লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
সম্পাদকীয়
নতুন বছর নতুন প্রত্যাশা
গত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য টেকসই তথ্য ও জ্ঞানপদ্ধতি বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে উদ্বোধন করা হলো বাংলাদেশটেলিসেন্টারনেটওয়ার্কেরমিশন ২০১১ কর্মসূচি৷ লক্ষ্য বাংলাশের চল্লিশ বছর পূর্তির বছর ২০১১-এর মধ্যে সারাদেশে ৪০ হাজার টেলিসেন্টার স্থাপন৷ বাংলাদেশে টেলিসেন্টার স্থাপনের আন্দোলনকে জোরদার করে তোলার লক্ষ্যে গঠিত বাংলাদেশটেলিসেন্টারনেটওয়ার্ক তথা বিটিএন-এর এ উ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই, যদিও মাত্র ৪ বছরের মধ্যে সারাদেশে ৪০ হাজার টেলিসেন্টার স্থাপনের বিষয়টিকে অনেকেই উচ্চাভিলাষী বলে মনে করছেন৷ আমরা মনে করি, পুরোপুরি লক্ষ্য অর্জিত না হলেও এ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে টেলিসেন্টার স্থাপনে উল্লেখযোগ্য একটা অগ্রগতি ঘটবে৷ আর আমাদের মতো দেশে টেলিসেন্টার গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তাকেও যৌক্তিক মনে করি৷ টেলিসেন্টার হচ্ছে এমন এক স্থান, যেখানে গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারবে কমপিউটার, ইন্টারনেট এবং অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ সেবা৷ যেমন- বিভিন্ন ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ, ভিডিও, ডকুমেন্টারি, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ইস্যুভিত্তিক প্রচারণা, পানি ও মাটি পরীক্ষা, উচ্চতা ও ওজন পরিমাপ, আলোকচিত্র, কম্পোজ, স্ক্যানিং, ফটো স্ক্যানিং, যন্ত্রপাতি ভাড়া দেয়া, রক্তচাপ পরিমাপ, চাপ পরিমাপ, সরকারি ফরম সরবরাহ, ই-মেইল সেবা, ফোন সেবা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরম যোগান দেয়া ও ডিভি ফরম পূরণ করা৷ এসব সেবা আজকের দিনে শহর ও গ্রামের সব মানুষের কাছেই প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অতএব বাংলাদেশে টেলিসেন্টার স্থাপনের আন্দোলন জোরদার হওয়া সবার কাছে কাম্য৷ তাছাড়া প্রত্যাশিত মাত্রায় টেলিসেন্টার গড়ে তুলতে পারলে সৃষ্টি হবে বিপুল কর্মসংস্থানের৷ কমবে গরিব মানুষের সংখ্যা৷ তবে এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে লোকাল কনটেন্ট তৈরির প্রতি মনোযোগী হওয়া৷ বিটিএন-কে এ ব্যাপারে শুরু থেকেই সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে৷
সময়ের ধর্ম এগিয়ে চলা৷ আর সে সত্যের পথ ধরেই আমরা পেছনে ফেলে এলাম আরো একটি ইংরেজি বছর ২০০৭৷ পা রাখলাম নতুন বছর ২০০৮-এ৷ অন্যান্য আর সব কিছুর সাথে এগিয়ে গেল প্রযুক্তিও৷ আর প্রযুক্তির এগিয়ে চলার গতিটাই বুঝি চলে সবচেয়ে দ্রুতলয়ে৷ সেই সূত্রে আমরা পাই নতুন নতুন প্রযুক্তি৷ সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নতুন সব প্রযুক্তিই আমাদের জন্য প্রকৃষ্ট হাতিয়ার৷ সেই হাতিয়ারকে অবলম্বন করেই আমাদের চলতে হবে আগামী পথ৷ সে উপলব্ধি মাথায় রেখে আমরা নতুন বছরের নতুন নতুন প্রযুক্তি পাঠক সাধারণের কাছে তুলে ধরার একটা প্রয়াস চালিয়েছি চলতি সংখ্যাটিতে৷ আমাদের আশা, সম্মানিত পাঠকগণ নতুন বছরের শুরুতেই নবতর প্রযুক্তি সম্পর্কে একটা স্পষ্টতর ধারণা পাবেন৷ পাশাপাশি তাগিদ থাকবে আমাদের নীতি-নির্ধারক মহলও যেনো নবতর এসব প্রযুক্তিকে কী করে দ্রুততর সময়ে আমাদের প্রয়োগের আওতায় আনা যায়, সে ব্যাপারে মনোযোগী হবেন৷
বিগত ২০০৭ সালটিতে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের প্রত্যাশা ছিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাজনৈতিক ঝুট-ঝামেলাবিহীনভাবে অন্তত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতিতে গতিটা কিছুটা হলেও বাড়বে৷ কিন্তু প্রত্যাশিত সে অগ্রগতি তেমন ঘটেনি, তবে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের হাতে হাতকড়া পরার বিষয়টি ছিল উল্লেখযোগ্য ঘটনা৷ তেমনি নেতিবাচক দিক সাবমেরিন ক্যাবল বার বার কাটা পড়ার ব্যর্থতার সংযোজনও ছিল সদ্য বিদায়ী এ বছরটিতে৷ তারপরও আমরা আশাবাদী, নতুন বছরটায় সব ভুলভ্রান্তি দূর করে বাড়াতে সক্ষম হবো প্রযুক্তি খাতের সফলতা৷ সেই সূত্রে বাড়াতে পারবো জাতীয় সমৃদ্ধি৷ আমাদের নীতি-নির্ধারকরা উপলব্ধি করবেন- জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য হাতিয়ার করতে হবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিকেই৷
সবশেষে নতুন বছরে আমাদের সম্মানিত পাঠক, লেখক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি রইলো নতুন বছরের ফুলেল শুভেচ্ছা৷ বিদায় ২০০৭৷ স্বাগতম ২০০৮৷