• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > নিলামের আগেই বিনিয়োগকারীদের সাথে সমঝোতা দরকার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
নিলামের আগেই বিনিয়োগকারীদের সাথে সমঝোতা দরকার
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল ফোন অপারেটরদের জন্য আগামী এপ্রিলে ৫ হাজার কোটি টাকার স্পেকট্রাম তথা তরঙ্গ নিলামের পরিকল্পনা নিয়েছে। এ নিলামে অংশ নিতে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অক্ষমতার কথা জানিয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। এরা বলেছে, বিদ্যমান কিছু বিষয়ে সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ ও ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের এ নিলামে অংশ নেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। গত ১ মার্চ দেশের শীর্ষস্থানীয় চার মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রধান অংশীদার টেলেনর, আজিয়াটা, ভিমপেলকম ও ভারতীয় এয়ারটেল কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা/চেয়ারম্যান এ অক্ষমতার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে। এ চিঠির অনুলিপি গত ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, টেলিযোগাযোগ সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যানকে দেয়া হয়েছে।
এ চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘২০০৩ সালে থ্রিজির জন্য ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ নিলামের সময় সিম প্রতিস্থাপন ও তরঙ্গের ভ্যাটসহ ট্যাক্সসংক্রান্ত কিছু বিরোধ নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে- এমন প্রতিশ্রম্নতির ভিত্তিতে ওই নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ ছাড়া বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নীতিমালা হালনাগাদ, প্রযুক্তি নিরপেক্ষ তরঙ্গ বরাদ্দসহ তরঙ্গের রোডম্যাপ প্রস্ত্তত এবং এসবের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার পথ সুগম করার কাজগুলো সম্পন্ন হয়নি। একটি প্রগতিশীল শুল্কনীতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা যায়- এমন একটি নিয়ন্ত্রণ পরিবেশ বিনিয়োগকারীদের আস্থা বজায় রাখতে পারে। আমরা আশা করছি, এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং এটি এই নিলামে অর্থাৎ এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় নিলামে অংশ নেয়ার বিষয়ে আমাদের অপারেটরদের এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।’
চিঠিতে মোবাইল অপারেটর রবির প্রধান অংশীদার আজিয়াটা গ্রুপের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ সিইও দাতো শ্রী জামাল উদ্দিন আব্রাহিম, গ্রামীণফোনের প্রধান অংশীদার টেলেনর গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ সিইও জন ফ্রেডারিক বাকসাস, বাংলালিংকের প্রধান অংশীদার ভিমপেলকমের চেয়ারম্যান সুনীল মিত্তাল স্বাক্ষর করেন।
আগামী ৩০ এপ্রিল এ নিলাম অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নিলামে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিতে অক্ষমতার কথা জানানোর পর বিটিআরসি কী করবে- সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। বিটিআরসির পরিকল্পনা মতো এপ্রিলের এই নিলামে ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রতিযোগিতা না হলে এ ক্ষেত্রে সরকার ন্যায্যমূল্য পেতে ব্যর্থ হবে- এমন আশঙ্কাই প্রবলভাবে থেকে গেছে। এ বিষয়ে বিটিআরসির প্রকাশিত নীতিমালায় বলা হয়েছে- যেসব অপারেটরের অনুকূলে জিএসএম ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ২০ মেগাহার্টজ বা এর চেয়ে বেশি তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া আছে, তারা এই নিলামে অংশ নিতে পারবে না। তবে প্রথম ধাপে নিলাম হওয়ার সময় যদি কোনো তরঙ্গ ব্লক বিক্রি না হয়, তবে পরবর্তী ধাপে নিলাম হবে। সে ক্ষেত্রে যাদের অনুকূলে ২০ মেগাহার্টজ বা এর চেয়ে বেশি তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া আছে, তারাও এতে অংশ নিতে পারবে। এ নীতিমালা অনুসারে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের এ নিলামে অংশ নিতে পারার বিষয়টি অনিশ্চিত। গ্রামীণফোনের বর্তমানে ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের ২২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। অন্যদিকে এই দুই মেগাহার্টজ ব্যান্ডে বাংলালিংকের ১৫, রবির ১৪.৯, এয়ারটেলের ১৫ ও টেলিটকের ১৫.২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। অর্থাৎ খসড়া নীতিমালা অনুসারে এ নিলামে একমাত্র গ্রামীণফোনকেই অযোগ্য করে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে, অথচ সংশ্লিষ্ট অনেকের মতে, দেশে গ্রামীণফোনের গ্রাহকই সবচেয়ে বেশি। ফলে এর প্রয়োজন বেশি তরঙ্গ। অন্যথায় এক সময় গ্রামীণফোনের গ্রাহকেরা পর্যাপ্ত তরঙ্গের অভাবে প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন। অথচ গত ৪ ডিসেম্বর বিটিআরসির ১৭৫তম সভায় মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান উন্নত করার কারণ দেখিয়েই নিলামের মাধ্যমে এই তরঙ্গ বরাদ্দের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়।
এর আগে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশ্য আলোচনার মাধ্যমে তরঙ্গ নিলামের আয়োজন করার আহবান জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দেয় মোবাইল অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএ। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এ চিঠি পাঠানো হয়। এ চিঠিতে জিএসএমএ নানা দাবির কথা মন্ত্রণালয়কে জানায়। আমরা মনে করি, এই দুটি চিঠির বিষয়াবলিকে সরকারকে গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে মোবাইল অপারেটরদের সাথে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করেই এই নিলাম আয়োজন করলে সরকার যেমন উপকৃত হবে, তেমনি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষেত হবে। আশা করব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - মার্চ সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস