• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > প্রযুক্তির নবজাগরণ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আবীর হাসান
মোট লেখা:১৫০
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রযুক্তি বিপ্লব
তথ্যসূত্র:
ফিচার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
প্রযুক্তির নবজাগরণ
নতুন প্রযুক্তিকে অল্প সময়ে আরও নতুনত্ব দেয়া ডিজিটাল প্রযুক্তির জগতে বিস্ময় সৃষ্টি করে চলেছে। আর মানুষের অভ্যাসকেও দ্রম্নত বদলে দিচ্ছে এসব নতুন করে পাওয়া প্রযুক্তি। তারপরও কিছু কিছু আফসোস থেকেই যায় ব্যবহারকারীদের। মনে হয় এর চেয়ে ভালো কিছু যদি পাওয়া যেত? ইন্টারনেটের গতি কিংবা হার্ডডিস্কের ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে আফসোস তো আছেই। পেনড্রাইভ নিয়ে খুঁতখুঁতানি আছে এখনও। এছাড়া মোবাইল ফোনের ক্যামেরার রেজ্যুলেশন, বিদ্যুৎহীন অবস্থায় চার্জ দেয়ার সমস্যা নিয়ে অনুযোগ তো আছেই। আরও কত কিছু যে চাই এখনও! রোদের মধ্যে মোবাইল ফোনের স্ক্রিন ঠিকমতো দেখতে চায় সবাই। গাড়ি চালকেরা চায় ড্রাইভ করতে করতে সহজে ব্যবহারোপযোগী মোবাইল ফোনের প্রযুক্তি। মোবাইল ফোন স্মার্ট হলো- আর তা হতে না হতেই ওই ক্ষুদ্র যন্ত্রটির মধ্যে অধিকতর অ্যাপ বা আরও সুবিধা চাইছে সবাই। অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের হিসেবটা দেখলেই বোঝা যাবে ক্রেজটা কেমন। ২০০৮ সালের জুলাই মাসে অ্যাপল তাদের আইফোনের জন্য চালু করে অ্যাপ স্টোর। ২০০৯ সালের প্রথম পর্বে অ্যাপল ঘোষণা করে বছরে ১০ কোটি অ্যাপ ডাউনলোডের লক্ষ্যমাত্রার কথা। কিন্তু ১৬ দিনের মাথায় তারা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৫০ কোটি। তবে এপ্রিলের শেষ নাগাদ অ্যাপল জানিয়েছিল অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোডের সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। আর পাঁচ বছরের মাথায় অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোডের সংখ্যা পাঁচ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গেছে। যদিও আমাদের দেশে আইফোনের আইওএস ব্যবহার কম। তবে অ্যান্ড্রয়িড ব্যবহারকারীরা গুগল ড্রাইভ এবং গুগলের প্লেস্টোর কিংবা মাইক্রোসফটের স্কাই ড্রাইভ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী গুগলের ফেসবুক হোম অ্যাপ একদিনে ১০ লাখবার ডাউনলোডের রেকর্ড করেছে চার মাস আগেই। অতিসম্প্রতি আইফোনের জন্য মাইক্রোসফট অফিস ব্যবহারের জন্য একটি প্রযুক্তি বাজারে ছেড়েছে মাইক্রোসফট।

অ্যাপল স্টোর বা গুগল প্লেস্টোরের ডেভেলপাররা যেমন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, তেমনি অন্যান্য ক্ষেত্রের গবেষকেরাও মহাব্যস্ত। মোবাইল ফোনের ক্যামেরা এবং ডিজিটাল ক্যামেরার উন্নতির প্রতিযোগিতা বেশ তুমুলই হয়ে উঠল। এতদিন মোবাইল ফোনে শক্তিশালী ক্যামেরার জন্য বিখ্যাত ছিল অ্যাপলের আইফোনই। আইফোন ফাইভে ছিল ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। গত মাসে নোকিয়ার ঘোষণার কথা অনেকেই জেনে গেছেন ইতোমধ্যে। নোকিয়া তাদের লুমিয়া ১০২০ স্মার্টফোনে যোগ করেছে ৪১ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই বাজারে আসবে এ মহাশক্তির ক্যামেরাওয়ালা স্মার্টফোন। এতে আরও থাকছে কার্ল জেইস অপটিকস। অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার এবং প্রফেশনাল জুম।

ডিজিটাল ক্যামেরা প্রযুক্তি উন্নত করার প্রতিযোগিতায় এবার নাম লেখালেন চীনের গবেষকেরা। তারা ১০০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা উদ্ভাবন করেছেন। চীনের সায়েন্স একাডেমির অপটিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা মূলত ইন্টেলিজেন্ট ভেহিকল, ডিজিটাল ম্যাপ প্রণয়ন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তার জন্য গবেষণা কাজটি চালান। আইওএ থ্রি-কানবান নামের এ প্রযুক্তি ১০২৪ বাই ১০২৪০ মেগাপিক্সেল লেজ্যুলেশনের ছবি তুলতে সক্ষম। খুবই পাতলা এবং স্বল্প ওজনের এ ক্যামেরাটির অচিরেই স্মার্টফোনের সাথে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে গিগাপিক্সেল (বা এক হাজার মেগাপিক্সেলের) ক্যামেরা তৈরির সম্ভাবনার কথা গত বছরই জানিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তার আগেই চীনের নতুন প্রযুক্তির তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এশিয়ায় টেক-জায়ান্ট চীন এখন অনেক কিছুতেই বিশ্বে প্রথম। সবচেয়ে দ্রম্নতগতির সুপার কমপিউটার নির্মাতা এখন চীনই। তিয়ানহে-টু নামের এ সুপার কমপিউটারটি তৈরি করেছে মধ্য চীনে অবস্থিত ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ডিফেন্স টেকনোলজি। এটি প্রতিসেকেন্ডে ৩৩ দশমিক ৮৬ পেটাফ্লপস হিসাব করতে পারে। এর আগের দ্রম্নততম সুপার কমপিউটারের মালিক ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেটির নাম টাইটান (১৭ দশমিক ৫৯ পেটাফ্লপস প্রতি সেকেন্ড)।

মোবাইল ফোনের বিদ্যুৎবিহীন চার্জের বিষয়টি নিয়ে বহুদিন থেকেই নানা গবেষণা চলছে। কয়েক মাস আগে পানি দিয়ে চার্জ করার নতুন প্রযুক্তির কথা জানা গিয়েছিল। এবার দেখা যাচ্ছে হেডফোন থেকে মোবাইল ফোন চার্জ করার একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হতে। বিবিসি অনলাইন সম্প্রতি জানিয়েছে, ব্রিটেনের অ্যান্ড্রু অ্যান্ডারসন নামে এক গবেষক উদ্ভাবন করেছেন এ প্রযুক্তি। নমনীয় সোলার সেল ব্যবহার করে যে হেডফোনটি তিনি তৈরি করেছেন সেটি দিয়ে গান শোনার সাথে সাথে মোবাইল ফোনকে চার্জও করা যাবে। এর নাম দেয়া হয়েছে অনবিট।

ইউরোপীয় মোবাইল প্রযুক্তি কোম্পানি ভোডাফোন সম্প্রতি সিস্নপিং ব্যাগ এবং খাটো প্যান্ট বা সর্টস চার্জার উদ্ভাবন করেছে। মানবদেহের উত্তাপ এবং অঙ্গ পরিসঞ্চালনের শক্তি থেকে তৈরি বিদ্যুৎ চার্জ করে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি। বিদ্যুৎহীন প্রত্যন্ত অঞ্চলে রিচার্জ ব্যাগ খুব কার্যকর। আর পাওয়ার সর্টস কার্যকর ব্যস্ততার সময়। ব্রিটেনের সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় উদ্ভাবিত এ প্রযুক্তিতে রিচার্জ ব্যাগের ক্ষেত্রে ৮ ঘণ্টায় যে চার্জ পাওয়া যায় তাতে ১১ ঘণ্টা স্ট্যান্ডবাই টাইমে ২৪ মিনিটের টক টাইম ব্যবহার করা যায়। পাওয়ার সর্টস থেকেও পাওয়া যায় প্রায় একই ধরনের শক্তি।

স্মার্ট মোবাইল ফোনের জন্য আরও একটি সুখবর আছে। এটি স্ক্রিন নিয়ে। ওই যে ব্যবহারকারীদের অভিযোগ- রোদের মধ্যে পরিষ্কার দেখা না যাওয়ার বিষয়টি। সেটিকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে গবেষণায় সাফল্য এসেছে এতদিনে। এই যে মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, পিসি, টিভি এসবের স্ক্রিনের জন্য যে টেম্পারড গ্লাস ব্যবহার করা হয়, তা কিন্তু সাধারণ কাচ বা অন্যান্য টেম্পারড গ্লাসের মতো নয়। এরও রয়েছে বিশেষ প্রযুক্তি। স্মার্টফোনের জন্য প্রথম টাচস্ক্রিনের নির্মাতা করনিং গ্লাস আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে বাজারে ছাড়তে চলেছে তাদের চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি। করনিং- এ স্ক্রিনের নাম গরিলা গ্লাস। এটাই আসলে তৃতীয় প্রজন্ম পার করছে। এ তৃতীয় প্রজন্ম পর্যন্ত গরিলা গ্লাসেও অন্যান্য গ্লাসের মতো আলোর প্রতিফলনের সমস্যা রয়ে গেছে। এখন এই প্রতিফলন কমানোর গবেষণা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সম্প্রতি এমআইটি মোবাইল টেকনোলজি সামিটে করনিংয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা জেফরি ইভান্স একটি গ্লাস প্রদর্শন করেন, যেটি দেখলে মনে হবে এতে একটি ছিদ্র রয়েছে। আসলে ছিদ্রের মতো দেখতে বিশেষ ধরনের কোটিং ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে কাচে আলো প্রতিফলিত হয় না বরং সুপার ট্রান্সফারেন্সি নিশ্চিত করে।

এই চতুর্থ প্রজন্ম গরিলা গ্লাসের আরও বৈশিষ্ট্য আছে। অত্যধিক চাপ সহনীয় করে বানানো হয়েছে এটি। বৈজ্ঞানিক হিসেবে যাকে বলা হচ্ছে টেন গিগা প্যাস্কেল পর্যন্ত চাপ সহনীয় অর্থাৎ এক বিন্দুতে ১০ হাজার হাতির চাপ প্রয়োগের সমান সহনীয়। ক্ষয়রোধের ক্ষমতাও এর অনেক। কাচকে ভঙ্গুর করে তুলতে অক্সিজেনের অবদান সবচেয়ে বেশি। টেম্পারিং মানেই হলো কাচের অণুতে অক্সিজেন অণুর প্রবেশের ক্ষমতা কমানো। আর এ গরিলা গ্লাসে একটি অক্সিজেন অণু প্রবেশ করতে লাগবে ৩০ বিলিয়ন বছর। এছাড়া জীবাণুমুক্তও থাকতে পারবে এ কাচ।

মোবাইল ফোন, টেলিভিশন এবং কমপিউটার স্ক্রিনের জগতে ১৬২ বছরের প্রাচীন করনিং এতদিন প্রবল প্রতিযোগিতার মধ্যে ছিল স্যাফায়ার গ্লাস এবং ড্রাগন টেইলের সাথে। ফোর্থ জেনারেশন গরিলা গ্লাস প্রযুক্তির বদৌলতে তারা চলে যাচ্ছে অন্য এক মাত্রায়। আর অন্য একটি নতুন প্রযুক্তির দিকেও তাদের বাজার বাড়তে চলেছে। সেটা হলো সোলার প্যানেল। এ ক্ষেত্রে প্রচুর চাপ সহনীয় এবং কম প্রতিফলনের কাচের প্রয়োজন হয়। তাই করনিং যে কিছুদিন অন্তত এগিয়ে থাকবে তা অবধারিত। করনিংয়ের পণ্যের চাহিদা এমনিতেই বেশি। ইতোমধ্যেই এক হাজার ধরনের ডিভাইসে ব্যবহার হচ্ছে এদের তৈরি কাচ।

ডিসপ্লে সমস্যা নিরসনে কিংবা আরও উন্নত ডিসপ্লে নিয়ে গবেষণা এখানেই থেমে নেই। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক আছেই। তাই গাড়ির উইন্ডশিল্ডকেই স্মার্টফোনের ডিসপ্লের উপযোগী বানিয়ে ফেলার গবেষণা চলছে। এর নাম দেয়া হয়েছে এইচইউডি বা হেডআপ ডিসপ্লে। বিবিসি অনলাইন সম্প্রতি জানিয়েছে এ তথ্য। তবে প্রযুক্তিটা যুক্তরাষ্ট্রের জারমিন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন হাতে তুলে নেয়ার দরকার হবে না চালকের। উইন্ডশিল্ডেই অ্যাপগুলো দেখা যাবে বেশ বড় আকারে। আর সাথে থাকবে বাড়তি একটি অ্যাপ, যা দিয়ে সড়ক বিষয়ক নানা তথ্যও পেয়ে যাবেন চালক। আইফোন, উইন্ডোজ এবং অ্যান্ড্রয়িড তিন ধরনের প্রযুক্তিরই উপযোগী করে তোলা হয়েছে এই হেড আপ ডিসপ্লেকে। এখন গাড়ি নির্মাতাদেরকে এ প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জারমিন।

গাড়ি চালানোকে নিরাপদ করতে আরও কিছু প্রযুক্তি নিয়ে বিভিন্ন দেশে গবেষণা চলছে। তুরস্কের ডিজিটাল ভিডিও ভি টেকনোলজি নামে একটি কোম্পানি এমন কয়েকটি ডিজিটাল ক্যামেরাভিত্তিক প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যা পেছন বা পাশ থেকে বিপজ্জনক গতিতে আসা অন্য গাড়িকে আগেই শনাক্ত করে গাড়ি চালককে সাবধান করতে পারে। অন্য কোনো গাড়ি চালক লাইন ভাঙলে কিংবা আইন অমান্য করলে তাও বুঝতে পারে এ প্রযুক্তি।

ইসরায়েলের কোম্পানি টেকনিয়ন এ ধরনের একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে, যেটি ব্যস্ত রাস্তার পাশে বা মোড়ে কাজ করে এবং গাড়ি চালকদের সাবধান হতে সঙ্কেত দেয়। মাইক্রোসফটের লিংকন নামের ভিশন সফটওয়্যার যে ছবি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া বছর চারেক আগে শুরু করেছিল সেটির ভিত্তিতের মূলত নতুন নতুন প্রযুক্তিগুলো পাওয়া যাচ্ছে। জার্মানির সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডয়েস ফ্লুগসিখরাং ব্যস্ত এয়ারপোর্টে বিমান এবং পণ্যবাহী যানবাহনগুলোর জন্য ক্যামেরানির্ভর সতর্কীকরণ ব্যবস্থা চালু করেছে।

ডিজিটাল সভ্যতায় এখন অনেক পুরনো সেবা বা পণ্যকেও নতুন রূপে পাওয়া যাচ্ছে। যেমন রেডিও আগে যেমন ছিল এখন আর তেমন নেই। মোবাইল ফোনে এফএম রেডিও সংযুক্তির ফলে অন্যরকম একটা বিনোদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। স্যাটেলাইট টেলিভিশনের কারণে অপ্রচলিত হয়ে পড়া রেডিও অন্যরূপে ফিরে এসেছে। একই ধরনের অবস্থা ঘড়ির ক্ষেত্রেও হয়েছিল। মোবাইল ফোনের ঘড়ির কারণে বিশেষত হাতঘড়ি প্রায় উঠেই যেতে বসেছিল। এখন ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবে হাতঘড়ি ফিরে এসেছে। তবে সাথে অনেক ক্ষেত্রে সময় বিষয়ক অনেক ডিজিটাল সুবিধা সংযোজিত হচ্ছে ক্রমাগত। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিরিলিংকস জরুরি তথ্য পাঠাতে সক্ষম হাতঘড়ি উদ্ভাবন করেছে। এটি আসলে স্যাটেলাইট সিগন্যাল পাঠাতে সক্ষম ঘড়ি। সীমাবদ্ধ কিন্তু জরুরি তথ্য, যেমন বিরূপ আবহাওয়া, স্বাস্থ্য সমস্যা, আর্থিক সঙ্কট, খাদ্য সমস্যা ইত্যাদি তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো যায়। এটা আসলে শুরুর ব্যাপার। ঘড়ির সাথে এসএমএস, এমএমএস অপশন যুক্ত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কাজেই বোঝা যাচ্ছে সময় আসছে স্মার্ট ওয়াচের। স্মার্ট মোবাইল ফোনের ব্যাটারি, ক্যামেরার মতোই প্রতিযোগিতা দেখা যাবে স্মার্ট ওয়াচ নিয়েও। আর সেটি শুরু হবে ২০১৪ সালের মাঝামাঝিই। জুন মাসের শেষ সপ্তাহে মাইক্রোসফট সারফেস নামে হালকা হাতঘড়ি তৈরির গবেষণা সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে। আসলে সারফেস প্রথমে ছিল উইন্ডোভিত্তিক ট্যাবলেট পিসির নাম। এর বাজার খুব একটা ভালো যায়নি বলেই হয়তো একই নামের নতুন প্রযুক্তি আনতে চাচ্ছে মাইক্রোসফট। এই সারফেস স্মার্ট ওয়াচের টাচস্ক্রিনসহ পুরোটাই পাতলা স্বচ্ছ অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি। এই হাতঘড়িতে অনেক ধরনের উইন্ডোজ অ্যাপিস্নকেশন ব্যবহারের সুবিধা থাকবে। তবে একেবারে আন-চ্যালেঞ্জড হবে না সারফেসের আগমন। অন্য প্রতিযোগী টেক জায়ান্টও স্মার্ট ওয়াচ তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মাইক্রোসফটের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে অ্যাপল, সনি ও স্যামসাং। এদেরও টার্গেট ২০১৪ সালের দ্বিতীয় পর্ব। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসব তথ্য জানিয়েছে ইয়াহু নিউজ আর এ নিয়ে গবেষণা করছে যে প্রতিষ্ঠানটি সেই ক্যানালিসই তাদের তথ্য দিয়েছে। ঘড়ির ব্যাপার ছাড়াও আরও পুরনো নিত্যব্যবহার্য পণ্যেও যুক্ত হয়েছে বা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। জুতোর সাথে এখন যুক্ত হয়েছে জিপিএস প্রযুক্তি। এবার বোধহয় সময় হয়েছে জুতোকে নিয়ে পথ চলার বদলে জুতোর নির্দেশনায় পথ চলার। ব্রিটিশ জুতো প্রস্ত্ততকারক ডমিনিক্স উইলফক্স তৈরি করেছেন এই জিপিএস প্রযুক্তিনির্ভর জুতো। সেন্সর ও জিপিএস সিস্টেম সম্মিলিতভাবে ব্যবহার হয়েছে এই অভিনব জুতোয়।

সেন্সর হচ্ছে ক্যামেরার পরেই নতুন উন্নয়নশীল প্রযুক্তি। এখন যেমন স্মার্ট ফোন দিয়ে যেকোনো মানুষের হাই রেজ্যুলেশন ছবি তোলা যাচ্ছে, তেমনি সামনে থাকা মানুষটির মনোভাবও বুঝতে পারবেন আর কদিন পরেই। মুড স্কোপ নামের একটি প্রযুক্তি ইতোমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে। আর তৈরি করেছে সেই সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটই। শুধু সামনে থাকা মানুষই নয়, ফেসবুকে চ্যাট শুরুর আগেই কিংবা স্কাইপে ব্যবহারের আগ মুহূর্তে অপর প্রান্তের মানুষটির মনোভাবও জেনে নেয়া যাবে নিমেষেই। বলে রাখা ভালো, এখনকার অ্যান্ড্রয়িড বা আইফোন প্রযুক্তিতে আছে অন্যূন দশ ধরনের সেন্সর, মুড স্কোপ যোগ হলে বাড়বে একটা মাত্র। আর তাতে বিস্ময় কিন্তু বাড়বে অনেকটাই।

কজ
ফিডব্যাক : abir59@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৩ - আগস্ট সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস