লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
হিটলার এ. হালিম
মোট লেখা:১৪
লেখা সম্পর্কিত
লেখার ধরণ:
স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ : এ সরকারের আমলে উৎক্ষেপণ হচ্ছে না
নিজস্ব অরবিটাল সস্নট বরাদ্দ পায়নি বাংলাদেশ অর্থ সংস্থানের উৎস অনিশ্চিত জটিলতার মূলে সামিট
উৎক্ষেপণ জটিলতা, অর্থ সংস্থানের উৎস নিশ্চিত না হওয়াসহ অনেক সমস্যায় পড়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইটের স্বপ্ন। এদিকে নিজ দেশের অরবিটাল সস্নট বরাদ্দ না পাওয়ায় সঙ্কটে পড়েছে এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা। নানা সমস্যার মূর্তপ্রতীক হয়ে ওঠায় কার্যত এ সরকারের আমলে মহাকাশে উৎক্ষেপণ হচ্ছে না বাংলাদেশের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। টাকার অভাবে আদৌ এ স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণ সম্ভব হবে কী না, সে বিষয়ে ঘোরতর এক অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
গত বছরের ২৯ মার্চ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রতিষ্ঠান স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনালকে (এসপিআই) এক কোটি ডলারের বিনিময়ে তিন বছরের জন্য পরামর্শক নিযুক্ত করেছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে মহাকাশে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট পাঠানোর কথা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের নিজস্ব অরবিটাল সস্নট (নিরক্ষরেখা) না পাওয়া এবং স্পুটনিকের কাছ থেকে সস্নট কেনা প্রক্রিয়াধীন থাকায় এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দিন দিন বাড়ছে।
পরামর্শক ফি (এক কোটি ডলার), স্পট কেনা (প্রায় সাড়ে তিন কোটি ডলার) এবং স্যাটেলাইট তৈরি, উৎক্ষেপণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজন চার থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বিশাল অঙ্কের অর্থ জোগাড়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। এ বিপুল অর্থের সংস্থান কোথা থেকে হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো উৎস এখনও চিহ্নিত না হওয়ায় এ সরকার চলতি মেয়াদে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মতো উচ্চাভিলাষী প্রকল্প থেকে পিছিয়ে এসেছে।
শুরুতে চীনের কাছ থেকে স্যাটেলাইট বানিয়ে নেয়ার কথা ভাবা হলেও দেশটির অনাগ্রহের কারণে বাংলাদেশ সরকার পিছিয়ে যায়। চীন জানিয়ে দেয়, এরা বাকিতে স্যাটেলাইট তৈরি করবে না। পরে সরকার যুক্তরাষ্ট্রের পথে অগ্রসর হয়। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অরবিটাল সায়েন্সকে স্যাটেলাইট বানানোর দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটির এশিয়া অঞ্চলের অফিস হংকংয়ে অবস্থিত। এ অফিসের অধীনে রয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের মতো দেশ। হংকং অফিসও এ নিবন্ধকারকে নিশ্চিত করেছে যে স্যাটেলাইট বানানোর কাজটি অরবিটাল সায়েন্সই পেতে যাচ্ছে।
জানা গেছে, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগেই অনিয়ম করা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসপিআই নামে যে প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে, সে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০০৯ সালে। অথচ বিটিআরসি পরামর্শক সংস্থা নিয়োগে যে ইওআই প্রকাশ করেছিল, সেখানে অন্যতম শর্ত ছিল আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অথচ মাত্র দুই বছরের অভিজ্ঞ একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে বিটিআরসির দাবি, এসপিআই যুক্তরাষ্ট্রের আরকেএফ কোম্পানির সাথে যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে- যাদের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা গেছে, কোম্পানিটির নিবন্ধনের বয়স ৯ বছর। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এসপিআই এককভাবে কাজ পেয়েছে। অন্যদিকে আরকেএফের প্রধান নির্বাহী ফিল রুবিন জানান, যৌথ উদ্যোগে এ কাজ এরা পাননি। সাব কন্ট্রাক্টের কাজ পেয়েছেন।
এসপিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ব্রুক জানান, আরকেএফ তাদের কৌশলগত অংশীদার। এসপিআইয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে পাওয়া গেছে বাংলাদেশী এক কর্মকর্তার নাম। শফিক এ চৌধুরী নামে ওই কর্মকর্তা এসপিআইয়ের ব্যবসায় উন্নয়ন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিনি বাংলাদেশের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর ভায়রা। ওই মন্ত্রীর ভাইয়ের মাধ্যমে কাজটি পাওয়ার বিষয়ে তার হাত আছে বলে সূত্র দাবি করে। সূত্র আরও জানায়, এসপিআইয়ের বাংলাদেশের অংশীদার সামিট কমিউনিকেশন্স। যদিও সামিট কমিউনিকেশন্স সূত্রে জানা গেছে, এসপিআই বাংলাদেশের অফিস ঠিকানা হিসেবে সামিট কমিউনিকেশন্সের নাম ব্যবহার করছে। অন্যকিছু নয়। সামিট এসপিআইয়ের পার্টনার নয়। মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য এবং পারিবারিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকায় অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে এসপিআই-কে কাজ দেয়া হয়। এসব নিয়ে সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত রিভিউ প্যানেলে অভিযোগ জানায় যুক্তরাষ্ট্রেরই আরেক প্রতিষ্ঠান গ্লোব কম।
এদিকে বাংলাদেশী একটি সূত্র এ প্রতিবেদককে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার সাবেক বাংলাদেশী বিজ্ঞানী (বর্তমানে ডালাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত) প্রফেসর হারুন খান সূত্রকে জানান, কিছু দিন আগে ওই মন্ত্রীর ভাই আমাকে ফোনে বলেন আমরা বাংলাদেশের স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণ বিষয়ক পরামর্শকের কাজ পেয়েছি। আপনি এসে আমাদের কিছু পরামর্শ দিয়ে যান। উপকৃত হব। প্রতিষ্ঠানের নাম হিসেবে তখন তিনি এসপিআইয়ের নাম বলেছিলেন বলে প্রফেসর হারুন খান জানান। কোনো কিছু না জেনে পরে তিনি আর মন্ত্রীর ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করেননি।
ইন্টারস্পুটনিকের সাথে দুই মাসের শর্তহীন চুক্তি
এর আগে অর্থের সংস্থান না হওয়ায় রাশিয়ার মহাকাশ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান ইন্টারস্পুটনিকের সাথে দুই মাসের একটি স্বল্প মেয়াদের শর্তহীন চুক্তি করা হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবুবকর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কোনো ধরনের শর্ত না থাকায় এ দুই মাসের জন্য ইন্টারস্পুটনিককে কোনো টাকা দিতে হবে না। এ সময়ের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন তথা আইটিইউ বাংলাদেশকে অরবিটাল সস্নট (নিরক্ষরেখায়) বরাদ্দ না দিলে ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে সস্নট কেনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ইন্টারস্পুটনিকের ৮৪ ও ১১৯ ডিগ্রিতে দুটো সস্নট কেনা রয়েছে। মূলত ইন্টারস্পুটনিকের কাছে থাকা সস্নট হাতছাড়া করতে চাইছে না সরকার। দুই মাসের চুক্তিবদ্ধ সময়ের মধ্যে সস্নট পাওয়ার পাশাপাশি অর্থের সংস্থান নিয়েও আশাবাদী সরকার।
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ এ প্রসঙ্গে জানান, এ চুক্তির ফলে আমরা দুই মাস সময় পাব। বিটিআরসি থেকে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। স্যাটেলাইট প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনালও (এসপিআই) কাজ করছে।
আবুবকর সিদ্দিক জানান, আমরা বিষয়টি বিবেচনার জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) পাঠিয়েছিলাম। আমাদের সহজশর্তে ঋণের খোঁজ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সহজশর্তে ঋণ (কম সুদে) পেলে আমরা বিষয়টি চূড়ান্ত করব।
অরবিটাল সস্নট বরাদ্দ পেয়েছে বাংলাদেশ
অবশেষে মহাকাশে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য অরবিটাল সস্নট (নিরক্ষরেখা) বরাদ্দ পেয়েছে। অরবিটাল সস্নট বরাদ্দকারী প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন তথা আইটিইউ বাংলাদেশকে নিরক্ষরেখার ১০২ ডিগ্রির পরিবর্তে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রিতে (পূর্ব) সস্নট বরাদ্দ দিয়েছে। এ সস্নটে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ পাঠানো হবে। ২০১৫ সালের মধ্যে মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে মনে করছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ নিজস্ব অরবিটাল সস্নটে (৮৮-৯১ ডিগ্রি) স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য সস্নট বরাদ্দ পায়নি। এর আগে বাংলাদেশ অরবিটাল সস্নটের ৬৯ এবং ১০২ ডিগ্রি বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আইটিইউ’র কাছে আবেদন করেছিল, কিন্তু প্রভাবশালী দেশগুলোর আপত্তির মুখে ওই সস্নট দুটিও পায়নি বাংলাদেশ।
ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখা গেছে, ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি নিরক্ষরেখা জায়গাটি সিঙ্গাপুর থেকে ১ হাজার ২০০ মাইল পূর্বে, ফিলিপাইনের কাছাকাছি। পূর্বে জাপানের কাছাকাছি অবস্থান। সেখানে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট বসানো হলে তা বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে না বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের জ্যোতির্বিজ্ঞানী এফ আর সরকার। তিনি জানান, বাংলাদেশ মহাকাশ কূটনীতিতে ব্যর্থ হয়েছে। তা না হলে এত দূরে বাংলাদেশকে সস্নট বরাদ্দ দেয়া হতো না। তিনি মনে করেন ওই স্থানে সস্নট নিতে বাংলাদেশের রাজি হওয়া উচিত হবে না।
সর্বশেষ রাশিয়ার স্পুটনিকের কাছ থেকে ৮৪ ও ১১৯ ডিগ্রিতে সস্নট কেনার জন্য বাংলাদেশ শর্তহীন বুকিংও দিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বরাদ্দ পাওয়া সস্নটটি বাংলাদেশ স্পুটনিকের কাছ থেকেই সস্নট কিনতে যাচ্ছে।
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ জানান, এর আগে আমরা স্পুটনিকের সাথে শর্তহীন চুক্তি করেছিলাম। আমরা আইটিইউ’র কাছ থেকে বরাদ্দ পেয়ে গেছি। এখন সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষা। জানা গেছে, সস্নটের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দের (মাস্টার ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিকোয়েন্সি রেজিস্টার তথা এমআইএফআর) জন্য আবেদন করবে বাংলাদেশ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল তথা এসপিআই এ প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ নিজস্ব অরবিটাল সস্নটে (৮৮-৯১ ডিগ্রি) স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য সস্নট বরাদ্দ পায়নি
স্যাটেলাইট প্রকল্পে চীনের অর্থ নেবে না সরকার
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ প্রকল্পে চীনের কোনো অর্থ সহায়তা নেয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে অধিকতর দক্ষ দেশের সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে তোড়জোড় শুরু হলেও বর্তমান সরকারের আমলে প্রকল্পটি শুরু করা নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অর্থায়ন নিয়েও শুরু হয়েছে অনিশ্চয়তা।
গত অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে স্যাটেলাইট প্রকল্পটির জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) দাতাদের কাছে অর্থায়নের প্রস্তাব পাঠায়। সেই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে চীন ৭০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিতে রাজি হয়। এ বিষয়ে চীনের সাথে কয়েক দফা বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ এ প্রকল্পে চীনের অর্থ নেয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
ইআরডি সূত্র জানায়, স্যাটেলাইট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন তথা বিটিআরসি বিদেশী অর্থায়ন চেয়ে ইআরডির কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠায়। পরে ইআরডি প্রকল্পটিতে অর্থায়নের জন্য চীনের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। চীনের সবুজ সঙ্কেতের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ইআরডি। কিন্তু এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির জন্য চীনা সরকারের কাছে প্রস্তাব না পাঠানোর পরামর্শ দেয় ইআরডিকে।
এ বিষয়ে ইআরডির যুগ্ম সচিব (এশিয়া) আসিফ-উজ-জামান জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে চীনের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পের অর্থায়নের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রকল্পটির জন্য অন্য দাতাদের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর প্রস্ত্ততি নেয়া হচ্ছে। জানা যায়, এ ক্ষেত্রে ইউরোপের কোনো দেশ বা দাতা সংস্থার অর্থায়নকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে চীনকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো সংস্থাকে প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে অধিক দক্ষ কোনো দেশের সহায়তা নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেছে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ফ্রান্স ও রাশিয়া এ বিষয়ে অধিকতর দক্ষ। তবে এ ক্ষেত্রে রাশিয়া এগিয়ে আছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়। এর আগে বিটিআরসি রাশিয়ার সাথে (স্পুটনিক) শর্তহীন চুক্তি করেছে। বাংলাদেশ নিজস্ব অরবিটাল সস্নট বরাদ্দ না পেলে স্পুটনিকের কাছ থেকে উচ্চমূল্যে সস্নট কিনবে বাংলাদেশ। সস্নট যাতে হাতছাড়া না হয় সে কারণেই এ চুক্তি। একদিকে সস্নট কেনার প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার এবং স্যাটেলাইট নির্মাণও করবে রাশিয়া। ফলে রাশিয়া থেকেই অর্থায়নের একটা সম্ভাবনা থাকায় সরকার এখন রাশিয়াতেই বেশি আগ্রহী বলে জানা গেছে।
ফিডব্যাক : hitlarhalim@yahoo.com