বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি ১৯৯৮ সালে আইডিবি ভবনের শপিং কমপ্লেক্সকে কেন্দ্র করে আয়োজন করে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও সফল কমপিউটার মেলা। এ মেলার ব্যাপক সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কমপিউটার সমিতি ১৯৯৯ সালে সিদ্ধান্ত নেয় আইডিবি ভবন শপিং কমপ্লেক্সটি একটি পূর্ণাঙ্গ কমপিউটার মার্কেটে রূপান্তর করার। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি তথা বিসিএস-এর উদ্যোগে ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এদেশের সবচেয়ে বড় এবং স্থায়ী কমপিউটার ও কমপিউটারসংশ্লিষ্ট পণ্যের বাজার বিসিএস কমপিউটার সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
কমপিউটার সিটি হিসেবে যাত্রার শুরু থেকেই ক্রেতাসাধারণের কাছে এটি এদেশের সবচেয়ে বড় আইসিটি পণ্য ও পণ্যসামগ্রীর মার্কেট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কমপিউটার সিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবছরই নতুন নতুন থিম নিয়ে এবং নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে বার্ষিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারের বিসিএস সিটিআইটির বার্ষিক উৎসব তথা সিটিআইটি মেলা অনুষ্ঠিত হয় ১৩ জানুয়ারি এবং শেষ হয় ২২ জানুয়ারি। দশ দিনব্যাপী এ মেলার মূল থিম বা স্লোগান ছিল- ‘ডিজিটাল লাইফ, বেটার লাইফ’।
বিসিএস কমপিউটার সিটির নিজস্ব আঙ্গিনায় প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলায় তথ্যপ্রযুক্তি অঙ্গনে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের কমপিউটার ও কমপিউটারসংশ্লিষ্ট পণ্য সামগ্রী প্রায় ১৬০টি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান প্রদর্শনসহ সুলভ মূল্যে বিক্রি করে। এসব পণ্যসামগ্রীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল-কমপিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার, নেটওয়ার্ক ডাটা কমিউনিকেশন, মাল্টিমিডিয়া, আইসিটি শিক্ষা উপকরণ, ল্যাপটপ, পামটপ, ডিজিটাল ক্যামেরাসহ ডিজিটাল জীবনধারাভিত্তিক প্রযুক্তি। এছাড়া বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন আইসিটি ব্র্যান্ড পণ্য প্রদর্শনের জন্য ছিল কয়েকটি অস্থায়ী প্যাভিলিয়ন।
মেলার উদ্বোধন
মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন ও প্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন। গত কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। সরকারিভাবে জনগণের দোরগোড়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যে এবং স্বল্প ব্যয়ে সেবা পৌঁছানোর নানা কার্যক্রম চলছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নানা ধরনের সেবাসহ ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে সারাদেশে সহজে সেবা সুবিধা কার্যক্রম বাড়ানোর কাজ এগিয়ে চলছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বলেন, পড়াশোনা ও গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা, মানুষের উন্নয়ন করা। এ মেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির সভাপতি মোস্তাফা জববার, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আফতাব-উল-ইসলাম, বাংলালায়ন কমিউনিকেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস কমপিউটার সিটিআইটির সভাপতি এ.টি. শফিক উদ্দিন আহমেদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মেলার আহবায়ক এ এল মজহার ইমাম চৌধুরী। মেলা উদ্বোধনের পর বিসিএস কমপিউটার সিটির সামনে সম্পূর্ণরূপে প্রযুক্তি যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি মৃণাল হকের ভাস্কর্য ‘ডিজিটাল ডিজায়ার’ উদ্বোধন করা হয়।
মেলার আকর্ষণ
দর্শক ও ক্রেতাসাধারণকে আকৃষ্ট করতে সিটিআইটি আয়োজিত প্রতিটি মেলা শুরু হয় নিত্যনতুন সাজে। কখনোবা লালবাগ কেল্লার আদলে, কখনোবা আহসান মঞ্জিলের আদলে, কখনোবা ভিন্ন এক আঙ্গিকে অর্থাৎ যার একটির সাথে আগেরটির মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এবারের মেলার অন্যতম আকর্ষণ বা সংযোজন ছিল প্রযুক্তি যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি মৃণাল হকের ভাস্কর্য এবং কমজগৎডটকম-এর সহযোগিতায় সিটিআইটি ২০১১-এর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের লাইভ ওয়েবকাস্ট, যা এ মেলাকে উপনীত করেছে এক ভিন্ন মাত্রায়। এছাড়া সিটিআইটি ২০১১-এর ওয়েব পার্টনার কমজগৎডটকম-এর সৌজন্যে ছিল নলেজ ম্যানেজমেন্ট জোন। এখানে অতিসংক্ষিপ্ত পরিসরে তথ্যপ্রযুক্তির কিছু বিখ্যাত আবিষ্কার যেমন উপস্থাপন করা হয়, তেমনি উপস্থাপন করা হয় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যা বাংলাদেশের ইতিহাসে মাইলফলক হিসেবে গণ্য করা যায়। বলা যায় সিটিআইটির এই জোনটিই ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কমজগৎডটকম ওয়েবপোর্টালে উপস্থাপিত তথ্য থেকেই মেলায় আসা দর্শকেরা জানতে পারে কবে বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল তথা বিসিএস প্রতিষ্ঠিত হয়, কবে এবং কার উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথম প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে কমপিউটার জগৎ-এর কেমন ভূমিকা রয়েছে ইত্যাদি আরো অনেক তথ্য।
সিটিআইটির অন্যান্য আয়োজন
সিটিআইটি কমিটি তাদের বার্ষিক মেলাকে আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্ত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী নিয়ে থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়নি। সিটিআইটি মেলা আকর্ষণীয় করার জন্য মেলা চলাকালীন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তথ্যপ্রযুক্তি, দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা ওয়াইম্যাক্সের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠান। মেলার প্রতিদিনই ছিল বিশেষায়িত অনুষ্ঠান ও ক্যুইজ প্রতিযোগিতা। মেলায় ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে বিনামূল্যে ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেটের ব্যবহারের সুযোগ পায় আগ্রহী দর্শকেরা। এছাড়াও মেলা চলার সময় সিটিআইটির কোথায় কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে, তা ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর পরই কমজগৎডটকম ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
বরাবরের মতো এবারও ছিল দেশের প্রথিতযশা গুণীজন সম্বর্ধনা এবং বিশিষ্টজনদের সম্মাননা বা ক্রেস্ট দেয়া। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য ছিল শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, গেমিং প্রতিযোগিতা, রক্তদান কর্মসূচি, ডিজিটাল ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ক্যুইজ প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। মেলায় প্রতিদিন প্রবেশ টিকেট মূল্যের ওপর র্যা ফেল ড্রর মাধ্যমে দেয়া হয় আকর্ষণীয় পুরস্কার। মেলায় প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা, তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং প্রতিবন্ধীরা বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ পায়।
বিশেষ সুযোগ ও নতুন পণ্য
বিসিএস সিটিআইটি বার্ষিক আয়োজনের মূল আকর্ষণ হলো স্থায়ী-অস্থায়ী প্রতিটি স্টলেই থাকে আকর্ষণীয় মূল্যছাড়, বিশেষ উপহারসহ অন্যান্য সুযোগ, যার ব্যতিক্রম এবারও ঘটেনি। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ এসেছেন বাজারে আসা সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পর্কে তথ্য নিতে, কেউবা এসেছেন তরুণ প্রজন্মের ক্রেজ ল্যাপটপ বা ডিজিটাল ক্যামেরা কিনতে। তবে লক্ষণীয়, প্রযুক্তিপণ্য কেনার ব্যাপারে ক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি বেড়েছে। তাই ক্রেতারা কোনো পণ্য কেনার আগে পণ্যের বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা কী তা যেমন জেনে নিয়েছে তেমনি জেনে নিয়েছে তার পছন্দ করা পণ্যটি পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী কিনা ইত্যাদিসহ আরো প্রয়োজনীয় তথ্য।
এবারের মেলায় আগত দর্শকদের মধ্যে বেশি আকর্ষণ পরিলক্ষিত হয় ল্যাপটপ ও নেটবুক এবং ডিজিটাল ক্যামেরার প্রতি। যেসব ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ বা নেটবুক ক্রেতাদেরকে ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় সেগুলো হলো- এইচপি, তোশিবা, এসার, ডেল, ইপিসি, আসুস, লেনোভা, ফুজিৎসু, ফ্লোরা নোটবুক পিসি ইত্যাদি। এসব ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ ও নেটবুক মেলাজুড়েই পাওয়া যায় কোনো না কোনো স্টলে।
সিটিআইটি মেলায় আরেকটি আকর্ষণীয় পণ্য ছিল ডিজিটাল ক্যামেরা, যা তরুণ প্রজন্মসহ সর্বসাধারণের কাছে এক আকর্ষণীয় পণ্য। মেলায় যেসব ব্র্যান্ডের ডিজিটাল ক্যামেরা ক্রেতাসাধারণের কাছে বেশি প্রত্যাশিত ছিল সেগুলো হলো- অলিম্পাস, নাইকন, ক্যানন, সনি, ফিলিপস, ফুজিৎসু ইত্যাদি, যা বিভিন্ন স্টলে পাওয়া যায়।
এবারের মেলায় আসা ক্রেতাদর্শকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মনিটর ক্রেতা। ক্রেতাদের মধ্যে প্রায় সবারই আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন সাইজের এলসিডি ওয়াইড ও স্কয়ার মনিটরের প্রতি। মেলায় যেসব ব্র্যান্ডের মনিটরগুলো ক্রেতাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় সেগুলোর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি ব্র্যান্ড হলো- স্যামসাং, এলজি, হিউন্দাই, ভিউসনিক, এনইসি, আসুস ইত্যাদি।
ব্যবহারকারীদের কাজের ধরনপ্রকৃতি ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হওয়ায় ডকুমেন্টের পোর্টেবিলিটি বেড়ে গেছে অনেক, যার ছোঁয়া পড়ে সিটিআইটি ২০১১-এ। যার কারণে বিপুলসংখ্যক ক্রেতাকে আসতে হয়েছে শুধু পোর্টেবল স্টোরেজ ডিভাইস যেমন- পেনড্রাইভ ও পোর্টেবল হার্ডডিস্ক কিনতে। সিটিআইটি মেলায় প্রায় প্রতিটি স্টলেই পাওয়া গেছে বিভিন্ন দাম, ধারণক্ষমতা ও ব্র্যান্ডের পেনড্রাইভ ও পোর্টেবল হার্ডডিস্ক।
মেলায় আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল ক্রেতাসাধারণের মাঝে লাইসেন্সড সিকিউরিটি টুলের প্রতি আগ্রহ বা সচেতনতা। আর এ কারণেই দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক ক্রেতাকে বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্স করা সিকিউরিটি টুল সম্পর্কে তথ্য জানতে ও কিনতে। বলা যায়, অন্য যেকোনো সিটিআইটি মেলার চেয়ে এ মেলায় সিকিউরিটিসংশ্লিষ্ট টুলের ব্যাপক চাহিদা ছিল। শুধু তাই নয়, এ মেলার অন্যতম এক পৃষ্ঠপোষকও ছিল এক সিকিউরিটি টুলের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি। যেসব টুলের আধিক্য পরিলক্ষিত হয় সেগুলোর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো- নরটন, ক্যাসপারস্কি, বিটডিফেন্ডার, ম্যাকাফি, শিল্ড, ইসেট, নড ৩২ ইত্যাদি।
সিটিআই ২০১১-এ ডেস্কটপ কমপিউটারের চাহিদা ছিল ব্যাপক, তবে অন্যান্যবারের তুলনায় কম। মেলায় বিভিন্ন স্টলে বিভিন্ন মডেল ও কনফিগারেশনের ক্লোন পিসি বিক্রি হয়েছে, যার মূল্য ন্যূনতম সাড়ে ১৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে তদুর্ধ পর্যন্ত। এসব ক্লোন পিসির সাথে ছিল ঐচ্ছিকভাবে সিআরটি ১৫-১৭ সাইজের মনিটর।
এ মেলায় বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিপণ্য প্রস্ত্ততকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ছিল প্যাভিলিয়ন। যেসব প্রতিষ্ঠান প্যাভিলিয়নে তাদের নিজেদের সর্বশেষ প্রযুক্তিরপণ্য প্রদর্শন করে তাদের মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো- এইচপির ওএম পার্টনার, মাইক্রোসফট, আসুস, বেলকিন, হিটাচি। এইচপি তাদের প্যাভিলিয়নে প্রদর্শন করে ওয়াই-ফাই টেকনোলজির মাধ্যমে প্রিন্ট করার সুবিধাসহ অল-ইন-ওয়ান প্রিন্টার। ইন্টেল প্রদর্শন করে দ্বিতীয় প্রজন্মের কোর সিরিজের দুটি প্রসেসর যার গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিটকে উন্নততর করা হয়েছে। আসুস তাদের প্যাভিলিয়ন সজ্জিত করে সর্বাধুনিক ল্যাপটপ দিয়ে। মাইক্রোসফটের ওএমই পার্টনার বাইনারি লজিক লাইসেন্স করা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারের সুবিধা উপস্থাপন করে। হিটাচি ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্টর প্রদর্শন করে ওরিয়েন্টল সার্ভিসেস লি.। এছাড়াও নেটওয়ার্ক পণ্যের প্রতি যথেষ্ট আকর্ষণ লক্ষ করা গেছে এ মেলায়।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আমাদের করণীয় সম্পর্কে সিটিআইটি ২০১১-এর সভাপতি এ. টি. শফিক উদ্দিন আহমেদ কমপিউটার জগৎ প্রতিনিধিকে বলেন, আমাদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের যে সংগঠনগুলো আছে, তাদের মূখ্য ভূমিকা হলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাজার তৈরি করা। এটা ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ হলেও এরই মাধ্যমে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং নতুন প্রজন্মকে যেমন উৎসাহ দিতে হবে তেমনি তাদেরকে এদিকে ধাবিত করার জন্য আমাদের সংগঠনগুলোকে কাজ করতে হবে। কাজেই আমি মনে করি বাংলাদেশের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট যতগুলো সংগঠন আছে তাদের সবারই একই চিন্তাধারা থাকতে হবে যে তথ্যপ্রযুক্তিখাতের বাজার বাড়াতে হবে এবং নতুন প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তিতে সুশিক্ষিত ও সম্পৃক্ত করতে হবে। তাহলে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছি তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে একদিন।
এবারের মেলার প্রচুর দর্শক ক্রেতা সমাগমের কারণ সম্পর্কে কমপিউটার জগৎ প্রতিনিধিকে সিটিআইটি ২০১১-এর আহবায়ক এ এল মাজহার ইমাম চৌধুরী বলেন, এবারের প্রচার ছিল প্রচুর। গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে পূর্ণাঙ্গ মেলার রূপ দেয়ার চেষ্টা করেছি। ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বিলবোর্ডে দিয়েছি, পোস্টার লাগিয়েছি। এবারই প্রথম এক লক্ষের বেশি লোককে এসএমএস-এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও আইসিটি ব্যক্তিত্বকে সিটিআইটি মেলা সম্পর্কে অবহিত করেছি, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি, লিফটলেটের মাধ্যমে প্রচার চেষ্টা করেছি যার কারণে গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি।
মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। এ সময়ে তিনি বলেন, প্রতিবছরই এ মেলা হচ্ছে যার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সৈনিকেরা প্রযুক্তি সম্পর্কে জানছে। তিনি বলেন, জ্ঞান হচ্ছে উন্নতির প্রাণশক্তি আর এ জ্ঞান বিতরণে সাহায্য করছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংশ্লিষ্টরা। এ মেলা অব্যাহত রাখার আহবান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস প্রেসিডেন্ট জালাল আহমেদ, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটিআইটি নির্বাহী কমিটির সভাপতি এ. টি. শফিক আহমেদ, মেলার আহবায়ক এ এল মজহার ইমাম চৌধুরী (পিনু), সিটিআইটির সাধারণ সম্পাদক কাজী সামছুদ্দিন আহমেদ লাভলুসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। অনুষ্ঠানে সেরা স্টল কমপিউটার সোর্স লিমিটেড এবং সেরা প্যাভেলিয়ন ব্যালকিনের প্রতিনিধিদের পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া এবারের বিসিএস আইসিটি ২০১১ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির সভাপতি মোস্তাফা জববার এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলকে। এছাড়াও মেলার পৃষ্ঠপোষকদেরও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
মেলায় প্লাটিনাম স্পন্সর বাংলালায়ন, গোল্ড স্পন্সর ক্যাসপারস্কি, লাইটঅন, স্যামসাং, তোশিবা, মিডিয়া পার্টনার ছিল বৈশাখী টিভি, রেডিও টুডে, ইত্তেফাক, ওয়েব পার্টনার কমজগৎডটকম এবং আইটি ম্যাগাজিন পার্টনার কমপিউটার বিচিত্রা।
মেলার শেষদিন সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com