• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > স্ক্রিপ্টল্যান্স একটি পরিপূর্ণ ফ্রিল্যান্সিং পোর্টাল
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: জাকারিয়া চৌধুরী
মোট লেখা:৩৫
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ফ্রিল্যান্সইল্যান্স, 
তথ্যসূত্র:
ফলোআপ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
স্ক্রিপ্টল্যান্স একটি পরিপূর্ণ ফ্রিল্যান্সিং পোর্টাল

স্ক্রিপ্টল্যান্স (www.scriptlance.com), প্রোগ্রামারদের মধ্যে বহুল পরিচিত এবং জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস। প্রতিদিন প্রায় ২০০টির অধিক নতুন প্রজেক্ট এই সাইটে আসে। এ সাইটে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করা যায়। আলাদাভাবে মাসিক কোনো ফি দিতে হয় না। তবে সার্টিফাইড প্রোগ্রামারদের প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এই সাইটে সক্রিয় প্রোগ্রামারের সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ৩,৪১৭ জন। তবে এই সাইটে প্রোগ্রামারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা অন্যান্য সাইট থেকে বেশি। ফ্রিল্যান্সারদের সুবিধার জন্য রয়েছে একটি অনলাইন ফোরাম। রয়েছে এস্ক্রো (Escrow) অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কাজ শেষে অর্থ পাওয়ার নিশ্চয়তা। সাইটটি ব্যবহার করা তুলনামূলকভাবে সহজ। প্রজেক্টে বিড (ইরফ) করার পদ্ধতি অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটের মতো। প্রজেক্টে সাধারণত একজন প্রোগ্রামারের বিড আরেকজন প্রোগ্রামার দেখতে পারে। তবে বায়ার ইচ্ছে করলে তা গোপন রাখার ব্যবস্থা করতে পারে। সাইটের কমিশন খুবই কম, একটি প্রজেক্টের মোট মূল্যের ৫% (তবে সর্বনিম্ন কমিশন ৫ ডলার)।

স্ক্রিপ্টল্যান্স ওয়েবসাইটের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রজেক্টগুলো কয়েকটি আলাদা ভাগে সাজানো থাকে। সর্বপ্রথম অংশে রয়েছে প্রজেক্টের বিভাগ, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- পিএইচপি, জাভা, জাভা স্ক্রিপ্ট, সি/সি++, এএসপি ডট নেট, পার্ল/সিজিআই, জুমলা, এসকিউএল, ওয়েবসাইট ডিজাইন গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফ্ল্যাশ, সিএসএস, অ্যাজাক্স, এসইও, ডাটাএন্ট্রি, রাইটিং, মার্কেটিং, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি।

দ্বিতীয় অংশে রয়েছে ফিচার্ড প্রজেক্টের লিস্ট। ফিচার্ড প্রজেক্টগুলো একটি সাধারণ প্রজেক্ট থেকে বেশিদিন সাইটে বিড করার জন্য উন্মুক্ত থাকে। এ ধরনের প্রজেক্ট সম্পন্ন করতে একজন প্রোগ্রামারকে সাধারণ প্রজেক্টের তুলনায় অর্ধেক কমিশন সাইটকে দিতে হয়। একটি প্রজেক্টকে ফিচার্ড লিস্টে স্থান দিতে বায়ারকে ১৯ ডলার সাইটকে ফি হিসেবে দিতে হয়, যা দিয়ে এ ধরনের প্রজেক্টগুলো ক্লায়েন্টের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সহজেই অনুধাবন করা যায়। পাশাপাশি ক্লায়েন্টের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য ই-মেইল, ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেঞ্জার, ফোন নম্বর ইত্যাদি দেয়া যায়, যা একটি সাধারণ প্রজেক্টে ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য দেয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

তৃতীয় অংশে রয়েছে জরুরি বা আর্জেন্ট প্রজেক্টের লিস্ট। আর্জেন্ট প্রজেক্টের পরবর্তী অংশে রয়েছে বড় বাজেটের প্রজেক্টের লিস্ট। সাধারণত পাঁচশ’ ডলার থেকে শুরু করে দশ হাজার ডলারের অধিক মূল্যের প্রজেক্টগুলো এ অংশে পাওয়া যায়।

হোম পেজের নিচের দিকে জব লিস্টিং নামের ফিচারটি এই সাইটের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। এ অংশে চাকরিদাতারা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। চাকরিগুলো হতে পারে একটি নির্দিষ্ট প্রজেক্টের জন্য অথবা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। বায়ার ইচ্ছে করলে স্ক্রিপ্টল্যান্স সাইটের মাধ্যমে কাজ দিতে পারে অথবা সরাসরি ফ্রিল্যান্সারের সাথে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনলাইনে চাকরি দিতে পারে।

অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটের মতো এ সাইটেও বিভিন্ন সুবিধাযুক্ত একটি আলাদা মেম্বারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে, যা সার্টিফাইড মেম্বার নামে পরিচিত। তবে অন্য সাইট থেকে এই ফিচারটির পার্থক্য হচ্ছে, যেকেউ সার্টিফাইড মেম্বার হতে পারবে না। সার্টিফাইড মেম্বার হতে হলে একটি আবেদন ফরম পূরণ করতে হয়। এরপর স্ক্রিপ্টল্যান্স কর্তৃপক্ষ আবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। একজন সার্টিফাইড মেম্বার হওয়ার প্রয়োজনীয় শর্ত হলো- কমপক্ষে ৫ জন বায়ারের কাছ থেকে ১০টি বা তার অধিক কাজের মন্তব্য। সাথে থাকতে হবে ভালো একটি রেটিং- ১০-এর মধ্যে ৯ বা তার অধিক। সার্টিফাইড মেম্বার হবার পর রেটিং যদি ৮-এর নিচে ৩০ দিনের অধিক অবস্থান করে, তাহলে সে ফ্রিল্যান্সার সার্টিফাইড মেম্বারশিপের যোগ্যতা হারাবে। সার্টিফাইড মেম্বার হতে আবেদন যাচাইয়ের জন্য ১০ ডলার এবং প্রতি মাসে ২৫ ডলার ফি দিতে হয়। এ অর্থগুলো ফ্রিল্যান্সারের স্ক্রিপ্টল্যান্সের অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেয়া হয়।

এবার দেখে নেয়া যাক, একজন সার্টিফাইড মেম্বার সাইটটি থেকে কী কী সুবিধা পেয়ে থাকে। প্রথমত সার্টিফাইড মেম্বারদের নামের পাশে সবসময় একটি বিশেষ লোগো সংযুক্ত থাকে, যা বিড করার সময় অন্যান্য ফ্রিল্যান্সারের মধ্য থেকে তাকে আলাদাভাবে প্রদর্শন করে। সার্টিফাইড মেম্বারদের যাচাইবাছাই করে মেম্বারশিপ দেয়া হয়, যা বেশিরভাগ বায়ারের কাজে ওই ফ্রিল্যান্সারের গুরুত্ব বহন করে। একটি প্রজেক্টে সার্টিফাইড মেম্বারের বিড বোল্ড অক্ষরে থাকে, যা সহজেই বায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সর্বোপরি সার্টিফাইড মেম্বারকে প্রতিটি প্রজেক্টে ৫০% কম ফি সাইটকে দিতে হয়।

স্ক্রিপ্টল্যান্স থেকে অর্থ উত্তোলনের খরচ অন্যান্য সাইট থেকে অনেক কম। এই সাইট থেকে ৭টি ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে অর্থ উত্তোলন করা যায়। এগুলো হচ্ছে- সাধারণ চিঠির মাধ্যমে চেক (৩ ডলার ফি), ফেডএক্সের মাধ্যমে চেক (৩৮ ডলার ফি), পেপাল, ই-গোল্ডে, মানিবুকারস, পেওনার ডেবিট মাস্টারকার্ড এবং ব্যাংকওয়্যার ট্রান্সফার (২৫ ডলার ফি)। আমাদের দেশের জন্য পেওনার ডেবিট কার্ড এবং ব্যাংকওয়্যার ট্রান্সফার সবচেয়ে ভালো দু’টি পদ্ধতি। স্ক্রিপ্টল্যান্সের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিবারে সর্বনিম্ন ৩০ ডলার তোলা যায়।

স্ক্রিপ্টল্যান্স সাইটের একটি অসুবিধা হচ্ছে, প্রজেক্ট শুরু হওয়ার সাথে সাথে প্রজেক্টের কমিশন কেটে রাখা হয়, যা নতুন ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা না থাকলে নেগেটিভ ব্যালেন্স দেখায়। নেগেটিভ ব্যালেন্স ৩০ দিনের বেশি হলে প্রোগ্রামারের অ্যাকাউন্টটি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। এই অবস্থায় অন্য কোনো প্রজেক্টে বিড করা যাবে না। তবে এতে ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই, কারণ প্রজেক্ট শেষে বায়ার মূল্য পরিশোধ করার সাথে সাথে অ্যাকাউন্টটি আবার সচল হয়ে যাবে।

কমপিউটার জগৎ-এ গত ছয় মাস ধরে আমরা বিভিন্ন জনপ্রিয় এবং সফল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সাইটকে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশার কথা হচ্ছে, অনলাইন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ে সবার সচেতনতা বেড়েছে এবং অনেকে এরই মধ্যে সফলভাবে যাত্রা শুরু করতে পেরেছে। তবে যারা এখনো কোনো কাজে পারদর্শী হতে পারেননি, তাদের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করছে। এই সব নতুন ফ্রিল্যান্সারের কথা মাথায় রেখে পরবর্তী সংখ্যাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে নিজেদের কিভাবে প্রস্ত্তত করতে হবে, তা পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হবে। সেই লক্ষ্যে আগামী সংখ্যায় থাকবে ওয়েবসাইট ডিজাইনের নানা দিক নিয়ে একটি প্রতিবেদন।
কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : zakaria.cse@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
২০০৯ - ফেব্রুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস