• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > নিজেকে গড়ে তুলুন সফল সিস্টেম অ্যানালিস্ট
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: আতিকুজ্জামান লিমন
মোট লেখা:১৮
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - এপ্রিল
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইসিটি
তথ্যসূত্র:
ক্যারিয়ার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
নিজেকে গড়ে তুলুন সফল সিস্টেম অ্যানালিস্ট
প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে প্রযুক্তিনির্ভর চাকরির বাজার। বর্তমানে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় লাভবান হওয়ার জন্য সামাজিক মিডিয়া ম্যানেজারের মতো নতুন নতুন পদ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এটি ওয়েবসাইটের প্রতারণা, ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলা ও তত্ত্বাবধান থেকে শুরু করে দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে থাকে, যা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যবসায়ের দিকে মনোযোগী হতে সাহায্য করে। প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের অনেকেই এখন নিজ নিজ ওয়েবসাইট ও ইন্টারনেটের ওপর নির্ভর করেন, যার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যা প্রতিষ্ঠানের মুনাফা বাড়াতেও সহযোগিতা করছে।
বর্তমানে অনেক আকর্ষণীয় প্রযুক্তির কাজে মানুষ যুক্ত হচ্ছে। তেমনি কিছু প্রযুক্তিনির্ভর চাকরির বিবরণ, কাজের ধরন, নিজেকে কীভাবে এসব কাজের জন্য গড়ে তুলতে হবে, তার বিস্তারিত ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হবে। এবারের বিষয়- একটি আইটি ডিগ্রি কর্মজীবনের প্রযুক্তিনির্ভর ভিন্ন ভিন্ন পেশায় প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। দক্ষতা ও কাজের পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে চাকরি শুরু করতে হয়। কমপিউটার সিস্টেম অ্যানালিস্ট একটি সমৃদ্ধ আইটি ক্যারিয়ার, যা বিশ্ব বাণিজ্যের ওপর প্রচ- নির্ভরশীল।
কমপিউটার সিস্টেম অ্যানালিস্ট হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি এবং ব্যবসায়ের একটি মেলবন্ধন। কমপিউটার সিস্টেম ডিজাইন ও বিজনেস প্রসেস ডিজাইনের জন্য একজন সিস্টেম অ্যানালিস্টকে তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এবং তাদের গ্রাহকদের সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। এই পেশার অনেকগুলো দায়িত্ব থাকে। যদিও প্রথম কাজ হচ্ছে ক্লায়েন্টের ব্যবসায় সম্পর্কে বুঝতে হয়। সে ব্যবসায়ের ধরন ও অবস্থান সম্পর্কে এবং আরও জানতে হয় সব ব্যবহৃত প্রযুক্তি সম্পর্কে। কমপিউটার সিস্টেমকে সাহায্য করার জন্য ব্যবসায়ের ধরন অনুযায়ী হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও নেটওয়ার্ক চালানোর জন্য সর্বাধিক দক্ষতা এবং কার্যকরভাবে ব্যবসায় কোনটি বিশেষভাবে দরকার, তা আয়ত্ত আনতে হবে।
অ্যানালিস্টের কাজ শুধু গবেষণায় সীমাবদ্ধ থাকে না। তাদেরকে ব্যবসায়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব করে লাভের দিকটিও খেয়াল রাখতে হয়। যদি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকদের অনুমোদন পাওয়া যায়, তখন এরা নতুন সিস্টেম আপগ্রেড ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে কাজ করবেন। সিস্টেম পরীক্ষা করবেন এবং প্রতিষ্ঠানের অন্য সবাইকে প্রশিক্ষণ দেবেন। টেস্টের সময় যদি কোনো ভুল ধরা পরে, তবে সিস্টেম অ্যানালিস্ট সমস্যার সমাধান করবেন। অন্য পেশার সাথে এই পেশার তফাত হচ্ছে এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। এই পেশায় কাজ করতে হলে প্রতিষ্ঠানের সব বিভাগের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হয় এবং প্রতিটি বিভাগের কাজের সাথে নিজেকে পরিচিত থাকতে হয়।
অনেক অ্যানালিস্ট শুধু কমপিউটার সিস্টেম ডিজাইনের জন্য কাজ করেন। আবার অনেকে বিজ্ঞান থেকে স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাকিং থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজেদের যুক্ত করছেন এবং প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। সিস্টেম অ্যানালিস্টের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তথ্যপ্রযুক্তির সাথে পালস্না দিয়ে তাদের চাহিদা অনেক। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুারোর এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ২৪.৫ শতাংশ কর্মসংস্থান বেড়েছে, যা ২০১২-২০২২ সালের জন্য ১ লাখ ২৭ হাজার ৭০০ নতুন চাকরি তৈরি করবে। বেতনের দিক চিন্তা করলে প্রযুক্তি খাতে সর্বাধিক বেতন একজন দক্ষ অ্যানালিস্টকে দেয়া হয়।
প্রশিক্ষণ
এ পেশায় আসার ক্ষেত্রে ইনফরমেশন সায়েন্সে সণাতক ডিগ্রিধারীদের বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। এই প্রোগ্রামের ছাত্রদের ধাপে ধাপে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডাটাবেজ ডিজাইন, মনোবিজ্ঞান থেকে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত শিক্ষা দেয়া হয়ে থাকে। একই সাথে ইনফরমেশন সায়েন্সে পড়ার ফলে একজন ছাত্র ব্যবসায় সম্পর্কেও বিশদ ধারণা পেয়ে থাকে। যাই হোক, আপনি কমপিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করেও এই পেশায় সংযুক্ত হতে পারেন। কিছু কিছু নিয়োগকর্তা আবেদনকারীদের কাছে ব্যবসায় প্রশাসনে মাস্টার্স ডিগ্রি আছে কি না তা দেখে, কেননা এটি ইনফরমেশন সিস্টেমের সাথে সম্পৃক্ত।
কমপিউটার সিস্টেম অ্যানালিস্ট সম্পর্কিত পেশা
কমপিউটার ও ইনফরমেশন সিস্টেমস ম্যানেজার, কমপিউটার প্রোগ্রামার, কমপিউটার সায়েন্স শিক্ষক, সফটওয়্যার ডেভেলপার, কমপিউটার সাপোর্ট স্পেশালিস্টড, ম্যানেজমেন্ট অ্যানালিস্ট, ইনফরমেশন সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট, ওয়েব ডেভেলপার, কমপিউটার নেটওয়ার্ক আর্কিটেক ইত্যাদি।
পর্যালোচনা ও পরামর্শ
সণাতক বা মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের জন্য যখন আপনি পড়াশোনা করবেন, তখন অবশ্যই বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তা কতখানি সিস্টেম অ্যানালাইসিস সম্পৃক্ত। নিয়োগকর্তারা ডিগ্রি ছাড়াও সমস্যা সমাধান, বিশ্লেষণমূলক জ্ঞান, অন্যদের সাথে কাজের অভিজ্ঞতাগুলো দেখে থাকেন। কমপিউটার সিস্টেম অ্যানালিস্টকে ব্যবসায় বা প্রতিষ্ঠানের কী ধরনের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন করা উচিত সে বিষয়ে গবেষণা করতে হয়। ওয়েবভিত্তিক বেশ কিছু পোর্টালে ছাত্রদের শিক্ষা গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করার পরামর্শ দিয়ে থাকে, যা সণাতক ডিগ্রি অর্জনের পর কাজ শুরুতে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে
এ পেশায় আসতে হলে একজন আবেদনকারীকে সিস্টেমের সমস্যা সমাধানে পারদর্শী হতে হবে। সিস্টেম ডিজাইন, মান পরীক্ষা ও সমাধানেও হতে হবে দক্ষ। শুধু পুঁথিগত পড়ালেখা করে একজন ভালোমানের অ্যানালিস্ট হওয়া সম্ভব নয়, সাথে সাথে নিজের দক্ষতা প্রমাণের জন্য ব্যবহারিক ও হাতে-কলমে কাজের আগ্রহ থাকতে হবে। নিজেকে প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে চলতে-শিখতে হবে। তবেই সে একজন দক্ষ কমপিউটার অ্যানালিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।
ড. মো: মাহফুজুর রহমান
চেয়ারপারসন, সিএসসি ডিপার্টমেন্ট
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
কাজের তালিকা
* প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপিউটারের সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেয়া।
* কমপিউটার প্রোগ্রাম ও সিস্টেম ইনস্টল পরীক্ষা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নজরদারিতে রাখা।
* অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার। একই সাথে অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রসেস এবং মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার।
* ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাব রাখা।
* সিস্টেমের নিয়মনীতি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা।
* কর্মীদের সাক্ষাৎকার বা জরিপ, কর্মক্ষমতা নিরীক্ষণ করা বা প্রসেস করা এবং কীভাবে করতে হবে তা নির্ধারণ করা।
* কমপিউটার সফটওয়্যার অথবা হার্ডওয়্যার ইনস্টল ও বিকল্প সিস্টেম তৈরি করা।
* কর্মচারী ও ব্যবহারকরীদের সিস্টেম ও প্রোগ্রাম সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
ফিডব্যাক : infolimon@gmail.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - এপ্রিল সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস