লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মো: আতিকুজ্জামান লিমন
মোট লেখা:১৮
লেখা সম্পর্কিত
টেকনিক্যাল প্রফেশনালদের জন্য রেজ্যুমি তৈরি
টেকনিক্যাল প্রফেশনালদের জন্য রেজ্যুমি তৈরির এবারের পর্বটি শেষ পর্ব। সবগুলো পর্বে রেজ্যুমির বিভিন্ন সেকশন সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, প্রতিটি বিষয় আপনাদের কাজে লাগবে।
শিক্ষা বা কর্মক্ষেত্রের বিশেষ পুরস্কার
যদি রেজ্যুমিতে কোনো শিক্ষা বা কর্মক্ষেত্রে বিশেষ কোনো স্বীকৃতি যোগ করতে চান, যেমন- শিক্ষাক্ষেত্রের কোনো পুরস্কার যদি আপনি হাইলাইট করতে চান অথবা আপনার কর্মক্ষেত্রের কোনো বিশেষ স্বীকৃতি এই সেকশনে যোগ করতে চান, তাহলে আপনি এসব তথ্য শিক্ষা সেকশনেও যোগ করতে পারেন। স্বীকৃতি একটি একাডেমিক বিষয়ের অংশ হতে পারে। কিন্তু এই সেকশনে ক্রীড়া, ক্লাস অথবা অন্যান্য স্কুল অ্যাক্টিভিটি যোগ করা যেতে পারে। সব সময় প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করতে হবে, যাদের কাছ থেকে আপনি আপনার কাজের স্বীকৃতি বা পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। চিত্রের মতো করে তথ্যগুলো সাজিয়ে লিখুন।
কার্যক্রম
হয়তো বা অনেক প্রতিষ্ঠান অথবা ক্লাবের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন বা ছিলেন, আপনার একাগ্রতা এবং ভালো সামাজিক কাজের দক্ষতা, যেমন- আপনি একটি বড় গ্রম্নপের কোঅর্ডিনেটর বা লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তা রেজ্যুমিতে উল্লেখ করুন। কার্যকলাপের এই সেকশনটি মূলত কমিউনিটিভিত্তিক কার্যকলাপ, ভলান্টিয়ারিং কাজের অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য বিষয় উল্লেখ করুন। জাতি, ধর্ম, বয়স, বিবাহের অবস্থান অথবা অন্য কোনো বিতর্কিত বিষয়ের সাথে যুক্ত এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম লিস্ট না করাই ভালো। এতে নিয়োগকর্তা কোনো একটি বিষয়ের ওপর বিরূপ ধারণা পোষণ করতে পারে। আপনার কার্যকলাপগুলো চিত্রের মতো করে উপস্থাপন করতে পারেন।
সার্টিফিকেট, ভেন্ডর সার্টিফিকেট ও লাইসেন্স
যদি কোনো নিজের কাজের ফিল্ডে, যা কি না নিয়োগকর্তার চাহিদার সাথে মিল আছে, এমন ট্রেনিংয়ের সার্টিফিকেটগুলোর তালিকা তৈরি করুন। টেকনিক্যাল প্রফেশনালদের বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন হয় আর সেগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারলে প্রতিষ্ঠান সার্টিফিকেট দেয়। ভেন্ডর সার্টিফিকেট যদি থাকে যেমন- মাইক্রোসফট, ওরাকল, অ্যাডোবি ইত্যাদি নিয়োগকর্তার চাহিদা অনুযায়ী উল্লেখ করুন। সার্টিফিকেটের তথ্য উল্লেখ করার সময় অবশ্যই মূল সার্টিফিকেট দেখে পূরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সার্টিফিকেটের তথ্যগুলো পুরোপুরি সঠিক হতে হবে। যেমন- সার্টিফিকেট, ভেন্ডর সার্টিফিকেট ও লাইসেন্সের দেয়া প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রদানের তারিখ সঠিকভাবে টাইপ করুন।
প্রকাশনা
কিছু কিছু পেশায় নিয়োগকর্তা পাবলিকেশনকে উৎসাহিত আবার অনেক সময় বাধ্যতামূলক করে দেয়। যদি পছন্দের ক্ষেত্রে নিজের কোনো আর্টিকল, লেখা, বই সম্পাদনা, প্রফেশনাল পেপার অথবা এর সাথে মিল আছে এমন কোনো কাজের বিবরণ উল্লেখ করা যেতে পারে। পাবলিকেশনটি প্রকাশের তারিখ, স্থান, পাবলিশারের নাম, কাজ করার সময় কী হিসেবে কাজ করেছেন যেমন- কো-এডিটর বা সোল-এডিটর ইত্যাদি উল্লেখ করুন। চিত্রের ওয়ার্কশিট অনুসরণ করে পূরণ করুন।
প্রফেশনাল মেম্বারশিপ
রেজ্যুমির আরেকটি কার্যকর উপাদান হচ্ছে প্রফেশনাল মেম্বারশিপগুলো উল্লেখ করা। এখানে প্রফেশনাল সম্পৃক্ততা যেমন- কোনো প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশন, ইউনিয়ন এবং এরকম প্রতিষ্ঠানগুলোয় যোগ দেয়া। আপনি যে চাকরি খুঁজছেন, তার ধরন অনুযায়ী যেসব মেম্বারশিপ কাজে আসবে তা উল্লেখ করুন। আপনার ফিল্ডের সাথে যেসব মেম্বারশিপের মিল আছে, তার নিয়মিত আপ-টু-ডেট রাখুন। কোন দিন থেকে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত তা উল্লেখ করুন। চিত্রের মতো করে মেম্বারশিপ তথ্যগুলো পূরণ করুন।
বিশেষ দক্ষতা
বিশেষ দক্ষতা সেকশনে আপনার বিশেষ দক্ষতার বিষয়গুলো তুলে ধরুন, যেগুলো আবেদনের জন্য বেশি কাজে আসবে। যেমন- আপনি যদি প্রোগ্রামিংয়ের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেন, তাহলে যেসব প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে দক্ষতা আছে সেগুলো উল্লেখ করুন, যেমন- সি, জাভা, সি++ বা যেসব ডাটাবেজ বিষয়ে আপনি অভিজ্ঞ সেগুলো, যেমন- ওরাকল, মাইএসকিউএল ইত্যাদি। বিশেষ দক্ষতার মাপকাঠি হিসেবে আপনি প্রতিটি বিষয়ে কতটা দক্ষ তা পয়েন্ট দিয়ে অথবা লিখে যেমন- ভালো, খুব ভালো, অনেক ভালো ইত্যাদিভাবে উপস্থাপন করুন।
আপনার ভাষার দক্ষতাগুলো এই সেকশনে উল্লেখ করতে পারেন। যেমন- আপনি যদি দুই-তিনটি ভাষায় দক্ষ হন, তবে তা উপস্থাপন করুন (ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ ইত্যাদি)। প্রতিটি ভাষার দক্ষতা কেমন তা দিয়ে দিন।
এই সেকশনে আপনি বিদেশি ভাষা, বাইরের দেশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা এবং কমপিউটার অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতাগুলো লিস্ট করুন। এই সেকশনটিতে আপনার ক্রিয়েটিভিটি ব্যবহার করে সাজিয়ে নিন। সাজানোর সময় কোন বিষয়টি আপনার আবেদনের সাথে মেলে, তা দেখে নিন।
ব্যক্তিগত তথ্য
টেকনোলজি প্রফেশনালেরা রেজ্যুমিতে অনেক সময় ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে একটি সেকশন তৈরি করেন। তবে এটি অনেকেই রিকমেনডেন্ড করেন না। অনেকে তাদের শখ, মেধা যেগুলো আবেদনের সাথে মিল থাকে তা লিখতে পারেন। এই ধরনের তথ্যগুলো সাধারণত সাক্ষাৎকারের সময় প্রথম দিকে করা হয়, যাতে ইন্টারভিউয়ের শুরুতে জড়তা কাটিয়ে ওঠা যায়। অবশ্য ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন- বয়স, বিয়ের অবস্থা, জাতি, ধর্ম ইত্যাদি আপনার রেজ্যুমিতে না থাকাই ভালো। এতে অন্য প্রার্থীর সাথে আপনার পার্থক্য তৈরি করে দিতে পারে।
তথ্যসূত্র
রেজ্যুমিতে সাধারণত রেফারেন্স বা তথ্যসূত্র অংশটি থাকে না, তবে নিয়োগকর্তাদের চাহিদাতে থাকে- যাতে প্রয়োজনে তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। একটি লাইনের মধ্যে রেফারেন্সের বিষয়টি উল্লেখ করুন, যেমন- চাহিদা অনুযায়ী রেফারেন্স দেয়া হবে। আপনার ইন্টারভিউয়ের সময় হয়তো বা রেফারেন্স সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে, তার জন্য রেফারেন্স তালিকা প্রস্ত্তত রাখতে হবে
ফিডব্যাক : infolimon@gmail.com