লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
এএইচএম মাহফুজুল আরিফ
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
আইসিটি শিল্প বিকাশে ডিজিটাল সাম্য
ঘর আগে না ঘরের আসবাবপত্র? সড়ক আগে না গাড়ি? নিশ্চয় ঘর এবং সড়ক। কেননা ঘর না থাকলে আসবাবপত্র রাখবেন কোথায়। সড়ক না থাকলে গাড়ির কোনো মূল্য নেই। একইভাবে কমপিউটার ছাড়া সফটওয়্যার যেমন তৈরি করা যায় না, তেমনি ইন্টারনেটও থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমাদের ব্যবহৃত ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ট্যাব, ফ্যাবলেট, রাসবেরি পাই এবং স্মার্টফোন- সবই কমপিউটারের গোত্রের একেকটি সংস্করণ। হালের স্মার্টওয়াচ, স্মার্টগস্নাস এবং অগমেনটেড রিয়েলিটি এর কোনোটাই কমপিউটিংয়ের বাইরে নয়। উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে ডুবোজাহাজ; কৃষি-ব্যবসায়, শিক্ষা-গবেষণা, চিকিৎসা-চিত্রকলা, ক্রীড়া-বিনোদন- সর্বত্রই কমপিউটার বিদ্যমান। প্রয়োজন অনুযায়ী নানা মাত্রিকতায় ব্যবহৃত এই কমপিউটারের ব্যাপ্তি ক্রমেই বাড়ছে। এর ব্যাপ্তি যেনো জীবনের প্রতি পলে ছড়িয়ে যেতে পারে সেই প্রচেষ্টা কিন্তু জোরেশোরেই চলছে। ইন্টারনেট অব থিংকস এখন বাস্তবতায় পর্যবসিত হচ্ছে। জীবন-যাপনে নিয়ে আসছে শৈল্পিকতার ছোঁয়া।
কিন্তু এই বাস্তবতার সাথে আমরা কি পারছি সমানতালে হাঁটতে? না কি মাঝপথে খেই হারিয়ে ফেলছি? আমার মনে হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ কুচকাওয়াজে আমরা মাঝপথে এসে কিছুটা কেন্দ্রচ্যুত হয়েছি। ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কিছুটা অপরিণামদর্শিতার পরিচয় দিয়েছি। অনেক ক্ষেত্রেই ঘোড়ার আগে লাগাম জুড়ে দিয়েছি। ধারণাগত স্থূলতায় এখনও মার খাচ্ছি। ডিজিটালায়ন যেখানে যূথবদ্ধ করে, সেখানে আমরা বিভাজিত হচ্ছি। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, টেলিকম এবং আইএসপি- এই চারটি খাতে বিভক্ত হয়ে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের যে রূপকল্পটি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি তার মধ্যে দিন দিনই শূন্যতা বাড়ছে। অসমন্বিতভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দিন দিনই দৃশ্যমান হচ্ছে। বাইনারি ডিজিট ১ ও ০ যে যার মতো চলতে চলতে ক্লান্ত হচ্ছে। এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে এই শূন্যতা আরও প্রকট হবে। এর ফলে পোশাক শিল্পকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যয় অচিরেই বুমেরাং হতে পারে।
সমন্বয় ও স্বতন্ত্র্য বাজেট
আইসিটি খাতকে শিল্প মর্যাদায় উন্নীত করতে হলে আমাদের সবার আগে খুঁজে বের করতে হবে শিল্প বিকাশের পথের অন্তরায়গুলো। তারপর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে বিদ্যমান খাতগুলোর মধ্যে একটি ‘সমন্বিত উন্নয়ন চক্র’ রচনা করা যেতে পারে। বাজার ও বাস্তবতার নিরিখে এই চক্রকে গতিশীল করতে হলে প্রণোদনা ও বাজেট সুস্পষ্ট হতে হবে। বাজেটে আইসিটি নামে একটি স্বতন্ত্র খাত সৃষ্টি করা না হলে উন্নয়ন বাজেটে বছর বছর বরাদ্দ করা অর্থ ঈপ্সিত সুফল বয়ে আনবে না। আবার রেশনিং ভিত্তিতে ডিজিটাল প্রণোদনা প্যাকেজ সুস্পষ্ট না হলে ব্যয় ও অপচয় বাড়বে। তখন আমাদের আটপৌর জীবনে ডিজিটাল সুবিধা-ভোগ প্রবণতা বাড়লেও উৎপাদনমুখী হওয়া দুরূহ হয়ে পড়বে। প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যারের অভাবে সফটওয়্যারগুলো বাজার হারাবে। প্রযুক্তিসেবার বিকাশ না হলে টেলিকম ও আইএসপি খাতটি মুখ থুবড়ে পড়বে। অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ বাজার গবেষণার মাধ্যমে নীতি-নির্ধারণ, পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন এবং চেতনাগত উন্নয়নসাধন করাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর শিল্পায়নের নিরিখে হার্ডওয়্যার খাতকে এককভাবে মূল্যায়ন করাটা মোটেই সঙ্গত হবে না। একইভাবে এই মৌলিক খাতটিকে উপেক্ষা করে অপরাপর খাতকেও বিকশিত করা সম্ভব নয়। তাই ডিজিটাল শিল্প বিকাশের স্বার্থে এই মুহূর্তে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর মধ্যে ‘ডিজিটাল সাম্য’ সবচেয়ে জরুরি। বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি, বেসিস, আইএসপিএবি, অ্যামটব এবং অপরাপর সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে একটি ডিজিটাল অ্যালায়েন্স গঠন করা এখন সময়ের দাবি। এই অ্যালায়েন্স সমন্বিতভাবে সরকারের কাছে বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করার পাশাপাশি ব্যবসায় ও শিল্পবান্ধব বিধি প্রণয়ন, সংযোজন ও সংশোধনে ভূমিকা রাখবে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ বাস্তবায়নে সেতুবন্ধের ভূমিকা পালন করবে। তা না হলে এই খাতটিকে শিল্প পর্যাদায় উন্নীত করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি মোকাবেলা দুরূহ হয়ে পড়বে।
ডিজিটাল রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ
জীবনযাত্রায় ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে ভয়কে জয় করা এই সময়ের অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল দুনিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে নাগরিকদের মধ্যে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলে রূপান্তরের এই প্রক্রিয়াটি বাধাগ্রস্ত হয়। যার নজির আমাদের সামনে কম নেই। চলতি সময়ে ব্যাংকের বুথ থেকে কার্ড স্ক্যামিং ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের প্রতি অনেকের মধ্যেই ভীতির সঞ্চার করেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্লাস্টিক কার্ড ব্যবহারে সতর্কতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের পরিত্রাণ পেতে ২৪ ঘণ্টার সহায়তা সেল গঠন করা এখন সময়ের দাবি হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তি রূপান্তরের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই তাৎক্ষণিক সেবার দরজা উন্মুক্ত রাখতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে বহুমুখী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে সেবাদাতাদেরও দক্ষতা অর্জনে নিয়মিত উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বোপরি ডিজিটাল লিটারেসি বাড়াতে তৃণমূলে কাজ করতে হবে। একই সাথে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে ডিজিটাল ডিভাইস ও সেবাগুলো সাধারণের হাতের নাগালে আনতে প্রামিত্মক পর্যায়ে ডিজিটাল সরাইখানা স্থাপন করা যেতে পারে। এই সরাইখানায় প্রয়োজনীয় সব ডিজিটাল ডিভাইস থাকবে, সেগুলো সবাই ফ্রি ব্যবহার করতে পারবে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন
ডিজিটাল বিপস্নবের অন্যতম চ্যালেঞ্জ মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক শিল্প বিকাশের পথকে সুগম করা। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে শিল্পের সংশ্লেষ ঘটানোটা জরুরি। তারচেয়েও জরুরি আইটি এনাবল সার্ভিসেস বা প্রযুক্তিসেবা দেয়ার যোগ্য নিজস্ব জনবল তৈরির উদ্যোগ। দেশে ব্যবহৃত ডিজিটাল ডিভাইসগুলো ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে পারদর্শী কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো না গেলে ডিজিটাল ঝুঁকি মোকাবেলার পাশাপাশি এই খাতে আমাদের খরচ দিন দিন বাড়বে। তাই সার্টিফিকেট কোর্সের মাধ্যমে প্রযুক্তি-দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে আমাদের সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া দরকার। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আইসিটি ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে সেখানে শিক্ষার্থী ছাড়াও যেনো অন্যরা কাজের সুযোগ পান, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। এই ল্যাবগুলোকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছেও তাদের পণ্যের মানোন্নয়নের জন্য ভাড়া দেয়া যেতে পারে। তাহলে দেশে উৎপাদিত প্রযুক্তিপণ্যের মূল্য হাতের নাগালে নিয়ে আসার পাশাপাশি এ নিয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্র উন্মুক্ত হবে। এছাড়া নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদেশী নির্ভরতা কমাতে কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে।
বিভ্রামিত্ম মোচন ও ব্র্যান্ডিং
প্রযুক্তি খাতে স্বদেশী ‘ব্র্যান্ড’ নিয়ে আমাদের মধ্যে এক ধরনের উন্নাসিকতা রয়েছে। এই জায়গা থেকে উত্তরণের জন্য সচেতনতা তুলে ধরার পাশাপাশি দেশজ ব্র্যান্ড বিকাশে বিশেষ সুবিধা চালু করা যেতে পারে। আমাদের সবারই মনে রাখা দরকার, বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি ব্র্যান্ডের বেশিরভাগ পণ্যই অ্যাসেম্বেল হয়। ইন্টেলের চিপ, এমএসআই মাদারবোর্ড, ডবিস্নউডির হার্ডডিস্ক নিয়েই ডেল, এইচপি, ফুজিৎসুর মতো প্রতিষ্ঠান ল্যাপটপ তৈরি করে থাকে। তাই অ্যাসেম্বেল আর তৈরি নিয়ে বিতর্ক না করাটাই চক্ষুস্মানের কাজ। নিজস্ব ব্র্যান্ড নামই প্রযুক্তি গেজেটের ক্ষেত্রে মুখ্য। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় ভ্যালু অ্যাড করা এবং নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে যতটা সম্ভব কাঁচামালের পুনর্ব্যবহার করার বিষয়ে স্থানীয় উৎপাদকদের মনোযোগী হতে হয়। পাশাপাশি দেশজ আইটি ব্র্যান্ডের আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ, পরীক্ষণ ও সনদ দেয়ার জন্য একটি জাতীয় সংস্থা থাকলে ভোক্তা পর্যায়ে ব্র্যান্ডিং আস্থা বাড়বে।
টেকসই নীতি
উৎপাদনমুখী হতে প্রয়োজনীয় কম্পোনেন্ট আমদানি ও পুনঃউৎপাদন ক্ষেত্রে টেকসই নীতিমালা ও সিড ক্যাপিটেল বা সুদমুক্ত ঋণ ব্যবস্থার প্রচলন করা হলে দেশে প্রযুক্তি শিল্প বিকাশের পথ সুগম হবে। একই সাথে বিদেশী ব্র্যান্ডের ডিজিটাল ডিভাইসের তুলনায় যেনো দেশে উৎপাদিত/অ্যাসেম্বেল করা/ব্র্যান্ডিং করা প্রযুক্তি পণ্য ও সেবা সহজলভ্য হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। এজন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে প্রয়োজনীয় অন্তরায় দূর করতে হবে। দেশে বিদেশী কোনো ব্র্যান্ড বা তাদের অফিস স্থাপনের ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতার পাশাপাশি যৌথ অংশীদারিত্ব ও দেশজ সংস্করণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে প্রযুক্তি পরামর্শক বা উপদেষ্টা হিসেবে বিদেশী নাগরিক নিয়োগ দেয়া হলেও এর শীর্ষ পদগুলোতে বাংলাদেশী (প্রবাসী হলেও ক্ষতি নেই) নিয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালায় বিশেষ প্রণোদনা চালু করা যেতে পারে। প্রযুক্তি ব্যবসায় বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে এই খাতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও নিত্য বাধা দূর করতে অনলাইনমুখী একটি ‘ওয়ান স্টপ সলিউশন’ ডেস্ক খোলা দরকার। এই ডেস্ক থেকে একজন উৎপাদক ও উদ্যোক্তার কাজটি সহজতর হবে। এতে তাদের প্রকল্প ব্যয় কমবে। আর দেশে উৎপাদিত বা ব্র্যান্ডিং করা পণ্যের বাজার সৃষ্টি তখনই সহজতর হবে, যখন সরকারি ক্রয় নীতিমালায় দেশী প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা যাবে। এর মাধ্যমে ‘মেইক বাই বাংলাদেশ’ প্রতিকল্প বাস্তবায়নের অর্ধেক কাজই সম্পন্ন হয়ে যাবে।
পরিশেষে, এটা বিস্মৃত হওয়ার কোনো কারণ নেই, জীবনের শৈল্পিক কাঠামো হার্ডওয়্যার। এটি নিছক একটি অনুষঙ্গ নয়। মানবসভ্যতার অস্তিত্বের স্মারক। কমপিউটার এই সভ্যতায় যুক্ত করেছে নতুন অভিঘাত। আমত্মঃকমপিউটিং নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে গোটা পৃথিবীকে ভার্চুয়ালি ঐকতান রচনা করেছে। তাই এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়েও গবেষণা ও উন্নয়নে মনোনিবেশ করা দরকার। ব্যবসায় বিকাশের নিমিত্তে প্রয়োজন এই খাতের পরিসংখ্যানগত তথ্য-উপাত্তকে ঢালাওভাবে প্রকাশ না করে নিয়মিত বিরতিতে সঠিক মাধ্যম থেকে বিশ্ব দুয়ারে উন্মুক্ত করা। তাহলে দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহারকারী নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের মতো লজ্জা আমাদের আর পেতে হবে না। ডিজিটাল ইকোনমিতে আমাদের অবস্থানকে সুসংহত করতে হলে এরও আগে কমপিউটার বা হার্ডওয়্যার শিল্প নিয়ে প্রচলিত স্থূল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, কমপিউটারের সবশেষ সংস্করণ স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ, স্মার্টগস্নাস এবং অগমেনটেড রিয়েলিটি ইতোমধ্যেই চলে এসেছে মানুষের হাতের মুঠোয়। বিসত্মৃত করেছে ইন্টারনেট অব থিংকস। এই ক্ষেত্রটিতে আমাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলে দেশ সহজেই ডিজিটাল অর্থনৈতিক যাত্রার মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত হবে।
সভাপতি, বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কমপিউটার সোর্স লিমিটেড