• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ওয়্যারলেস মাল্টিফাংশনাল প্রিন্টার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কে এম আলী রেজা
মোট লেখা:১৫৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রিন্টার
তথ্যসূত্র:
হার্ডওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ওয়্যারলেস মাল্টিফাংশনাল প্রিন্টার
ওয়্যারলেস প্রিন্টার বা মাল্টিফাংশন প্রিন্টার (MFP) এখন অফিসের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের বাসায়ও ইদানীং দেখা যাচ্ছে। ওয়্যারলেস প্রিন্টার অফিসের যেকোনো স্থানে স্থাপন করা যায়। এ ক্ষেত্রে ডাটা ক্যাবল টানার কোনো ঝামেলা থাকে না। সুবিধাজনক স্থানে ওয়াইফাই সক্ষম ওয়্যারলেস প্রিন্টার স্থাপন করে অন্যান্য ওয়াইফাই ডিভাইস থেকে সহজেই এতে প্রিন্ট অর্ডার দেয়া যায়।
প্রায় এক দশক আগে ওয়্যারলেস প্রিন্টারের যাত্রা শুরু হলেও গত দুই-তিন বছরে এর ব্যাপক পরিচিতি ও প্রসার হয়েছে। তারের মাধ্যমে সংযোগের ঝামেলা এড়াতেই অনেকেই ওয়াইফাই বা ওয়্যারলেস প্রিন্টার বেছে নিচ্ছেন। তবে ওয়াইফাই প্রিন্টারে যথারীতি প্রিন্টিংয়ের জন্য ইউএসবি পোর্ট ও নেটওয়ার্কে সংযোগের জন্য ইথারনেট ল্যান পোর্ট তো থাকছেই। লেজার প্রিন্টারের পাশাপাশি এখন অনেক ইঙ্কজেট প্রিন্টারও ওয়াইফাইসমৃদ্ধ হচ্ছে। ফলে যারা কাজের সুবিধার্থে বিশেষ করে প্রফেশনাল কাজে ইঙ্কজেট প্রিন্টার ব্যবহার করেন, তাদেরও দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
নতুন ভার্সনের ওয়াইফাই প্রিন্টারে রয়েছে বাড়তি মোবাইল প্রিন্টিং সাপোর্ট। ফলে অ্যাপলের এয়ারপ্রিন্টের (AirPrint) মাধ্যমে আইফোন বা আইপ্যাড থেকে কম্প্যাটিবল ওয়াইফাই প্রিন্টারে প্রিন্ট করা যাচ্ছে। এছাড়া থার্ড পার্টির তৈরি অ্যাপস দিয়ে অ্যান্ড্রয়িডসহ অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম থেকেও ওয়াইফাই প্রিন্টার অ্যাক্সেস করা যায়। ক্লাউডভিত্তিক সার্ভিস থেকেও অনেকে ওয়াইফাই প্রিন্টারে প্রিন্ট পাঠাতে পারেন।
কিছুসংখ্যক প্রিন্টারে আবার ব্যবহার করা হচ্ছে ওয়াইফাই ডিরেক্ট বা এর সমতুল্য প্রযুক্তি, যাতে ওয়্যারলেস কানেক্টিভিটির বিষয়টি অনেকখানি সহজ করে নিয়ে আসা হয়েছে। ওয়াইফাই ডিরেক্ট সক্ষম কমপিউটার এবং প্রিন্টার সরাসরি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারে। এজন্য কোনো ধরনের ওয়্যারলেস অ্যাক্সেস পয়েন্টের প্রয়োজন হয় না। ওয়্যারলেস প্রিন্টিং প্রযুক্তির আরেকটি নবতর সংস্করণ হচ্ছে এনএফসি (NFC- Near Field Communication), যাকে অধিকতর ডিরেক্ট প্রিন্টিং পদ্ধতি বলা হয়। এ পদ্ধতিতে আপনি শুধু একটি কম্প্যাটিবল মোবাইল ডিভাইস স্পর্শ করে একটি এনএফসি সক্ষম প্রিন্টারে প্রিন্টিং কাজ আরম্ভ করতে পারেন।
একটি প্রচলিত ধারণা অনেককেই ওয়্যারলেস প্রিন্টার কেনার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করছে। অনেকেই ভেবে থাকেন, ওয়্যারলেস প্রিন্টিং সুবিধার কারণে হয়তো প্রিন্টিং গতি কমে যায়। তবে সব ওয়্যারলেস প্রিন্টারেই এমনটা হয় না। ওয়্যারলেস প্রিন্টারের গতি নির্ভর করছে প্রিন্টারের স্পেসিফিকেশনের ওপর। অনেক ক্ষেত্রে প্রিন্টিং কাজ চলার সময় ওয়্যারলেস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। তবে এই বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময়কাল সর্বমোট প্রিন্টিং সময়ের তুলনায় খুব কম। তবে দেখা গেছে, রাউটারের অবস্থানের সাপেক্ষে যদি ওয়্যারলেস প্রিন্টারকে যথাযথ জায়গায় বসানো যায়, তাহলে সিগন্যাল বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা অনেকখানি কমে আসবে। তবে যেসব ক্ষেত্রে প্রিন্টিং গতি অগ্রাধিকার পাবে, সেসব ক্ষেত্রে ওয়াইফাই প্রিন্টিং অপশনের পাশাপাশি ইথারনেট প্রিন্টিং অপশনটি দেখে নিতে হবে। এছাড়া এখন সব প্রিন্টারেই অন্তত একটি ইউএসবি পোর্ট থাকে, যা প্রিন্টিং কাজে ব্যবহার করা যাবে।
ওয়্যারলেস বা ওয়্যারড যেটাই হোক না কেন, এখন একটি প্রিন্টারকে শুধু প্রিন্টার হিসেবে দেখা হয় না। প্রিন্টারকে বলা হয় মাল্টিফাংশন প্রিন্টার। অর্থাৎ একটি প্রিন্টারে অনেকগুলো কাজ বা ফাংশন থাকে, যা একজন ইউজার বাড়তি পাওয়া হিসেবে লুফে নেন। যেমন- এইচপি কালার লেজার প্রো এমএফপি এম২৭৭ডিডব্লিউ প্রিন্টার।
এইচপির তৈরি সর্বাধুনিক এ প্রিন্টারটিতে প্রিন্টিংয়ের পাশাপাশি একে স্ক্যানার, স্বতন্ত্র ফটোকপিয়ার এবং ফ্যাক্স মেশিন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। প্রিন্টারটিকে আরও স্পেশাল করে তুলেছে এর ইউএসবি মেমরি স্টিক থেকে প্রিন্ট করার এবং স্ক্যান করে তা মেমরি স্টিকে সংরক্ষণ করার ক্ষমতা। পাশাপাশি প্রিন্টারটি ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট এবং পিডিএফ ফাইল কমপিউটারের সাহায্য ছাড়া মেমরি স্টিক থেকে সরাসরি প্রিন্ট করতে পারে। এছাড়া অপারেটিং সিস্টেমের সংশ্লিষ্ট ফ্যাক্স সফটওয়্যার বা এইচপির নিজস্ব ইউনিভার্সাল ফ্যাক্স ড্রাইভার ব্যবহার করে প্রিন্টারটি সংযুক্ত কমপিউটার থেকে ফ্যাক্স পাঠাতে পারে।
আপনি যদি ওই প্রিন্টারটিকে ইউএসবি ক্যাবলের মাধ্যমে একটি কমপিউটারের সাথে যুক্ত করেন, তাহলে এইচপির ওয়েব অ্যাপস ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন না বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রিন্ট করতে পারবেন না। তবে ওই প্রিন্টারের ওয়াইফাই ডিরেক্ট ফিচারের কারণে অ্যান্ড্রয়িড ও অ্যাপল অপারেটিং সিস্টেম চালিত ফোন এবং ট্যাবের সাথে প্রিন্টারকে সরাসরি যুক্ত করতে পারবেন। যেসব মোবাইল ডিভাইস এনএফসি সাপোর্ট করে, সেসব ডিভাইসের সাথে প্রিন্টারকে যুক্ত করতে পারেন। এজন্য প্রিন্টারের সামনে অবস্থিত এনএফসি লোগোতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ডিভাইসটিকে স্পর্শ করতে হবে।
এইচপির এম২৭৭ডিডব্লিউ ওয়্যারলেস প্রিন্টারটি যথেষ্ট দ্রুততার সাথে প্রিন্ট করতে সক্ষম। রঙিন ও সাদাকালো উভয় ধরনের প্রিন্টিংয়ের ক্ষেত্রে প্রিন্টারটি মিনিটে প্রায় ২০ পৃষ্ঠা প্রিন্ট করতে পারে। তবে গ্রাফিক্স প্রিন্ট করার ক্ষেত্রে পৃষ্ঠার সংখ্যা কিছুটা কমে আসবে। সার্বিক বিবেচনায় এইচপির এই প্রিন্টারটি গতি, টেক্সট ও গ্রাফিক্সসহ প্রিন্টিংয়ের গুণগত মান, মাল্টিফাংশনাল ফিচার, মোবাইল প্রিন্টিং ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের কারণে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে এবং বাজারে অন্যান্য মাল্টিফাংশনাল প্রিন্টারের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
ক্যাননের প্রক্সিমা এমজি৫৭২০ ওয়্যারলেস ইঙ্কজেট প্রিন্টারটির মৌলিক মাল্টিফাংশনাল প্রিন্টিং ফিচারগুলো সীমিত রয়েছে শুধু প্রিন্টিং, স্ক্যানিং ও কপিংয়ের মধ্যে। এতে কোনো ইউএসবি পোর্ট বা মেমরি কার্ড সস্নট নেই। এর অর্থ হচ্ছে প্রক্সিমা এমজি৫৭২০ ওয়্যারলেস প্রিন্টারে ইউএসবি পোর্ট বা মেমরি কার্ড থেকে প্রিন্টিং সুবিধা পাচ্ছেন না। তবে এটি ওয়্যারলেস প্রিন্টিং সাপোর্ট করে। এর ফলে এটি মোবাইল প্রিন্টিং ও স্ক্যানিং সাপোর্ট করে এবং কিছু নির্বাচিত ওয়েবসাইট থেকে এতে প্রিন্ট করা যায়।
প্রিন্টার যে নেটওয়ার্কে যুক্ত রয়েছে, তাতে ইন্টারনেট সুবিধা থাকলে এবং মোবাইল ডিভাইসে ক্যানন প্রিন্ট অ্যাপস থাকলে ওই মোবাইল ডিভাইস ক্লাউডের মাধ্যমে প্রিন্টিং সুবিধা পাবে। এর ফলে নির্বাচিত ওয়েবসাইটের পাশাপাশি এ প্রিন্টারে ড্রপবক্স, গুগলড্রাইভ, ফেসবুক, টুইটার থেকে প্রিন্ট করা যায়। তবে প্রিন্টারটিকে যদি ইউএসবি ক্যাবলের মাধ্যমে কমপিউটারের সাথে যুক্ত করেন, তাহলে ক্লাউড বা ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি এতে প্রিন্ট করা যাবে না।
প্রক্সিমা এমজি৫৭২০ ওয়্যারলেস প্রিন্টারের ছাপার মান যথেষ্ট উন্নত। টেক্সটের পাশাপাশি এর গ্রাফিক্স আউটপুটের মান একে প্রফেশনাল প্রিন্টারের সুখ্যাতি এনে দিয়েছে। সুতরাং যারা প্রফেশনাল প্রিন্টিং বিশেষ করে গ্রাফিক্স বা ফটো প্রিন্টিংয়ের কাজ করতে চান, তারা এ ওয়্যারলেস ইঙ্কজেট প্রিন্টারটি অনায়াসে বেছে নিতে পারেন।
বাজারে অনেক আগেই মাল্টিফাংশনাল প্রিন্টার এসেছে। তবে মাল্টিফাংশনের পাশাপাশি ওয়্যারলেস প্রিন্টিং, ক্লাউড বা ইন্টারনেট/ ওয়েবভিত্তিক প্রিন্টিং, অ্যান্ড্রয়িড ও অ্যাপল অপারেটিং সিস্টেমচালিত মোবাইল ফোন এবং ট্যাবলেট থেকে প্রিন্টিং বিষয়গুলো আমাদের অনেকের কাছেই নতুন। আধুনিক প্রিন্টারের এ ফিচারগুলোর সাথে পরিচিত হতে পারলে এবং এগুলো কাজে লাগাতে পারলে আমাদের প্রিন্টিং সংক্রান্ত কাজগুলো অনেকখানি সহজ হয়ে যাবে
ফিডব্যাক : kazisham@yahoo.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস