• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > নোকিয়া মোবাইল কনসেপ্টস
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: রিয়াদুল ইসলাম
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
মোবাইল
তথ্যসূত্র:
উদ্ভাবন
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
নোকিয়া মোবাইল কনসেপ্টস

যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে যে যন্ত্রটির ভূমিকা ও চাহিদা সবচেয়ে বেশি তা হচ্ছে সেলফোন বা মোবাইল ফোন। হাতে বহনযোগ্য এই ছোট্ট আকারের যন্ত্রটি শুধু কথা বলার জন্য যে ব্যবহার করা হয় তা নয়, এটি ব্যবহার করা হয় আরো নানা কাজে। মোবাইল ফোন কনটেন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছিল কমপিউটার জগৎ-এর এ বছরের মার্চ সংখ্যার প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে সম্ভাবনাময় শিল্প মোবাইল ফোন কনটেন্ট শিরোনামে। মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি নোকিয়া। নোকিয়ার পরে একই কাতারে রয়েছে স্যামসাং, এলজি, মটোরোলা, সনি এরিকসন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান। নোকিয়ার ভবিষ্যতের ফোন নোকিয়া মর্ফ ব্যাপারে ইতঃপূর্বে এ বিভাগে আলোচনা করেছেন যুগল মাহমুদ। আজকে নোকিয়ার প্রস্তাবিত আরো কিছু নতুন মোবাইল ফোনের সাথে পরিচিত হওয়া যাক।



নোকিয়া ৮৮৮ মোবাইল ফোন কনসেপ্ট

নোকিয়া মর্ফ কনসেপ্টের পর বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে নোকিয়া ৮৮৮ কনসেপ্ট। এই কনসেপ্টে সেল-ফোনের পুরুত্বের ওপরে বেশি নজর দেয়া হয়েছে। একে বলা হচ্ছে আলট্রাথিন সেলফোন। খুবই পাতলা ও একটু লম্বা আকারের এই ফোনটির ডিজাইন খুবই সুন্দর। ব্রেসলেটের আকারের এই সেলফোনের ডিজাইন করেছেন তুরস্কের Tamer Nakisci নামের একজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনার। তিনি তার এই অসাধারণ কনসেপ্টের মাধ্যমে ২০০৫ সালে পেয়েছিলেন বেনেলাক্স ডিজাইন কনটেস্টের পুরস্কার। এর তিন বছর পর সেলফোন নির্মাণে অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান নোকিয়ার নজরে পড়ে তার এই ডিজাইন। সেলফোন বানানোয় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার জন্যই যেনো তারা লুফে নিল এই ডিজাইন। অবাস্তব এই ডিজাইনকে বাস্তবে রূপ দেয়ার অসাধ্য কাজটি করার জন্য নোকিয়া কোম্পানি তাদের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।



এই ফোনটির বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ফ্লেক্সিবল টাচ স্ক্রিন, লিকুইড ব্যাটারি, স্পিচ রিকগনিশন, টাচ সেনসেটিভ বডি কভার, যা পরিবেশের পরিবর্তনে সাড়া দেবে। খুবই পাতলা ডিসপ্লে, তার ওপরে টাচ স্ক্রিন টেক-নোলজি। এতে ব্যবহার করা হয়েছে লিকুইড ব্যাটারি, যার ফলে এর আকার এত পাতলা করা সম্ভব হয়েছে। একে যেমন খুশি তেমনভাবে আকার দেয়া যায়। ইচ্ছে করলে ক্লিপ বানিয়ে শার্ট বা প্যান্টে আটকে রাখতে পারেন, ব্রেসলেটের আকার বানিয়ে হাতে পরতে পারবেন খুব সহজেই। ভেঙ্গে যাওয়ার কোনো ভয় নেই, তাই ইচ্ছেমতো বাঁকিয়ে পছন্দসই আকার দিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন এই যন্ত্রটি। নিজে থেকেও এটির আকার বদল করতে পারবেন বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। যেমন আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে হার্টের আকারের ই-মোশন বা ইলেক্ট্রনিক মোশন পাঠালেন, তখন তার ফোনটি হার্টের আকার ধারণ করবে। এতে রয়েছে ক্যামেরা, অ্যালার্ম, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস, গান শোনার ব্যবস্থা, চ্যাটিং সুবিধা, ইন্টারনেট ব্রাউজিং ইত্যাদি। হারিয়ে গেলে জিপিএসের সাহায্যে আপনি পথ খুঁজে নিতে পারবেন বা নির্দিষ্ট কোনো গন্তব্যে যেতে চাইলে সহজেই যেতে পারবেন এতে দেখানো ম্যাপের সাহায্য নিয়ে। মিউজিকের তালে এই ফোনটি নাচতেও পারে, এঁকেবেঁকে নানারকম ভঙ্গিও করতে পারে। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ এই ফোনটিকে নিয়ে। খুবই সহজ ও সাবলীলভাবে ব্যবহারযোগ্য সেলফোনটি খুব শিগগিরই বাজারে আসবে। তাই আপনাকে খুব একটা অপেক্ষা করতে হবে না।



নোকিয়া উডেন ফোন কনসেপ্ট

কাঠ দিয়ে বানানো মোবাইল ফোনের কথা শুনেছেন কখনো? খেলনার নয়, সত্যিকারের সেলফোন। নোকিয়া বাজারে নিয়ে আসছে কাঠের তৈরি সেলফোন। কাঠ দিয়ে বানানো হবে ফোনের বডি যা দেখতে এক টুকরো কাঠের মতো। একই রঙের কাঠের টেবিলে রেখে দিলে বোঝার উপায় থাকবে না যে এটি একটি মোবাইল। এই সেলফোনের নাম দেয়া হয়েছে উডেন ফোন। এতে থাকবে ৮ মেগাপিক্সেল ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা, ব্লু টুথ, শক্তিশালী স্পিকার, ফ্ল্যাশ লাইট এবং অপারেটিং সিস্টেমটি হবে সিমবিয়ান এস ৬০। এতে ব্যবহার করা হবে খুবই ভালোমানের কাঠ, যা সহজে নষ্ট বা ক্ষতিগ্রসত্ম হবে না। নোকিয়ার ইকো-টিম উদ্ভাবন করেছে এই পরিবেশবান্ধব সেটটি, যা পরিবেশে কোনো প্রকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে না বলে তারা আশ্বাস দিয়েছেন।



নোকিয়া এয়ন ফোন কনসেপ্ট

এই সেটগুলোর ডিজাইন এতই সুন্দর যা দেখলে সবাই অবাক হবেন, আর ভাববেন, ইস! এরকম সেট যদি আমার একটা থাকত। এতে কোনো বাটন নেই, পুরোটাই ডিসপ্লে। মাঝখানে ভাগ করা রয়েছে যার উপরে সেটের মূল স্ক্রিন থাকবে আর নিচের ডিসপ্লে অংশে ফুটে উঠবে বাটন। দুইটি অংশই টাচ স্ক্রিন। এর গ্রাফিক্স কোয়ালিটি খুবই চমৎকার, একেবারে প্রাণবমত্ম। এটি অনেকটা আইফোন ও বেনকিউ-সিমেন্সের ব্ল্যাকবক্সের আদলে তৈরি করা হলেও এর ডিজাইন আরো বেশি আকর্ষণীয়।



নোকিয়া ইকো সেন্সর কনসেপ্ট

এই সেটগুলো হবে ইকো সেন্সর টেকনোলজিসম্পন্ন, যা পরিবেশের বিরূপ আচরণ সম্পর্কে পূর্বাভাস দেবে। এটি হাতে পরা যাবে বা গলায় ঝোলানো যাবে। এটি সৌরশক্তিতে চলবে, তাই আলাদা করে চার্জ দেয়ার ঝামেলা থাকবে না। এটি আপনার শারীরিক অবস্থা বিশ্লেষণের পাশাপাশি আবহাওয়ার খবরও দেবে। এতে আছে হার্টবিট মনিটর করার ব্যবস্থা, আলট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন সেন্সর, টেম্পারেচার সেন্সর এবং আরো থাকবে মোবাইল টিভি, ইন্টারনেট, মিউজিক সিস্টেম ইত্যাদি।



