• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ওয়াই-ফাইয়ের চেয়ে শতগুণ দ্রুতগতির লাই-ফাই প্রযুক্তি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সোহেল রানা
মোট লেখা:৪০
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রযুক্তি বিপ্লব
তথ্যসূত্র:
দশদিগন্ত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ওয়াই-ফাইয়ের চেয়ে শতগুণ দ্রুতগতির লাই-ফাই প্রযুক্তি
বাজারে আসছে নতুন প্রযুক্তি লাইট ফিডেলিটি (লাই-ফাই)। যার গতি এক সেকেন্ডে ১ জিবি। রেগুলার ওয়াই-ফাইয়ের থেকে যার স্পিড ১০০ গুণ বেশি। স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল কমিউনিকেশনের প্রধান হ্যারল্ড হ্যাসের মাথা থেকে এসেছে এই লাই-ফাই প্রযুক্তি। মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই লাইট ইমেটিং ডায়োড (এলইডি) থেকে বিচ্ছুরিত আলোর মাধ্যমে ডাটা ট্রান্সফারের পদ্ধতিটা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন।
সম্প্রতি লাই-ফাই নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে সফল হওয়ার দাবি করেছেন গবেষকেরা। লাই-ফাই মূলত আলোর মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তরের একটি পদ্ধতি। গবেষকদের দাবি, এটি ওয়াই-ফাই ইন্টারনেটের চেয়েও শতগুণ দ্রুতগতিতে তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম। এক পরীক্ষায় লাই-ফাই দিয়ে ১ জিবিপিএস (গিগাবিট পার সেকেন্ড) পর্যন্ত তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছেন ইউরোপের দেশ এসেত্মানিয়ার গবেষকেরা। এসেত্মানিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ভেলমেনি বিভিন্ন অফিস ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে লাই-ফাই নিয়ে পরীক্ষা চালায়।
প্রযুক্তি বিশেস্নষকেরা বলেন, ‘ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কে আলো ব্যবহার করে তথ্য স্থানান্তরের পদ্ধতি ইতোমধ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে আলোক বিম ব্যবহার করে বাতাসের মধ্য দিয়ে তথ্য স্থানান্তর প্রক্রিয়াটি আরও কঠিন। কারণ, এ ক্ষেত্রে লাই-ফাই উদ্ভাবক হ্যারল্ড হাস আলোর নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য কোনো টানেল বা পথ থাকে না।’
ভেলমেনির প্রধান নির্বাহী দীপক সোলাঙ্কি যুক্তরাজ্যের আইবি টাইমসকে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভিজিবল লাইট কমিউনিকেশনের (ভিএলসি) প্রকল্প নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছি। বর্তমানে আমরা একটি আলো দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। এতে বৈদ্যুতিক বাতির মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তর করা যায়।’
এর আগে ২০১১ সালে স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হ্যারল্ড হ্যাস লাই-ফাই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ঘোষণা দেন। ইতোমধ্যে বিমানে ও গোয়েন্দা সংস্থা নিরাপদ তথ্য স্থানান্তরের জন্য এ পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে।
২০১৩ সালে জার্মানির গবেষকেরা ‘লাই-ফাই’ নামের তথ্য স্থানান্তর পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি করেন। বার্লিনের ফ্রাউনহফার ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা দাবি করেন, লাইট ইমিটিং ডায়োড বা এলইডি ব্যবহার করে প্রতি সেকেন্ডে এরা ৮০০ মেগাবিট গতিতে তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছেন। এ পদ্ধতিতে এলইডি ব্যবহার করে ডিজিটাল তথ্যের সঙ্কেত পাঠানো হয়। একটি লাইট সেন্সর এলইডি থেকে পাঠানো তথ্য শনাক্ত করতে পারে, যা পরে কমপিউটারে প্রসেসিং করা সম্ভব হয়। গবেষকেরা এ পদ্ধতিটির নাম দেন ‘লাই-ফাই’।
গবেষকদের দাবি, লাই-ফাই ব্যবহার করে হাই ডেফিনেশন মানের চলচ্চিত্রও এক মিনিটেই ডাউনলোড করা সম্ভব। বাড়ির প্রতিটি বৈদ্যুতিক বাতিকে লাই-ফাই প্রযুক্তির রাউটার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটে তারহীন প্রযুক্তির ইন্টারনেট হিসেবে কাজ করতে পারে।
তবে ওয়াই-ফাইয়ের মতো এটি দেয়ালের ওপারে ডাটা পাঠাতে পারে না। এর কারণ লাই-ফাই আলোর মাধ্যমে তথ্য পাঠিয়ে থাকে। তাই আবদ্ধ জায়গাতে সীমাবদ্ধ থাকবে এর সিগন্যাল। তবে একে লাই-ফাইয়ের সীমাবদ্ধতা হিসেবে না ধরে অনেকে ভাবছেন সুবিধা হিসেবেই। কারণ, লাই-ফাইয়ের সংযোগ ওয়াই-ফাইয়ের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ। পাসওয়ার্ড চুরি করে আর কেউ সেটা ব্যবহার করতে পারবে না। ঘরে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী প্রযুক্তি হতে পারে লাই-ফাই। হয়তো ভবিষ্যতে দেখা যাবে, বাসায় ব্যবহার হওয়া এলইডি লাইট একই সাথে ঘরকে আলোকিত এবং ঘরের ভেতরে লোকাল নেটওয়ার্ক তৈরিতে অবদান রাখছে।
ভেলমেনি ছাড়াও কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লাই-ফাই প্রযুক্তি ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে কাজ করছে। ওলেডকোম ও পিওরলাইফাই এমনই দুটি প্রতিষ্ঠান। পিওরলাইফাই প্রতিষ্ঠানটি আবার লাই-ফাই প্রযুক্তির জনক হ্যারল্ড হ্যাসের হাতে গড়া।
অন্যদিকে ওয়্যারলেস ফিডেলিটি (ওয়াই-ফাই) হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের ওয়্যারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের টার্ম, যেখানে ওয়াই-ফাই এলায়েন্স নামে একটি কমিটির মাধ্যম পরীক্ষিত ও অনুমোদিত হার্ডওয়্যার ও স্পেসিপিকেশন ব্যবহার করা হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য বিভিন্ন কোম্পানির ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের ডিভাইসগুলো যাতে পরস্পরের সাথে কাজ করতে পারে। এছাড়া নেটওয়ার্কটির কনফিগারেশনসহ অন্যান্য টেকনিক্যাল বিষয়ের একটি স্ট্যান্ডার্ড মান নির্ধারণ করা। ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধা হচ্ছে, যদি কারও মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপে ওয়াই-ফাই অ্যাডাপ্টার থাকে, তবে এটি যেকোনো ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে পারবে। সুতরাং একটি ওয়াই-ফাই রাউটার/অ্যাক্সেস পয়েন্ট/অ্যান্টেনার মাধ্যমে কোনো বিশেষ স্থানে যখন ওয়্যারলেস ইন্টারনেট কানেকশনের সুবিধা দেয়া হয়, তখন সেই স্থানকে হটস্পট বলা হয়। একাধিক অ্যাক্সেস পয়েন্ট/অ্যান্টেনার মাধ্যমে সৃষ্ট হটস্পটগুলোকে সমন্বয় করে যখন বড় এলাকাভিত্তিক একটি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক তৈরি হয়, তখন সেই এলাকাকে ওয়াই-ফাই জোন বলা হয়।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস