• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > অ্যাপল টিভির সেটটপ বক্স
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কে এম আলী রেজা
মোট লেখা:১৫৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
হার্ডওয়্যার
তথ্যসূত্র:
হার্ডওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
অ্যাপল টিভির সেটটপ বক্স
অ্যাপল কোম্পানির প্রায় সব পণ্যই সমপর্যায়ের অন্যান্য কোম্পানির পণ্যের তুলনায় বেশি দামি। তবে সম্প্রতি এ ধারার ব্যতিক্রম দেখা গেছে অ্যাপল টিভির ক্ষেত্রে, যার দাম ৯৯ থেকে ৬৯ মার্কিন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে বলা যায়, অ্যাপল টিভি এখন বাজারের সবচেয়ে সস্তা সেটটপ বক্স। তবে এ ধরনের ডিভাইসের ব্যবহার আমাদের দেশে সেভাবে চালু হয়নি।
এখান উল্লেখ করা ভালো, অ্যাপল টিভি হচ্ছে অ্যাপল কোম্পানির একটি বিশেষ ধরনের সেটটপ বক্স, যা একটি টেলিভিশনকে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করার সুযোগ করে দেয় এবং এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের বিভিন্ন কনটেন্ট টেলিভিশনে চালানো যায়। এছাড়া একটি ডিজিটাল সেটটপ বক্স ডিজিটাল টেলিভিশন ব্রডকাস্ট সিগন্যাল রিসিভ ও ডিকোড করতে সক্ষম। এ ধরনের সেটটপ বক্সকে অনেকে শুধু রিসিভার হিসেবেও আখ্যায়িত করেন। এনালগ টেলিভিশন সেটে ডিজিটাল চ্যানেল বা সিগন্যাল চালানোর জন্য সেটটপ বক্সের প্রয়োজন হয়।
একটি আধুনিক সেটটপ বক্সকে একটি বিশেষায়িত কমপিউটারের সাথে তুলনা করতে পারেন, যা ইন্টারনেটের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে সক্ষম। সেটটপ বক্সে রয়েছে একটি ওয়েব ব্রাউজার, যা টিসিপি/আইপি প্রটোকলের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত যেকোনো হাইপার টেক্সট কনটেন্ট ওয়েব সার্ভার থেকে ব্রাউজ করতে পারে। সেটটপ বক্স টেলিফোন লাইন বা ক্যাবলের মাধ্যমে কাঙিক্ষত সার্ভিস প্রোভাইডারের সাথে টেলিভিশনকে যুক্ত করে থাকে। এর ফলে টেলিভিশনে স্যাটেলাইট চ্যানেলের পাশাপাশি ওয়েবভিত্তিক টিভি চ্যানেল দেখার সুযোগ তৈরি হয়।
শুরু থেকেই অ্যাপল টিভি নামের সেটটপ বক্সটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই এ ডিভাইসটি অ্যাপল কোম্পানি আপগ্রেড করছে এবং এর সাথে যুক্ত করা হচ্ছে আকর্ষণীয় সব নতুন ফিচার। আর দাম কমানোর ফলে প্রতিযোগিতার বাজার অ্যাপল টিভিকে ইউজারদের মধ্যে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
বর্তমানে বাজারে যে অ্যাপল টিভি ডিভাইস পাওয়া যাচ্ছে তা দেখতে হুবহু এর আগের মডেলের মতোই। তবে এটি সব ফরম্যাটের (বিশেষ করে ১০৮০ পিক্সেল) হাইডেফিনেশনের ভিডিও সাপোর্ট করে। এ ভিডিওগুলো আইটিউন বা আইপ্যাড থেকে স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেটে পাওয়া যেতে পারে। এখানে বলে রাখা ভালো, সব হাইডেফিনেশন ভিডিও কিন্তু ১০৮০ পিক্সেল ফরম্যাটের নয়। অনেক হাইডেফিনেশন ভিডিও রয়েছে যেগুলো ৭২০ পিক্সেল ফরম্যাটের। অ্যাপল টিভির সেটিং অ্যাপসের মধ্যে আইটিউন স্টোর সেকশনে গিয়ে ভিডিও রেজ্যুলেশন ১০৮০ পিক্সেল, ৭২০ পিক্সেল বা স্ট্যান্ডার্ড ডেফিনেশনে সেট করে দেয়া যায়।
অন্যান্য সেটটপ বক্সের তুলনায় অ্যাপল টিভির সুবিধা হচ্ছে এর মাধ্যমে সহজেই ইন্টারনেট থেকে অ্যাপলের নিজস্ব অডিও-ভিডিও কনটেন্ট যেমন আইটিউন মিউজিকে অ্যাক্সেস করা যায়। এছাড়া আইক্লাউডে সংরক্ষিত ব্যক্তিগত ফটো ও ভিডিও অ্যাক্সেস সুবিধা অ্যাপল টিভি আপনাকে দিচ্ছে। ম্যাক কমপিউটার ইউজারেরা ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যেমে আইটিউন কনটেন্ট তাদের কমপিউটারে স্ট্রিমিং করতে পারেন। এ সুবিধা শুধু অ্যাপল টিভি সেটটপ বক্সেই পাওয়া যাবে।
অ্যাপল টিভি এয়ারপ্লে (AirPlay) অপশন সাপোর্ট করে। এখানে উল্লেখ্য, এয়ারপ্লে হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা, যা ইউজারকে আইফোন ও আইপ্যাড অ্যাপস থেকে অডিও-ভিডিও কনটেন্ট তার অ্যাপল ডিভাইসে চালানোর সুযোগ দেয়। এছাড়া এ ফিচারটি ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম চালিত ডিভাইসে কনটেন্ট মিররিং বা ডিসপ্লে করতে পারে।
অ্যাপল মিউজিক সাবস্ক্রিপশন স্ট্রিমিং সার্ভিসের জন্য একটি নিজস্ব অ্যাপল টিভি অডিও অ্যাপস চালু করা হচ্ছে। আরও জানা গেছে, পরবর্তী সময়ে অ্যাপল টিভি সাবস্ক্রিপশন ভিডিও সার্ভিস নামে আরও একটি অ্যাপস যুক্ত করা হবে। অ্যাপল টিভির আরও একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একে আপনি স্মার্টহোম পণ্যের জন্য একটি রিমোট হাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ রিমোট হাবের সাহায্যে ঘরে ব্যবহার হওয়া বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যেমন বাতি, এসি, টিভি, ফ্রিজ ঘরের বাইরে থেকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এর বাইরেও অ্যাপল টিভি আপনার ডিভাইসের চাহিদা মতো যেকোনো ডিজিটাল আউটপুট সিগন্যাল সরবরাহ করতে পারে।
অ্যাপলের নিজস্ব অ্যাপস ও সার্ভিসের বাইরে চলে গেলে অ্যাপল টিভির সুবিধা ততটা অনুধাবন করা যায় না। অ্যাপল স্টোরের বাইরে অ্যাপল টিভির জন্য অ্যাপস ও সার্ভিসের সংখ্যা সীমিত। এছাড়া বাইরের অ্যাপসগুলো অনেক সময় অ্যাপল টিভির জন্য অসম্পূর্ণ ও মানসম্মত নয়। অ্যাপল স্টোরের বাইরে অ্যাপল টিভির জন্য উপযোগী বহুল ব্যবহৃত ও গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপসের সন্ধান মেলা কঠিন হয়ে পড়ে। যারা শুধু অ্যাপলভিত্তিক অ্যাপসের ওপর নির্ভর করেন, তাদের জন্য এগুলো হয়তো কোনো বড় সমস্যা নয়।
বর্তমানে অ্যাপল টিভি ডিভাইস বা হার্ডওয়্যারে ব্যবহারের জন্য অনেক আধুনিক ফিচার, যেমন ভয়েস সার্চ ও পূর্ণাঙ্গ অ্যাপল স্টোরের ঘাটতি রয়েছে। তবে অ্যাপল টিভির পরবর্তী আপগ্রেডেশনে এ ঘাটতিগুলো পূরণ করা হবে বলে ইউজারেরা আশা করতে পারেন। অনেকেই, বিশেষ করে যারা অ্যাপল পণ্যের ভক্ত, আশা করছেন খুব শিগগিরই অ্যাপল টিভি নিজেকে সবচেয়ে ভালো টেলিভিশন সেট ইউজার ইন্টারফেস ডিভাইস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে।
আবার অন্যদের মতে, অ্যাপল টিভির অগ্রযাত্রায় অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে দেখা দিতে পারে এর অ্যাপস ভা-ারের সীমাবদ্ধতা। কারণ, এতে থার্ড পার্টি কনটেন্ট বা অ্যাপস প্রোভাইডারের সংখ্যা খুব কম। নিজস্ব অ্যাপসের বাইরে খুব সীমিত সংখ্যক অ্যাপস অ্যাপল অনুমোদন করে থাকে। এখন পর্যন্ত অ্যাপলের নিজস্ব অ্যাপস ভা-ার ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ হতে পারেনি। থার্ড পার্টি অ্যাপস ডেভেলপার ছাড়া এ ভা-ারকে এগিয়ে নেয়া অ্যাপলের পক্ষে কঠিন হতে পারে। অনেকের মতে, বেশিসংখ্যক থার্ড পার্টি অ্যাপস ও সার্ভিস ব্যবহারের সুযোগ দিলে শুধু অ্যাপল টিভি নয়, অ্যাপলের অন্যান্য ডিভাইসের উপযোগিতা ও জনপ্রিয়তা দুটোই আগামী দিনগুলোতে বাড়বে
ফিডব্যাক : kazisham@yahoo.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - সেপ্টেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস