• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ঘনমূল বা কিউবরুট নির্ণয়ের একটি সহজ কৌশল
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: গণিতদাদু
মোট লেখা:১৩৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - জানুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গণিত
তথ্যসূত্র:
ম্যাথ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ঘনমূল বা কিউবরুট নির্ণয়ের একটি সহজ কৌশল
আমরা জানি, ২৩ = ২ * ২ *২ = ৮। অতএব ২-এর ঘন বা কিউব হচ্ছে ৮। উল্টোভাবে ৮-এর ঘনমূল বা কিউবরুট হচ্ছে ২। একাইভাবে ৮৩ = ৮ * ৮* ৮ = ৫১২। অতএব ৮-এর ঘন হচ্ছে ৫১২, আর ৫১২-এর ঘনমূল হচ্ছে ৮।
এখানে আমরা প্রথমে জানব ১ থেকে ১০০০০০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলো ঘনমূল নির্ণয়ের একটি সহজ কৌশল। তবে এই কৌশল সেইসব সংখ্যার জন্য প্রযোজ্য, যেগুলোর ঘনমূল একটি পূর্ণসংখ্যা। আমরা এও জানি ১-এর ঘনমূল ১ এবং ১০০০০০০-এর ঘনমূল ১০০। অতএব ১ থেকে ১০০০০০০ পর্যন্ত যেসব সংখ্যার ঘনমুল এখানে বের করব, এগুলোর ঘনমূল ১০০-এর চেয়ে বড় হবে না।
এই কৌশলটি ব্যবহারের জন্য আমাদেরকে প্রথমে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সংখ্যার ঘন বা কিউব কত তা লক্ষ রাখতে হবে। সম্ভব হলে তা মুখস্ত রাখতে পারলে আরো ভালো হয়। একই সাথে লক্ষ রাখতে হবে এসব ঘনফলের শেষ অঙ্কটি কত। কারণ আমরা যখন ১ থেকে ১০০০০০০ পর্যন্ত কোনো সংখ্যার ঘনফল বের করতে যাবো তখন এই শেষ অঙ্কটি আমাদেরকে ব্যবহার করতে হবে। তা হলে শুরুতেই আমরা জেনে নিই ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সংখ্যার ঘনফল কত এবং একই সাথে জেনে নিই এই ঘনফলগুলোর শেষ অঙ্কগুলোও।
১-এর ঘন ১, যার শেষ অঙ্ক ১
২-এর ঘন ৮, যার শেষ অঙ্ক ৮।
৩-এর ঘন ২৭, যার শেষ অঙ্ক ৭।
৪-এর ঘন ৬৪, যার শেষ অঙ্ক ৪।
৫-এর ঘন ১২৫, যার শেষ অঙ্ক ৫।
৬-এর ঘন ২১৬, যার শেষ অঙ্ক ৬।
৭-এর ঘন ৩৪৩, যার শেষ অঙ্ক ৩।
৮-এন ঘন ৫১২, যার শেষ অঙ্ক ২।
৯-এর ঘন ৭২৯, যার শেষ অঙ্ক ৯।
১০-এর ঘন ১০০০, যার শেষ অঙ্ক ০।
এখানে আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, আমরা এখানে ১ থেকে ১০০০০০০ পর্যন্ত যেসব সংখ্যার ঘনমূল নির্ণয় করতে যাব এর প্রত্যেকটির ঘনমূল হবে দুই অঙ্কের। আর এর শেষ অঙ্কটি আমরা পেয়ে যাবো প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্কটি থেকেই। যদি প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ১, ৪, ৫,৬ বা ৯ হয় তবে নির্ণেয় ঘনমূলের বা কিউবরুটের শেষ অঙ্ক হবে অপরিবর্তীতভাবে। তাই, আর প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্কটি ২ বা ৮ হলে সে ÿÿত্রে ২ পরিবর্তীত হবে ৮-এ, আর ৮ পরিবর্তীত হবে ২-এ। একইভাবে প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ৩ বা ৭ হলে কিউবরুটের শেষ অঙ্ক পাব এ দুটির পরস্পর পরিবর্তন করে।
অপরদিকে প্রদত্ত সংখ্যার ঘনমূলের প্রথম অঙ্কটি জানার জন্য আমাদেরকে প্রথমে প্রদত্ত সংখ্যার শেষ তিনটি অঙ্ক মাথা থেকে মুছে ফেলে অবশিষ্ট থাকা সংখ্যাটি দেখব কোন সংখ্যার ঘনফলের কাছাকাছি। যে সংখ্যার ঘনফলের এটি কাছাকাছি হবে, সেটিই হবে নির্নেয় ঘনমূলের প্রথম অঙ্ক। এভাবে আমরা কাঙিক্ষত দুই অঙ্কের ঘনফলের প্রথম ও শেষ অঙ্কটি জেনে নিতে পারি। মোটামুটি আলোচ্য কৌশলটির নিয়ম এটিই। বিষয়টি স্পষ্ট করতে আমরা কয়েকটি উদাহরণে যাব।
ধরা যাক, আমারা জানতে চাই, ৩৯,৩০৪ সংখ্যাটির ঘনমূল বা কিউবরুট কত। এর ঘনমূল হবে দুইঅঙ্কের। এর শেষ অঙ্কটি পেতে আমাদের বিবেচানা আনতে হবে প্রদত্ত সংখ্যাটির শেষ অঙ্কটিকে। এখনে প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্কটি ৪। অতএব নির্ণেয় ঘনমূলের শেষ অঙ্কটিও হবে ৪। কারণ, আমরা জেনেছি প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ১, ৪,৫,৬ বা ৯ হলে ঘনফলের শেষ অঙ্কটিও একই হবে।
এবার দুই অঙ্কের নির্ণেয় ঘনফলের প্রথম অঙ্কটি জানার পালা। এ ÿÿত্রে আমাদেরকে প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক তিনটি অঙ্ক (এ ÿÿত্রে ৩০৪) মাথা থেকে মুছে ফেলে যা থাকে তাকেই বিবেচনায় আনতে হবে। এ ÿÿত্রে প্রদত্ত সংখ্যা ৩৯,৩০৪ থেকে শেষ তিন অঙ্ক মাথা থেকে মুছে ফেললে বাকি থাকে শুধু ৩৯। এখন দেখতে হবে কোন সংখ্যার ঘন বা কিউব এই ৩৯ এর কাছাকাছি। আমারা দেখেছি, ৩-এর ঘন ২৭, যা ৩৯-এর চেয়ে ছোট। আর ৪-এর কিউব ৬৪, যা ৩৯ থেকে বড়। অতএব ৩-এর ঘনকেই ৩৯-এর কাছাকাছি ধরতে হবে। অতএব এই ৩ হবে নির্ণেয় ঘনমূলের প্রথম অঙ্ক, আরমএর আগে আমরা দেখেছি এর শেষ অঙ্ক ৪। অতএব ৩৯,৩০৪-এর নির্ণেয় ঘনমূল বা কিউবরুট হচ্ছে ৩৪। এর অর্থ ৩৪ * ৩৪ * ৩৪ = ৩৯,৩০৪।
এবার ধরা যাক, আমরা জানতে চাই ২৫০,০৪৭-এর ঘনমূল কত। এখানে প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ৭। অতএব নির্ণেয় ঘনমূলের শেষ অঙ্কটি হবে ৩। কারণ, আগেই বলা হয়েছে প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ৭ হলে ঘনমূলের শেষ হবে ৩, আর প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ২ হলে নির্ণেয় ঘনমূলের শেষ অঙ্ক হবে ৮, আর প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ৮ হলে নির্ণেয় ঘনমূলের শেষ অঙ্ক হবে ২। অর্থাৎ শেষ অঙ্ক ২ ও ৮ এবং ৩ ও ৭ পরস্পর পরিবর্তনীয়। এবার ভাবতে হবে নির্ণেয় ঘনমূলের প্রথম সংখ্যাটি কত হবে। এ ÿÿত্রে প্রদত্ত সংখ্যাটি শেষ তিনটি অঙ্ক ০৪৭ মাথা থেকে মুছে ফেললে হাতে থাকে ২৫০। এখন এই ২৫০ হচ্ছে ৬-এর ঘন বা কিউব ২১৬ এর চেয়ে বড়, কিন্তু ৭-এর ঘনফল ৩১৩-এর চেয়ে ছোট। অতএব ২৫০ হচ্ছে ৬-এর ঘনফল ২১৬-এর কাছাকাছি। আর এই ৬ হবে নির্ণেয় ঘনমূলের প্রথম অঙ্ক। আর এর আগে জেনেছি, এর শেষ অঙ্কটি ৩। অতএব ২৫০,০৪৭ সংখ্যাটির ঘনমূল ৬৩। এর অর্থ ২৫০,০৪৭= ৬৩ * ৬৩ * ৬৩।
এ নিয়মের সম্প্রসারণ
উপরে আমরা ১০০০০০০-এর চেয়ে ছোট যেসব সংখ্যার ঘনমূল দুই অঙ্কের সেগুলোর ঘনমূল বের করার একটি কৌশল জানলাম। এ নিয়মটিকে আমরা সেই সব সংখ্যার ÿÿত্রেও সম্প্রসারণ করতে পারি যেগুলোর ঘনমূল তিন অঙ্কের। ধরা যাক, আমরা জানতে চাই ৯৬৫৩,৫৯৭-এর ঘনমূল কত। এখানে প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ৭। অতএব নির্ণেয় ঘনমূলের শেষ অঙ্ক হবে ৩। কারণ, আগেই জেনেছি প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ৭ হলে ঘনমূলের শেষ অঙ্ক হবে ৩। এখানে নির্ণেয় ঘনমূলটি হবে তিন অঙ্কবিশিষ্ট। তা হলে এখন জানতে হবে, প্রথম দিকের অঙ্ক দুটি কী। এখানে প্রথম দিকের অঙ্ক দুটি জানতে আগের মতোই প্রদত্ত সংখ্যা ৯৬৫৩,৫৯৭-এর শেষ তিনটি অঙ্ক ৫৯৭ মাথা থেকে মুছে ফেলে অবশিষ্ট ৯৬৫৩ সংখ্যাটি বিবেচনায় আনতে হবে। দেখতে হবে ৮৬৫৩ কোন সংখ্যার ঘন বা কিউবের কাছাকাছি। দেখা গেছে, ৯৬৫৩ সংখ্যাটি ২১-এর ঘন ৯২৬১ থেকে বড়, কিন্তু ২২-এর ঘন বা কিউব ১০৬৪৮ থেকে ছোট। অতএব ৯৬৫৩ সংখ্যাটি ২১-এর ঘন ৯২৬১-এর কাছাকাছি। অতএব নির্ণেয় ঘনমূলের প্রথম দুটি অঙ্ক হবে ২১। আগে দেখেছি শেষ অঙ্কটি হবে ৩। অতএব ৯৬৫৩,৫৯৭-এর ঘনমূল ২১৩।
একইভাবে আমরা এই কৌশর ব্যবহার করে জানতে পারব ৫৩৫৩৮৬,৩২৮-এর ঘনমূল বা কিউবরুট কত। এখানে শেষ অঙ্কটি ৮। অতএব নির্ণেয় ঘনমূলের শেষ অঙ্ক হবে ২। কারণ আগেই জেনেছি প্রদত্ত সংখ্যার শেষ অঙ্ক ৮ হলে ঘনমূলের শেষ অঙ্ক হবে ২। এখন প্রদত্ত সংখ্যার শেষ তিনটি অঙ্ক বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ৫৩৫৩৬৮। আর এ সংখ্যাটি ৮১-এর কিউব ৫৬১৪৪১-এর কাছাকাছি। অতএব নির্ণেয় ঘনমূলের প্রথম দুটি অঙ্ক হবে ৮১। আগে জেনেছি, শেষ অঙ্ক হবে ২। অতএব ৫৩৫৩৮৬,৩২৮-এর ঘনমূল ৮১২।
আশা করি, কৌশলটি বুঝতে অসুবিধা হবে না।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - জানুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস