লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
রাহিতুল ইসলাম
মোট লেখা:৭
লেখা সম্পর্কিত
একুশে বইমেলায় তথ্যপ্রযুক্তির বই ও ব্যবহার রাহিতুল ইসলাম
তথ্যপ্রযুক্তির নানা কিছু শেখার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে মানুষের। সেই আগ্রহের প্রতিফলন দেখা গেল এবারের বইমেলায়ও। কমপিউটার জগৎ-এর বিশেষ প্রতিনিধি রাহিতুল ইসলাম বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭ ঘুরে দেখেছেন, অন্যান্য বইয়ের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বইও কিনেছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে প্রোগ্রামিং, ফ্রিল্যান্সিং ও প্রযুক্তির বিভিন্ন কলাকৌশলের প্রশিক্ষণমূলক বইয়ের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ ছিল বেশি। বইয়ের দোকানের পাশাপাশি মেলায় তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া দিতে বই বিক্রির ওয়েব পোর্টাল, স্মার্টফোনে বই পড়ার অ্যাপ এবং ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্রও দেখা গেছে। সেই সাথে ছিল বিনামূল্যের ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুবিধা।
মেলায় তথ্যপ্রযুক্তির বই
আদর্শ, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, সিসটেক পাবলিকেশনস, তাম্রলিপি, মুক্তদেশ প্রকাশন, শব্দশৈলী, নওরোজ কিতাবিস্তান, অন্যরকম প্রকাশনী এবং দ্বিমিক প্রকাশনীতে তথ্যপ্রযুক্তি বইয়ের প্রাধান্য ছিল। এবারের মেলা উপলক্ষে বেশ কিছু নতুন বই প্রকাশিত হয়, কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় ছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে জাকির হোসাইনের সি প্রোগ্রামিং, মো: আমিনুর রহমানের ফ্রিল্যান্সার হওয়ার গল্প, শিশির আহমেদ রুবেলের আউটসোর্সিং : ইন্টারনেটে ঘরে বসে টাকা আয়ের সহজ উপায়, মাহবুবুর রহমানের প্রোগ্রামিংয়ে হাতেখড়ি, মোহাম্মাদ মিজানুর রহমানের পাইথন প্রোগ্রামিং ফাউন্ডেশন, মো: ইকরামের ফ্রিল্যান্সিং গুরু : অনলাইনে আয়ের চাবিকাঠি, জিয়াউল হক কাউসারের ইউটিউব দেখে শিখি উপার্জন, মাকসুদুর রহমানের সহজ ভাষায় পাইথন-৩, তামিম শাহরিয়ার সুবিনের কমপিউটার প্রোগ্রামিং (দ্বিতীয় খ-), ৫২টি প্রোগ্রামিং সমস্যা ও সমাধান, ঝংকার মাহবুবের হাবলুদের জন্য প্রোগ্রামিং, বুকবিডি সিরিজ থেকে প্রকাশিত জাভা প্রোগ্রামিং ফ্রম বিগিনিং টু অ্যাডভান্স (সিডিসহ), নুরুজ্জামান মিলনের লারাভেল পিএইচপি ওয়েব ফ্রেমওয়ার্ক, রিনি ঈশানের রোবোটিকস এবং মাইক্রোকন্ট্রোলার বইগুলো দেখা যায়।
মেলায় সেইবই অ্যাপ
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্মার্টফোনে বই পড়ার অ্যাপ সেইবইয়ের স্টলে বই পড়ার নতুন এই মাধ্যমের প্রচারণা চালানো হয়। অ্যাপটির মাধ্যমে কিছু বই বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ রাখা হয়। অ্যান্ড্রয়িডচালিত স্মার্টফোনের জন্য গুগল প্লেস্টোর (goo.gl/nMl7ep) থেকে এবং আইফোনের জন্য আইটিউনস (goo.gl/gysBQQ) থেকে অ্যাপটি নামিয়ে নেয়া ব্যবস্থা ছিল।
বইমেলায় গুগল স্ট্রিটভিউ সুবিধা
মেলায় এসে নির্দিষ্ট কোনো স্টল খুঁজে না পেলে কাউকে জিজ্ঞেস না করলেও চলত। গুগল স্ট্রিটভিউয়ে দেখা যেত স্টলের অবস্থান। গুগলের স্ট্রিটভিউ আপনাকে পথ দেখিয়ে দিত। ওয়েব ঠিকানা www.amarekushegranthamela.com।
মেলায় ছিল তারহীন ওয়াইফাই
পুরো বইমেলা প্রাঙ্গণে বিনামূল্যের তারহীন ওয়াইফাই ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা রাখা ছিল। তবে সে সংযোগ পাওয়া বেশ কঠিনই ছিল। মেলায় ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবা দেয় নিরাপদ মিডিয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর হাবীবুলস্নাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তারকে মেলা প্রাঙ্গণে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেখা গেল। তিনি বললেন- মেলায় ওয়াইফাই জোন আছে, ব্যানারে সেটির পাসওয়ার্ডও দেয়া হয়েছে, তবে আমি অনেকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাইনি। তাই নিজের মোবাইলের ডাটা প্যাক ব্যবহার করছি।
ধানম-- থেকে মেলায় এসেছিলেন মফিজুর রহমান। তিনি হতাশ হয়ে বলেন, কোথায় ইন্টারনেট? কোনো গতি নেই। একইরকম অভিজ্ঞতা সরকারি চাকরিজীবী মাহামুদুল হকেরও। বললেন, অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও কোনো ইন্টারনেট সংযোগ পাইনি।
বাংলা একাডেমির বিক্রয়, বিপণন ও পুনর্মুদ্রণ বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জালাল আহমেদ কমপিউটার জগৎকে বলেন, আসলে আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি যে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া একসাথে অনেক ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ব্যবহার করলে একটু সমস্যা হতে পারে। অন্যদিকে বাংলা একাডেমির সমীক্ষক মো: মনিরুর জামান কমপিউটার জগৎকে বলেন, ওয়াইফাই সংযোগ ১০টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। ১০ এমবিপিএস গতির এই সেবাটি দিচ্ছে নিরাপদ মিডিয়া। অনেক সময় দেখা যায় রাউটার বন্ধ হয়ে গেছে। তখন সংযোগ পাওয়া যায় না। আমি সব সময় দেখাশোনা করছি এখন কোনো সমস্যা পাবেন না। অনেকে ফেসবুক লাইভও করতে পারছেন।
এটুআইয়ের ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্র
বইমেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচির স্টলে পাওয়া যায় ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন তথ্য। এখানে তথ্য বাতায়ন কেন্দ্র সম্পর্কে জানা যায়। এটুআইয়ের যোগাযোগ সহকারী আদনান ফাইসাল কমপিউটার জগৎকে বলেন, আমাদের এখান থেকে জানা যায় কোথায় কোন স্টলটি আছে এবং সেটি কোন দিকে রয়েছে। তা ছাড়া ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কী কী নতুন বই এসেছে সেটাও জানা যায়। তা ছাড়া আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য তুলে ধরি দর্শকদের কাছে।
বাংলা একাডেমির ওয়েবসাইট
একুশে বইমেলায় নতুন বইয়ের তথ্যের তালিকা পাওয়া যায় বাংলা একাডেমির ওয়েবসাইটে (banglaacademy.org.bd)। নতুন বইয়ের তালিকা সাইটটিতে পিডিএফ ফাইল আকারে রাখা ছিল।
অনলাইনে মেলার বই কেনা
ফেব্রম্নয়ারির প্রথম দিন থেকেই বইমেলায় প্রকাশিত বইগুলো দিনেরটা দিনেই রকমারি ডটকমে (www.rokomari.com) প্রদর্শনের ব্যবস্থা ছিল। রকমারির ফেসবুক পেজে প্রতিদিন নতুন নতুন বইয়ের তথ্য নিয়ে প্রকাশ করা হয় লেখা। পেজ থেকেই সব পাঠক হালনাগাদ পান বইমেলার নিত্যনতুন বইয়ের। এ ছাড়া প্রতিদিনের ই-মেইল নিউজলেটার আর মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমেও পাঠকেরা জানতে পারেন প্রিয় লেখকদের খোঁজখবর।
প্রতিদিন রকমারি থেকে সর্বাধিক বই অর্ডারকারী ব্যক্তি নির্বাচিত হন রকমারির সেরা ক্রেতা হিসেবে। ৫০০ টাকার গিফট ভাউচার পুরস্কারের পাশাপাশি তাকে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয় রকমারির ফেসবুক পেজে। এ ছাড়া ছিল বিভিন্ন বই ও লেখকদের নিয়ে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশ নিয়ে বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন উপহার জেতার সুযোগ ছিল