• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ইন্টেল-মাইক্রনের গবেষণায় থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সোহেল রানা
মোট লেখা:৪০
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ইন্টেল
তথ্যসূত্র:
দশদিগন্ত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ইন্টেল-মাইক্রনের গবেষণায় থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরি
দীর্ঘ ২৫ বছর পর এবার ইন্টেল ও মাইক্রনের যৌথ গবেষণায় উদ্ভাবন হয়েছে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের নন-ভোলাটাইল মেমরি প্রযুক্তি- থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরির। যেকোনো ধরনের কমপিউটারের জন্যই একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ হলো মেমরি। প্রসেসরের ক্যাশ মেমরি, র্যা নডম অ্যাকসেস মেমরি (র্যা ম), রিড অনলি মেমরি (রম)- এগুলো সবই মেমরিরই রকমফের। এছাড়া যেকোনো ধরনের স্টোরেজও মূলত মেমরি। একটা সময় পর্যন্ত ম্যাগনেটিক ডিস্ককে নির্ভর করে তৈরি হতো মেমরি ডিভাইস। গতির দিক থেকে তা ছিল খুবই ধীর। বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ গবেষণায় ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমরির আবির্ভাব মেমরিতে যোগ করে দারুণ গতি। আজকের দিনে বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ (পেনড্রাইভ নামে পরিচিত) থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সলিড স্টেট ড্রাইভ (এসএসডি) সবই নন-ভোলাটাইল ধরনের ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমরি প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেই তৈরি।
ইন্টেল ও মাইক্রনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষের দিকেই থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরি প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে কিছু ডিভাইস পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হবে। সুনির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির জন্য মূলত তৈরি করা হবে এসব ডিভাইস। এছাড়া ইন্টেল ও মাইক্রন পৃথকভাবে এই প্রযুক্তির কিছু কিছু পণ্য তৈরি করতে থাকবে। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা এই প্রযুক্তির খরচ প্রচলিত স্টোরেজ বা মেমরির তুলনায় বেশি থাকায় এখনই এর বহুল ব্যবহারও সম্ভব হবে না। তাই বর্তমান স্টোরেজ ও মেমরি ডিভাইসের পাশাপাশি থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরির ব্যবহার চলতে থাকবে। সে ক্ষেত্রে কমপিউটারের মূল গাঠনিক কাঠামোতে এর গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান লক্ষ করা যেতে পারে। কমপিউটার পরিচালনার জন্য যেসব তথ্য জরুরি, সেগুলো যেন থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরিতে অবস্থান করে, সেটি নিশ্চিত করা গেলে কমপিউটার পরিচালনার গতি অনেকটাই বেড়ে যাবে। আবার ফোরকে রেজ্যুলেশন পেরিয়ে এইটকে রেজ্যুলেশনের গেম নিয়ে যারা কাজ করছেন, তারাও থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরি ব্যবহারে আগ্রহী হবেন বলে ধারণা করছেন প্রযুক্তি বিশেস্নষকেরা। বছর পাঁচেক পর থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরি সাধারণ মানুষের হাতে চলে আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
সময়ের সাথে সাথে কমপিউটারের ব্যবহার বেড়েছে নানাভাবে। ইন্টারনেটের আবির্ভাবের পর ডাটার পরিমাণও বেড়েছে বহুগুণে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইন্টারনেট অব থিংসের কল্যাণে কানেক্টেড ডিভাইসের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়তে শুরু করায় এই ডাটার পরিমাণ বাড়ছে লাগামহীনভাবে। তাছাড়া মাল্টিমিডিয়ার উন্নয়নের সাথে সাথে গ্রাফিক্যাল বিভিন্ন ডাটার আকারও বাড়ছে। আধুনা ফোরকে রেজ্যুলেশনের আগমনে এখন ভিডিও ফাইল বা গেমগুলোর আকার আগের হাই-ডেফিনিশন রেজ্যুলেশনের ফাইলে চেয়ে চারগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। এতসব ডাটাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে গেলে এগুলোকে যেমন সংরক্ষণ করার জন্য প্রয়োজন বাড়তি স্টোরেজ, তেমনি এগুলোকে চালানো ও বিশেস্নষণ করার প্রক্রিয়াও হতে হবে দ্রুত। কিন্তু মেমরির ক্ষেত্রে সাধারণ একটি ধর্ম হলো এর আকার যত বড় হবে, এর গতি তত কমবে। আবার বাড়তি আকারের মেমরির জন্য প্রয়োজন বাড়তি পাওয়ার এবং এর খরচও তাতে বেড়ে যায়। ফলে ব্যাপক পরিমাণ ডাটার সাথে খাপ খাইয়ে চলতে ডিভাইস নির্মাতাদের স্টোরেজ ও মেমরি ডিভাইস তৈরি, এর পারফরম্যান্স বজায় রাখা এবং এর উৎপাদন খরচের সমন্বয় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ উত্তরণে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরি প্রযুক্তি। এগুলোতে এখনকার সর্বোচ্চ গতিশীল ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমরির চেয়ে যেমন এক হাজার গুণ বেশি গতি পাওয়া যাবে, তেমনি এগুলোর স্থায়িত্বও হবে এখনকার ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমরির চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি।
থ্রিডি ক্রসপয়েন্ট মেমরি প্রযুক্তির নামটি নেয়া হয়েছে এর গাঠনিক প্রক্রিয়া থেকে। এই মেমরিতে ব্যবহার করা হয়েছে থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক কাঠামো। বেশ কিছু তারের কয়েকটি স্তরে বিন্যস্ত এই মেমরি। এর কাঠামোর প্রতিটি স্তরে তারগুলো পরস্পরের সাথে সমান্তরালে অবস্থান করে। কিন্তু সেই স্তরটি আবার এর নিচের আরেকটি স্তরের সাথে অবস্থান করে সমকোণে। এই স্তরগুলোর মাঝখানে আবার রয়েছে সাব-মাইক্রোস্কোপিক কলাম, যা আগের দুই স্তরের তারগুলোর সংযোগস্থলগুলোকে সংযুক্ত করে রাখে। এই কলামগুলোতে থাকে ‘মেমরি সেল’, যা একক বিট ডাটা সংরক্ষণ করতে পারে। বাইনারিতে এই ডাটা ‘০’ বা ‘১’ হতে পারে। কলামগুলোতে একটি করে ‘সিলেক্টর’, যা কোনো সুনির্দিষ্ট মেমরি সেলের তথ্য পড়তে পারে বা ওই সেলে তথ্য লিখতে পারে। কাঠামোর তারগুলোর ভোল্টেজের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে এই সিলেক্টর সুনির্দিষ্ট মেমরি সেলে কাজ করতে পারে। এর ত্রিমাত্রিক কাঠামোর কারণে ডাটা রিড ও রাইটে গতি পাওয়া যায় এখনকার মেমরির তুলনায় দ্রুত। ইন্টেল ও মাইক্রন জানিয়েছে, দুই স্তরের একটি মেমরি ডাইয়ে ১২৮ বিলিয়ন মেমরি সেল অবস্থান করে। ফলে একটি ডাইয়েই ১২৮ গিগাবিট স্টোরেজ তৈরি হয়। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে গেলে মেমরির স্তর বাড়ানো সম্ভব এবং প্রতিটি ডাইয়ে আরও বেশি স্টোরেজ যুক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে ইন্টেল ও মাইক্রন

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - সেপ্টেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস