• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সারাদেশে ডিজিটাল অফিস পদ্ধতি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সারাদেশে ডিজিটাল অফিস পদ্ধতি
সম্প্রতি দেশের তথ্যপ্রযুক্তি জগতের জন্য একটি সুখবর হচ্ছে, কেন্দ্র থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত সব সরকারি দফতরে চালু হতে যাচ্ছে ডিজিটাল অফিস পদ্ধতি। এই পদ্ধতি চালু হওয়ার পর তা সফলভাবে বাস্তবায়িত হোক এবং এ পদ্ধতির ফলে আমাদের সময় বাঁচুক, দাফতরিক কাজ সহজতর হোক, খরচের অঙ্ক ছোট হয়ে আসুক- সে কামনা দেশবাসীর সাথে সাথে আমরাও করি। সারাদেশে এই ডিজিটাল অফিস পদ্ধতি চালু হলে ইলেকট্রনিক ব্যবস্থাপনায় সম্পন্ন হবে নোটিং, ফাইলিং ও স্বাক্ষরহ নথির যাবতীয় কাজ। নতুন এ পদ্ধতির মাধ্যমে ছুটির দিন অথবা বিদেশে বসেও অতি জরুরি নথির প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে মনিটরিং হবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস হাজিরা। এর ফলে কেউ দেরিতে অফিসে হাজির হলে, তারও রেকর্ড থাকবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের মধ্যে চিঠিপত্র দেয়া-নেয়া, আবেদন ও সেবাদানের যাবতীয় কাজ ই-মেইল, ওয়েবসাইট, ভিডিও কনফারেন্স এবং অডিও ভিজ্যুয়ালের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
সচিবালায় নির্দেশমালা-২০১৪ অনুযায়ী চলবে উল্লিখিত ইলেকট্রনিক নথি ব্যবস্থাপনা। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে নির্দেশমালাটি ছাপার কাজ চলছে। সরকারি দফতরগুলোতে বিতরণের পর খুব শিগগিরই এটি কার্যকর করা হবে। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাসহ জনপ্রশাসনের সামগ্রিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে- এমনটাই সংশ্লিষ্ট তথ্যাভিজ্ঞদের প্রত্যাশা। তবে আমরা মনে করি, সরকারি পর্যায়ে অনেক ভালো কর্মসূচিই ঢাকঢোল পিটিয়ে শুরু হয়, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এগুলোর বাস্তবায়ন চলে না যথাযথভাবে। ফলে গোটা কর্মসূচিই যেনো মুখ থুবড়ে পড়ে। এই অভিজ্ঞতার আশঙ্কা থেকে আমাদের আগাম তাগিদ- সারাদেশের সরকারি অফিসে ডিজিটাল অফিস পদ্ধতি চালুর পর যেনো এ ক্ষেত্রে অনাকাঙিক্ষত কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। কারণ, এই পদ্ধতি চালু হলে প্রশাসনে যেমনি অভাবনীয় মাত্রায় গতি আসবে, তেমনি দুর্নীতি ও অনিয়ম বহুলাংশে কমবে। কমবে জনদুর্ভোগ। সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি অফিসের কাজকর্ম সম্পন্ন করার সহজতর উপায় হাতে পাবে। অতএব সবার প্রতাশা দ্রুত এই ডিজিটাল অফিস পদ্ধতি চালু হোক এবং তা সুষ্ঠুভাবে অব্যাহত থাকুক।
উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবারের মতো সচিবালয় নির্দেশমালা প্রণয়ন করার ৩২ বছর পর ২০০৮ সালে সে সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে জারি করে সচিবালয় নির্দেশমালা। এই নির্দেশমালাকে যুগোপযোগী করতে ২০১৩ সালের ২২ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান আলী মোল্লার নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তৎকালীন মহাজোট সরকার। এই কমিটি নতুন নির্দেশমালা প্রণয়নের সুপারিশ করে। বিদ্যমান সচিবালয় নির্দেশমালায় ২৮৭টি নির্দেশ থাকলেও নতুনটিতে স্থান পেয়েছে ২৬৩টি। বিদ্যমান নির্দেশমালা থেকে বিলুপ্ত করা হয়েছে ৩৩টি নির্দেশ। এ ছাড়া একদম নতুন ৯টি নির্দেশ, ১৩টি উপ-নির্দেশ ও একটি অধ্যায় সংযোজন করা হয়েছে। সংশোধন করা হয়েছে ৯০টি পুরনো নির্দেশ।
জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রম্নয়ারি প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটি নির্দেশমালা-২০১৪ অনুমোদনের পর তা প্রিন্ট করতে দেয়া হয়েছে। এই নীতিমালা কার্যকর হলে অফিস ব্যবস্থাপনায় আসবে যুগান্তকারী পরিবর্তন- এমনটিই আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের প্রত্যাশা, এর ফলে প্রশাসনের গতি আরও কয়েকগুণ বাড়বে। কারণ, নতুন এই নির্দেশমালা জরুরি সব দাফতরিক কাজে তথ্য বিনিময়ে নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে ই-সার্ভিস সুবিধা।
বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্কিং। কাগুজে ফাইল রেকর্ড সংরক্ষণের পাশাপাশি ডিজিটাল ফাইল সংরক্ষণে ব্যাকআপ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে। নাগরিক সেবাদান বিষয়ে একটি নতুন অধ্যায় সংযোজন করে তাতে বলা হয়েছে, প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অধীনস্থ দফতর, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা জনগণকে আরও উন্নততর সেবাদানসহ সরকারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য সেবাদান প্রতিশ্রম্নতি প্রণয়ন করবে। তা ওয়েবসাইটে দেয়াসহ প্রকাশ্যে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবে। পাশাপাশি সব সরকারি দফতরে সেবা ডেস্ক স্থাপন, নাগরিকদের মতামত নেয়া ও তা সংরক্ষণের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। সচিবালয়ে গাড়ি প্রবেশ, প্রস্থান ও পার্কিং স্বয়ংক্রিয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে চলবে। সব কাজে চলবে ভিডিও কনফারেন্সিংসহ যথাসম্ভব বেশি তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ।
লক্ষণীয়, নতুন এই নির্দেশমালায় যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে, তাতে হালনাগাদ তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগের বিষয়টি মাথায় রেখে আনা হয়েছে। যেমন, এখন কাগজপত্র বলতে কোনো বিষয়ের হার্ডকপি বা ইলেকট্রনিক কপির সমষ্টিকে বুঝাবে। আমাদের বিশ্বাস, এই নতুন নির্দেশমালা যথাযথভাবে পালিত হলে দেশের প্রশাসন হয়ে উঠবে আরও জনমুখী। তবে সেই জনমুখিনতার মাত্রা কতটুকু হবে, তা নির্ভর করবে কর্মকর্তারা কতটুকু আন্তরিকতা নিয়ে সে নির্দেশমালা বাস্তবায়নের কাজে মাঠে নামবেন তার ওপর।
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৪ - জুলাই সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস