যদি আপনি নিজেকে একজন হার্ডকোর কমপিউটার ব্যবহারকারী হিসেবে ভাবেন, তাহলে কোন অবস্তাতেই নিশ্চয় ডাটা হারানোর মতো অনাকাঙ্খিত ঝুট-ঝামেলায় পড়তে চাইবেন না কোনো অবস্থাতেই৷ কিন্তু তারপরও আমাদেরকে কোনো না কোনোভাবে ডাটা হারানোর মতো অনাকাঙ্খিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় প্রায়ই৷ আর এমন ঘটনা ঘটে থাকে দুঘটনাক্রমে ফাইল ডিলিট, ফাইল করাপ্ট, ভাইরাস অ্যাটাক, হার্ডডিস্ক ম্যালফাংশন অথবা হঠাৎ করে ল্যাপটপ পড়ে যাওয়ার কারণে৷ ডাটা হারানোর ঘটনা বেশ কিছু কারণে ঘটে থাকলেও তার পুনরুদ্ধারের জন্যও রয়েছে বেশ কিছু কৌশল বা টেকনিক৷
ডাটা হারাতে পারে দুভাবে- ডাটা করাপ্টশন এবং ফিজিক্যাল ড্যামেজের কারণে৷ সুতরাং ডাটা উদ্ধারের জন্যও রয়েছে দুটি প্রধান লেভেল- সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার৷ এ লেখায় ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে ডাটা উদ্ধারের কম জটিল পদ্ধতিগুলোর পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত জটিল পদ্ধতিগুলোও তুলে ধরা হয়েছে৷ প্রথম ধাপে এ লেখায় ডাটা উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন এরিয়ায় কাজ করে এমন কয়েকটি ডাটা রিকভারি টুল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ আর দ্বিতীয় ধাপে এই টুলগুলোর বিস্তারিত বর্ণনাসহ আলোচনা করা হয়েছে ডাটা উদ্ধারের হার্ডওয়্যার লেভেল নিয়ে৷
ডিলিট করা ডাটা রিস্টোর করা :
আমরা মোটামুটিভাবে অনেকেই জানি ডাটা ডিলিট করে রিসাইকেল বিন খালি করা হলে ডাটা সম্পূর্ণরূপে মুছে যায়৷ কিন্তু এ ধারণাটি ভুল৷ কেননা রিসাইকেল বিন খালি করা হলেও ডাটা সম্পূর্ণরূপে বা স্থায়ীভাবে মুছে যায় না, বরং অদৃশ্য হয়ে ডিস্ক স্পেস দখল করে থাকে৷ যতক্ষণ পর্যন্ত না অন্য কোনো ডাটা ওই ডিস্ক সেক্টরে ওভাররাইট করা হচ্ছে৷ আনডিলিট প্লাস সফটওয়্যার নামের একটি সফটওয়্যার রয়েছে সেটি এক্সটারনাল ড্রাইভ, যেমন ইউএসবি ফ্ল্যাশ নিজেই চালু করে ওভাররাইটকে প্রতিহত করার জন্য৷ এরপর আপনি এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ডিলিট করা বা করাপ্ট করা ডাটা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন৷
প্রথমে ড্রাইভ লেটার সিলেক্ট করে Search-এ ক্লিক করুন৷ এই প্রসেস সম্পন্ন হতে বেশ কিছু সময় নেবে৷ ২৫০ গি.বা.-এর হার্ডডিস্ক সার্চ করতে আনুমানিক ৩০ মিনিট সময় লাগবে৷ সার্চের ফলাফল মূল উইন্ডোতে প্রদর্শিত হবে এবং সেই সাথে ফাইলের স্ট্যাটাসও প্রদর্শিত হবে৷ যদি Very good মেসেজ প্রদর্শিত হয়, তাহলে বুঝতে পারবেন যে ফাইলটি সম্পূর্ণ অক্ষত আছে এবং সম্পূর্ণ ডাটা পুনরুদ্ধার করা যাবে৷ আর যদি ফলাফল অন্যরকম হয়, তাহলে বুঝতে পারবেন ফাইলটি করাপ্ট করেছে অথবা ফাইলটি ওভাররাইট হওয়ার কারণে ফাইল পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না৷ ওয়েবসাইট http://undelete-plus.com †_‡K wd« WvDb‡jvW K‡i wb‡Z cvi‡eb GB BDwUwjwU|
ধরুন, কিছু নির্দিষ্ট ছবি ও ভিডিও পুনরুদ্ধার করা দরকার৷ এ ধরনের কাজের জন্য হাই প্রোফাইল ডাটা রিকভারি টুল বা টেকনিক ব্যবহার করা দরকার নেই৷ এ জাতীয় কাজের জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর টুল রয়েছে৷ উদাহরণস্বরূপ রিকভারি টুল-পিসি ইনস্পেক্টর-এর ফ্রি ভার্সনের কথা বলা যেতে পারে৷ এই টুল দিয়ে বেশিরভাগ ইমেজ ফরমেট যেমন- GIF, JPG সহ প্রোপাইটরি ফরমেট যেমন সনির DCR, নোকিয়ার NRF ও অলিম্পাসের ORF ফরমেট ইত্যাদি রিকভার করা যায়৷ এরপরও যদি কাজ না করে, তাহলে আপনাকে অ্যাডভান্সড ভার্সনের অনলাইন সফটওয়্যার কিনতে হবে৷ আপনার কাঙ্খিত ছবি যদি মেমরি কার্ড বা ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভে স্টোর করা থাকে, তাহলে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে ডাটা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন খুব সহজেই৷
ডিলিট করা বা করাপ্ট করা ছবি পুনরুদ্ধারের সময় এই প্রোগ্রাম কমপিউটারের সাথে সংযুক্ত সব স্টোরেজ মিডিয়াকে শনাক্ত করতে পারবে এবং সেগুলোর লিস্ট তৈরি করবে যাতে করে ড্রপ-ডাউন মেনু থেকে কাঙ্খিত ইমেজটি বেছে নিতে পারেন৷ এর জন্য আপনাকে ফাইল ফরমেট নির্দিষ্ট করতে হবে এবং যে ফাইল রিকভার করা যাবে এই প্রোগ্রাম তা থাম্বনেইল প্রিভিউতে প্রদর্শন কবে৷ পরিশেষে রিকভার করা ফাইল যেখানে স্টোর হবে তার পাথ নির্দিষ্ট করে দিতে হবে৷ পিসি ইনস্পেক্টরের ফ্রি ভার্সনের ওয়েবসাইট http://www.pcinspector.de
হারানো পার্টিশনের পুনর্গঠন
উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারে কোনো এক সময় আপনার হার্ডড্রাইভ প্রদর্শিত নাও হতে পারে৷ অবশ্য এর মানে এই নয় যে, আপনার ডাটা হারিয়ে গেছে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পার্টিশন টেবল বা মাস্টার বুট রেকর্ড (MBR) যদি যথাযথভাবে রিড করা না যায়, তাহলে এমন অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে৷ এমবিআরটুল 2.3.1 (MBRtool 2.3.1) সফটওয়্যার দিয়ে খুব সহজেই এ সমস্যার প্রতিকার করা যায়৷ এই সফটওয়্যারটি পার্টিশনের অবস্থানকে শনাক্ত করতে পারে এবং বিদ্যমান ডাটা স্ট্রাকচারের ভিত্তিতে সেগুলোকে পুনর্গঠন করতে পারে৷
পার্টিশন পুনরুদ্ধারের নিরাপদ উপায় এবং ডাটা হারানো ব্যাপারকে প্রতিহত করার সহজতম উপায় হলো ভিন্ন ড্রাইভে একই ক্ষমতার বা উচ্চতর ক্ষমতার আপনার হার্ডডিস্কের আরেকটি ক্লোন হার্ডড্রাইভ তৈরি করা৷ এক্ষেত্রে আপনি এইচডি ক্লোন 3.2 (HD Clone 3.2) সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন৷ এই সফটওয়্যারটি http://www.miray.de/products/sat.hdclone.html mvBU †_‡K WvDb‡jvW Ki‡Z পারবেন৷ এই সফটওয়্যার দিয়ে হার্ডড্রাইভের প্রতিটি সেক্টর কপি করতে পারবেন হুবহু৷ এমনকি এররসহ কপি করতে পারবেন৷
ই-মেইল পুনরুদ্ধার : ফোনিক্স আউটলুক পিএসটি
যদি দুর্ঘটনাক্রমে মাইক্রোসফট আউটলুট থেকে ই-মেইল ডিলিট করে ফেলেন, তাহলে সেগুলো স্টেলার ফোনিক্স আউটলুক পিএসটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে পুনরুদ্ধার করতে পারবেন৷ এই অ্যাপ্লিকেশনটি দিয়ে করাপ্ট করা পিএসটি ফাইল থেকে রিপেয়ারিং, রিকভারি ও রিস্টোর করতে পারবেন, যেসব ফাইল আউটলুকে ই-মেইল স্টোর করে সেগুলো৷ এই অ্যাপ্লিকেশনটি পিএসটি ফাইলের জন্য হার্ডডিস্ক স্ক্যান করে, করাপ্ট করা ফাইলকে রিপেয়ার করে এবং সবশেষে এটিকে সেভ করে আলাদা পিএসটি ফাইল হিসেবে৷ এটি ডিলিট করা বা হারানো ই-মেইলকে রিট্রাইভও করতে সক্ষম৷
ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ও ফ্লপি ডিস্ক : বর্তমানে ফ্লপি ডিস্ক কদাচিৎ ব্যবহার হলেও হার্ডড্রাইভ ও ফ্ল্যাশ ড্রাইভ থেকে ডাটা পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যবহৃত টুলগুলো দিয়েই ফ্লপি ডিস্কের ডাটা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব৷ জিপডিস্ক, ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ও মিডিয়া কার্ড যেমন মেমরি স্টিক, এসডি কার্ড, এমএমসি কার্ড, কম্প্যাক্ট ফ্ল্যাশ ইত্যাদি৷ ডাটা রিপেয়ার করার জন্য বেশ কিছু টুল রয়েছে৷ স্টেলার ফনিক্স ডিজিটাল নামের মিডিয়া রিকভারি সফটওয়্যার যথাযথভাবে কাজ করতে পারে উপরোল্লিখিত সব ধরনের ডিজিটাল মিডিয়াতে৷ এটি ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে ফটো রিকভার করতে পারে এবং স্টোর করতে পারে অডি, ভিডিও ও ইমেজসমূহ৷ ফিজিক্যালি ড্যামেজ ফ্ল্যাশ মিডিয়া থেকেও স্টেলার ডাটা পুনরুদ্ধার করতে পারে৷ এক্ষেত্রে চিপকে ক্যাসিং থেকে আলাদা করে অভিজ্ঞ প্রফেশনাল দিয়ে রিপেয়ার করতে হবে৷ এরপর ওয়ার্কিং সার্কিটের সাথে পুনরায় সংযোগ করতে হয়৷ এ পর্যায়ে সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে এবং ডাটা পুনরুদ্ধারের কাজ করে৷
ফ্র্যাগমেন্টেশন : যখন ডিলিট করা ডাটা রিকভারের চেষ্টা করবেন, তখন কোনো অবস্থাতেই হার্ডড্রাইভকে ফ্র্যাগমেন্ট করবেন না৷ এমনকি হার্ডডিস্ক খালি দেখালেও৷ ফ্র্যাগমেন্টেড ডাটা হার্ডডিস্কেই থেকে যায় এমনকি ডাটা ডিলিট করার পরও৷ তারপরও তা পুনরুদ্ধার করা যায় ড্রাইভ ডিফ্র্যাগ করলে ওভাররাইট হয় এবং ডিলিট স্থায়ীভাবে কার্যকর হয়৷
অ্যাটাচমেন্ট ফাইল ওপেন করার আগে নিশ্চিত হয়ে ওপেন করুন এবং ভাইরাইস, ওয়ার্ম, ট্রোজান থেকে নিরাপদ থাকুন৷
কজ
ফিডব্যাক : swapan52002@yahoo.com