লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যসূত্র:
কমপিউটারের ইতিকথা
কমপিউটারের ইতিকথা পর্ব-৯
পার্সোনাল কমপিউটারের বিকাশের পর পরের বিবর্তনটা ঘটে ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে। এরপর থেকে কমপিউটার সংক্রান্ত মানুষের সব প্রচেষ্টার সাথে ইন্টারনেটকে জড়িয়ে সম্ভাবনার দুয়ার আরও বিসত্মৃত করা হয়েছে। এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো, ইন্টারনেট আর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এক জিনিস নয়। কমপিউটার এবং অন্যান্য ডিভাইসের মাঝে সংযোগ স্থাপন করে ইন্টারনেট। আর ইন্টারনেটভিত্তিক একটি সেবা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব, যেমন আমরা ই-মেইল সেবা পাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে। যাই হোক, এ পর্ব এবং এর পরের পর্বেও ইন্টারনেটভিত্তিক সেবাগুলোর ইতিকথার প্রাধান্য দেখা যাবে।
ইন্টারনেটের বিবর্তন
কমপিউটারের ইতিকথার পঞ্চম পর্বে আমরা দেখেছিলাম, কিভাবে এআরপিএনেটের বিকাশ হয়েছিল। সেই এআরপিএনেট পরে বিভিন্ন ধাপে ধাপে বিকশিত ও অন্যান্য নেটওয়ার্কের সাথে মিলিত হয়ে ইন্টারনেটে রূপান্তরিত হয়। এআরপিএনেট বা সেই সময়ের অন্যান্য কমপিউটার নেটওয়ার্কের কাজ ছিল সেই নেটওয়ার্কের আওতাধীন কমপিউটারগুলোকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করা, যাতে এরা গবেষণার তথ্য ও ফল দেয়া-নেয়া করতে পারে। কিন্তু এক নেটওয়ার্কের কমপিউটার অন্য নেটওয়ার্কের কমপিউটারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারত না। ফলে একদিকে তাদের যোগাযোগের পরিধি ছিল সীমিত, অন্যদিকে দূরবর্তী স্থানের কমপিউটারগুলোকে একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা মোটামুটি দুঃসাধ্য কাজ ছিল। এমন সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য এআরপিএনেটের রবার্ট ই কান স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্টন সার্ফকে নিয়োগ করেন। ১৯৭৩ সাল নাগাদ এরা দু’জনে এমন একটি সমাধানে আসেন, যেখানে একটি কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক এবং সার্বজনীন নেটওয়ার্কিং প্রটোকলের কথা বলা হয়। এক নেটওয়ার্কের কমপিউটার ভিন্ন নেটওয়ার্কের আওতাধীন কমপিউটারের সাথে যুক্ত হতে চাইলে সেই কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করবে। অর্থাৎ সব কমপিউটার নেটওয়ার্ক এক হয়ে একটি বড় নেটওয়ার্ক তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। আর এভাবেই নেটওয়ার্কগুলোর নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা চালু হয়। ১৯৭৪ সালে ভিন্টন সার্ফ ও তার সহযোগীরা অফিসিয়ালি প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটওয়ার্কিংয়ের সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে ‘ইন্টারনেট’ শব্দটি ব্যবহার করেন। এদিকে নেটওয়ার্কগুলোর মাঝে সুষ্ঠু সমন্বয় ঘটানোর জন্য ১৯৭৪ সালে ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রটোকল ও ইন্টারনেট প্রটোকলের সমন্বয়ে টিসিপি/আইপি চালু করা হয়, যা আজও সর্বজনগ্রাহ্য প্রটোকল হিসেবে স্বীকৃত।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের বিকাশ
ইন্টারনেট চালু হওয়ার পর দূরপ্রান্তের কমপিউটারের মাঝে সংযোগ স্থাপন করার সমস্যা তো দূর হলো, কিন্তু তা কতটুকু কাজের ছিল? আইবিএমের পিসি, অ্যাপলের ম্যাকিনটোশ ও সে সময়ের অন্যান্য মাইক্রোকমপিউটার বাজারে আসার পর কমপিউটার ব্যক্তি পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। সাধারণ ব্যবহারকারীর হাতের নাগালে কমপিউটার থাকলেও কমপিউটার নেটওয়ার্কের দখল ছিল সরকারি দফতর, সামরিক বিভাগ ও গবেষকদের হাতে। এই সমস্যার কথা অনেকে ভাবলেও ইউরোপীয় গবেষণা সংস্থা সার্নের তৎকালীন সফটওয়্যার প্রকৌশলী টিম বারনার্স লি’র মাথায় হয়তো বেশি করে কাজ করেছিল। পৃথিবীব্যাপী লাখ লাখ কমপিউটার ব্যবহারকারীকে এক সুতায় বেঁধে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করতে চেয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে তিনি তার পরিকল্পনা লিখিত আকারে জমা দিয়েছিলেন সার্নে। যেখানে কিছু প্রযুক্তির কথা উল্লেখ ছিল, যা ইন্টারনেটকে সব ব্যবহারকারীর কাছে ব্যবহারযোগ্য করে তুলবে। কিন্তু সার্নে তার প্রকল্প প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা না পেলেও সহযোগী রবার্ট ক্যালিও’র সহযোগিতায় পরের বছরের অক্টোবরে তিনি সেই প্রকল্পে কাজ শুরু করেন। এবার তিনি তিনটি মৌলিক প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করেন। প্রথমটি ছিল হাইপার টেক্সট মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজ বা এইচটিএমএল, যা ওয়েব পেজকে উপস্থাপন করবে। দ্বিতীয়টি ছিল ইউনিফর্ম রিসোর্স আইডেন্টিফায়ার বা ইউআরআই, যা অনেকটা ঠিকানার মতো যে ঠিকানার মাধ্যমে ওয়েবসাইটটি খুঁজে পাওয়া যাবে। শেষটি ছিল হাইপার টেক্সট ট্রান্সফার প্রটোকল বা এইচটিটিপি, যা ইউআরআইর মাধ্যমে ওয়েবসাইটটি প্রদর্শন করতে সাহায্য করবে। এটা নিশ্চয় আপনাদের বলে দিতে হবে না যে আজও তার সেই প্রযুক্তিতেই ইন্টারনেট চালিত হচ্ছে। টিম ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব নামে বিশ্বের প্রথম ওয়েব ব্রাউজার তৈরি করেন, যা দিয়ে একই সাথে ওয়েব পেজ সম্পাদনার কাজও করা যেত। তিনি এইচটিটিপিডি নামে একটি ওয়েব সার্ভারও তৈরি করেন। ১৯৯৩ সালের এপ্রিলে সার্নের পক্ষ থেকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবকে রয়্যালটি ফ্রি ঘোষণার পর যে বিপস্নব ঘটে গেছে, তা আপনাদের চোখের সামনেই। ইন্টারনেটকে জনসাধারণের কাজে লাগানোর প্রবাদ পুরুষ এই ব্রিটিশ কমপিউটার বিজ্ঞানী বর্তমানে ডব্লিউ থ্রি কনসোর্টিয়ামের ডিরেক্টরসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের মান অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং নিয়মিত উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য ১৯৯৪ সালে ডব্লিউ থ্রি কনসোর্টিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়।
ডোমেইন নেম সিস্টেম যেভাবে শুরু হলো
আমরা আগেই জেনেছি ষাটের দশকে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সরকারি সংস্থা তাদের নিজস্ব কমপিউটারগুলোর মাঝে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি নেটওয়ার্ক বা এআরপিএনেট। অল্প পরিসরের সেই কমপিউটার নেটওয়ার্কের প্রতিটি কমপিউটার আলাদাভাবে শনাক্ত করা এমন কোনো কঠিন কাজ ছিল না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যখন নেটওয়ার্ক বড় হতে শুরু করল, বেশি কমপিউটার নেটওয়ার্কের অন্তর্গত করা হলে প্রতিটি কমপিউটারকে আলাদা এবং অনন্য নাম্বার দিয়ে শনাক্ত করার ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল। ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স ইনফরমেশন সিস্টেম এজেন্সি নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত প্রতিটি কমপিউটারকে শনাক্তকারী নাম্বার দেয়ার জন্য ইন্টারনেট অ্যাসাইনড নাম্বার অথরিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এরই সূত্র ধরে ১৯৭৩ সালে শনাক্তকারী নাম্বার হিসেবে ইন্টারনেট প্রটোকল বা আইপি অ্যাড্রেস সর্বজন গ্রাহ্য মান হিসেবে গৃহীত হয়। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে কমপিউটারের সংখ্যা বাড়ে, নেটওয়ার্ক আরও বিসত্মৃত হলো, সব মিলিয়ে কমপিউটার প্রযুক্তির তখন রমরমা অবস্থা। জটিল ও মনে রাখা কঠিন এমন আইপি অ্যাড্রেস নিয়ে মানুষ অভিযোগ করতে শুরু করেছিল। এদিকে গবেষকেরাও থেমে ছিলেন না। অবশেষে জন পোস্টেলের অনুরোধে ১৯৮৩ সালে পল মোকাপেট্রিস ডোমেইন নেম সিস্টেম এবং ১৯৮৪ সালে উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ও প্রযুক্তিবিদ নেম সার্ভার আবিষ্কার করেন। নেম সার্ভার হলো ডোমেইন নেমকে আইপি অ্যাড্রেসের সাথে যুক্ত করার পদ্ধতি। এর প্রায় বছরখানেক পর ১৯৮৫ সালের ১৫ মার্চে বিশ্বের সর্বপ্রথম ডট কম ডোমেইন নেম হিসেবে symbolics.com নিবন্ধিত হয়। সে সময় ডোমেইন নেম নিবন্ধন করতে পকেটের স্বাস্থ্যের কোনো পরিবর্তন হতো না। কিন্তু প্রচুর চাহিদা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহের জন্য ১৯৯৫ সালে প্রতি দুই বছরের জন্য নিবন্ধন মূল্য হিসেবে একশ’ আমেরিকান ডলার নির্ধারিত হয়েছিল। ছোট পরিসরের সেই কমপিউটার নেটওয়ার্ক বর্তমানে ইন্টারনেটে পরিণত হয়েছে। এর সাথে হাত ধরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে ডোমেইন নেম। এই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় অনেক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ডোমেইন নেম নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য। বর্তমানে এই কাজটি করে চলেছে ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নাম্বারস বা আইসিএএনএন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ইন্টারনেট, ওয়েব এবং ডোমেইনের ব্যবহার কী হারে বেড়েছে তা আমাদের অজানা নেই। এ বছরের জানুয়ারিতে ডট কম ডোমেইন দশ কোটির মাইলফলক ছুঁয়েছে।
কমপিউটার ভাইরাস শুরুর কথা
১৯৪৯ সালে প্রথমবারের মতো প্রফেসর জন ভন নিউম্যান কমপিউটার ভাইরাসের ধারণা প্রকাশ করেন। তিনি দেখিয়েছিলেন কিভাবে একটি প্রোগ্রাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়ে ও ছড়িয়ে পড়ার কাজ করে। নিউম্যান প্রথমবারের মতো এমন একটি কমপিউটার প্রোগ্রামের নকশা করেছিলেন, যা নিজ থেকে তৈরি হতে পারে। আর সে কারণেই তাকে কমপিউটার ভাইরাসের জনক বলা হয়। পরে নিউম্যানের তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে ১৯৭২ সালে ভেইথ রিসাক তার গবেষণার ফল প্রকাশ করেন। সিমেন্স ৪০০৪/৩৫ কমপিউটারের জন্য অ্যাসেম্বলার ল্যাঙ্গুয়েজে একটি পূর্ণাঙ্গ কমপিউটার ভাইরাসের কথা সেখানে লেখা ছিল। ১৯৮০ সালে জারগেন ক্রস তার গবেষণাপত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি ও ছড়িয়ে পড়া কমপিউটার ভাইরাসের কথা উল্লেখ করেছিলেন, যা মানুষের শরীরের ভাইরাসের মতো আচরণ করে। যা হোক, এসবই ছিল তত্ত্ব ও গবেষণার ফল। যেখানে কোথাও ‘ভাইরাস’ শব্দটির উল্লেখ ছিল না। উপরোলিস্নখিত সবাই এ ধরনের কমপিউটার প্রোগ্রামকে ‘অটোম্যাটা’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং কেউ এর ধ্বংসাত্মক দিকে প্রাধান্য দেননি। স্বয়ংক্রিয় এমন কমপিউটার প্রোগ্রামকে প্রথমবারের মতো ভাইরাস নামে অভিহিত করা হয় ১৯৬৯ সালে গ্যালাক্সি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ডেভিড গ্যারল্ডের ছোট গল্পে। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত তার উপন্যাস হোয়েন হারলি ওয়াজ ওয়ানেও তিনি এমন প্রোগ্রামকে ভাইরাস বলে উল্লেখ করেন। প্রথম কর্মক্ষম ভাইরাস তৈরি করা হয় ১৯৭১ সালে। বিবিএন টেকনোলজিসের বব থমাস পরীক্ষামূলকভাবে ‘ক্রিপার’ নামে একটি ভাইরাস তৈরি করেন, যা শুধু টেনেক্স অপারেটিং সিস্টেমচালিত ডিইসি পিডিপি-১০ কমপিউটারকে আক্রান্ত করে। ভাইরাসটি এআরপিএনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন টার্মিনালে ছড়িয়ে পড়ে একটি বার্তা প্রদর্শন করত- আই অ্যাম দ্য ক্রিপার, ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান! ক্রিপার ভাইরাসকে মুছে ফেলতে ‘রিপার’ নামে একটি প্রোগ্রাম তৈরি করা হয়েছিল। তবে ক্রিপার তৈরি করা হয়েছিল গবেষণাগারে, উদ্দেশ্য ছিল পরীক্ষা করে দেখা। তবে এমন পেশাজীবী গবেষকের দিয়ে বা গবেষণাগারের বাইরে তৈরি প্রথম কমপিউটার ভাইরাস ‘এলক ক্লোনার’। হাই স্কুলে পড়ার সময় রিচার্ড স্ক্রেনটা শুধু মজা করার জন্য ১৯৮১ সালে এলক ক্লোনার তৈরি করেন, যা ফ্লপি ডিস্কের মাধ্যমে ছড়িয়ে অ্যাপল ডস ৩.৩ অপারেটিং সিস্টেমকে আক্রান্ত করত। ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক ফ্রেড কোহেন তার গবেষণাপত্রে ১৯৮৪ সালে এমন ধ্বংসাত্মক কমপিউটার প্রোগ্রামকে ভাইরাস বলে উল্লেখ করেন।
ল্যাপটপ কমপিউটারের প্রচলন
১৯৮৩ সালে বাজারে আসা গ্যাভিলান এসসি ছিল প্রথম পার্সোনাল কমপিউটার, যাকে ‘ল্যাপটপ’ নামে অভিহিত করা হয়। তবে ল্যাপটপ কমপিউটারের প্রচলন শুরু হয়েছে আরও আগে। এখানে অবশ্য আরেকটি কথা বলে রাখা ভালো, বর্তমান ল্যাপটপ বা নোটবুক কমপিউটারের উত্তরসূরি প্রথম কমপিউটারটির নাম নেয়া মুশকিল। কারণ, সে সময় কমপিউটারের আকার ছোট করার তাগিদ থেকেই সহজে বহনযোগ্য পোর্টেবল কমপিউটারের প্রচলন শুরু হয়। ল্যাপটপ নামে ভিন্নধর্মী কোনো কমপিউটার তৈরির চেষ্টা সে সময় ছিল না। তবে বিভিন্ন উৎস থেকে অসবর্ণ ১-এর কথা বেশি শোনা যায়। ১৯৮১ সালে তৈরি এই পোর্টেবল কমপিউটারটির ওজন ছিল ১০.৭ কেজি। ৫ ইঞ্চি সিআরটি পর্দা থাকলেও কমপিউটারটিতে কোনো ব্যাটারি ছিল না। আরও আগে ১৯৬৮ সালে জেরক্স পার্কের অ্যালান কে ডাইনাবুক নামে একটি পোর্টেবল কমপিউটারের ধারণা প্রকাশ করেন। আইবিএম ৫১০০ ছিল প্রথম বাণিজ্যিক পোর্টেবল কমপিউটার, যা প্রকাশ করা হয় ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বরে। ২৪ কেজি ওজনের এই কমপিউটারে ছিল ৫ ইঞ্চি সিআরটি স্ক্রিন। বর্তমানের ল্যাপটপের আকারের প্রথম কমপিউটারটির ঘোষণা আসে ১৯৮১ সালে। এপসন এইচএক্স-২০ মডেলের এই কমপিউটারটিতে এলসিডি স্ক্রিন, রিচার্জেবল ব্যাটারি এবং ক্যালকুলেটরের আকারের একটি প্রিন্টার ছিল। বর্তমানের নোটবুকের মতো ফ্লিপ মনিটরযুক্ত প্রথম কমপিউটার ছিল গ্যাভিলান এসসি। ৪ কেজি ওজনের এই কমপিউটারটি এমএস-ডস অপারেটিং সিস্টেমে চলত। প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল ৫ মেগাহার্টজ গতিসম্পন্ন ইন্টেল ৮০৮৮। এরপর বিভিন্ন উদ্ভাবন ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে ল্যাপটপ বর্তমানের চেহারা পেয়েছে।
কজ
ফিডব্যাক : contact@mhasan.me