপ্রযুক্তি অ্যাসোসিয়েশন৷ সদস্যদের সুযোগসুবিধাগুলো বাড়ানো, সদস্যদের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া, সদস্যদের যোগাযোগে দক্ষতা বাড়ানো, তারা যাতে বিশ্বের সাথে ভালোভাবে কমিউনিকেট করতে পারে, ব্যবসায় নৈতিকতা তৈরি করা, ওয়ারেন্টি পলিসিসহ অন্যান্য পলিসি ঠিক করা, সমিতির উদ্যোগে গড়ে ওঠা বেশ কয়েকটি কমপিউটার মার্কেটগুলোকে সহযোগিতা করা, অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম করা৷ মেলা, সেমিনার, সভার মতো ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা৷ এগুলো রুটিনওয়ার্ক৷ আমার মূলত কাজ হবে এগুলোকে ধাপে ধাপে ও স্বচ্ছতার সাথে পরিচালনা করা বিসিএস-এর সদস্যদের সাথে নিয়ে৷ আরেকটি বিষয় হচ্ছে বিসিএসকে সামনের দিকে নিয়ে আসা৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেমন সরকারের অফিস-আদালত কমপিউটারায়ন করা৷ কিন্তু এ জায়গায় বিসিএসকে লবিং করতে হবে৷ বিসিএস সদস্যদের কমন দাবি হচ্ছে বাজার সম্প্রসারণ৷ সরকারের সাথে লবিং করে আইসিটি পলিসি পরিবর্তন ও যুগোপযোগী করা৷ ৪৫৪ জন বিসিএস সদস্যকে কাজে লাগানো হচ্ছে আমার কাজ, কারণ প্রতিটি সদস্যের মধ্যে অসংখ্য মেধা লুকিয়ে আছে ৷