• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > অভাবনীয় সাফল্য ও সম্ভাবনা সৃষ্টি করে লন্ডনে শেষ হলো দ্বিতীয় ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স ফেয়ার মেলায় ৩ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগের প্রত্যাশা চুক্তি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সোহেল রানা
মোট লেখা:৪০
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ই-কমার্স
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
অভাবনীয় সাফল্য ও সম্ভাবনা সৃষ্টি করে লন্ডনে শেষ হলো দ্বিতীয় ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স ফেয়ার মেলায় ৩ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগের প্রত্যাশা চুক্তি
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ : অ্যা ল্যান্ড অব অপরচুনিটি’ স্লোগানকে ধারণ করে গত ১৩-১৪ নভেম্বর অভাবনীয় সাফল্য ও সম্ভাবনার জন্ম দিয়ে লন্ডনে সম্পন্ন হলো দ্বিতীয় ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স ফেয়ার ২০১৫। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও কমপিউটার জগৎ-এর যৌথ আয়োজনে এবং রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত হলো এধরনের এই দ্বিতীয় ই-কমার্স মেলা। এর আগে ২০১৩ সালের ৭-৯ সেপ্টেম্বর কমপিউটার জগৎ প্রথমবারের মতো লন্ডনে আয়োজন করে ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স মেলা। এবারের মেলায় আগের তুলনায় অধিকতর সাফল্য ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পূরণ হওয়ায় আয়োজক পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মেলা বাংলাদেশের ই-বাণিজ্যিকে আন্তর্জাতিক ই-বাণিজ্যের সাথে আরও যোগসূত্র তৈরির অভাবনীয় সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বলেও আয়োজকেরা জানিয়েছে।
জানা গেছে, এবারের এই লন্ডন ই-কমার্স ফেয়ার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পূরণে সফল হয়েছে। এ মেলার অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ই-বাণিজ্যিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও সম্প্রসারিত করা। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন বিশে^র অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র। এছাড়া যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করে ১০ লাখের মতো বাঙালি। যাদের বেশিরভাগের শেকড় আমাদের এই বাংলাদেশে ও পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। এদের স্বজনদের সাথে এদের যোগাযোগ এখন কার্যত চলে অনলাইনে। ই-বাণিজ্য ছাড়াও অনলাইনে নানা ধরনের উপহার পণ্য এরা দেশে পাঠিয়ে থাকেন বরাবর। এদের কাছে পরিচিত বাংলাদেশের গুটিকয়েক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। অথচ বাংলাদেশে এখন সক্রিয় ৭শ’র মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। এদের সেবার সাথে লন্ডন প্রবাসী বাঙালিদের পরিচিত ও যোগসূত্র সৃষ্টি ছিল এ মেলার একটি লক্ষ্য। সেই সাথে বাংলাদেশি ই-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের সাথে এ মেলার মধ্যে বিদেশি ই-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগাযোগ গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টির প্রয়াস ছিল এই মেলার আয়োজনের পেছনে। মেলার অন্যতম আরেকটি লক্ষ্য ছিল বিজনেস-টু-বিজনেস (বি-ট-ুবি) ও বিজনেস-টু-গভর্নমেন্ট (বি-টু-জি) সংলাপের সুযোগ সৃষ্টি এবং যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বি-টু-বি ও বি-টু-জি বাণিজ্য বন্ধন গড়ে তোলা। শুধু দুই দেশের মধ্যে ই-কমার্স বাড়িয়ে তোলাই নয়, এ ক্ষেত্রে নীতিগত সীমাবদ্ধতাগুলো তুলে ধরে এগুলোর অবসান ঘটানো ছিল এ মেলা আয়োজনের এক অন্তর্নিহিত লক্ষ্য। সবিশেষ উল্লেখ্য, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ : অ্যা ল্যান্ড অব অপরচুনিটি’ শীর্ষক স্লোগান বেছে নেয়ার পেছনেও সুস্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশে আইসিটি খাতে ও হাইটেক পার্কে সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরা। আইসিটি খাতের ও ই-কমার্সের এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে মেলা আয়োজনে গুরুত্ব দেয়ার অংশ হিসেবে এ মেলায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি এবং আইসিটি ডিভিশনের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি অংশ নেন।