নোকিয়া এন ৯৯ কনসেপ্ট

নোকিয়া এন ৯৫-এর পর বাজার দখল করতে এসেছিল এন ৯৬। কিন্তু আরো কিছুদিন পরে আসছে এন ৯৯। এর মডেল ও ডিজাইন এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত করা হয়নি তবুও যা জানা গেছে তা হলো- এতে থাকবে ১৬ গিগাবাইট মেমরি, মিনি এসডি কার্ড স্লট, ৩.২ ইঞ্চি ডিসপ্লে, জিপিএস নেভিগেশন, ওয়াইফাই কানেকটিভিটি, ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা ও জনপ্রিয় সব ধরনের অডিও ও ভিডিও কোডেক সমর্থন।



নোকিয়া ওপেন কনসেপ্ট

এই ডিজাইনের উদ্ভাবন হয়েছে জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন টিভি সিরিজ স্টার ট্রেক-এ ব্যবহার করা যোগাযোগ যন্ত্রের সাথে মিল রেখে। এই সেটটির মডেল ৪জি মোবাইল কনসেপ্ট প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। চামচের মতো দেখতে এই সেটটির ওপরের অংশ খুলে গেলে তার মাঝে ডিসপ্লে ফুটে উঠবে। ক্লিপ খুলে ডিসপ্লে বের হওয়ার কথা ভেবেই হয়ত এর নাম দেয়া হয়েছে নোকিয়া ওপেন মোবাইল। ভিডিও কনফারেন্সের কাজে বেশি সাহায্য করবে বলে নির্মাতারা মনে করছেন।



নোকিয়ার পাশাপাশি অন্যান্য কিছু নামকরা কোম্পানিও রয়েছে যেগুলো মোবাইল ফোন শিল্পে নতুন বিপ্লব ঘটানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারাও কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। তাই তাদের তৈরি মোবাইল ফোন ও অন্যান্য যন্ত্রের বর্ণনা নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে এই বিভাগে।

নোকিয়া আইকন ব্লুটুথ ডিভাইস

নোকিয়ার ভবিষ্যতের মোবাইলগুলো সম্পর্কে তো অনেক আলোচনা হলো। এখন মোবাইল বাদে তাদের আরেকটি ডিভাইস নিয়ে আলোচনা না করলেই নয়। তা হলো নোকিয়ার আইকন ব্লুটুথ ডিভাইস। এটি নোকিয়ার নতুন প্রজন্মের বিভিন্ন মোবাইল সেটের ইনহ্যান্সমেন্ট ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আইকন ব্লুটুথ ডিভাইসটি তৈরি করা হয়েছে রিস্ট ব্যান্ড ও আংটির আকারে। এটিতে যুক্ত করা হয়েছে ডুয়োক্রমাটিক ও এলইডি ডিসপ্লে, যার ফলে এটি সুদৃশ্য ঘড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে এবং মোবাইলে আসা ইনকামিং কল ও মেসেজ দেখাতে পারবে। এছাড়া কল বা মেসেজ আসলে ব্যবহারকারীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এটি নিজের রঙ পরিবর্তন করে সংকেত দিতেও সক্ষম। এটির ডিসপ্লে বাদে বাকি অংশ রাবারে তৈরি, যার ফলে যে কারো হাতের কব্জিতে খুব সহজেই এঁটে যাবে। আংটি আকারের ডিভাইসটি বানানো হয়েছে হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে পরার উপযুক্ত করে। ব্যবহারকারী মোবাইল সাইলেন্ট করে পকেটে বা ব্যাগে রাখা অবস্থায় ফোন বা মেসেজ আসলে হাতে লাগানো এই ডিভাইসটি তার সংকেত দেয়ার জন্য বেশ কাজের একটি যন্ত্র এবং সাথে ফ্যাশনের ব্যাপার তো আছেই।

কজ ওয়েব


ফিডব্যাক : riyad444@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস