ডঅল সংখ্যা
n.2n-1, এটি একটি অ্যালজাব্রীয় রাশি৷ এ রাশিতে n = 1, 2, 3,...ইত্যাদি মান বসালে আমরা n.2n-1-এর বিভিন্ন সংখ্যা মান পাবো৷ যেমন- যখন n = 1, তখন n.2n-1 = 1.21-1 = 1; আবার n = 2 হলে n.2n-1 = 2.22-1 = 7; এভাবে n = 3 হলে n.2n-1 = 3.23-1 = 23৷ এভাবে n-এর বিভিন্ন মানের জন্য আমরা পাবো বিভিন্ন সংখ্যামান৷ n.2n-1 রাশিটিতে n-এর বিভিন্ন মান বসিয়ে n.2n-1-এর জন্য পাওয়া বিভিন্ন সংখ্যার নাম দেয়া হয়েছে Woodall Number বা উডঅল সংখ্যা৷ তাহলে উপরে পাওয়া 1, 7, 23,...ইত্যাদি এক একটি উডঅল সংখ্যা৷ n = 1 বসিয়ে (n.2n-1)-এর সংখ্যামানটিকে বলা হয় প্রথম উডঅল সংখ্যা, n = 2 বসিয়ে পাওয়া সংখ্যাটির নাম দ্বিতীয় উডঅল সংখ্যা, n = 3 বসিয়ে পাওয়া সংখ্যাটিকে বলা হয় তৃতীয় উডঅল সংখ্যা,... ইত্যাদি৷ এভাবে n = n বসিয়ে পাওয়া সংখ্যাটি হচ্ছে n-তম উডঅল সংখ্যা৷ আর W1, W2, W3,..., Wn ইত্যাদি দিয়ে যথাক্রমে বুঝানো হয় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়,..., n-তম উডঅল সংখ্যা৷ তাহলে Woodall Number-এর সাধারণ আকারটি দাঁড়ায় এমন : Wn = n.2n-1৷
এখন উডঅল সংখ্যার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে আমরা বলতে পারি উডঅল সংখ্যা Wn হচ্ছে n.2n-1 আকারের সংখ্যা, যেখানে n=1, 2, 3..., n ইত্যাদি বসিয়ে আমরা যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়,..., nতম উডঅল সংখ্যা পেতে পারি৷
হিসেব করে দেখা গেছে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ,..., ইত্যাদি প্রথম দিককার উডঅল সংখ্যাগুলো হচ্ছে যথাক্রমে 1, 7, 23, 63, 159, 383,..., ইত্যাদি৷ লক্ষণীয়, উপরে দেয়া সব উডঅল সংখ্যা কিন্তু মৌলিক সংখ্যা বা প্রাইম নাম্বার নয়৷
উপরে n = 2, 3, 6 বসিয়ে পাওয়া উডঅল সংখ্যা 7, 23 এবং 383 মৌলিক সংখ্যা ও একই সাথে উডঅল সংখ্যা৷ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, প্রথমদিকের n.2n-1 রাশিটিতে n = 2, 3, 6, 30, 75, 81, 115, 123, 249, 362, 384, 462, 512, 751, 822, 5312, 7755, 9531, 12379, 15822, 18885, 22971, 23005, 98726, 143018, 151023, 667071, 1195203,..., ইত্যাদি মান বসিয়ে আমরা মৌলিক উডঅল সংখ্যা পাবো৷ আর উপরে উল্লিখিত ক্রমে n-এর মান বসিয়ে আমরা যথাক্রমে যেসব মৌলিক উডঅল সংখ্যা পাবো সেগুলো হচ্ছে 7, 23, 383, 32212254719, 2833419889721787128217599,.., ইত্যাদি৷ এ পর্যন্ত আমরা সবচেয়ে বড় যে মৌলিক উডঅল সংখ্যাটির কথা জানতে পেরেছি, তা লিখতে প্রয়োজন 359799টি অঙ্ক৷ আর n.2n-1 রাশিতে n = 1195203 বসালে আমরা এ পর্যন্ত জানা বৃহত্তম মৌলিক উডঅল সংখ্যাটি পাবো৷ ২০০৫ সালের জুলাইয়ে M. Rodenkirch এ সংখ্যাটির সন্ধান পান৷ আর তিনি এ সংখ্যাটি খুঁজে পাওয়ার জন্য n = 102000 থেকে 1195203 বসিয়ে অনুসন্ধান কাজ চালিয়েছিলেন৷
কুলেন সংখ্যা
Woodall Number-এর ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, n.2n-1 রাশিটিতে যথাক্রমে n=1, 2, 3, 4..., ইত্যাদি বসিয়ে আমরা যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ উডঅল সংখ্যা পাই৷ এবং প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ উডঅল সংখ্যা বুঝাতে যথাক্রমে আমরা লিখি W1, W2, W3, W4..., ইত্যাদি এবং nতম উডঅল সংখ্যা Wn = n.2n-1, হয়৷ এটি হচ্ছে উডঅল সংখ্যার সাধারণ আকার৷
ঠিক একইভাবে Cullen Number-এর ক্ষেত্রে কোনো একটি মাত্র সংখ্যা কুলেন নাম্বার নয়৷ সেখানেও একইভাবে রয়েছে প্রথম কুলেন সংখ্যা, দ্বিতীয় কুলেন সংখ্যা, তৃতীয় কুলেন সংখ্যা,.., n-তম কুলেন সংখ্যা৷ প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়,..., nতম কুলেন সংখ্যা বুঝাতে লেখা হয় যথাক্রমে C1, C2, C3,..., Cn৷ আর কুলেন সংখ্যার সাধারণ আকার হচ্ছে Cn = n.2n+1৷ এতে n = 1, 2, 3,..., n ইত্যাদি বসিয়ে আমরা সহজেই পেতে পারি প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়,.., nতম কুলেন সংখ্যা৷ Woodall Number এবং Cullen Number-এ বাহ্যিক আকারটা প্রায় একই রকম৷ শুধু একটিতে ব্যবহার হয়েছে মাইনাস চিহ্ন, আর অপরটিতে প্লাস চিহ্ন৷ উডঅল সংখ্যাটির সাধারণ আকার যেখানে n.2n-1, সেখানে কুলেন সংখ্যার সাধারণ আকার n.2n+1৷
আমরা কুলেন সংখ্যা প্রকাশক সাধারণ আকারের রাশিতে n = 1, 2, 3, 4,..., ইত্যাদি বসালে পাবো প্রথম কুলেন সংখ্যা C1= 3, দ্বিতীয় কুলেন সংখ্যা C2=9, তৃতীয় কুলেন সংখ্যা C3 = 25, চতুর্থ কুলেন সংখ্যা C4=33,..., ইত্যাদি৷
ইংরেজি সংখ্যা ও কোণে মজার সম্পর্ক
আমরা যেকোনো ইংরেজি সংখ্যা লিখি ১০টি অঙ্ক বা ডিজিট ব্যবহার করে৷ এগুলো হচ্ছে : 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8 এবং 9, এখন এই ডিজিটগুলোকে যদি এক বিশেষ আকারে বা নকশাকারে লিখি তবে দেখবে এই ডিজিট বা অঙ্কগুলোর সংখ্যামান যত, এর মধ্যে ততটি কোণও অস্তিত্বশীল৷ যেমন 0-তে কোণ নেই, 1-এ পাবো একটি কোণ, 2-তে পাবে দুটি কোণ, 3-তে তিনটি কোণ, 4-এ পাবো চারটি কোণ, 5-এ পাবো পাঁচটি কোণ, ..., 9-এ পাবে নয়টি কোণ৷ নিচে তা দেখানো হলো৷ তারকা চিহ্ন দিয়ে কোণগুলো দেখানো হলো :
গণিতদাদু
.................................................................................।
বলুন তো কার ছবি : ২৯
এই গণিতবিদের জন্ম টাউলাউস-এ৷ লেখাপড়া প্যারিসে৷ তিনি গণিতবিদ লাপলাসের সমসাময়িক৷ পেশাজীবী কর্মজীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের জনসেবায় নিয়োজিত ছিলেন৷ ছোটখাটো সরকারি পদেও কাজ করেছেন৷ তিনি যে স্বীকৃতির প্রত্যাশা করতেন লাপলাসের প্রভাবের কারণে তিনি তা থেকে বঞ্চিত হন৷ সে জন্যই বলা হয়, লাপলাসের সমসাময়িক হওয়াটাই ছিল তার দুর্ভাগ্য৷ তার প্রধান অবদান ছিল জ্যামিতি, সংখ্যাতত্ত্ব ও সমাকলন ক্যালকুলাসের বিভিন্ন বিষয়ে৷ তিনি ইলিপটিক ফাংশনের ওপরও অবদান রেখে গেছেন৷ স্পেরিক্যাল হারমোনিকস ও লিস্ট স্কয়ার মেথডের ওপর তার বিশেষ অবদান রয়েছে৷ উভয় ক্ষেত্রে তার উপর প্রাধান্য পেয়েছেন লাপলাস, যিনি স্পেরিক্যাল হারমোনিকসে পরিপূর্ণ আকার দেন ও লিস্ট স্কয়ার মেথডের আনুষ্ঠানিক প্রমাণ উপস্থাপন করেন৷ ইলিপটিক্যাল ইন্টিগরেলের ওপর তার গবেষণার ফলে পরবর্তী সময়ে আবেল ও জ্যাকবি এ ব্যাপারে সুপিরিওর মেথড উদ্ভাবনের সুযোগ পান৷ বলুন তো কে এই গণিতবিদ৷