লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
প্রকাশ কুমার দাস
মোট লেখা:৫৫
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - ফেব্রুয়ারী
একাদশ শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা
একাদশ শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা
প্রকাশ কুমার দাস
বিভাগীয় প্রধান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ
মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
এ লেখায় এইচএসসির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে দ্বিতীয় অধ্যায় : কমিউনিকেশন সিস্টেমস ও নেটওয়ার্কিং থেকে সৃজনশীল দুটি প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
০১. শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি কলেজকে ২০টি কমপিউটার, একটি প্রিন্টার ও একটি মডেম দেয়া হয়। সবগুলো কমপিউটার যেন প্রিন্টার ও মডেম ব্যবহার করতে পারে, সে ধরনের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ। প্রতিষ্ঠানটি ৩২ কেবিপিএস ইন্টারনেট স্পিডের সাথে যুক্ত করা হয়। নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হলেও ভিডিও কনফারেন্স করা যাচ্ছে না।
ক. নেটওয়ার্ক টপোলজি কী? ১
খ. ফাইবার অপটিক ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন হিসেবে বেশি ব্যবহার হচ্ছে ব্যাখ্যা কর। ২
গ. অধ্যক্ষ মহোদয়ের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সুবিধা নেয়ার জন্য কোন ধরনের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা নেয়া যায় ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপক অনুযায়ী ভিডিও কনফারেন্স করার জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় বিশেস্নষণ কর। ৪
১নং প্রশ্নের উত্তর (ক)
একটি কমপিউটারের সাথে অপর একটি কমপিউটার যে কৌশলে যুক্ত হবে সে কৌশলই নেটওয়ার্ক টপোলজি।
১নং প্রশ্নের উত্তর (খ)
ডাটা কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন হিসেবে চিহ্নিত। কারণ, এর মাধ্যমে ডাটা সংরক্ষণের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বজায় থাকে। ট্রান্সমিশন লস কম, তাই বর্তমানে ল্যানে এ ক্যাবল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় এবং ল্যানে এর গতি ১৩০০ এমবিপিএস। বর্তমানে অপটিক্যাল কমিউনিকেশনের গতি বা ব্যান্ডউইডথ ১০০ এমবিপিএস থেকে ১০ জিবিপিএস। আলোর তীব্রতা ও গতি বেশি বলে একে সহজে দূরের জায়গায় পাঠানো যায়। প্রতিকূল পরিবেশে সহনীয়, তাই সারাবিশ্বে নেটওয়ার্ক ক্যাবল হিসেবে বা সাবমেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্কে এটি ব্যবহার হয়।
১নং প্রশ্নের উত্তর (গ)
অধ্যক্ষের চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে স্টার নেটওয়ার্ক টপোলজি প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা হলে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়া যাবে। যে নেটওয়ার্কে সবগুলো কমপিউটার একটি কেন্দ্রীয় জাংশন হাব বা সুইচ থেকে সংযোগ দেয়া হয়, তাকে স্টার টপোলজি বলে। জাংশন হিসেবে যে ডিভাইসটি ব্যবহার করা হয় তাকে হাব বা সুইচ বলে।
স্টার নেটওয়ার্কে প্রত্যেকটি কমপিউটার একটি হাব বা সুইচের মাধ্যমে সরাসরি যুক্ত থাকে। কমপিউটারগুলো হাবের মাধ্যমে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে ও ডাটা আদান-প্রদান করে।
নেটওয়ার্কের কোনো কমপিউটার নষ্ট হলেও নেটওয়ার্কের বাকি অংশের কাজের কোনো অসুবিধা হয় না। হাব বা সুইচ ছাড়া নেটওয়ার্কের অন্য কোনো অংশের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও নেটওয়ার্ক সচল থাকে। একই নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা যায়। স্টার নেটওয়ার্কে কোনো কমপিউটার যোগ করা বা বাদ দেয়া যায়, এতে কাজের কোনো অসুবিধা হয় না। কেন্দ্রীয়ভাবে নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণ বা সমস্যা নিরূপণ সহজ। ইনটেলিজেন্ট সুইচ ব্যবহার করলে এর সাহায্যে নেটওয়ার্কের কর্মকা- অর্থাৎ ওয়ার্কলোডিং মনিটর করা যায়।
১নং প্রশ্নের উত্তর (ঘ)
৩২ কেবিপিএস ইন্টারনেট স্পিড ব্যবহার হওয়ায় এতে ছবি দেখে সংযুক্ত হওয়া যায় না। তবে এর স্পিড বাড়লে প্রতিটি কমপিউটারে এতে ছবি দেখে সংযুক্ত হওয়া যায়, অর্থাৎ ভিডিও কনফারেন্স করা যাবে। কমপক্ষে ১-২ এমবিপিএস ইন্টারনেট স্পিড ব্যবহার করলে এতে ছবি দেখে সংযুক্ত হওয়া যাবে। এর জন্য উচ্চগতিসম্পন্ন রাউটার ব্যবহার করা যেতে পারে। এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে ডাটা পাঠানোর প্রক্রিয়াকে রাউটিং বলে। আর এ রাউটিংয়ের জন্য যে হার্ডওয়্যার ব্যবহার হয় তাকে রাউটার বলে।
কয়েকটি ভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহার হয়। রাউটার অন্য নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ গড়ার জন্য নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস ব্যবহার করে সংক্ষিপ্ত পথ বেছে নেয়। নেটওয়ার্কে রাউটার হিসেবে আলাদা ডিভাইস ব্যবহার হয়। আবার, কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাউটার হিসেবে বিভিন্ন ধরনের কমপিউটারও ব্যবহার হয়। রাউটার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজে ব্যবহার হয়। ছোট ছোট নেটওয়ার্ক রাউটারের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে বড় নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। ডাটা কলিশনের সম্ভাবনা কম। বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করতে পারে। ডাটা ফিল্টারিং সম্ভব হয়।
০২. দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ব্যাংক ‘ক’-এর একটি করে শাখা রয়েছে। বিভাগীয় শহরের প্রতিটি শাখার কমপিউটারগুলো সুইচের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত। সেখানে ব্যাংকের কার্যক্রমের বিঘ্ন না ঘটিয়ে কমপিউউটার সহজে বাড়ানো কমানোর সুযোগ রয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রাহকসেবা বাড়ানোর জন্য দেশের সব শাখাকে একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে চাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া হলো।
ক. ব্লুটুথ কী? ১
খ. শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকে কোন ট্রান্সমিশন মোডের সাথে তুলনা করা যায়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. প্রতিটি শাখাতে কোন ধরনের নেটওয়ার্ক ব্যবহার হয়েছে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. দেশের সব শাখাকে একই নেটওয়ার্কের মধ্যে আনতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শের যৌক্তিকতা কী হতে পারে তোমার মতামত তুলে ধর। ৪
২নং প্রশ্নের উত্তর (ক)
ব্লুটুথ হলো একটি তারবিহীন যোগাযোগ পদ্ধতি, যা দুই বা ততোধিক যন্ত্রের মধ্যে অ^ল্প দূরত্বে যোগাযোগ তৈরি করে।
২নং প্রশ্নের উত্তর (খ)
যেহেতু শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক পাঠদানের সময় ছাত্র-ছাত্রীরা নীরব থাকে, তখন ডাটা শিক্ষক থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে যায়। পরবর্তী সময় ছাত্র-ছাত্রীদের উত্তর শোনার সময় শিক্ষক নীরব হয়ে শুনেন। তখন ডাটা ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষকের দিকে যায়। তাই এ ডাটা ট্রান্সমিশনকে হাফ ডুপ্লেক্সের সাথে তুলনা করা যায়।
২নং প্রশ্নের উত্তর (গ)
প্রতিটি শাখাতে সেন্ট্রালাইজড নেটওয়ার্ক ব্যবহার হয়েছে। সেন্ট্রালাইজড নেটওয়ার্ক একটি প্রধান বা হোস্ট কমপিউটার এবং টার্মিনাল নিয়ে গঠিত হয়। প্রধান কমপিউটারই সব প্রসেসিং ও নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণের কাজ করে থাকে। হোস্ট হিসেবে সাধারণত মেইনফ্রেম বা অন্য কোনো শক্তিশালী সার্ভার কমপিউটার ব্যবহার হয়। টামির্নাল হলো এক ধরনের হার্ডওয়্যার, যা কিবোর্ড ও মনিটর নিয়ে গঠিত। টার্মিনালের মাধ্যমে ব্যবহারকারী হোস্ট কমপিউটারে সংযুক্ত হয়ে সার্ভিস নেয়।
২নং প্রশ্নের উত্তর (ঘ)
দেশের সব শাখাকে একই নেটওয়ার্কের মধ্যে আনতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ হলো ডিস্ট্রিবিউটেড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্রাহকসেবা বাড়াতে হবে।
ডিস্ট্রিবিউটেড নেটওয়ার্ক পরস্পর সংযুক্ত কিছু ওয়ার্কস্টেশন, স্টোরেজ ডিভাইস এবং প্রয়োজনীয় ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস নিয়ে গঠিত। ওয়ার্কস্টেশনের সাহায্যে সংযুক্ত সার্ভার কমপিউটারের সার্ভিস নেয়া যায়। কিছু কিছু ডিস্ট্রিবিউটেড নেটওয়ার্কে গ্লোবাল স্টোরেজ মিডিয়া থাকে, যার মধ্যে গ্লোবাল ইনফরমেশন ও সফটওয়্যার সংরক্ষিত থাকে। এগুলো প্রয়োজনে ওয়ার্কস্টেশন ব্যবহার করতে পারে।
ফিডব্যাক : prokashkumar08@yahoo.com