• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > কোয়ান্টাম তথ্য সংরক্ষণে নতুন দিগন্ত
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কাজী শামীম আহমেদ
মোট লেখা:৯
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
কমপিউটার
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
কোয়ান্টাম তথ্য সংরক্ষণে নতুন দিগন্ত
কমপিউটার প্রযুক্তি নিয়ে বিশ্বব্যাপী চলছে নানা গবেষণা। ফলে প্রতিনিয়ত কমপিউটিংয়ে যুক্ত হচ্ছে নতুন মাত্রা। তবে কমপিউটিং ডিভাইসের ক্ষেত্রে গবেষকেরা দীর্ঘদিন থেকেই বলে আসছেন কোয়ান্টাম কমপিউটারের কথা। প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা বলছেন বাস্তব কাজে ব্যবহারোপযোগী কোয়ান্টাম কমপিউটার সাধারণভাবেই কমপিউটিংয়ের অভিজ্ঞতাকে বদলে দেবে। শুধু তাই নয়, সাধারণ ডেস্কটপ কমপিউটারের আদলে তৈরি কোয়ান্টাম কমপিউটারে সুপারকমপিউটারের গতি মিলবে বলেও জানিয়েছেন তারা। আইবিএম, গুগল, মাইক্রোসফটের মতো শীর্ষস্থানীয় সব প্রযুক্তি কোম্পানি তাই কোয়ান্টাম কমপিউটার তৈরির গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে নিবিড়ভাবে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির (ইউএনএসডবিস্নউ) গবেষকেরা তড়িৎক্ষেত্র ব্যবহার করে সিলিকনের মধ্যে কোয়ান্টাম তথ্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রথমবারের মতো ইলেকট্রিক্যাল পালসের মাধ্যমে সিলিকনের মধ্যে ইলেকট্রন কণা নিয়ন্ত্রণের এই নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবনের ফলে কোয়ান্টাম কমপিউটারের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল প্রযুক্তি।
আমাদের ব্যবহৃত সাধারণ কমপিউটারে হার্ডড্রাইভ ও ট্রানজিস্টরের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু কোয়ান্টাম কমপিউটারে এই তথ্য সংরক্ষিত হবে মাইক্রোস্কোপিক (অণুবীক্ষণিক) বস্ত্তর কোয়ান্টাম দশায়, যাকে বলা হয় কোয়ান্টাম বিট বা কিউবিট। গবেষকেরা প্রমাণ করে দেখান, প্রচলিত পদ্ধতির স্পন্দনরত চৌম্বকক্ষেত্রের পরিবর্তে তড়িৎক্ষেত্রের মাধ্যমেই খুব সুসংগত কোয়ান্টাম বিট, যেমন একটি ফসফরাস পরমাণুর ঘূর্ণন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অর্থাৎ, সাধারণ ইলেকট্রিক্যাল পালসের মাধ্যমে কিউবিটকে পৃথক পৃথকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে তড়িৎক্ষেত্রের মাধ্যমে পরমাণুর ইলেকট্রন মেঘকে বিকৃত করে ইলেকট্রনের যে ফ্রিকোয়েন্সিতে সাড়া দেয় তা পরিবর্তন করা হয়। যার ফলে খুব সহজেই কোন কিউবিটটি চালিত হবে তা নির্ধারণ করা যায়। বিষয়টি অনেকটা নব ঘুরিয়ে এফএম রেডিও স্টেশন টিউন করার মতো, যেখানে নব হচ্ছে প্রযুক্ত ভোল্টেজ। প্রচলিত পদ্ধতির মাইক্রোওয়েভ পালসের তুলনায় খুব কম ভোল্টেজেই এই ইলেকট্রিক্যাল পালস তৈরি করা যাবে এবং এতে খরচও খুব কম। এছাড়া বর্তমানের কমপিউটার তৈরিতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার হয় তা দিয়েই যেকোনো কিউবিট তৈরি করা যাবে, যার ফলে কম সময়েই নতুন এ পদ্ধতিটির আরও উন্নয়ন করা যাবে।
এর মধ্যে সম্প্রতি আইবিএম জানিয়েছে, বাস্তবভিত্তিক কাজে সক্ষম কোয়ান্টাম কমপিউটার তৈরিতে তারা শক্তিশালী দুটি প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম প্রতিবন্ধকতা হলো একই সাথে দুই ধরনের ‘কোয়ান্টাম এরর’ শনাক্ত করতে পারা। এই দুই ধরনের এরর হলো ‘বিট-ফ্লিপ’ ও ‘ফেজ-ফ্লিপ’। এতদিন পর্যন্ত একই সময়ে এই দুই ধরনের এররের মধ্যে মাত্র এক ধরনের এরর শনাক্ত করা যেত। তাপমাত্রা, তেজস্ক্রিয়তা ও গাঠনিক খুঁতের কারণে এই ধরনের এররগুলো তৈরি হয়ে থাকে। প্রসেসরে এই ধরনের উপাদানের উপস্থিতি থাকতে পারে। প্রচলিত বিট সিস্টেমে ‘০’ বা ‘১’ মান থাকে। কিন্তু কোয়ান্টাম কমপিউটিংয়ের কিউবিটে দুটি মান একই সাথে উপস্থিত থাকতে পারে। ফলে কোয়ান্টাম কমপিউটারের গতি হবে অনেক বেশি। একই সাথে দুই ধরনের এরর শনাক্ত করার সুবিধা মূলত একে কাজ করার উপযোগী করতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে আইবিএম। আইবিএমের দ্বিতীয় সাফল্য হলো এক ইঞ্চির চার ভাগের এক ভাগ আকৃতির একটি ল্যাটিসে চারটি কোয়ান্টাম বিটের সার্কিট তৈরি করতে সক্ষম হওয়া। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে সিলিকনের ওপরই কিউবিট তৈরি করা সম্ভব হবে। আর তা হলেই কোয়ান্টাম কমপিউটার তৈরির কাজটি বাস্তবতার মুখ দেখার দিকে অনেকখানি এগিয়ে যাবে। আর তখন মাত্র ৫০-কিউবিটের একটি কোয়ান্টাম কমপিউটারেই পাওয়া যাবে সুপারকমপিউটারের গতি।
রিসার্চ টিমের প্রধান ইউএনএসডবিস্নউর ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আন্দ্রে মরিলো জানান, গবেষণায় তারা কোয়োবিটসমূহকে তড়িৎক্ষেত্র দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে বিশুদ্ধ সিলিকন-২৮ আইসোটোপের পাতলা একটি স্তরে সফলভাবে স্থাপন করেছেন। ব্যবহৃত সিলিকন আইসোটোপ পুরোপুরিভাবে অচৌম্বকীয়, যা কিউবিটকে কোনোভাবে প্রভাবিত করে না। এই গবেষণায় ব্যবহৃত বিশুদ্ধ সিলিকন সরবরাহ করেন জাপানের কিয়ো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কোহেই ইটোহ। গবেষণা প্রবন্ধটি ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ নামে জার্নালে প্রকাশিত হয়। গবেষক দলটি এআরসি সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর কোয়ান্টাম কমপিউটেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির সহযোগী একটি দল। এই দলটি ২০১২ ও ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো সিলিকনে একক পরমাণুর ঘূর্ণন কিউবিট প্রদর্শন করে। এছাড়া তারা গত বছর কিউবিটের সর্বোচ্চ ৯৯ শতাংশ অ্যাকুরেসি ও দীর্ঘতম সময় ধরে এর সংরক্ষণের রেকর্ড গড়েছিল

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - জুন সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস