লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মইন উদ্দীন মাহমুদ
মোট লেখা:২৭
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন ২
২০২০ সালের মধ্যে ইন্টারনেট অব থিংস অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে ১১ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার
বর্তমানে সারাবিশ্বে ক্লাউড, মোবাইল, বিগ ডাটা, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ইত্যাদি বিভিন্ন সেন্সর কোম্পানির জন্য সৃষ্টি করেছে প্রচুর সুযোগ ও সম্ভাবনা। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে তাদের কাস্টমার ও কর্মীদের জন্য নতুন নতুন সার্ভিস এবং ইন্টারেকশন মোড, যা ইতোপূর্বে কখনও কল্পনা করা যেত না। জনগণ, বস্ত্ত, মেশিন ও প্রক্রিয়াগুলো অব্যাহতভাবে নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হতে পারছে, সৃষ্টি করছে বাস্তব জগৎ এবং ভার্চুয়াল ডাইমেনশনের মধ্যে স্থায়ী চ্যানেল। এটি আমাদের ইন্টারেকশনের মাঝে শুধু যে বৈপস্নবিক পরিবর্তন আনছে তা নয়, বরং ব্যক্তিগত ব্যবসায়ের কাজের কনটেক্সটেও পরিবর্তন আনে। এই বৈপস্নবিক পরিবর্তনের কেন্দ্রে আছে ‘ইন্টারনেট অব থিংস’।
বিগত শতাব্দীর নববইয়ের দশকের গোড়ার দিকে এ ধরনের একটি প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও মূলত ১৯৯৯ সালে এ প্রযুক্তিটির নাম দেয়া হয় ‘ইন্টারনেট অব থিংস’ (IoT)। এ প্রযুক্তির মূল প্রতিপাদ্য- আমরা যে বস্ত্তগুলো দিয়ে পরিবেষ্টিত, এদেরকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা। এর ফলে আমরা এদের সাথে তথ্য বিনিময় করতে পারব এবং এরা নিজেরাও নিজেদের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে আরও সুচারুভাবে নিজেদের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে।
ইন্টারনেট অব থিংস নামের এই ‘থিংস’ অংশটি দিয়ে বোঝানো হয় এমন কোনো বস্ত্তকে, যাকে অসংখ্য বস্ত্তর মধ্যেও আলাদাভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। অর্থাৎ এর একটি বিশেষ আইডেন্টিটি বা পরিচয় থাকবে। এর ফলে একে ইন্টারনেটে সংযুক্ত করে এর সাথে তথ্য দেয়া-নেয়া সম্ভব হবে। এ ধরনের বস্ত্তগুলোর নেটওয়ার্ককে বলা হয় ‘ইন্টারনেট অব থিংস’। অর্থ্যৎ ইন্টারনেট অব থিংস হলো এমন একটি দৃশ্যবিবরণী- যেখানে বস্ত্ত, জীবজন্তু বা মানুষকে দেয়া হয় এক ইউনিক আইডেন্টিফায়ার তথা অনন্য শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য। এটি হিউম্যান-টু-হিউম্যান বা হিউম্যান-টু-কমপিউটারের মধ্যে ইন্টারেকশন ছাড়াই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাটা ট্রান্সফার করতে সক্ষম।
১৯৯৯ সালের আগে পর্যন্ত ইন্টারনেট অব থিংসের ধারণা জন্ম না নিলেও এ পদবাচ্যের প্রচলন শুরু হয় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। ইন্টারনেট অব থিংস পদবাচ্য বা টার্মটি চালু করেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অটো-আইটি সেন্টারের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক কেভিন অ্যাশটন। ১৯৯৯ সালে প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের একটি প্রজেক্টে কাজ করার সময় ইন্টারনেট অব থিংস পদবাচ্যটি ব্যবহার করেন কেভিন। ১৯৯৯ সালে কেভিন অ্যাশটন ইন্টারনেট অব থিংস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেন জঋওউঔড়ঁৎহধষ.পড়স সাইটে। প্রথম ইন্টারনেট অ্যাপ্লায়েন্সের উদাহরণ হলো ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত একটি কুকি মেশিন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রোগ্রামেরা মেশিনের সাথে কানেক্ট হয়ে মেশিনের স্ট্যাটাস চেক করে এবং সিদ্ধান্ত নিতে বা বুঝতে পারে যে, এদের জন্য আসলে পান করার জন্য কোনো ঠা-া পানীয় আছে কি না কিংবা মেশিন ট্রিপ ডাউন করা উচিত হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এ মেশিন।
ইন্টারনেট অব থিংস সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ও স্বচ্ছ ধারণা দিতে আইবিএমের ‘Smarter Planet’ একটি পাঁচ মিনিটের ভিডিও তৈরি করে। এতে তুলে ধরা হয় কয়েকটি চমৎকার উদাহরণ। ধরুন, আপনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। আপনি চাচ্ছেন অফিস থেকে বাসায় ফেরার ৩০ মিনিট আগে আপনার বাসার হিটারটি সক্রিয় হয়ে বাথরুম গরম করবে, আপনি যেখানেই থাকুন না কেনো। গোসলের সময়ই সম্ভবত অডিও ঘোষণার মাধ্যমে জানতে পারবেন রাতের বেলায় তাপমাত্রা কতখানি নেমে যাবে। আপনার গাড়ি সক্রিয় হয়ে উঠবে, যাতে উইন্ডশিল্ডে জমে থাকা বরফ গলে যায়। এছাড়া ট্রাফিক অবস্থা জেনে নিয়ে বাসা থেকে ১০ মিনিট আগে-পরে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আপনার গাড়ি বলে দিতে পারবে ফেরি কখন ঘাটে ভিড়বে। সুতরাং তাড়াহুড়োর কোনো কারণ নেই। এ ধরনের তথ্য সবসময় আপনাকে সরবরাহ করবে ইন্টারনেট অব থিংস। আপনার কফি মেকার বাসায় পৌঁছার কিছু আগে আপনার জন্য কফি তৈরি করে রাখবে কিংবা আপনার বাসার লন্ড্রি লাঞ্চ টাইমে কাপড়-চোপড় ধুয়ে শুকিয়ে রাখবে। এ ধরনের কানেক্টেড ডিভাইস স্বয়ংক্রিয়ভাবে হ্যান্ডেল হবে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। বস্ত্তত এসব স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্সের কারণে আপনি পাবেন স্মার্টফোন, স্মার্টগাড়ি, স্মার্টঅফিস ইত্যাদি।
অ্যাশটন আরও বলেন, ২০০৯ সালের পর থেকে ইন্টারনেট অব থিংসের প্রসার ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকলেও একে এখনও অনেকদূর যেতে হবে। তিনি বলেন, আইওটি বিশ্বকে বদলে দিতে পারবে, যেমনটি ইন্টারনেট করেছে।
ইন্টারনেট অব থিংসের বাজার
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আইওটি খুব দ্রুতগতিতে বাড়লেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্রমোবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হচ্ছে, সেগুলো হলো অটোমেটিভ, ট্রান্সপোর্টেশন ও ইউটিলিটি খাত। লÿণীয়, আইওটির জন্য আইটি খাতে অনেক বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে সম্পৃক্ত রয়েছে ইন্টারনেট কানেক্টেড হোম, স্মার্টমিটার, কানেক্টেড গাড়ি, স্মার্টগ্রিড ও কানেক্টেড হেল্প ইত্যাদি।
সম্প্রতি ইন্টারনেট সোসাইটি ইন্টারনেট অব থিংসের ওপর ৫০ পেজের এক ডকুমেন্ট প্রকাশ করে, যেখানে আইওটিসংশ্লিষ্ট ইস্যু এবং চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরা হয়। এই ডকুমেন্টে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের মধ্যে সারাবিশ্বে ১০ হাজার কোটি আইওটি কানেক্টেড ডিভাইস গ্লোবাল অর্থনীতিতে যোগ করবে ১১ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলারের বেশি। সিসকোর আইবিএসজি আশা করছে, ২০১৫ সালের মধ্যে ২৫০০ কেটি ডিভাইস ইন্টারনেটে কানেক্টেড থাকবে এবং ২০২০ সালে এর সাথে আরও যুক্ত হবে ৫ হাজার কোটি ডিভাইস।
২০১৩ সালের মে মাসে ম্যাকিনসি গ্লোবাল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, আইওটি ডিভাইসের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বা প্রভাব ৩ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২৫ সালের মধ্যে ৬ ট্রিলিয়ন ডলার হবে। আর ২০১৪ সালের গার্টনারের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালের মধ্যে আইওটির মার্কেট রেভিনিউ হবে প্রায় ৩০০ ইউএস বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের মধ্যে ৩১০০ কোটি ডিভাইস ও ৪০০ কোটি লোক ইন্টারনেটে যুক্ত হবে। ধারণা করা হচ্ছে, গড়ে প্রতিটি লোক ৭-৮টি ডিভাইসের সাথে কানেক্টেড থাকতে পারবে। ২০১২ সালের গ্লোবাল মোবাইল ডাটার ভবিষ্যদ্বাণীতে দেখানো হয়, ২০১৭ সালের মধ্যে ১৭০ কোটি এম-টু-এম সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে, যার প্রবৃদ্ধির হার ৩৬ শতাংশ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিজনেস ইন্টেলিজেন্স উল্লেখ করে- যেহেতু সরকার, ব্যবসায়ীরা এবং কনজ্যুমারেরা ডিভাইসগুলো ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করার সুফল উপলদ্ধি করতে পারছে। তাই আইওটি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। বিজনেস ইন্টেলিজেন্সের সাম্প্রতিক গবেষণায় তুলে ধরা হয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাত কীভাবে অইওটিকে অবলম্বন করে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবিআই আরেকটি মজার গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৬ সালের মধ্যে ওয়্যারেবল ওয়্যারলেস মেডিক্যাল ডিভাইসের প্রবৃদ্ধির হার হবে প্রতিবছর ১০ কোটি ডিভাইসের বেশি, যার রাজস্ব ছাড়িয়ে যাবে ৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার।
ওপরে উল্লিখিত সব রিপোর্ট এবং স্টাডিতে একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়, এগুলো আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে, ব্যবসায়ে এবং গ্লোবাল অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
যেভাবে ইন্টারনেট অব থিংস অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ মিখাইল পোর্টার দাবি করেন, বিদ্যমান আইটি এবং ইন্টারনেটচালিত উদ্ভাবন গত ১০-১৫ বছর ধরে অর্থনীতিতে ভালোভাবে প্রভাব ফেলে আসছে। ইন্টারনেট অব থিংসের আবির্ভাবের ফলে আগের ব্যবহার হওয়া এই জিনিসগুলো পরিবর্তন করতে হচ্ছে, যেগুলো থেকে পাওয়া যাবে চমৎকার আউটপুট।
ইন্টারনেট অব থিংস স্বতন্ত্র কোম্পানিগুলোকে সহযোগিতা করবে, যাতে বিশ্ব অর্থনীতিতে ওয়েস্ট ফ্যাক্টর বা অপচয় কার্যকরভাবে কমানো যায়। ওয়েবের সাথে কানেক্টেড পণ্যগুলো কমিউনিকেট করতে পারে, যেভাবে সেগুলো ব্যবহার হয়। পোর্টার ধারণা করছেন, অদূর ভবিষ্যতে এ ডাটা ব্যবহার হবে শিডিউল করা মেইনটেনেন্সের জন্য, যখন এটি সত্যিকার অর্থে দরকার হবে। এগুলো মূলত কাস্টমার সার্ভিসের অকার্যকর নিয়মের সেট অনুযায়ী নয়, যেগুলো উৎপাদনশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অন্যদিকে ব্যবহৃত ডাটা ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বিশে্স্নষণী তথ্য দেবে, যা ব্যবহার হবে ব্যর্থতা কমানোর জন্য এবং পণ্যের ডিজাইন উন্নত করার জন্য। এসব ফাংশনালিটি আমাদের পণ্যের কার্যকারিতা অনেক বাড়িয়ে দেবে এবং তাদের দাম ও উৎপাদনশীলতা বাড়াবে এবং উদ্ভাবনে প্রেরণা দেবে।
ম্যানুফেকচারেরা এবং সার্ভিস কোম্পানিগুলো কাস্টমারের সাথে যেভাবে ইন্টারেক্ট করে, তা আইওটি বদলে দেবে। বর্তমান ব্যবসায়ের ধারায় কাস্টমারের কাছে পণ্য বিক্রি করে এবং যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে নির্ভরযোগ্য কলসেন্টার এবং ডেভেলপমেন্ট অব কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পৌঁছে যাবে। ইন্টারনেট অব থিংস স্পষ্টত ব্যবসায়ের এ ধারা বদলে দিতে যাচ্ছে। কেননা, পণ্য সরাসরি সার্ভিস অ্যাসেসিংয়ের সাথে কানেক্টেড থাকে।
আইওটি সম্ভাব্য ক্ষেত্রে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কর্মকা-- যেভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়বে এবং আমাদের কাজের ধারায় যেভাবে বৈপস্নবিক পরিবর্তন সাধন করবে, আমাদের প্রজেক্ট ডেভেলপমেন্ট টিমকে ম্যানেজ এবং কাস্টোমারের সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করবে তা নিচে তুলে ধরা হলো।
০১. সর্বোত্তম সুবিধা পাওয়া : আইওটি আমাদের স্মার্টফোনকে রূপান্তরিত করে রিমোট কন্ট্রোল হিসেবে, যাতে আমাদের প্রাত্যহিক জীবন বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে নিয়ন্ত্রিত থাকে। ইন্টারনেট অব থিংস সম্পর্কীয় একটি যুগান্তকারী বিষয় হলো ডিভাইসসমূহ আমাদেরকে জানবে এবং সহায়তা করবে সময় বাঁচাতে। আইওটি ডিভাইস মোবাইল পেমেন্টের মাধ্যমে অথবা ডেডিকেটেড জিও-লোকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে দ্রুতগতিতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ফর্ম পেতে সহায়তা করবে।
স্মার্টফোন ক্রমবর্ধমান হারে আমাদের চারপাশের জিনিসগুলোর সাথে ইন্টারেক্ট করবে। এগুলো হবে সেন্সরসমৃদ্ধ, যা আমরা দেখতে পারি না। ওইগুলো আমাদের মোবাইল ডিভাইসগুলোকে মূল্যবান তথ্য দেবে এবং আমাদের হয়ে কাজ করবে যখন অ্যাপসে অ্যাক্সেস করা হয়, সময় বাঁচানোর জন্য ম্যানুয়ালি এ কাজ করতে সহায়তা করবে।
এ বিষয়টিকে উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায় এভাবে- কফি হাউসের দরজা অতিক্রম করার সাথে সাথে ওয়েটার আপনার কাছ থেকে অর্ডার নেয় এবং সে অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয়। এবার আপনার হাতের স্মার্টফোনটি দিয়ে দ্রুতগতিতে মূল্য পরিশোধ করতে পারেন সিট থেকে না ওঠে। এভাবে ছোট ছোট বিষয় গ্রুপ হয়ে আমাদের অনেক সময় বাঁচাতে পারে। এর ফলে আরও অনেক বেশি কাজে মনোনিবেশ যেমন করা যাবে, তেমনি উৎপাদনশীলতাও বাড়বে উল্লেখযোগ্য হারে।
০২. অ্যাডাপ্টেশন : আইওটি টেকনোলজি বিভিন্ন লেভেলে আমাদের প্রফেশনাল জীবনকে সহজতর করে তোলে। এই বৈপস্নবিক পরিবর্তন প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রির জন্য এক প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। কেউ কেউ দাবি করেন, আগামী তিন যুগে সর্বতোভাবে প্রতিটি ব্যবসায় এবং সেক্টর চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে। এ সবকিছুই কর্মীদের বাধ্য করবে নতুন কাজের পরিবেশ এবং নতুন স্ট্যান্ডার্ডের ব্যবসায়ে অভ্যস্ত হতে, যা হবে এক কঠোর প্রচেষ্টা।
এ ধরনের বড় ডিসরাপ্টশনের ফলে মুভি রেন্টাল ব্যবসায়ের ওপর প্রচ- প্রভাব পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। ভালো দৃষ্টান্ত হলো নেটফ্লিক্স, ব্লকবাস্টারের দারূণভাবে উত্থান জনপ্রিয় হয়ে ওঠা। ওয়েব প্রোভাইডারদের ডিভিডিতে এক্সচেঞ্জ করার জন্য সম্পূর্ণ যৌক্তিকভাবে সহযোগিতা দিচ্ছে এবং সব ধরনের লেট ফি প্রত্যাহার করে নেয়। এর ফলে ব্যবহাকারীরা আরও উল্লেখযোগ্য হারে কম খরচে ব্যাপক বিসত্মৃত রেঞ্জ থেকে পছন্দের অপশনটি বেছে নিতে পারবেন।
০৩. অধিকতর ডাটা : ইন্টারনেট অব থিংস ডাটা মেশিন ছাড়া অন্য কিছুই নয়। কেননা এন্টারপ্রাইজগুলো আগের চেয়ে অনেক বেশি ডাটা কালেক্ট করতে পারছে। এর ফলে এরা এদের পর্যবেক্ষণ কৌশল পুনর্বিবেচনার জন্য নতুনভাবে প্ররোচিত হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরকে নতুন ফর্মের ডাটা ইন্টেলিজেন্সে অভ্যস্ত হতে বাধ্য করছে। এমন অবস্থায় আইওটির মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে ডাটা জেনারেট হয়। এজন্য নতুন অথবা সম্প্রসারিত ডাটার জন্য দরকার প্রচুর পরিমাণের ডাটা অ্যানালিস্ট ও স্ট্র্যাটেজিস্ট।
এন্টারপ্রাইজগুলো কানেক্টেড অবজেক্ট এবং ডিভাইসসমূহ থেকে আগত ডাটার বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় দরকার হয়ে পড়েছে যথাযথ টুল যাতে এটি বোঝা যায় এবং কনজ্যুমার অথবা ওয়াকফোর্স ট্রেন্ড অ্যানালাইজ করে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার তাদের টিমের আচরণ ও অভ্যাস নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যা এন্টারপ্রাইজের পলিশি উন্নত ও সংস্কার করতে পারে অথবা কাজের পরিবেশকে পেশাদারদের প্রয়োজন অনুযায়ী ম্যাচ করাতে পারে। এর ফলে এরা হতে পারে আরও বেশি উৎপাদনশীল।
আইওটি ডাটা আপনাকে অবহিত করবে বিভিন্ন লেভেলে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বাজারে টিকে থাকার এক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। তথ্যে অবিরতভাবে অ্যাক্সেসের সুবিধা থাকায় কাস্টমারের চাহিদা, ট্রেন্ডের সাথে যেমন পরিচিত হতে পারবে তেমনি অভ্যন্তরীণ জীবনের চাহিদাও মেটাতে পারবে।
০৪. জিও-লোকেশন ডাটায় অবিরতভাবে অ্যাক্সেসের সুবিধা : কর্মজীবন এবং বিজনেস প্রসেসকে রেন্ডার করার জন্য ইন্টারনেট অব থিংসের রয়েছে বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি সুপ্ত ক্ষমতা এবং অনেক বেশি উৎপাদনশীল ও দক্ষ। আইওটির উৎপাদনশীলতা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে নিহিত আছে লোকেশন ট্র্যাকিংয়ের উপায়কে অধিকতর সহজ এবং সাধারণ করে।
ইন্টারনেট কানেক্টেড অবজেক্ট এবং ডিভাইস হবে ভৌগোলিকভাবে ট্যাগ করা কর্মীদের প্রচুর সময় সাশ্রয় করবে। এটি এন্টারপ্রাইজের অর্থও বাঁচাবে ক্ষতির হার কমানোর মাধ্যমে।
ইন্টারনেট অব থিংস টেকনোলজিতে অভ্যস্ত হয়ে কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসায়ের প্রতিটি দৃষ্টিভঙ্গি, ম্যানেজিং ইনভেন্টরি, লোকেটিং এবং ফিল্ড সার্ভিস বিস্তারের উপাদান অথবা যতদূর সম্ভব অর্ডার পরিপূর্ণ করতে পারে। কোম্পানির প্রতিটি সিঙ্গেল টুল, ফ্যাক্টরি এবং ভেহিকল একটি সিস্টেমের সাথে কানেক্টেড থাকবে এবং অবিরতভাবে তাদের লোকেশনে রিপোর্ট করতে থাকবে, যা অনেক ম্যানেজার এবং কর্মকর্তাদের পেশাদারি জীবনকে সহজতর করে।
০৫. পারস্পরিক বিনিময় উন্নত করা : আমরা সবাই জানি, আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় সবচেয়ে বেশি সময় অপচয় হয় পারস্পরিক বিনিময় তথা commute-এর ক্ষেত্রে, যা উৎপাদনশীলতার ওপর এক বিরাট নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন- আমাদের কর্মজীবনের সবচেয়ে বেশি সময় অপচয় হয় দীর্ঘ ট্র্যাফিক জ্যামে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের পারস্পরিক বিনিময়ে আইওটি এক বৈপস্নবিক পরিবর্তন আনতে পারে মোবাইল ডিভাইস, ভেহিকল এবং রোড সিস্টেমের ইন্টারকানেক্টিভিটির কল্যাণে। এর কারণে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারি কোন রাস্তার ট্র্যাফিক অবস্থা কেমন, কোন রাস্তা দিয়ে যাওয়া উচিত এবং কতটুকু সময় আগে গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে বের হওয়া উচিত। এর ফলে প্রফেশনাল সময় অনেক সাশ্রয় হবে, যা প্রকারান্তরে কর্মজীবনে উৎপাদনশীলতা অনেক বাড়িয়ে দেবে।
এটিঅ্যান্ডটি (AT&T) গাড়ি প্রস্ত্ততকারক কোম্পানির জিএম বিএমডব্লিউর সাথে গাড়িতে এলটিই (LTE) কানেক্টিভিটি ফাংশনালিটি যুক্ত করার জন্য যৌথভাবে কাজ করছে এবং এ প্রক্রিয়ার সৃষ্টি করে একেবারেই নতুন এক কানেক্টে সার্ভিস, যেমন- রিয়েল টাইম ট্র্যাফিক ইনফরমেশন, সামনের সিটের জন্য রিয়েল টাইম ডায়াগনস্টিক অথবা পেছনে বসা যাত্রীর ইনফরমেশন।
রাস্তার প্রতিটি উপাদান যেমন- স্টপলাইট থেকে শুরু করে রাস্তার সঙ্কেত সবকিছুই সুসঙ্গতভাবে সমন্বিত থাকে। এ ক্ষেত্রে সেন্সর ট্র্যাফিকের ধরন অ্যানালাইজ করে এবং ট্র্যাফিক জ্যামকে কমানোর জন্য লাইট অপারেশন অ্যাডজাস্ট করে। এর ফলে আর কখনও ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে থাকতে হবে না।
০৬. দূর থেকে মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট : প্রোডাক্টিভিটিকে আরও উন্নত করার আরেকটি মাধ্যম হলো আইটি ডিপার্টমেন্টের এমডিএম। একটি কোম্পানির কমপিউটার ও মোবাইল ডিভাইসে রিমোট অ্যাক্সেসের সুবিধা থাকাটাই সবকিছু নয়, বরং আইটি ম্যানেজার অন্যান্য কানেক্টেড সব ডিভাইস যাতে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সে সুবিধাও থাকতে হবে।
একটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তারা এ ধরনের রিমোট অ্যাক্সেস টেকনোলজির সুবিধা নিয়ে দূর থেকে স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট কন্ট্রোল করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, অন্যান্য ডিভাইসের ওপরও রিমোট ম্যানেজমেন্ট করা সম্ভব। যেমন- অ্যান্ড্রয়িড ক্যামেরা এবং সেটটপ বক্স।
আইওটি কানেক্টেড কর্মীদের রয়েছে শক্তিশালী কোলাবোরেশন। কেননা, তাদের ডিভাইসগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে একে অপরের সাথে কমিউনিকেট করতে পারে। বিশেষজ্ঞেরা দাবি করছেন, আইওটি ডিভাইসের জন্য এ ধরনের রিমোট কন্ট্রোল খুব শিগগিরই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে।
ইন্টারনেট অব থিংসে ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সুবিধা
ইন্টারনেট অব থিংসকে সংজ্ঞায়িত করা হয় ডিভাইসের জন্য একটি উপায় হিসেবে, যা ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকে রিয়েল টাইমে অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসের সাথে কমিউনিকেট এবং তথ্য শেয়ার করার জন্য। এসব সেন্সর লেভারেজ করে বিগ ডাটা, অ্যানালাইটিক্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সক্ষমতা, যাতে আমাদের প্রয়োজন মেটাতে পারে, সমস্যা সমাধান করতে পারে এবং দক্ষতা বাড়ানো যায়।
বিভিন্ন বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন মানদ-- আইওটির বাজারের সাইজ গণনা করে থাকে। এ কারণে মার্কেট সাইজের তারতম্য হতে দেখা যায়। অ্যানালিস্ট এবং টেকনোলজি প্রোভাইডারদের ভবিষ্যদ্বাণীতে দেখা যায়, এ যুগের শেষে যেকোনো জায়গায় থেকে আইওটির অর্থনৈতিক মূল্য হবে ৩০ কোটি ইউএস ডলার থেকে ১৫ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার।
আমাদের হাতে এমন কিছু পণ্য আছে, যেগুলো কনজ্যুমার সেক্টরে এক রেঞ্জ সেন্সিং এবং কমিউনিকেশন টেকনোলজিতে ব্যবহার হয়। যেমন- সেলফ-ড্রাইভিং কার, স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স এবং মোবাইল ফোনে জিও-লোকেশনাল। আইওটির সুবিধার সাথে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন- সিকিউরিটি ও প্রাইভেসির ক্ষেত্রে। ডিভাইসেস এবং সেন্সরের ব্যাপক বিসত্মৃতিতে সাইবার সিকিউরিটি এক নতুন ডাইমেনশনে উপনীত হবে। এটি শুধু ইনস্টিটিউটের জন্য নয় বরং কনজ্যুমারদের জন্যও বটে। যত বেশি ডিজিটাল কানেকশন এবং তথ্য ট্রান্সমিট হবে, ডিজিটাল ভলনিয়ারিবিলিটির মাত্রাও তত বেশি সম্প্রসারিত হবে ব্যাখ্যামূলকভাবে।
ব্যাংকিং ও ইন্টারনেট অব থিংস
ইতোমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান কাস্টোমার এক্সপেরিয়েন্স, প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট এবং ব্যাক-অফিস পারফরম্যান্স উন্নত করতে সেন্সর ডাটা ব্যবহার করতে শুরু করেছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার ভবিষ্যদ্বাণী করে যে, ২০১৩ থেকে ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী এন্ডপয়েন্ট আইওটির নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনিয়োগের বার্ষিক ক্রমোবৃদ্ধি হলো ৩২.৫ শতাংশ CAGR (Compound Annual Growth Rate), যার মধ্যে ইনস্টলভিত্তিক ইউনিট হলো ২৫ বিলিয়ন। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ২শ’র বেশি বিভিন্ন ক্যাটাগরির সেন্সর, কনজ্যুমার, ব্যবসায় এবং ভার্টিকল স্পেসিফিক ক্যাটাগরি। এ ভবিষ্যদ্বাণীতে ইঙ্গিত দেয় হয় বর্তমান এবং যুগ শেষের মধ্যে বিস্তারকে।
২৫০০ কোটি নতুন এন্ডপয়েন্টের ইউনিট বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ব্যাংকিংসহ সব ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডেলোইট (Deloitte)-এর পর্যবেক্ষণে ইঙ্গিত দেয়া হয়, মোট সেন্সরের এক-চতুর্থাংশ বাড়ে ২০১৩ সালে, যেগুলো ব্যবহার হতো FSI-এ, যা ২০১৫-তে এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত হয় এবং ২০২০ সালের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশে উন্নীত হওয়ার আশা করছে।
ডেলোইট আশা করছে, ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের জন্য সার্বিকভাবে ইনস্টল করা সেন্সরের বৃদ্ধি আগামী বছরগুলোতে খুব শক্তিশালী হবে। সেক্টরের ওপর নির্ভর করে বার্ষিক কম্পাউন্ডের ভিত্তিতে সেন্সরের ক্রমোবৃদ্ধির রেঞ্জ হবে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত।
ব্যবহার হওয়া সেন্সর ইতোমধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজেদেরকে সফল হিসেবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে, যেমন- ইন্স্যুরেন্সে টেলিম্যাটিক্স মনিটর ড্রাইভারের অচরণ। ইন্স্যুরেন্স তথা বীমায় ব্যবহার হওয়া সম্ভাব্য অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন হলো জীবন বীমা, স্বাস্থ্য বীমা এবং গৃহস্থালি বীমা- যেখানে হেলথ মনিটর ক্লায়েন্টের ভালোর জন্য বা রিয়েল টাইমে বাড়ির স্ট্রাকচারাল অবস্থার জন্য কমিউনিকেট করতে পারে।
বাণিজ্যিক রিয়েল স্টেটের জন্য আরেকটি উদাহরণ হলো সব ধরনের বাণিজ্যিক ভবনের মধ্যে স্থাপিত সেন্সর সুচারুভাবে এনার্জি, পরিবেশগত সুবিধা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা ম্যানেজ করতে সহায়তা করে। এটি প্রোপার্টির সার্বিক সৌন্দর্য বাড়াতে সহায়তা করায় রেন্টাল আয় এবং বিনিয়োগ অ্যাক্টিভিটি বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
সবশেষ হলো আইওটির ব্রাঞ্চভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন। ব্যাংক শাখায় সম্পৃক্ত থাকতে পারে ভিডিও টেলার এবং কিয়স্ক, যেখানে সেন্সিং টেকনোলজি মনিটর করে এবং কনজ্যুমারের পক্ষে কাজ করে। এছাড়া মোবাইল জিও-লোকেশন ক্যাপাবিলিটিস উন্নত করতে পারে সার্ভিস।
ইন্টারনেট অব থিংসে শীর্ষ পাঁচ হুমকি
গাড়ি থেকে শুরু করে পরিধানযোগ্য ওয়্যারলেস পণ্য পর্যন্ত কোটি কোটি কানেক্টেড ডিভাইসই ইন্টারনেট অব থিংস। সিসকোর ইন্টারনেট বিজনেস সলিউশন্স গ্রুপ অনুমান করছে- ২০১০ সাল পর্যন্ত সারাবিশ্বে ১২৫০ কোটি কানেক্টেড ডিভাইস ছিল, যা ২০১৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে ২৫০০ কোটিতে উন্নীত হবে।
নিরাপত্তার আলোকে ইন্টারনেট অব থিংস : ক্রমবর্ধমান বাজারের দিকে খেয়াল রেখে সিএসও চিহ্নিত করেছে আইওটি ডিভাইস, যা আগামী বছরগুলোতে কয়েক ধরনের হুমকির মধ্যে পড়বে। সিএসও খুব সতর্ক আছে তাদের অর্গানাইজেশনের সম্ভাব্য ক্ষতি ও হুমকির ব্যাপারে এবং সে অনুযায়ী প্রস্ত্ততিও নিয়েছে।
ইন-কার ওয়াইফাই : ভিশনগেজ লিমিটেডের বিশেস্নষণ অনুযায়ী কানেক্টেড গাড়ির থেকে ২০১৩ সালে রাজস্ব আদায় ২ হাজার ১৭০ কোটি ইউএস ডলারে উন্নীত হওয়া উচিত, যা ২০১৪ সালে আরও বাড়বে। আবার স্যানস ইনস্টিটিউটের (Sans Institue) ইমার্জিং ট্রেন্ডসের ডিরেক্টর জন পেসকাটের তথ্যমতে, নিউ ইয়ার অফারের মতো ফোর্ড এবং জিএম কোম্পানি ক্রমবর্ধমান হারে যেমন অফার করে আসছে ইন-কার ওয়াইফাই, তেমনি অফার করে আসছে গাড়িকে মোবাইল হটস্পটে পরিণত করা এবং যাত্রীর স্মার্টফোন, ট্যাবলেটসহ অন্যান্য ডিভাইসকে ইন্টারনেটে যুক্ত করার সুবিধা দিতে।
তবে ইন-কার ওয়াইফাইয়ে রয়েছে গতানুগতিক ওয়াইফাই হটস্পটের মতো একই ধরনের নিরাপত্তার ভঙ্গুরতা। পেসকাটের মতে, ফায়ারওয়াল ছাড়া ছোটখাটো ব্যবসায়ের সাথে ওয়াইফাই ইনস্টলেশন করা ইন-কার ডিভাইসগুলো ও ডাটা নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকবে। কেননা হ্যাকারেরা একবার নেটওয়ার্কে স্পুস তথা গাড়িতে অ্যাক্সেস করতে পারলে ডাটা সোর্সের বাইরে যুক্ত হতে পারবে, যেমন অনস্টার (Onstar) সার্ভারের সাথে যুক্ত হতে পারবে এবং সংগ্রহ করতে পারবে গাড়ির মালিকের PII, যেমন- ক্রেডিট কার্ড নম্বর সংগ্রহ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, এটি শুধু একটি উদাহরণ। একমাত্র কল্পনায় হ্যাকারদের আক্রমণের ধরন সীমিত করতে পারেন। হ্যাকারেরা যখন ইন-কার ওয়াইফাইয়ের অ্যাক্সেস করতে পারবে, তখন স্পুফিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিতে পারবে যাত্রীর ডিভাইস ও গাড়ির আইডেন্টিটি।
সিআইএসও (ClSOs) এবং সিএসও (CSOs) প্রতিষ্ঠানের যেসব কর্মী পেশা বা ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে দেশজুড়ে ঘুরে বেড়ান, তাদের জন্য আরও উদ্বিগ্ন বিষয় হলো এই নিরাপত্তার ভঙ্গুরতা। কেননা, হ্যাকারেরা এগুলো ব্যবহার করে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে- এমন তথ্য দিয়েছেন প্রিসায়েন্ট সলিউশন্সের সিআইও জেরি ইরভান।
এম হেলথ অ্যাপ্লিকেশন/মোবাইল মেডিক্যাল ডিভাইস : এবিআই রিসার্চ প্রতিষ্ঠানের লিড অ্যানালিস্ট জোনাথন কলিন্সের মতে- স্পোর্টস, ফিটনেস এবং এম হেলথ জুড়ে পরিধানযোগ্য ওয়্যারলেস ডিভাইসের ক্রমবর্ধমান বাজার ২০১৩ সালে ৪ কোটি ২০ লাখ থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে ১৭ কোটি ১০ লাখ হবে। উইন্ডোজচালিত মোবাইল মেডিক্যাল ডিভাইসে ২০১৪ সালে হ্যাকারের হামলার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে এবং তা অব্যাহতভাবে বাড়ছে। নিউস্টারের সিনিয়র টেকনোলজিস্ট রডনি জোফির মতে, মেডিক্যাল ডিভাইসের মধ্যে আছে পেসপেকারসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গতানুগতিক ম্যানুফেকচারেরা ব্যবহার করে প্রোপ্রাইটরি এমবেডেড সিস্টেম, যা হ্যাক করা কঠিন তাদের ক্লোজড সোর্স কোড ও সীমাবদ্ধ করার কারণে। তবে নন-ট্রেডিশনাল ডিভাইস প্রস্ত্ততকারকেরা প্রায় সময় ব্যবহার করেন উইন্ডোজের গঠন বা ফরম।
স্মার্ট ডিভাইস অধিকতর স্মার্ট হলেও নিরাপত্তার প্রশ্নে রয়েছে দুর্বলতা : উইন্ডোজ সস্তা, সর্বব্যাপী এবং প্রোগ্রামারদের কাছে সুপরিচিত হওয়ায় এটি ওইসব ডিভাইসে খুবই জনপ্রিয়- এমন কথা বলেছেন জোফি। তিনি আরও বলেন, ডেস্কটপ কমপিউটার উইন্ডোজের মতো নয়, এমনসব ডিভাইসে উইন্ডোজের জন্য কোনো প্যাচিং ম্যাকানিজম নেই। এ ধরনের যত বেশি ডিভাইস ওয়্যারলেস ফ্রিকোয়েন্সির যেমন ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হবে, ভাইরাস এসব ডিভাইসের মধ্যে তত বেশি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব ডিভাইসে রিমোর্ট অ্যাক্সেসের ক্ষেত্রে সিএসও’র উচিত আরও বেশি সচেতন হওয়ার। কেননা, সম্ভাব্য মেলিশাস আক্রমণ হলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিতে পারবে হ্যাকারেরা।
পরিধানযোগ্য ডিভাইস গুগল গস্নাস : গ্লোবাল ওয়্যারেবল টেকনোলজি মার্কেট ২০১৩ সালে ৪৬০ কোটি ইউএস ডলারে উন্নীত হবে। আর ভিশন গেইন লিমিটেডের মতো তা অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকবে ২০১৪ সালে। এ মার্কেটে গুগল গস্নাসের মতো ডিভাইসগুলো সরাসরি আক্রমণের শিকার হবে। কেননা, এগুলো ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকে। এছাড়া এসব ডিভাইসের সাথে সিকিউরিটি সলিউশন্স নেই। যদিও কিছু ক্ষেত্রে থাকে, তবে তা খুবই সীমিত পরিসরে।
গুগল গস্নাসে হ্যাক করার ফলে হ্যাকারেরা পেয়ে যাবে গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেট তথ্য এবং ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপ্রাইটরি। একটি প্রতিষ্ঠান জানে না, কোন ধরনের ডাটা বা কতটুকু ডাটা পরিধানযোগ্য ডিভাইস ব্যবহার করে গুগল গস্নাসের মাধ্যমে। যেহেতু এগুলো অফিস এবং এন্টারপ্রাইজের অন্যান্য পরিবেশ জুড়ে মুভ করে যাচ্ছে। হ্যাকারেরা এসব অডিও এবং ভিডিও কপি করে নিতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়্যারেবল ডিভাইসের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উচিত নীতিমালা প্রণয়ন করা, যা সীমাবদ্ধ করবে কোথায় কোথায় এ জিনিসগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে, কখন এগুলো ব্যবহার করা যাবে এবং তাদের গ্রহণযোগ্য ব্যবহার কোনটি ইত্যাদি।
রিটেইল ইনভেন্টরি মনিটরিং এবং কন্ট্রোল এম-টু-এম : ভিশন গেইন লিমিটেডের তথ্যমতে, ২০১৩ সালে গ্লোবাল ওয়্যারলেস এম-টু-এমের রাজস্ব আয় ৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলারে উন্নীত হবে। ২০১৪ সালে ব্যবসায়ে থ্রিজি সেল্যুলার ডাটা ট্রান্সমিশন প্যাকেজসহ ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকবে। এই ট্রান্সমিটারগুলো ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হলে এবং এগুলোর জন্য সংশ্লিষ্ট অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে ইন্টারনেটভিত্তিক হামলার জন্য ভঙ্গুর করে তুলবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বিশেষজ্ঞেরা
আইওটির জন্য চাই দক্ষ জনশক্তি
প্রযুক্তিবিদদের লক্ষ্য এখন কোটি কোটি কানেক্টেড ডিভাইসের একটি নেটওয়ার্ক। এ বিষয়টি প্রযুক্তিবিশ্বে প্রভাবশালী সিসকো, ইন্টেল ও জেনারেল ইলেকট্রিকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোযোগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে। এগুলোর রয়েছে ইন্টারনাল বিজনেস ইউনিট, যেগুলো ওই নেটওয়ার্ক অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ডেডিকেটেড।
অ্যানালিস্ট ও ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন অবস্থায় বাজারে নতুন ধরনের আইটি বিশেষজ্ঞের চাহিদা ব্যাপক, বিশেষ করে যারা নতুন পণ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং করেন এবং তাদের সংগৃহীত ডাটা প্রসেস যারা করতে পারবেন তাদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি হবে। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ইন্টারনেট অব থিংস তথা আইওটির ক্ষেত্রে প্রচুর জনবলের অভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।
২০১১ সালে ম্যাককিনসে (Mckinsey) রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, গভীরভাবে ডাটা অ্যানালাইসিসে সক্ষম দক্ষ লোকবলের অভাব হবে যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার জনের। ১৫ লাখ ম্যানেজার ও অ্যানালিস্ট ব্যবসায়ের সিদ্ধান্ত নেন তাদের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে।
দক্ষ জনশক্তির অভাবের ফলে জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানি গত কয়েক বছর ধরে অভ্যন্তরীণভাবে ডাটা বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। এই তথ্য দিয়েছেন জেনারেল ইলেকট্রিকের প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্কো অ্যানোজিয়াটা। ২০১১ সালে এই কোম্পানিটি ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান রামোন নামে একটি সফটওয়্যার সেন্টার খোলে। সেখানে শত শত কর্মী ভাড়া করে প্রশিক্ষিত করা হয় কোম্পানির ইন্টারনেট প্রজেক্টের সাথে কনসাল্ট করার জন্য। কেন্দ্র থেকে একজন বিশেষজ্ঞ জিই কর্মীদেরকে সহায়তা দিতে পারে জেট ইঞ্জিন থেকে সহায়ক ডাটা সংগ্রহ এবং অ্যানালাইজ করার জন্য, যাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ে এবং জ্বালানির ব্যবহার হয় উন্নত।
অর্থনীতিবিদ মার্কো অ্যানোজিয়াটা আরও বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না পর্যাপ্ত গ্লোবাল আইটি ডাটা সায়েন্স এবং সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কাজ করতে সক্ষম ওয়ার্ক ফোর্স তৈরি হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদেরকে কাজ করতে হবে তাদেরকে ডেভেলপ করার জন্য। জিই আশা করছে, এরা এ ধরনের কাজে পারদর্শী এক হাজার বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলো জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় অভিজ্ঞ বা দক্ষ কর্মীদেরকে খোঁজ করে থাকে। অ্যানোজিয়াটা বলেন, আমাদের আরও অনেক কর্মী দরকার, যারা ডাটা সায়েন্টিস্ট ও অপারেশন ম্যানেজার উভয় ধরনের গুণসম্পন্ন। তিনি আরও বলেন, কীভাবে ডাটা ব্যবহার করতে হয়, কীভাবে অ্যানালাইটিক্স ব্যবহার করতে হয়, তা যেমন বুঝতে হবে, তেমনি বুঝতে হবে তাদের নিজেদের ব্যবসায় লাইন কেমন হবে তা-ও।
সম্প্রতি সিসকো ‘ফগ কমপিউটিং’ ডেভেলপ করার ঘোষণা দেয় অথবা একটি নেটওয়ার্ক ডেভেলপ করার কথা ঘোষণা দেয়, যা ডিভাইসগুলো থেকে ডাটা সংগ্রহ করে তৈরি করবে ইন্টারনেট অব থিংস। এ ক্ষেত্রেও অনুরূপভাবে হায়ার করার জন্য লোক খোঁজ করছে। এমন তথ্য দিয়েছেন সিসকোর আইওটি ডিভিশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জোসেফ ব্র্যাডলি। তবে এর সাথে সাথে কোম্পানি অন্য প্রার্থীদের খোঁজ করছিল, যারা অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির সহযোগীরূপে কাজ করতে পারে। শুধু তাই নয়, কোম্পানির বাইরেও যাতে কাজ করতে পারে সে বিষয়টিও তাদের মাথায় ছিল। সিসকো নেটওয়ার্কের সাপোর্ট নিশ্চিত করার জন্য এরা এ কাজটি করেছিল।
অ্যানোজিয়াটা আরও বলেন, যদি আপনি ১০ বছর আগে ফিরে যান, তাহলে দেখতে পাবেন এন্টারপ্রাইজ জুড়ে যেসব উদ্ভাবন হয়, তার ৮০-৯০ শতাংশই আসে এই কোম্পানি থেকে। যদি আপনি বর্তমান আলোকে চিন্তা করেন, তাহলে দেখতে পারবেন প্রায় ৫০-৫০ শতাংশ, খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন আসে সিসকো কোম্পানির বাইরে থেকে, যেহেতু স্টার্টআপগুলো, হার্ডওয়্যার প্রস্ত্ততকারক এবং ডেভেলপারেরা সবাই চান ইন্টারনেট অব থিংসের সুবিধা ভোগ করতে।
ম্যাকিনসি গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের অ্যানালিস্ট মিখাইল চুই বলেন, নেটওয়ার্কের প্রতিটি পয়েন্ট সৃষ্টি করছে বিপুল পরিমাণ ডাটা, যা রিয়েল টাইমে প্রসেস করা দরকার। তবে এ ধারার তথ্য অ্যানালাইসিস করার জন্য এখন পর্যন্ত অনেক আইটি প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত আইটি গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে পারেনি।
বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাটা সায়েন্স প্রোগ্রাম ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে ছাত্ররা আইওটি প্রজেক্টে কাজ করার উপযোগী হতে পারে। সেপ্টেম্বরে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে স্কুল অব ইনফরমেশন ইনফরমেশন এবং ডাটা সায়েন্সে সণাকোত্তর ডিগ্রি চালু করে। সব ক্লাসই হয় অনলাইনে। প্রোগ্রামের প্রথম দল অন্যান্য বিষয়ে স্কিলের সাথে সাথে শিক্ষাগ্রহণ করে অ্যাডভান্সড স্ট্যাটিসটিক্স, সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং এবং সেন্সর ও মোবাইল ডিভাইস থেকে সংগৃহীত ডাটাকে প্রসেস করার বিষয়ে। এর সাথে ছাত্রদেরকে শিক্ষা দেয়া হয় নৈতিকতা এবং ডাটার গোপনীয়তার বিষয়ে। অন্য আরও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কার্নেগি মেলন, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং কলম্বিয়া অনুরূপভাবে ডাটা সায়েন্সে প্রোগ্রাম চালু করে।
বার্কলে স্কুল অব ইনফরমেশনের ডিন অ্যাননালি সাক্সেনিয়ান বলেন, যখনই ইন্টেল ও সিসকোর মতো বড় কোম্পানি ইন্টারনেট অব থিংসের নতুন উদ্যোগের কথা বলে, তখন তা হয়ে ওঠে এক তাগাদা, যা টেকনোলজি পাঠক্রমে বিকশিত হয়, যাতে আইটি স্কিলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো যায়।
সাক্সেনিয়ান আরও বলেন, জনগণকে ডাটা নিয়ে কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করতে হয়, সচরাচর অসংগঠিত ডাটা হয় বিশাল আকারে এবং এগুলোকে এক্সপ্লোর করতে হবে। এরপর তাদেরকে গ্রহীতাদের সাথে কমিউনিকেটে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রায় ২৮ শতাংশ পাইলট ক্লাস পেশাদারিভাবে কাজ করছেন, যারা অবসর সময়ে তাদের ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
গার্টনার অ্যানালিস্ট হাং লিহোং বলেন, এই কোর্স সম্পন্ন করতে ১২-১৮ মাস সময় নেয়, তবে স্পেশালাইজড ডাটা সায়েন্স প্রোগ্রামের জন্য এটি এখনও কমন প্লেস নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না আইটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম দ্রুতগতিতে বিপুলসংখ্যক ডাটা সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে দক্ষ জনবল তৈরি করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি বিষয়ে আলাদাভাবে বিশেষজ্ঞদের একত্রে কাজ করতে হবে।
ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com