গত পর্বে আমরা দেখিয়েছি কিভাবে পিএইচপিতে কোড লিখে চালাতে হয়৷ আশা করি পিএইচপি নিয়ে যাদের মনে ভয়ভীতি ছিল তা অনেকটাই দূর হয়ে গেছে৷ কিভাবে পিএইচপির আরো গভীরে যাওয়া যায় তা আমরা পর্যায়ক্রমে পাঠকদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো৷
পিএইচপি ওপেন সোর্সভিত্তিক একটি ল্যাঙ্গুয়েজ বলে এটি শেখা এবং পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে কাজে লাগানো অনেক সহজ৷ যারা পিএইচপি নিয়ে উত্সাহী তারা খুব তাড়াতাড়ি এই ব্যাপারগুলো বুঝতে পারবেন৷ তাছাড়া বর্তমান বিশ্বে স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে পিএইচপির চাহিদা অনেক বেশি৷ আমরা চেষ্টা করবো যাতে পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে সবাই পিএইচপি শেখার জন্য কমপিউটার জগৎ-এর এই পাঠশালা বিভাগকে কাজে লাগাতে পারেন৷
গত পর্বে আমরা শিখেছিলাম উইন্ডোজভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমে কিভাবে পিএইচপিতে কাজ করা যায়৷ যারা লিনআক্স বা ম্যাকে কাজ করছেন, তাদের হতাশ হবার কিছুই নেই৷ লিনআক্স বা ম্যাকেও পিএইচপি চালানো যায়৷ ওপেন সোর্সভিত্তিক ল্যাঙ্গুয়েজ বলেই পিএইচপির প্রায় সব ধরনের অপারেটিং সিস্টেম কম্প্যাটিবল৷ যে অপারেটিং সিস্টেমে পিএইচপিতে কাজ করতে চান, সেই অপারেটিং সিস্টেম অনুসারে আপনাকে পিএইচপি এবং ওয়াম্প সার্ভার ব্যবহার করতে হবে৷ অবশ্য সার্ভার হিসেবে যে ওয়াম্প সার্ভারই ব্যবহার করতে হবে এমন কোনো কথা নেই৷ অন্যান্য সার্ভারও ব্যবহার করা যায়৷ তবে আমরা এখানে ওয়াম্প সার্ভার ব্যবহার করবো৷ আপনি যে অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছেন, সেই অপারেটিং সিস্টেমের জন্য পিএইচপি এবং ওয়াম্প সার্ভার ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে নিন৷ ইন্টারনেটে সার্চ করলেই আপনার কাঙিক্ষত অপারেটিং সিস্টেমের জন্য পিএইচপি এবং ওয়াম্প সার্ভারের ডাউনলোডেবল ফাইল পেয়ে যাবেন৷ ইনস্টল করার প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন৷ পিএইচপি চালানোর প্রক্রিয়া একই রকমের৷ তাই এখানে বিস্তারিত দেখানো হচ্ছে না৷
এই পর্বে পিএইচপির আউটপুট, ভেরিয়েবল এবং ফর্ম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ সেই সাথে আউটপুট, ভেরিয়েবল এবং ফর্মসহযোগ একটি ছোট প্রজেক্ট তৈরি করা হয়েছে৷ আমরা সবাই জানি, সিস্টেমের মনিটর হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড আউটপুট ডিভাইস৷ মনিটরে আউটপুট দেখানোর জন্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজগুলোতে সচরাচর প্রিন্ট ফাংশন ব্যবহার হয়৷ পিএইচপিতেও প্রিন্ট ফাংশন ব্যবহার করা যায়৷ এই ফাংশনের পাশাপাশি আউটপুট ফাংশন হিসেবে ইকো ফাংশন বেশ জনপ্রিয়৷ গত পর্বে পিএইচপির প্রথম কোডিংয়ে প্রিন্ট ফাংশন ব্যবহার করা হয়েছে৷ সি বা সি++ প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে যেভাবে প্রিন্ট ফাংশন ব্যবহার করা যায় পিএইচপিতেও একইভাবে এই ফাংশন ব্যবহার করা যায়৷ যেমন\ হ্যালো ওয়ার্ল্ড প্রিন্ট করার জন্য সি বা সি++ প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ কোড করতে হয় printf("hallo world."); লিখে৷ এ কোডিং পিএইচপিতে হবে print("hallo world."এভাবে৷ অবশ্য ফার্স্ট ব্র্যাকেট না দিয়ে print "hallo world.";এভাবেও পিএইচপিতে কোড করা যায়৷ আউটপুটের জন্য ইকো ফাংশনও একইভাবে যথাক্রমে echo("hallo world."); এবং echo"hallo world." লিখে কোড করা যায়৷ মনে রাখবেন, প্রিন্ট ফাংশন এবং ইকো ফাংশনের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে প্রিন্ট ফাংশন একটি ভ্যালু রিটার্ন করে যেখানে ইকো ফাংশন কোনো ভ্যালু রিটার্ন করে না৷ যেকোনো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ভেরিয়েবল বেশ বড়সড় ভূমিকা পালন করে থাকে৷ ভেরিয়েবলের মাধ্যমেই যেকোনো ডাটা সিস্টেমে স্টোর করতে হয় যা পরে কাজে লাগানো যায়৷ মনে রাখবেন, যেকোনো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে বিভিন্ন ভেরিয়েবল নিয়েই সবচেয়ে বেশি কাজ করা হয়৷ গত পর্বে আমরা জেনেছি পিএইচপিতে প্রতিটি স্টেটমেন্ট শেষ করতে হয় ; (সেমিকোলন)দিয়ে৷পিএইচপিরস্টেটমেন্টগুলোসি বা সি++ ল্যাঙ্গুয়েজের মতো৷ আর ভেরিয়েবলগুলো পার্ল ল্যাঙ্গুয়েজের মতো৷ পিএইচপিতে ভেরিয়েবল তৈরি করার জন্য $ (ডলার সাইন) ব্যবহার করা হয়৷ যারা সি বা জাভা প্রোগ্রামিংয়ের সাথে জড়িত, তারা জানেন ভেরিয়েবল ডিক্লেয়ার করার জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়া আছে৷ বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজের ধরন বিভিন্ন রকমের৷ আপনি যে ধরনের ভেরিয়েবলই তৈরি করতে চান না কেন, ভেরিয়েবলের শুরুতে ডলার সাইন দিতে হবে৷ অন্যান্য প্রোগ্রোমিং ল্যাঙ্গুয়েজে অনেক ক্ষেত্রেই কোডিংয়ের শুরুতে ভেরিয়েবল ডিক্লেয়ার করতে হয়৷ পিএইচপিতে এ ধরনের কোনো ভেরিয়েবল ডিক্লেয়ার করতে হয় না৷ সরাসরি ভেরিয়েবলকে কাজে লাগানো যায়৷ ভেরিয়েবলের সাথে সাথে অন্যান্য ডাটা টাইপের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য৷ ভেরিয়েবল সম্পর্কে বিস্তারিত পরে আলোচনা করা হবে৷ ভেরিয়েবলের পাশাপাশি বিভিন্ন ডাটা টাইপ নিয়েও আলোচনা করা হবে৷ আপাতত এটুকু জেনেই প্রজেক্টটি কাজে লাগান৷
পিএইচপির একটি শক্তিশালী ফিচার হচ্ছে এটি প্রায় সব ধরনের ফর্ম নিয়ে কাজ করতে পারে৷ এই প্রজেক্টে একটি এইচটিএমএল ফর্মকে পিএইচপিতে ব্যবহার করা হয়েছে৷ ফর্ম কী তা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই৷ আমাদের ব্যবহার করা সব সফটওয়্যারেই আমরা ফর্ম দেখতে পাই৷ আসলে সফটওয়্যারের প্রত্যেকটি উইন্ডোই একেকটি ফর্ম৷
সিম্পল ফর্ম প্রজেক্ট
নোটপ্যাড খুলে নিচের কোডগুলো লিখুন৷ তারপর ফাইলটি পিএইচপি ফাইল হিসেবে formprojectl.php নামে C:\wamp\www ডিরেক্টরিতে সেভ করতে হবে৷
একইভাবে নোটপ্যাড খুলে কোড-২-এর কোডগুলো লিখুন৷ তারপর ফাইলটি পিএইচপি ফাইল হিসেবে formprojectpost.php নামে একইভাবে C:\wamp\www ডিরেক্টরিতে সেভ করতে হবে৷
Hi . You are years old. Hi . You are years old.
কোড লেখা হ গেলে ওয়াম্প সার্ভার চালু করে (যদিসিস্টেমট্রেতে চালু না থাকে) যেকোনো ওয়েব ব্রাউজার ওপেন করতে হবে৷ ব্রাউজারের অ্যাড্রেস লিখতে হবে http://localhost//formprojectl.php ৷ তাহলেই দেখতে পাবেন একটি ফর্মে দুইটি টেক্সট বক্সে আপনার নাম এবং বয়স জানতে চাচ্ছে৷ নাম এবং বয়স লিখে নেক্সট বাটনে ক্লিক করলে আরেকটি পেজে আপনার নাম এবং বয়স দেখাবে৷
কোড বিশ্লেষণ
প্রথম কোডের প্রথম লাইনের পোস্ট মেথডে একটি ফর্ম তৈরি করা হয়েছে৷ মেথড নিয়ে পরে আলোচনা করা হবে৷ এতটুকু জেনে রাখুন পিএইচপিতে দুইটি মেথডের মধ্যে পোস্ট মেথড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়৷ কোডের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় লাইনে দুইটি টেক্সট বক্স তৈরি করা হয়েছে যথাক্রমে নাম এবং বয়সের ইনপুট নেবার জন্য এবং প্রাপ্ত ডাটা পরের কোডে পাস করার জন্য৷ চতুর্থ লাইনে পরবর্তী পেজে যাবার জন্য বাটনে ইনপুট নেয়া হয়েছে৷ পঞ্চম লাইনে ফর্মের ট্যাগ ক্লোজ করা হয়েছে৷
দ্বিতীয় কোডের প্রথম এবং দ্বিতীয় লাইনে দুইটি ভেরিয়েবলের মাধ্যমে নাম এবং বয়স দেখানো হয়েছে৷ এই দুইটি কোডের মাধ্যমে ডাটা কিভাবে পাস করা যায় সেটিও দেখানো সম্ভব হয়েছে৷
ফিডব্যাক : mortuza_ahmad@yahoo.com