• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সম্পাদকীয়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সম্পাদকীয়

তথ্যপ্রযুক্তির জন্য আমাদের প্রস্তুতি

তথ্যপ্রযুক্তির সুফল নিয়ে আজ বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই৷ তথ্যপ্রযুক্তি যে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনে এগিয়ে চলার সর্বোত্তম বাহন, সে উপলব্ধি আজ একজন সাধারণ মানুষের মধ্যেও আছে৷ বাস্তবতার আলোকে সাধারণ মানুষের মধ্যে সে বোধ জেগেছে৷ ফলে তথ্যপ্রযুক্তি আজ যেনো সবার চাহিদা তালিকায় অগ্রাধিকার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে৷ সবারই প্রত্যাশা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সহজ সুযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি সেবার রাজ্যে অবাধ প্রবেশাধিকার৷

কিন্তু শুধু চাইলেই তো আর হবে না, তা পাওয়ার জন্য নিজেদের সেভাবে তৈরি করতে হয়৷ সেজন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করতে হয়৷ আর যোগ্যতা অর্জনের অপর অর্থ হচ্ছে নিজেদের শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করে তোলা৷ নিজেদের যথাযোগ্য করে তোলা৷ যোগ্যতর করে তোলা৷ দক্ষ করে তোলা৷ শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণের সুযোগ্যর সৃষ্টি ছাড়া তা সম্ভব নয়, এটি সহজবোধ্য এক ব্যাপার৷ কিন্তু জাতীয় জীবনে আমাদের মধ্যে সে সহজবোধটুকুর উপলব্ধি আমাদের অভিধানের বাইরে৷ নইলে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ব্যাপারে আরো বেশি করে সচেতন হতে পারতাম৷ নিজেদের জন্য তৈরি করতে পারতাম একটি শিক্ষিত-প্রশিক্ষিত প্রযুক্তিপ্রজন্ম৷ সেই সূত্রে নিজেরা পারতাম প্রযুক্তির ফসল তৃপ্তির সাথে নিজেদের ঘরে তুলতে৷ কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা এখনো অনেকটা দর্শকের ভূমিকায়৷ কারণ, নাজুক আমাদের তথ্যপ্রযুক্তির জন্য প্রস্তুতি৷

এই তো এ বছর ওয়ার্ল্ডইকোনমিকফোরাম ২০০৭-০৮ সারে জন্য যে গ্লোবাল ইনফরমেশন টেকনোলজি রিপোর্ট প্রকাশ করালে তাতে আমাদের নেটওয়ার্ক রেডিনেসকে একদম নাজুক অবস্থায় দেখানো হয়েছে৷

দুঃখের সাথে উল্লেখ করতে হয়, নেটওয়ার্ক রেডিনেস ইনডেক্স বা নেটওয়ার্কসংক্রান্ত প্রস্তুতি সূচকে ১২৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৩তম৷ আমাদের নিচে অবস্থান নিয়েছে মাত্র ৩টি দেশ৷ দেশ তিনটি যথাক্রমে জিম্বাবুয়ে, বুরুন্ডি ও চাঁদ৷ এর আগে ২০০৬-০৭ সালের এ রিপোর্টে ১২২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৮তম৷ সে বিবেচনায় আমাদের নেটওয়ার্ক প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অবস্থানের অবনমন ঘটেছে এবারের রিপোর্টে৷ আমাদের মতো এবার ভারতের অবস্থানও আগের ৪৪তম স্থান থেকে নেমে ৫০তম স্থানে এসেছে৷ পাকিস্তানের অবস্থান ৮৪তম থেকে নেমে এসেছে ৮৮তম স্থানে৷ শ্রীলঙ্কা অবশ্য এর অবস্থান ৮৩তম থেকে ৭৮তম স্থানে তুলে এনেছে৷

নেটওয়ার্ক রেডিনেস র্যা ঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে ডেনমার্ক৷ গত বছরও দেশটি এক নম্বরেই ছিল৷ একইভাবে পর পর দুই বছর সুইডেন দখল করে নিয়েছে দ্বিতীয় স্থানটি৷ এবার তৃতীয় স্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড৷ আগের বছর ছিল পঞ্চম স্থানে৷ সেরা দশে স্থান পাওয়া দেশগুলো যথাক্রমে : ডেনমার্ক, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, আইসল্যান্ড, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র এবং নরওয়ে৷ ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড ইত্যাদি নরডিক দেশের এই শীর্ষ দশে অবস্থান নেয়া থেকে এটুকু স্পষ্ট, নরডিক দেশগুলো ই-রেডিনেসে জোরালো অগ্রগতি অর্জন করে চলেছে৷ তবে সেরা বিশে বেশ কিছু এশীয় দেশও স্থান করে নিতে পেরেছে দেশগুলো হলো : সিঙ্গাপুর ৫ম, হংকং ১১তম, অস্ট্রিয়া ১৫তম, তাইওয়ান ১৭তম এবং জাপান ১৯তম৷ কিন্তু এশিয়ার বৃহত্তম বিকাশমান অর্থনীতির দেশ ভারতের অবস্থান ৫০তম স্থানে থাকাটা অনেকটা বেমানানই মনে হয়৷ আর আমাদের অবস্থান তো একদম তলানিতে৷

আসলে নেটওয়ার্ক রেডিনেস একটা জাতির তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ক্ষেত্রে সার্বিক প্রস্তুতিরই সমার্থক৷ এক্ষেত্রে আমাদের নাজুক অবস্থা কার্যত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমাদের সার্বিক দুর্বলতারই পরিচায়ক৷ এ দুর্বলতা কাটানোর জন্য তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ওপর সর্বাধিক জোরালো মনোযোগ দিতে হবে৷ এ খাতে অর্থ ব্যয়ের জাতীয় মানসিকতা তৈরি করতে হবে, সেই সাথে যথাযোগ্য জনকে যথাযোগ্য স্থানে দায়িত্বে নিয়োজিত করে তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষার মান যেমনি বাড়াতে হবে, তেমনি এর ব্যাপকতাও বাড়াতে হবে৷ শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণে থাকতে হবে যুগোপযোগী ও হালনাগাদ পাঠসূচী৷ তবেই আমরা জাতীয়ভাবে তথ্যপ্রযুক্তির ফসল ঘরে তোলার জন্য নিজেদের যথাযোগ্য করে গড়ে তুলতে পারবো৷
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - আগস্ট সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস