লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
প্রাইভেসি রক্ষায় কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপ
প্রাইভেসি রক্ষায় কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপ
প্রতিদিন মুক্তি পাওয়া সব অ্যাপ ট্র্যাক করা খুব কঠিন। এমনকি ভালো এবং প্রয়োজনীয় অ্যাপ চিহ্নিত করাও বেশ কঠিন। কঠিন এই কাজকে সহজ করার জন্য বরাবরের মতোই এ সংখ্যায়ও সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া কিছু অ্যাপ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আজকের দিনে প্রাইভেসি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিশেষত ফেসবুক-ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকস কেলেঙ্কারির পর এ বিষয়টি এখন অনলাইনে আলোচিত বিষয়গুলোর অন্যতম। ফলে মানুষ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি প্রাইভেসির ব্যাপারে সচেতন। আর সচেতন ব্যক্তিদের সহায়তায় বাজারে এসেছে বেশ কিছু অ্যাপ। এ ধরনের অ্যাপগুলো দু’ভাবে ব্যবহারকারীকে সাহায্য করে। প্রথমত, একজন ব্যবহারকারী কী করছেন তা অন্য কাউকে দেখতে দেয় না। আর একই সাথে অন্য কো¤পানিগুলো ব্যবহারকারীকে (তথ্য) নিয়ে কী করছে তা জানার সুযোগ করে দেয়। এ তালিকার প্রথমে আমরা বেশ কিছু অ্যাপ সম্পর্কে জানব, যেগুলো উল্লিখিত কাজগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে প্রাইভেসি সংরক্ষণে সহায়তা করে।
অ্যাপলক
মাত্র ৩ এমবি সাইজের এই অ্যাপটি প্রাইভেসি রক্ষায় ক্ষেত্রে খুব কার্যকর। আকার ছোট হওয়ার করণে এটি যেমন হালকা, অন্যদিকে কাজ করে দ্রুত। এর ফিচারের সংখ্যা অনেক। প্রথমত, এটি ৩১টি ভিন্ন ভিন্ন ভাষা সাপোর্ট করে। অ্যাপটিতে নিরাপত্তার মাধ্যম হিসেবে পিন, প্যাটার্ন গেস্টচার ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট সাপোর্ট করে। উইডজেড ব্যবহার করে লক বা আনলক করা যায় খুব সহজেই। ব্যবহারকারী চাইলে লক-স্ক্রিন নিজের পছন্দমতো সাজিয়ে নিতে পারবে। ব্যাকগ্রাউন্ডে ইচ্ছেমতো ছবি দেয়া যাবে। পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে বা মনে করতে না পারলেও সমস্যা নেই। নতুন করে পাসওয়ার্ড সেট করে নেয়া যাবে। ক্রমাগত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে অ্যাপে অ্যাক্সেস পাওয়ার চেষ্টা বন্ধ করে দেয়া যাবে। ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ লক করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে অ্যাপটিতে। প্রায়ই দেখা যায়, অনলাইনে ব্রাউজ করার সময় হঠাৎ করে কিছু অ্যাপ অটো-ইনস্টল হতে শুরু করে। এই অ্যাপটির মাধ্যমে অটো-ইনস্টল বন্ধ করে দেয়া যাবে। অ্যাপটি ব্যক্তিগত তথ্য, প্রাইভেসি ও সিকিউরিটি অপশনগুলোকে সুরক্ষিত রাখে। এসব ছাড়াও অ্যাপটির আছে আরও কিছু ফিচার।
ডাকডাকগো প্রাইভেসি ব্রাউজার
এটি একটি ওয়েব ব্রাউজার, যার সাহায্যে সাধারণ ব্রাউজারের চেয়ে নিরাপদে ওয়েবে প্রবেশ করা যাবে। অ্যাপটি অনলাইনে থাকা ওয়েবসাইট ট্র্যাকারদের ব্লক করে দেয়। আবার যেসব ক্ষেত্রে সম্ভব ইনক্রিপটেড কানেকশন ব্যবহার করতে সাইটগুলোকে বাধ্য করে। সাধারণত অনলাইনে প্রধান প্রধান সব অ্যাডভারটাইজিং নেটওয়ার্কই তাদের ব্যবহারকারীদের ট্র্যাক করে থাকে। এই অ্যাপের সাহায্যে কারা ব্যবহারকারীকে ট্র্যাক করছে তা খুঁজে বের করা যায়।
ফায়ারফক্স ফোকাস
ফায়ারফক্স ফোকাস প্রাইভেসিকে মাথায় রেখে তৈরি করা একটি ওয়েব ব্রাউজার। বাজারে থাকা বেশিরভাগ প্রাইভেসি ব্রাউজার থেকে এটি কিছুটা ভিন্ন। এটি সাধারণ শ্রেণির প্রায় সব ধরনের ওয়েব ট্র্যাকার ও অ্যাডভারটাইজমেন্ট ব্লক করে দেয়। এর নির্মাতা জানিয়েছে, এর মাধ্যমে দ্রুতগতিতে ব্রাউজও করা যাবে। এ হলমার্ক ফিচারটি হচ্ছে, একটি মাত্র বাটন ব্যবহার করে মুছে ফেলা। বাটনে প্রেস করা মাত্রই ব্রাউজিং হিস্ট্রি মুছে যাবে। আর এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে বা ডাউনলোড করার জন্য কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না।
ফোনের গতি বাড়াতে
মোবাইল ফোন ডাটার ব্যবহার, ডাটা লিমিট, ওয়াই-ফাই ইন্টারনেটের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য গ্লাসওয়্যার চমৎকার একটি সমাধান। তাৎক্ষণিকভাবে দেখে নেয়া যাবে কেন আপনার ফোন আগের চেয়ে ধীরে কাজ করেছে। এটা হতে পারে কোনো অ্যাপের কারণে, ফোনের ইন্টারনেট সংযোগের কারণে। আবার এর মাধ্যমে জানা যাবে মোবাইল ডাটার ব্যবহার। গ্রাফের মাধ্যমে ডাটার ব্যবহার প্রদর্শনের কারণে ডাটা অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়। পছন্দের অ্যান্ড্রয়িড ফোনটি দিনে দিনে ধীরগতির হয়ে যাচ্ছে। আপনি হয়তো এ থেকে মুক্তির উপায় ভাবছেন। সেক্ষেত্রে একটি হতে পারে বর্তমান ফোনটি বদলে নতুন ভালো কনফিগারেশনের অপর একটি ফোন নেয়া। এর জন্য বাড়তি অনেকগুলো টাকা খরচ করতে হবে। তাই টাকা খরচের আগে চেষ্টা করে দেখা উচিত কোনোভাবে গতি বাড়ানো যায় কি না। বেশ কিছু কৌশলের মধ্যে অন্যতম হলো ফোন আপডেট করা, যার মাধ্যমে গতি বাড়ানো যায়। সেজন্য প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে আপনার ফোনটি সর্বশেষ আপডেটের সাথে সঙ্গতিসম্পন্ন কি না। কেননা কিছুদিন পরপর অ্যান্ড্রয়িডের আপডেট করা হয়। সেসব আপডেটের মাধ্যমে আগের ভার্সনে থাকা ভুলত্রুটি বা খুতগুলো ঠিক করে আরো বেশি ব্যবহারকারীবান্ধব করা হয়। কোনো বাগ থাকলে সেগুলো সংশোধন করা হয়। এতে ফোনের গতি বাড়াতে প্রভাব পড়ে।
ওয়ানটেপ ক্লিনার
ফোনের গতি বাড়ানোর জন্য যেসব অ্যাপ রয়েছে, তার অন্যতম ওয়ানটেপ ক্লিনার। ফ্রি এই ক্লিনার অ্যাপটি আপনার অ্যান্ড্রয়িড ডিভাইসের স্পেস বাড়াতে সাহায্য করবে। ফোনে থাকা সব অ্যাপ্লিকেশন টেম্পোরারি ফাইল তৈরি করে, যেগুলো আবার ফোনের স্টোরেজ দখল করে রাখে। ওয়ানটেপ অ্যাপটি সেসব অপ্রয়োজনীয় টেম্পোরারি ফাইল রিমুভ করার মাধ্যমে স্টোরেজের জায়গা উদ্ধার করে। এ কাজটি ম্যানুয়ালিও করা যায়। সেক্ষেত্রে প্রতিটি অ্যাপ ধরে ধরে তার টেম্পোরারি ফাইল বাদ দিতে হয়। স্বাভাবিকভাকেই সে কাজটি বেশ বিরক্তিকর। কিন্তু অ্যাপের মাধ্যমে এক সুইপেই সব টেম্পোরারি ফাইল রিমুভ করে দেয়া যায়। অ্যাপটির অপর একটি সুবিধা হচ্ছে, অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে ফেলার পর ফোনে কী পরিমাণ জায়গা আছে তা দেখাবে। এতে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়, ফোন থেকে আর কী পরিমাণ জায়গা খালি করতে হবে।
কিউরিওসিটি
বিজ্ঞানমনাদের জন্য এটি একটি অসাধারণ অ্যাপ। প্রতিদিন পৃথিবীতে কত বিচিত্র ঘটনাই না ঘটে চলেছে। এগুলোর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ও সমসাময়িক বিজ্ঞানজগতের অনেক আপডেট পেতে পারেন এই অ্যাপ থেকে। সাথে থাকছে আপনার কৌত‚হলের কোনো বিষয় খুঁজে সে-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানা-অজানার সুযোগ এই অ্যাপের মাধ্যমে একদম বিনামূল্যে।
ডুওলিনগো
বিভিন্ন ভাষা শেখার জন্য একটি অসাধারণ অ্যান্ড্রয়িড অ্যাপ এটি। ইংরেজির পাশাপাশি ফ্রেঞ্চ, জার্মান, স্প্যানিশের মতো বহু ভাষার শব্দ শেখার একটা সুন্দর প্লাটফর্ম এই অ্যাপটি। অনেকগুলো লেভেলে ক্যুইজে অংশ নেয়ার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী এখান থেকে শিখতে পারবেন। পাশাপাশি রয়েছে কন্টিনিউয়াস অ্যাসেসমেন্টের ব্যবস্থা। এমনকি আপনার কোনো ভাষা শেখায় অগ্রগতিও দেখাবে এই অ্যাপটি। সাথে রয়েছে বন্ধুদের চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজেকে আরো শানিয়ে নেওয়ার সুযোগ।