লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - ফেব্রুয়ারী
জম্বি ইনভেশন
জম্বি ইনভেশন
টাওয়ার স্ট্র্যাটেজি ঘরানার ম্যাপ স্টাইল অনেকটাই পস্ন্যান্টস ভার্সেস জম্বির মতোই। জয় করতে হবে অজানাকে, ডাঞ্জনস, প্যালেস আর অন্ধকারের জম্বিদেরকে। সাথে আছে শক্তিশালী কাস্টোমাইজেশন সেকশন, যেখানে হিরো কাস্টোমাইজেশন করা যাবে। আছে ফ্যান্টাসি আর সায়েন্স ফিকশন সেটিংস দিয়ে ইউনিট ক্র্যাফটিং, যা নিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো উইপনারি তৈরি করা যাবে। তারপরও পুরো ব্যাটল স্কিম কখনই গেমারকে বোকামি করতে দেবে না। যুদ্ধ আরও জমজমাট হয়ে ওঠে, যখন খুব শক্তিশালী কোনো জম্বির সাথে হিরোর ব্যাটল শুরু হয় কিংবা যখন বিশাল এক সিজ উইপনারি-মিক্সড জম্বি আর্মির সামনে পরে কাবু হয়ে ওঠে। গেমটিতে আছে বেশ বড় টেক ট্রি, যা নিজের গেম পস্ন্যান থেকে হিসেব করে বের করতে করতেই অনেকখানি আনন্দ উপভোগ করা যাবে।
টানা খেলে গেলে সম্পূর্ণ গেমটি শেষ করতে লাগতে পারে দুই থেকে তিন ঘণ্টা। কয়েক ঘণ্টার গেমপ্লেতে গেমার পাবে লক্ষাধিক জম্বি ধ্বংস করার আনন্দ। আছে অসম্ভব মারাত্মক সব অস্ত্র। আছে তারচেয়েও সুন্দর ম্যাজিক এবং কম্বো। আছে ডেস্ট্রাক্টেবল অবজেক্ট, থ্রো ইন, ওয়ান্ড, স্মোক বম্ব ও বহু ধরনের ইনভেন্টরি ইক্যুইপমেন্ট। গেমটিতে আছে ছোট ছোট এলিয়েন মনস্টার থেকে শুরু করে বিশালাকার দানব। আছে উড়ন্ত ও মানুষখেকো জম্বি। আর এগুলোকে ধ্বংস করার জন্য গেমার ব্যবহার করতে পারবে নানা ধরনের পোশন, মিক্সচার প্রভৃতি। আছে টানটান উত্তেজনা, অদ্ভুত নাটকীয়তা আর অবশ্যই রক্তক্ষয়- যদিও সত্যিকারের নয়। তবে যাই হোক না কেন- জম্বি ইনভেশন গেমটি গেমারকে নিয়ে যাবে বাস্তবতার অনেকখানি কাছাকাছি। দুর্দান্ত স্ট্র্যাটেজিক শুটিং গেম আবহের গ্রাফিক্স আর বাস্তব শব্দকৌশল গেমারকে গেমিংয়ের অপূর্ব সমন্বয়ে জীবন্ত করে তুলবে। অন্যান্য ট্যাকটিকাল বা স্ট্র্যাটেজিক গেমের সাথে জম্বি ইনভেশনের পার্থক্য এখানেই- অন্যান্য গেম যেখানে ভয়াবহতার প্রচ-তা আর সিনেমাটিক অ্যাপিয়ারেন্সের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়, সেখানে জম্বি ইনভেশন গুরুত্ব দিয়েছে লাইভ স্টাইল কমব্যাট আর যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতার ওপর। এখন এটা বলার অপেক্ষা রাখে না-বস্ন্যাকলিস্ট খেলতে সবচেয়ে বেশি যা প্রয়োজন তা হচ্ছে ধৈর্য; অপেক্ষা করতে হবে প্রতিটি সতর্ক মুহূর্তের মাঝে অসতর্কতার। সুযোগ বুঝে আঘাত হানতে হবে সবচেয়ে কঠিন রক্ষাব্যূহের সবচেয়ে দুর্গম কিন্তু মোলায়েম জায়গায়।
প্রথম দিকে পুরো আরপিজি সিস্টেমটিকেই দুর্দান্ত মনে হবে। কারও কাছে সেটা একটু কষ্টকরও লাগতে পারে। তবে সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত যেতে যেতে দুই ধরনের অনুভূতির কোনোটিই আর থাকবে না। সবসময় পাওয়া যাবে স্কিল পয়েন্টস, যা গেমের কনস্ট্যান্ট প্রগ্রেশন এবং ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টে সাহায্য করবে। সূক্ষ্ম হিসাব-নিকাশ ছাড়াও গেমারকে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের ওপরও কিছুটা নির্ভর করতে হবে। কারণ, গেমটির এআই যথেষ্ট ভালো যুক্তিসম্পন্ন। সবকিছু মিলিয়ে জম্বি ইনভেশন গেমারকে এক সফল ও উত্তেজনাপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশনের অভিজ্ঞতা দেবে। তাই দেরি না করে এখনই প্লেয়ার হয়ে উঠুন আর নিজেকে তৈরি করে ফেলুন দক্ষ জম্বি কিলার হিসেবে।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিসতা/৭, সিপিইউ : কোর টু কোয়াড ২.২ গিগাহার্টজ/এএমডি অ্যাথলন, র্যা ম : ৪ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/ভিসতা/৭, ভিডিও কার্ড : ১ গিগাবাইট, সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস।
সোল- মার্স কলোনাইজেশন
২০১৫-এর শেষ থেকেই সবার মুখে এক কথা- দ্য মারশান। ম্যাট ডেমনের অসাধারণ অভিনয় আর শন বিনের পুরোপুরি জীবিত অবস্থায় একটি ছবি শেষ করায় অভিভূত সবাই। সেই ছবির ছায়ালোকে ছোট্ট করে তৈরি করা হয়েছে সোল- মার্স কলোনাইজেশন।
টার্নভিত্তিক স্ট্র্যাটেজির এই গেমটিতে একটু কষ্ট করে একবার স্ট্র্যাটেজি বের করে ফেলতে পারলেই গেমিং অনেকখানি সহজ এবং আনন্দপূর্ণ হয়ে উঠবে। পাহাড়ের সরু প্যাসেজগুলো ভর্তি থাকবে নানা ধরনের গুহা আর চোরাবালি দিয়ে। সবচেয়ে ভালো হয় একটু ধৈর্য নিয়ে সময় কিংবা ভালো আবহাওয়া এগিয়ে আসার অপেক্ষা করলে। এরপরের গেমিং একটু কঠিনই হয়ে যাবে। কারণ, মিস্টার এক্সপেস্নারারের সারভাইভাল ট্যাকটিক দিনে দিনে পাজল সলভিং জনরার কাছাকাছি চলে যাবে। যখন ধীরে ধীরে গেমের প্রতিটি ট্যাকটিক গেমারের আয়ত্তে এসে পড়বে, তখন সত্যি বলতে বেশি কিছু করার থাকবে না। নিজের মধ্যে ঝুযে মানসিক এবং জীবনীশক্তি বাড়াতে হবে। আছে এআই, যা গেমারকে সাহায্য করবে বেস তৈরি করতে। নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ আর ভয়াবহতার মাঝে বেঁচে থাকতে হবে গেমারকে। তাই হার্ডকোর গেমারদের প্রথম পছন্দ হতে এর জুড়ি মেলা ভার।
গেমার যখন জ্ঞান ফিরে দেখতে পায় নিজেকে একদলা ধ্বংসসত্মূপের মধ্যে দেখতে পায়। এরপর ধীরে ধীরে গল্প এগোতে থাকে। সে মানুষের মনে কিছু জটিল ফাংশনও তৈরি করতে পারে। গেমটির গল্প অসম্ভব সুন্দর না হলেও রোমাঞ্চকর সব বাঁকে ভরা। তাই গেমটিতে এরপর কী হবে সেটা এখানে ফাঁস করব না। গেমটি অবশ্যই ‘ওয়েইট অ্যান্ড রিভিল’ ধরনের গেম। যার ফলে একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর সে কোনো মানুষকে আত্মহত্যা, অন্যকে হত্যা করা কিংবা ভুল করে নিজেকে আঘাত করে ফেলা প্রভৃতি কাজ করতে পারে। আছে অনেক ধরনের অস্ত্র এবং আপগ্রেড, বেঁচে থাকার সরঞ্জাম। সুতরাং গেমারদের উচিত দেরি না করে এখনই মঙ্গল থেকে ঘুরে আসা আর পৃথিবীকে বোঝা থেকে বাঁচানো।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিসতা/৭, সিপিইউ : কোর টু কোয়াড ২.৪ গিগাহার্টজ/এএমডি অ্যাথলন, র্যা ম : ৮ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/ভিসতা/৭, ভিডিও কার্ড : ২ গিগাবাইট, সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস।
অ্যাসাসিনস ক্রিড ক্রনিকলস
কিছু গেম আছে, যেগুলোর গল্প গড়ে ওঠে কিছু মানুষ, তাদের জীবন, জীবনের ছোট-বড় সংগ্রাম, তাদের স্বপ্ন, সেইসব স্বপ্ন পূরণের অদ্ভুত ক্ষমতা এবং সেই ক্ষমতায় জন্ম নেয়া নতুন স্বপ্ন নিয়ে। আবার কিছু গেম আছে, যেগুলো শুধুই কোড দিয়ে লিখে যাওয়া কিছু সিস্টেম, যুক্তি আর দক্ষতার কারিকুরি। উপর থেকে কিছু বিল্ডিং বস্নক পড়ল,সেগুলো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ঠিক জায়গাতে ঠিকভাবে বসানোটা নিয়ে যেমন গেম হয়, তেমনি গেম হয় যুদ্ধ করে যথেষ্ট মুদ্রা জমানোর যতক্ষণ পর্যন্ত না নতুন বর্ম, তরবারি, হাতবোমা, ট্যাঙ্কার কিংবা রোবট কিনে ফেলার সামর্থ্য না হয়। এবার গেমিং মিলেছে ধর্ম এবং ইতিহাসের সাথে। যুক্তিকে মিশিয়েছে কল্পনায়, জাদুকে মিশিয়েছে বিজ্ঞানে- প্রতিষ্ঠা করতে পারে নিজের বিশ্বাসকে। সব মিলিয়ে অনন্যসাধারণ স্টোরিলাইন, মনোমুগ্ধকর গ্রাফিক্স, বাস্তবসম্মত অডিও-ভিজ্যুয়ালাইজেশন। গেমিং জগৎ গত তিন বছরে যেই পর্যায়ে পৌঁছেছে তার বছরত্রয়ীর শেষের ক্যানভাসে শেষ অাঁচড় দেয়ার মতো একটি মাস্টারপিস। আছে চমক, দুর্দান্ত অ্যাকশনভিত্তিক গেমপ্লে, গোছানো ইনভেন্টরি আর আরমরি। এতে রয়েছে ইচ্ছেমতো ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ এবং চলাচলের সুবিধা। গেমার সম্পূর্ণ ম্যাপে ইচ্ছেমতো বিচরণ করতে পারবে শুধু একটি শর্তে; বেঁচে থাকতে হবে। গেমারের ইচ্ছের প্রতি সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়া হয়েছে। গেমার সম্পূর্ণ ম্যাপে যেখানে খুশি সেখানে যা ইচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ এবং নিরীক্ষণ করতে পারবে। চিরায়ত রোল প্লেয়িং গেমের ঘটনাপ্রবাহের সাথে যখন অত্যাধুনিক গ্রাফিক্স এবং মনোরম গেমিং পরিবেশ ও শব্দশৈলী একাকার হয়ে যায়, তখন গেম ছেড়ে উঠে পড়া সত্যিই অসম্ভব হয়ে ওঠে।
ঘটনাপ্রবাহ কখনও হয়ে উঠতে পারে ভয়াবহ, কখনও শিক্ষণীয়, কখনও অদ্ভুতুড়ে কিংবা কখনও ভয়ঙ্কর যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। দখল করে নিতে হবে যা নিজের। কর্তব্যে হতে হবে ইস্পাতদৃঢ়। জন্ম দিতে হবে নতুন ধারণার। নিতে হবে নতুন পন্থা। যুঝতে হবে নতুন কৌশলে। তাই সব মিলিয়ে এর বিসত্মৃতিও কাউকে নিরাশ করবে না। শুধু একটা ভুল দরজায় কড়া নাড়াও তৈরি করতে পারে নতুন শত্রম্ন। প্রতিটি পদক্ষেপ নিখুঁত হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কারণ, আচমকা এসে হতভম্ব করে দেয়ার ঘটনা না ঘটলে গেমের আর বিনোদন কোথায়। গেমারকে সবসময় লক্ষ রাখতে হবে, কার সাথে রয়ে যাওয়া ক্ষয়িষ্ণু জীবনের বাকি পথটুকু চলা সহজ হবে। গেমটিতে তুলে আনা হয়েছে রিয়ালিজম (বাস্তববাদ) এবং অসম্ভব সুন্দর ক্যারিকেচার, যা দিয়ে চরিত্রগুলোকে জীবন্ত করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সাথে আছে সিগনেচার-হেভি এবং রাউন্ডেড মুভমেন্টস, যা কিনা সবচেয়ে অনাহূত চরিত্রকেও আকর্ষণীয় করে তোলে। গেমটির দ্বিতীয় আকর্ষণ হলো এর স্টোরিলাইন এবং প্লটিং।সব মিলিয়ে গেমটির স্টোরিলাইন সম্পর্কে যা বলার আছে তা সব গেমারের জন্যই তোলা থাক। কারণ, এত মজাদার স্টোরিলাইন গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে খুব কমই পাওয়া যাবে। তবে সবকিছুই পুরনো কচকচানি, নতুন যা তা হলো- গেমের অত্যাধুনিক টেক্সচার এবং থ্রিডি গ্রাফিক, যা গেমটির অরিজিনাল স্পিন থেকে এনে দিয়েছে আর সুপারহিরো নিয়ে টার্নভিত্তিক স্ট্র্যাটেজি গেম বোধ হয় এটিই সবচেয়ে বেশি খ্যাতি পেয়েছে। তাই স্ট্র্যাটেজিস্ট আর অ্যাকশনপ্রেমীদের জন্য এরচেয়ে ভালো পছন্দ আর হতেই পারেনা। সুতরাং গেমারদের উচিত এই অল্প শীতে কম্বলমুড়ি দিয়ে বসে না থেকে সত্যিকারের শীতের সাথে লড়াইয়ে নেমে পড়া অ্যাসাসিনস ক্রিড ক্রনিকলস নিয়ে।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিসতা/৭, সিপিইউ : কোর থ্রি ২.২ গিগাহার্টজ/এএমডি সমমানের, র্যা ম : ৮ গিগাবাইট উইন্ডোজ এক্সপি/ভিসতা/৭, ভিডিও কার্ড : ২ গিগাবাইট, সাউন্ড কার্ড,
কিবোর্ড ও মাউস।