লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
৩য় মত
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ চাই
বাংলাদেশে প্রতিদিন কতগুলো দৈনিক পত্রিকা, সাপ্তাহিক পাক্ষিক বা মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় নিয়মতিভাবে তা সহজে বলা যাবে না। বাংলাদেশে যেসব পত্রিকা বের হয় তার মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বাকি সবই যে বস্ত্তনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে তা আজকাল অনেকেই স্বীকার করেন না। বলা যায় এসব পত্রিকার বেশিরভাগের মূল লক্ষ্য হলো বেশি থেকে বেশি করে সরকারের বিরুদ্ধে নেগেটিভ বা নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করা। পত্র-পত্রিকাগুলো পড়লে মনে হয় দেশে এক চরম অরাজকতা বা বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে, দেশে উন্নয়নমূলক কোনো কর্মকা- হচ্ছে না, তা পুরোপুরি সত্যি না হলেও সম্পূর্ণ মিথ্যা তা কিন্তু নয়।
তবে এ কথা সত্য, বাংলাদেশে উন্নয়নমূলক যেসব কাজ হচ্ছে তার বেশিরভাগ বেসরকারি উদ্যোগে। অবশ্য এ নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করার কোনো অবকাশ নেই। কেননা সমগ্র বিশ্বেই এমন ধারা পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। যার ব্যতিক্রম বাংলাদেশেও হতে দেখা যায়নি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যে ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়, তা মূলত বেসরকারি উদ্যোগে সরকারির পৃষ্ঠপোষকতার দারুণ অভাব।
লক্ষণীয়, সরকারের গৃহীত উন্নয়নমূলক পজেটিভ বা ইতিবাচক সংবাদগুলো নেতিবাচক সংবাদের ভিড়ে খুঁজেই পাওয়া যায় না। অনেকেই মনে করেন, পাঠকেরা সব সময়ই সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সংবাদ বেশি পছন্দ করেন, তাই এমনটি হতে দেখা যায়। আসলে কিন্তু তা নয়। আমি নেতিবাচক খবরের বিরোধিতা করছি না। নেতিবাচক সংবাদ দরকার ভুল-ভ্রান্তি সংশোধনের জন্য, জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য, নেতিবাচক খবরই ইতিবাচকের পথ প্রদর্শক। আমাদের মনে রাখা দরকার, সব সময় খুঁজে খুঁজে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করলে এক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে, তা আমাদের কাম্য হতে পারে না।
আবার সব সময় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের মতো সরকারের আত্ম প্রচারণামূলক সংবাদও আমরা প্রত্যাশা করি না, বিশেষ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রসঙ্গে সরকারি দলের নেতাদের যেসব বক্তৃতা, বিবৃতি শোনা যায় তাও আমাদের কাম্য নয়। কেননা এগুলোর বেশিরভাগই চাটুকারিতামূলক ও অতিরঞ্জিত।
আমরা কেউ অস্বীকার করি না, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে সরকার, তা বাস্তবায়নে বেশ কাজ করছে, তবে প্রত্যাশিত গতিতে নয় কোনো কোনো ক্ষেত্রে। আবার কোনো ক্ষেত্রে শুধু কথার কথা তথা প্রতিশ্রম্নতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হতে দেখা যায় না। এসব ক্ষেত্রের দিকে মিডিয়াকে যেমন সোচ্চার হতে হবে, তেমনই সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে যেসব কাজ করছে সে সম্পর্কে ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করলে সরকার তার কাজে উৎসাহ পাবে।
মিডিয়ার কাছ থেকে সবার প্রত্যাশা, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষক্ষ্য সরকারের গৃহীত সব উন্নয়নমূলক কর্মকা--র যথার্থ তথ্য যেমন তুলে ধরবে, তেমনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুর্বলতা, ভুলভ্রান্তি পরিলক্ষিত হলে তার গঠনমূলক সমালোচনা করে সঠিক দিকনির্দেশনা দেবে, যাতে সরকার তার প্রতিশ্রম্নত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
রিপন
দুমকি, পটুয়াখালী
....................................................................................................................................................................................................................................
শিশু-কিশোরদের প্রেরণাদায়ক দৃষ্টান্তমূলক লেখা চাই
আমি কমপিউটার জগৎ-এর দীর্ঘদিনের পুরনো নিয়মিত পাঠক। সে সূত্রে আমি জানি, মাসিক কমপিউটার জগৎ দেশে-বিদেশে অবস্থানরত তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশী প্রতিভাধরদের নিয়মিতভাবে সম্মানিত করত কীর্তিমানদের সাফল্য গাথা কাহিনী কমপিউটার জগৎ-এ প্রকাশ করার মাধ্যমে। সেসব কাহিনী বা সাফল্যের কথা সব আমার মনে না থাকলেও কিছু কিছু বিষয় আমার মনে আছে, কেননা সেগুলো সে সময়ে আসলে আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হতো। যেমন মিশো, স্বচ্ছ, উচ্ছ্বাসদের মতো শিশু প্রোগ্রামারদেরকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপন করা।
কমপিউটার জগৎ যে সময় এসব শিশু প্রোগ্রামারকে জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিল, তখন এদেশে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে এক উদাসীনতা ছিল সরকারি ও বেসরকারি মহলসহ দৈনিক সংবাদপত্রেও। তখন কমপিউটার জগৎ-এর এ ধরনের উদ্যোগকে পাগলামো বা বাড়াবাড়ি মনে করতেন অনেকেই। তারপরও এ পত্রিকাটি পিছপা হয়নি বা দমে যায়নি।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমার প্রিয় এ পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরে দেশে বা বিদেশে অবস্থানরত তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখা বাংলাদেশী প্রতিভাধরদের নিয়ে তেমন খুব একটা লেখালেখি প্রকাশ করছে না ইদানীং। অবশ্য এর পেছনে খোড়া যুক্তি দাঁড় করানো যায় যে এখন সময় বদলে গেছে, দৈনিক পত্রিকাগুলো এখন তথ্যপ্রযুক্তির সংশ্লিষ্ট খবরা-খবরের জন্য আলাদা স্পেস বরাদ্দ করছে যা আগে ছিল না। সুতরাং কমপিউটার জগৎ-এর মতো একটি মাসিকে এসব কাহিনী তেমন গুরুত্ব পাবে না বর্তমান প্রেক্ষাপটে।
অন্যান্য পত্রিকা বা দৈনিক তথ্যপ্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে কি দিচ্ছে না তা আমার জানার বিষয় নয়। আমি চাই আমার প্রিয় পত্রিকা মাসিক কমপিউটার জগৎ অতীতের মতো এখনো নিয়মিতভাবে দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের তথ্যপ্রযুক্তিক্ষেত্রে সাফল্যের কাহিনী নিয়মিত না হোক মাঝেমধ্যে ছাপাবে।
মাত্র ছয় বছরে কমপিউটার প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষ রূপকথার কৃতিত্বের কথা জানতে পারলাম কমপিউটার জগৎ-এর মাধ্যমে। অবশ্য অন্যান্য দৈনিকেও ছাপা হয় এ তথ্য। কমপিউটার জগৎ ৯৪-৯৫ সালে মিশো, স্বচ্ছ, উচ্ছাসকে নিয়ে যখন সংবাদ সম্মেলন করেছিল, তখন তাদের বয়সও ছিল ৮-১০ বছর। তাই আমার মনে হয় কমপিউটার জগৎ রূপকথাকে নিয়ে আলাদা কোনো বিশেষ লেখা প্রকাশ করলে আরো ভালো করত। কেননা মাত্র ছয় বছর বয়সে রূপকথা রিপলিস বিলিভ ইট অর নট-এ বিস্ময়কর বালক হিসেবে এই বাংলাদেশী শিশু অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই বিস্ময়কর বালক শুধু যে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়াতে স্থান পেয়েছে তা নয়। রূপকথা একই সাথে বিবিসি, ক্যালিফোর্নিয়া অবজারভার, নিউইয়ক টাইমস, হিন্দুস্তান টাইমসসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে।
সুতরাং কমপিউটার জগৎ-এর কাছে আমার প্রত্যাশা এ পত্রিকাটি যেনো অতীতের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের কৃতিত্বের কথা নিয়মিতভাবে প্রকাশ করবে এবং অবশ্যই তা হবে স্বতন্ত্র রিপোর্ট আকারে। এর ফলে অন্যরা উৎসাহ ও প্রেরণা পাবে নিজেদের প্রতিভাকে সবার সামনে তুলে ধরতে।
জেসমিন আরা
পাঠানতুলী, নারায়ণগঞ্জ