লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
১০ লাখ শিশুকে প্রোগ্রামিং ডিভাইস দেবে বিবিসি
প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষতা বাড়াতে ‘মেক ইট ডিজিটাল’ প্রোগ্রামের আওতায় ১০ লাখ শিশুকে ‘মাইক্রো বিট’ কমপিউটার নামের একটি ছোট প্রোগ্রামিং ডিভাইস দেবে বিবিসি। আর এই ডিভাইস তৈরি করতে ২৫টি কোম্পানির সাথে এক আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে এই ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা।
কার্যক্রমের সঙ্গে গুগল, মাইক্রোসফট, স্যামসাং, বিটি, কোড ক্লাব, টিন টেক, অ্যাপস ফর গুড অ্যান্ড কোড ক্লাবের মতো ৫০টি জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। কার্যক্রমটিকে জনপ্রিয় করতে বিভিন্ন পদক্ষেপও নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাজ্যে কোডার ও প্রোগ্রামার সঙ্কট নিরসনে এবং ডিজিটাল কার্যক্রম ত্বরানিত করতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বিবিসির দেয়া তথ্যানুযায়ী, ১১-১২ বছর বয়সী শিশুদের মাঝে এই ডিভাইস বিতরণ করা হবে। এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো শিশুদের বেসিক প্রোগ্রামিং সম্পর্কে জ্ঞান দান করা এবং প্রোগ্রামিংয়ে আগ্রহী করে তোলা, পরবর্তীতে তারা যেন আরও উন্নত হার্ডওয়্যার যেমন- আরুডিনো, ক্যানো ও রাস্পবেরি পাই প্রভৃতি ডিভাইসের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এ উদ্যোগের মাধ্যমে শিশুদের কোডিং শেখাতে কমপিউটার বিতরণের এ কার্যক্রম বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
ছোট্ট মাদারবোর্ডের ওই কমপিউটারগুলো ক্ষুদে কমপিউটার রাস্পবেরি পাইয়ের মতো। এগুলো দিয়ে কোডিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলো সহজেই শেখা যাবে। টাচ ডেভেলপ, পাইথন ও সি++ এই তিন কোডিং ভাষার সহযোগে আগামী সেপ্টেম্বরে আসবে নতুন এই ডিভাইস। ক্ষুদ্র এই ডিভাইস ব্যবহারের জন্য হাতের তালুতে সহজেই মানিয়ে যাবে। শিশুরা এলইডি লাইট সিরিজের মাধ্যমে টেক্সট ও মৌলিক গেম সহজে তৈরি করার জন্য এটি ব্যবহার করতে সক্ষম হবে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চূড়ান্ত সংস্করণের ডিভাইসে বস্নুটুথ লিঙ্ক থাকবে এবং দেখতে রাস্পবেরি পাইয়ের মতো হবে। ডিভাইসগুলো কমপিউটারে সংযোগ দিলেই সেগুলো দিয়ে কাজ করতে পারবে শিশুরা। বিবৃতিতে বিবিসির মহাপরিচালক টনি হল জানান, এই ডিজিটাল কার্যক্রমের মাধ্যমে কোডিংও লিখতে শেখার মতো গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক শিক্ষায় পরিণত হবে। গত বছর অ্যাকসেনচুরের ‘এমপ্লয়মেন্ট ট্রেন্ড সার্ভে’ জরিপে দেখা গেছে, ব্রিটিশ সংস্থাগুলো ডিজিটাল দক্ষতা সঙ্কটের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। এ বিষয়ে দক্ষ জনবল বাড়াতে তাগাদা দিয়েছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও চাকরিদাতারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ তরুণদের মধ্যে ডিজিটাল দক্ষতা বাড়ানো ও প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষ জনশক্তির ঘাটতি পূরণ করতে বিশেষ গতি সঞ্চার করবে। নতুন এই ডিভাইসের উৎপাদন কাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে বিবিসি আশা প্রকাশ করে জানিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরের আগেই এটি হাতে পাওয়া যাবে।
বিবিসি মনে করে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যে প্রায় ১৪ লাখ ডিজিটাল প্রফেশনালের প্রয়োজন হবে। কিন্তু দেশটির বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা এই খাতের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাসহ কর্মী তৈরিতে খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না।
এই ডিভাইস উন্নয়নের সাথে জড়িত বিবিসি লার্নিংয়ের গ্যারেথ স্টোকডেল বলেন, বিবিসি ডিজিটাল শিক্ষা নিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে এবং এটি করা সম্ভব হলে আমরা এই খাত থেকে সরে যাব। ১০ লাখ মাইক্রো বিট স্কুলে দেয়া হবে, এর বেশি নয়। এরপর একদিন হয়তো বিবিসি মাইক্রো বিট জাদুঘরে স্থান পাবে।
মেক ইট ডিজিটাল কর্মসূচির কন্ট্রোলার জেসিকা সিসিল বলেন, বিবিসি মাইক্রো বিট কমপিউটার দেয়ার পাশাপাশি বার্মিংহামে ৫ হাজার শিশুকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেবে। এছাড়া টিভি, রেডিও ও অনলাইনের মাধ্যমে প্রোগ্রামিং বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচার করতে শুরু করবে বিবিসি। এছাড়া বিবিসি একাডেমি ৯ সপ্তাহের শিক্ষানবিস প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করবে। এতে ওয়েবসাইট, ওয়েবের উপযোগী ছোট ভিডিও তৈরিসহ বেসিক ডিজিটাল দক্ষতার নানা বিষয় শেখানো হবে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম আরও সৃষ্টিশীল ও প্রযুক্তিমনস্ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে ১৯৮০ সালে একই ধরনের একটি গ্যাজেট তৈরি করেছিল বিবিসি, যার নাম ছিল ‘বিবিসি মাইক্রো’