এবারের মেলা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও অভাবনীয় সাফল্যের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। আন্তর্জাতিক এ মেলায় ৪০টি প্রদর্শক প্রতিষ্ঠান ৪৫টি স্টলের মাধ্যমে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করে। যুক্তরাজ্যের ৪০টিরও বেশি শীর্ষ সারিরআইসিটি কোম্পানি এবং ওরাকল, আইবিএম ও মাইক্রোসফটের মতো আন্তর্জাতিক বিখ্যাত কোম্পানির প্রতিনিধিরা এ মেলায় ভিজিট করেন। দশটিরও বেশি কমিউনিটি ও ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন এ মেলায় পৃষ্ঠপোষকতা করে। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোও এ মেলায় পৃষ্ঠপোষকতা করে। এনআরবি ব্যাংক ছিল এর প্লাটিনার স্পন্সর। আইজিডব্লিউ অপারেটরস ছিল এর সিলিভার স্পন্সর। মেলায় আয়োজিত হয় ৬টি সেমিনার, ২৫টি বি-টু-বি সেশন। ৭টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগের প্রত্যাশা চুক্তি হয়।এই মেলায় বাংলাদেশ হাইটেক পার্ককে আগামীর গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরা হয়। সার্বিক বিবেচনায় সুষ্ঠুভাবে আয়োজিত এ মেলা এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পূরণে যেমন সফলতা পেয়েছে, তেমনি এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ই-কমার্সকে তথা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট সৃষ্টির সুযোগ করে দিতে সফল হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
লন্ডনের মাইল অ্যান্ড রোডের দি ওয়াটারলিলিতে দ্বিতীয় ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স ফেয়ারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। আইসি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন হাউস অব লর্ডস সদস্য ব্যারোনেস পলা মঞ্জিলা উদ্দিন; হাউস অব লর্ডস পল সুলি; চেয়ারম্যান, এএপিজি অন কারি ইন্ডাস্ট্রি; আবদুল মাতলুব আহমাদ, প্রেসিডেন্ট, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং ইকবাল আহমেদ ওবিই, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, এনআরবি ব্যাংক ও এএইচএম মাহফুজুল আরিফ, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ আবদুল হান্নান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। সহ-আয়োজকের বক্তব্য রাখেন মো: আবদুল ওয়াহেদ তমাল, সিইও, কমপিউটার জগৎ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মো: হারুনুর রশিদ, অতিরিক্ত সচিব, আইসিটি বিভাগ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবেআখ্যা দিয়ে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাইওনিয়ার হবে বাংলাদেশ। এ সময় তিনি ব্রিটেন প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগের আহবান জানান। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ শিল্প, জাহাজ নির্মাণ, পাট ও অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্পকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও লাভজনক বিনিয়োগের খাত হিসেবে উল্লেখ করেন তোফায়েল আহমেদ। বাংলাদেশের গড় প্রবৃদ্ধির হার আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসনীয় হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন,একটি সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশে বিদেশি বিনিয়োগের সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে জানান তিনি। মন্ত্রী ইউরোপে শুল্কমুক্ত ওষুধ রফতানির ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগের কথা জানান, যা আগামী সাত বছরের জন্য কার্যকর থাকবে।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় আইসি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলাদেশের হাইটেক পার্কে বিনিয়োগে সম্ভাবনার দিক তুলে ধরে বলেন, দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরকে ডিজিটাল রূপ দিতে আগামী দুই বছরে এক লাখ তরুণকে আইসিটি ট্রেনিংয়ের আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি দেশের সব বিভাগে হাইটেক পার্ক গড়ে তোলার সরকারি উদ্যোগের কথা জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ আবদুল হান্নান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনের অল পার্টি পার্লামেন্টারি কারি গ্রুপের চেয়ার পল স্কেলি এমপি, জন রেডউড এমপি, মেলার প্লাটিনাম স্পন্সর এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিই, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট আবদুল মাতলুব আহমাদ, মেলার সহ-আয়োজক কমপিউটার জগৎ-এর সিইও মো: আবদুল ওয়াহেদ তমাল ও ইভেন্ট ডিরেক্টর রহিমা মিয়া।
ব্রিটিশ এমপি পল স্কেলি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে ব্রিটেনে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এখানে বসবাসরত বাংলাদেশিরা চাইলে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবেন। বাংলাদেশিদের হাতে গড়া কারি শিল্প ব্রিটিশ অর্থনীতিতে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড যোগ করছে জানিয়ে পল স্কেলি বাংলাদেশের আইসিটি খাতে ব্রিটিশ বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগে চুক্তি স্বাক্ষর
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে তিনটি এবং আইসিটি ডিভিশনের সাথে একটি প্রতিষ্ঠানসহ মোট চারটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো- টেলিকম এশিয়া, সিমার্ক (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও টেকশেড প্রাইভেট লিমিটেড। অপরপক্ষে আইসিটি ডিভিশনের সাথে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয় পেজা বাংলাদেশ লিমিটেডের সাথে।। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম এবং আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো: হারুনুর রশিদ। বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সিমার্কের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিই, টেলিকম এশিয়ার প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ শাফায়েত আলম ও টেকশেডের পক্ষে স্বাক্ষর করেন টেকশেড ইউকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুশান্ত দাশ গুপ্ত। সিঙ্গাপুরভিত্তিক টেলিকম অ্যান্ড আইটি প্রতিষ্ঠান টেলিকম এশিয়া ই-কমার্স ফেয়ারে প্রস্তাবিত ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের খাত হিসেবে মোবাইল পেমেন্ট গেটওয়ে, ট্রিপল প্লে, আইটি অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন্স কনজিউমার প্রোডাক্ট ও বিশেষায়িত প্রযুক্তি পার্ককেই বিনিয়োগের জন্য বিবেচনায় রাখছে বলে জানিয়েছেন টেলিকম এশিয়া প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ শাফায়েত আলম।
সিমার্ক (বাংলাদেশ) লিমিটেড আইটি একাডেমি, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার খাতে ৫০-১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। লন্ডনভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান টেকশেড প্রাইভেট লিমিটেড নতুন কমপিউটার ব্র্যান্ড ‘ডিজি’(ডেল্টাগলফ) প্রস্ত্ততকরণের প্রত্যাশা জানিয়ে আগামী দুই বছরে প্রাথমিকভাবে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের তথ্য জানালেও কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তা আরও বাড়ানো হবে বলে সংকল্প ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের বহুল প্রতীক্ষেত অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সমস্যা সমাধানে পেজা বিডির সাথেও আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে আইসিটি ডিভিশন। প্রাথমিকভাবে পেজা তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ উল্লেখ না করলেও তা উল্লেখযোগ্য মাত্রার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন পেজার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দিমুর রহমান। সেই অনুযায়ী আগামী কয়েক বছরে এই বিনিয়োগ ২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ভাইব্রেন্ট সফটওয়্যার লিমিটেড বাংলাদেশ হাইটেক পার্কে ফোর টায়ার ডাটা সেন্টারসহ প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বিজনেস ইন্টেলিজেন্স সলিউশন প্রদানে ৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
মেলার দ্বিতীয় দিনে ইউকেবিসিসিআই, এফবিসিসিআই এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি একসাথে কাজ করতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া বিসিএ ও বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
দি ফিউচার অব ডিজিটাল ইনোভেশন সেশন
মেলার প্রথম দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ‘দি ফিউচার অব ডিজিটাল ইনোভেশন’ শীর্ষক একটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। ড. জো মেন্ডিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড. জো মেন্ডিক। মোবিলিটি বিষয়ে টি-মোবাইলের সাবেক সিইও স্টিভ রবার্টস, বিগ ডাটা এবং এনালাইটিকস বিষয়ে সিঙ্গুলার ইন্টেলিজেন্সের সিইও সারভেস কুমার, ডাটা এনালাইসিস বিষয়ে ক্রাউড চ্যাটের সিইও রিচার্ডাস সুমার, ইনসাইট অ্যানালিস্ট অ্যান্ড ক্লাউড সলিউশন বিষয়ে ভাইব্রেন্ট সফটওয়্যার ও ইউকে ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজেশনের সিইও মোহাম্মদ মারবিন এবং ওরাকলের গ্লোবাল ডিরেক্টর মার্টিন জারভিস বক্তব্য রাখেন।
সেমিনার
প্রথম দিন ১৩ নভেম্বর মেলার ভেন্যু দি ওয়াটারলিলিতে দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সময় বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজনে ‘ইলেকট্রনিক পেমেন্ট : দ্য ট্রিগার ফর স্প্রেডিং ই-কমার্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রথম সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের জিএম কেএম আবদুল ওয়াদুদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের ডিজিএম মো: দেলোয়ার হোসাইন খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে কিনোট প্রেজেন্টেশন দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের জয়েন্ট ডিরেক্টর খন্দকার আলী কামরান আল জাহিদ। এছাড়া প্রেজেন্টেশন দেন আমরা-বলেরো টেকনোলজি লিমিটেডের ফরহাদ আহমেদ, সিওর ক্যাশের সিইও ড. শাহাদত খান ও এনআরবি ব্যাংক লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিশান হাসিব।
এরপর বিকেল পৌনে ৫টা থেকে পৌনে ৬টা পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের আয়োজনে ‘ফোকাসিং অন ইলেকট্রনিক ডেলিভারি চ্যানেলস’ শীর্ষক দ্বিতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে কিনোট স্পিকার হিসেবে ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান আদিত্য মান্ডলই। প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন প্রগতি সিস্টেমস লিমিটেডের সিইও ড. শাহাদাত খান, ডিসিসিআইয়ের পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবির, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের ইমপ্লিমেনটেশন ও ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান মাহবুবুল ইসলাম মজুমদার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইসিটি ডিভিশনের উপসচিব জেআর শাহরিয়ার।
এছাড়া মেলার দ্বিতীয় দিন মোট চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ : দ্য নেক্সট আইসিটি ডেসটিনেশন’ শীর্ষক সেমিনার। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি ডিভিশনের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কিনোট স্পিকার হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম (এনডিসি)। আইসিটি ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব পার্থ প্রতীম দেবের সভাপতিত্বে এবং প্ল্যানিং ডিভিশনের সদস্য সচিব মো: হুমায়ুন খালিদের স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফিউচার স্মার্ট সিটিস গভর্মেন্টের সিইও জ্যাকিউ টেইলর, সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সাপোর্ট টু ডেভেলপমেন্ট অব কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক এএনএম শফিকুল ইসলাম।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির আয়োজনে দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ‘আইসিটি ইন এডুকেশন ইনোভেশনস : লেসন লার্নট ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বেনেজির আহমেদ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি ও সহযোগী অধ্যাপক ড. আরশাদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ওপেন স্কুলের সহকারী অধ্যাপক মো: মিজানুর রহমান এবং প্রগতি সিস্টেমস লিমিটেডের সিইও ড. শাহাদাত খান।
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) আয়োজনে বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ‘এক্সপোর্টিং ইন দ্য ডিজিটাল এইজ : হেল্পিং বাংলাদেশি কোম্পানিজ টু সাকসিড গ্লোবালি’ শীর্ষক সেমিনার। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি ডিভিশনের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আইসিটি ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব মো: হারুনুর রশিদের স্বাগত বক্তব্যে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ই-ক্যাবের উপদেষ্টা শমী কায়সার ও জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনালের ইন্টারন্যাশনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট আমজাদ হোসাইন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনআরবি ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিই। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো: আবদুল মান্নান।
সমাপনী অনুষ্ঠান
১৪ নভেম্বর মেলার ভেন্যুতে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দ্বিতীয় ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স ফেয়ার ২০১৫-এর সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। বাংলাদেশ জতীয় সংসদের সদস্য নাহিম রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি ডিভিশনের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ। অনুষ্ঠানে সহ-আয়োজকের বক্তব্য দেন কমপিউটার জগৎ-এর সিইও মো: আবদুল ওয়াহেদ তমাল এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইসিটি ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব মো: হারুনুর রশিদ।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিশ্ববাজারে প্রযুক্তিনির্ভর পণ্যের চাহিদার ওপর নির্ভর করে তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষে বাংলাদেশও যে পিছিয়ে নেই ই-কর্মাস ফেয়ারের মাধ্যমে সেই বার্তা আন্তর্জাতিক পরিম-লে পৌঁছেছে। প্রবাসীরা বিদেশে বসে প্রযুক্তিসেবা ব্যবহার করে খুব সহজেই দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন। সেই সাথে প্রিয়জনকে যেকোনো উপহার সামগ্রী পাঠানোর ক্ষেত্রেও সুবিধা পাবেন প্রবাসীরা। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী মনে করেন, বাংলাদেশে যে তরুণ মেধাবী ডেভেলপারেরা রয়েছে তারা গুগল, অ্যামাজন কিংবা আলিবাবার মতো বিশ্বমানের অনলাইন বিজনেস মডেল তৈরি করতে সক্ষম, তবে তাদের অনুপ্রেরণার জন্য সরকার হাইটেক পার্কের মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের দুয়ার খুলে দিতে চায়। ইতোমধ্যে কালিয়াকৈরে ২৩২ একর জমির ওপর হাইটেক পার্ক জোন করেছে সরকার। রাজধানী ঢাকা থেকে এই হাইটেক পার্কের দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। এছাড়া প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য সরকার মহাখালীতে আইটি ভিলেজ স্থাপনের পাশাপাশি যশোরে স্থাপন করেছে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, রাজশাহীতে বরেন্দ্র সিলিকন সিটি, সিলেটের সায়েন্স টেকনোলজি পার্কের পাশে ১৬৩ একর জমিতে সিলেট ইলেকট্রনিক সিটি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠান
মেলায় ই-কমার্স ওয়েবসাইট, ই-গভ. সার্ভিস, ক্রেডিট কার্ড অ্যান্ড পেমেন্ট সার্ভিস, ব্যাংকিং সার্ভিস, ই-এডুকেশন, সফটওয়্যার অ্যান্ড হার্ডওয়্যার, রিয়েল এস্টেট, টেলিকম, এয়ারলাইন্স, ফ্যাশন হাউসসহ অন্যান্য ই-সেবাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, এখনই ডটকম লিমিটেড, আনন্দ কমপিউটারস, অর্পণ কমিউনিকেশন লিমিটেড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি, বিবাহবিডি ডটকম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, বাইমিব্র্যান্ড ডটকম ডটবিডি, কমপিউটারস গ্রাফিক্স অ্যান্ড ডিজাইন লিমিটেড, কমপিউটার জগৎ, কনটেসা সলিউশনস অ্যান্ড কনসালট্যান্টস লিমিটেড, কক্সবাজারইশপ ডটকম, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), ই-জগৎ ডটকম, ইমেলাবিডি ডটনেট, ইশপ ডটলাইফ, গুডডে কনসোর্টিয়াম লিমিটেড, আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম, জিয়াংসু হেরিটেজ ইনকর্পোরেশন, এম/এস সিমু এন্টারপ্রাইজ, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড, অন্যকিছু ডটকম, প্রপার্টি বাজার লিমিটেড, পেইজা, র‌্যাপিড সফটটেক লিমিটেড, রিভ সিস্টেমস, শপিং২৪বিডি ডটকম, স্পাইস ডিজিটাল বাংলাদেশ লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, সিওর ক্যাশ, ইউমার্টবিডি, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, টেকশেড লিমিটেড, ইউকেবিসিসিআই, বিসিএ এবং বিবিসিসি।
মেলার পার্টনার
মেলার পার্টনার হিসেবে ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), টেকশেড, টেলিকম এশিয়া, ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন, ইউকে-বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউকেবিসিসিআই), ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স (বিবিসিসি), বাংলাদেশ ক্যাটারস অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ) এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশ ক্যাটারস অ্যাসোসিয়েশন (বিবিসিএ)।
স্পন্সর প্রতিষ্ঠান
দ্বিতীয় ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স ফেয়ারের প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে ছিল এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড এবং সিলভার স্পন্সর ছিল আইজি ডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ)।

একনজরে মেলা
* ৪০টি প্রতিষ্ঠান ৪৫টি স্টলে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করে।
*৬টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
*৭টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
* প্রায় ২০ হাজার দর্শক মেলা প্রাঙ্গণে এবং অনলাইনে মেলা উপভোগ করেন।
*২৫টি বি-টু-বি সেশন আয়োজিত হয়।
*১০টির বেশি কমিউনিটি এবং ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন মেলার পৃষ্ঠপোষকতা করে।
*মেলার প্রচারের লক্ষ্যে এবং আগামী ই-কমার্স মেলায় অংশ নেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের দুই হাজারের বেশি ব্লু-চিপ প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
*বাংলাদেশ হাইটেক পার্ককে আগামী আইসিটি গন্তব্য হিসেবে প্রচারণা চালানো হয়।
*বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইনে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
*বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো মেলার পৃষ্ঠপোষকতা করে।
* এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড ছিল প্লাটিনাম স্পন্সর।
* আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম ছিল সিলভার স্পন্সর।
*আইসিটি ডিভিশন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি ও কমপিউটার জগৎ ছিল মেলার যৌথ আয়োজক।
মেলা নিয়ে লন্ডনে সংবাদ সম্মেলন
গত ২৯ অক্টোবর ২০১৫ লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়। সম্মেলনে জানানো হয়, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) সহযোগিতায় মেলার প্লাটিনাম স্পন্সর এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড। মেলার সিলভার স্পন্সর আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ)। এই মেলা দুটি দেশের ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও স্টেকহোল্ডারদের একই ছাতার নিচে নিয়ে আসে। মেলায় ৪০টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করে। ই-কমার্স খাতের প্রায় ৫ হাজার প্রফেশনাল ও সদস্য মেলায় অংশ নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় করে। মেলার অন্যতম আয়োজক বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের একটি সেমিনারসহ মোট পাঁচটি সেমিনার মেলায় অনুষ্ঠিত হয়। দেশি-বিদেশি প্রবন্ধক বিভিন্ন সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ আবদুল হান্নান ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স ফেয়ার সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশের ই-কমার্স দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন অনলাইনে কেনাকাটা ও লেনদেন বাড়ছে। ফলে একদিকে যেমন পণ্যের দাম কমছে, অন্যদিকে এই খাতে অনেক এসএমই কোম্পানিসহ নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।
কমপিউটার জগৎ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবদুল ওয়াহেদ তমাল জানান, লন্ডনে অবস্থিত প্রবাসীরা মূলত ডিজিটাল বায়ার। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ই-বাণিজ্য সম্পর্কে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেমনি করে জানার সুযোগ পাবেন, তেমনি মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানও তাদের পণ্য এবং সেবা বৃহত্তর পরিবেশে প্রদর্শন ও প্রচারের সুযোগ পাবে। তিনি আরও বলেন, গত তিন বছরে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাত অনেকদূর এগিয়েছে এবং সমৃদ্ধ হয়েছে। লন্ডনে ইউকে-বাংলাদেশ ই-কমার্স ফেয়ার অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান, দর্শনার্থী, আমন্ত্রিত অতিথিসহ সবার জন্য আনন্দময় হয়।
এই মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বৃহৎ পরিসরে পণ্য ও সেবা প্রদর্শনের পাশাপাশি তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে পেরেছে। এই মেলা একই প্লাটফর্মে পণ্য ও সেবা প্রদর্শন, সেমিনারসহ ই-কমার্সসংশ্লিষ্ট কর্মকা- অংশ নেয়াদের সামনে নতুন দুয়ার খুলে দেয়। মেলাকে স্মরণীয় করে রাখতে মেলায় একটি বস্ত্তনিষ্ঠ স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।
ওয়েলকাম ডিনার
মেলা উপলক্ষে ১২ নভেম্বর লন্ডনের ই১৬ ১জিবির ১ সিমেন্স ব্রাদারস ওয়ে, রয়েল ভিক্টোরিয়া ডকের ‘দি ক্রিস্টালে’ স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বাধুনিক উদ্ভাবন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ, ই-কমার্স, পেমেন্ট সার্ভিস ইত্যাদি বিষয়ে আন্তনেটওয়ার্ক বাড়াতে এক ওয়েলকাম ডিনারের আয়োজন করা হয়। ওয়েলকাম ডিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ আবদুল হান্নান। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কমপিউটার জগৎ-এর সিইও মো: আবদুল ওয়াহেদ তমাল। ডিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন জন রেডউড, এমপি ফর ওকিংহ্যাম; আবদুল মাতলুব আহমাদ, প্রেসিডেন্ট, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং ইকবাল আহমেদ ওবিই, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, এনআরবি ব্যাংক। নৈশ্যভোজে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাউস অব লর্ডস সদস্য ব্যারোনেস পলা মঞ্জিলা উদ্দিন, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর শরিফা খান, ব্রিটিশ-বাংলাদেশ ক্যাটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিবিসিএ) প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার, ইউকে-বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিই, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, ব্রিটিশ কারি এওয়ার্ডের ফাউন্ডার এনাম আলী এমবিই, মেলার অন্যতম পার্টনার টেকশেডের চিফ এক্সিকিউটিভ সুশান্ত দাশ গুপ্তসহ শতাধিক ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা। নৈশ্যভোজে ২শ’র বেশি দেশি-বিদেশি এবং অনিবাসী বাংলাদেশি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী অংশ নেন।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস