• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > মানুষের একান্ত সাথী হবে কমপিউটার রোবট
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সাবরিনা নুজহাত
মোট লেখা:৬
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
রোবট
তথ্যসূত্র:
দশদিগন্ত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
মানুষের একান্ত সাথী হবে কমপিউটার রোবট
গবেষকেরা বলছেন ২০২৯ সালের মধ্যে কমপিউটারের সাথে প্রেম করবে মানুষ। কমপিউটার প্রযুক্তি এমন হবে যে প্রেমিকা-বউ ছাড়াই মানুষ তার একাকীত্ব ঘোচাতে পারবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমান রোবট কমপিউটার মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান হবে। এগুলো মানুষের সব বৈশিষ্ট্য ধারণ করবে। তবে কি এসব যন্ত্র মানুষের ক্ষমতা কেড়ে নেবে নাকি পৃথিবী তাদের অধীনেই থাকবে?
এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গবেষকেরা। এরা প্রতিনিয়ত গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমানদের অবিশ্বাস্য সব ক্ষমতার ভবিষ্যদ্বাণী করছেন। তেমনই কিছু গবেষণালব্ধ ফলাফল নিয়ে এই প্রতিবেদন।
কমপিউটারের সাথে হবে প্রেম!
২০২৯ সালের মধ্যেই কমপিউটারের সাথে এমন প্রযুক্তি যুক্ত হবে যে এর সাথেই আবেগীয় তথা ভালোবাসার সম্পর্ক করা যাবে। গুগলের প্রকৌশল পরিচালক রে কুর্জওয়েইল বলেন, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে কমপিউটারে এমন বুদ্ধিভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম আসবে, যা আপনার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম হবে। সম্প্রতি নিউইয়র্কে এক্সপোনেনশিয়াল ফিন্যান্স কনফারেন্সের এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, প্রযুক্তি আপনার আবেগকে বুঝতে সক্ষম হবে। কেননা, কমপিউটারের আইকিইউ লেভেল মানুষের সমকক্ষ হয়ে যাবে। যার ফলে আপনি প্রেম করতে পারবেন।
ইতোমধ্যেই রে কুর্জওয়েইল ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ২০২৯ সালের মধ্যে কমপিউটার মানুষের গলার স্বর শুনে চিনতে পারবে এবং গাড়ি চালাতে পারবে। যার সত্যতা দেখা গেছে। ৬৬ বছর বয়সী এই প্রবীণ পৃথিবীর একজন বিশিষ্ট ভবিষ্যদ্বাণীকারক। ১৯৯০ সালে তিনি বলেছিলেন, ১৯৯৮ সালের মধ্যেই কমপিউটার দাবা চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে, যা ১৯৯৭ সালেই আইবিএমের ডিপ ব্লু এবং গ্যারি কাসপারভ এর যথার্থতা প্রমাণ করেন।
বুদ্ধিমত্তায়ও ছাড়িয়ে যাবে মানুষকে!
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে গবেষণার অগ্রগতি সম্পর্কে রে কুর্জওয়েইল দাবি করেন, বর্তমানে কৃত্রিম গবেষণার উন্নয়ন দ্রুত এগিয়ে চলছে। কমপিউটার এখন ধাঁধা গেম খেলতে পারে। এ ছাড়া তৈরি হচ্ছে চালকবিহীন গাড়ি। এখন মুঠোফোনেও চলে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। মুঠোফোনে প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায়। কারণ মুঠোফোনে চলে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমান সফটওয়্যার। বর্তমানে ক্লাউড প্রযুক্তির মতো প্রযুক্তিতে বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে তথ্যবিনিময় করা সহজ হয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মানুষের মসিত্মষ্ক থেকে সরাসরি যন্ত্রে তথ্য স্থানান্তর করা যাবে। আর এর মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তায় মানুষকে ছাড়িয়ে যাবে এসব যন্ত্র।
বর্তমান বিশ্বের কিংবদন্তি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং মনে করেন, বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে যন্ত্র অনেক এগিয়ে যাবে। মানুষের চেয়ে যন্ত্রের বুদ্ধি হবে বেশি। যেকোনো কিছুতেই নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং ভবিষ্যতে মানুষের জন্য বিপদই ডেকে আনবে। সম্প্রতি এইচবিও’র এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। হকিং বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্রের সাময়িক প্রভাব নির্ভর করে এর নিয়ন্ত্রণ কর্তার মর্জির ওপর। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে একে আদৌ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কি না, সে বিষয়টি রীতিমতো অনিশ্চিত ও আশঙ্কাজনক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের ওপর মোটেও আস্থা নেই তার। এ ছাড়া এ বিষয়ে এখনও তেমন গবেষণা হয়নি বলেও মনে করেন তিনি।
স্পেসএক্স নামের মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এলন মাস্কও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগও করেছেন। তার ধারণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে হলিউডের ছবিতে দেখানো টার্মিনেটর, স্কাইনেটের মতো মারাত্মক কিছু বের হয়ে আসবে। আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। এ ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যেনো অপব্যবহার না হয়, সেখানে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।
নিজের আয়ু বাড়াতে পারবে মানুষ!
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা এগিয়েছে অনেকদূর। প্রযুক্তিতে দ্রুত উন্নয়ন ঘটছে। গবেষক কুর্জওয়েইল মনে করেন, ২০৩০ সাল নাগাদ প্রযুক্তি এতটাই অগ্রসর হবে যে, মানুষ শরীরের জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে আয়ু বাড়িয়ে নিতে পারবে। শরীরের ভেতর ন্যানো রোবট বসিয়ে কোনো স্থান আক্রান্ত হলে তা সারিয়ে তোলাও সম্ভব হবে। কুর্জওয়েইল ‘জিন প্রোগ্রামিং’ বিষয়ে আশা করেন, ভবিষ্যতে জিন প্রোগ্রামিং করে মানুষ ক্যানসারের মতো রোগ সারাতে পারবে এবং বার্ধক্যও ঠেকাতে সক্ষম হবে।
নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেবে কমপিউটার!
৬৬ বছর বয়সী কুর্জওয়েইল ভবিষ্যদ্বাণী এর আগে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে মিলে গেছে। ১৯৯০ সালে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, আট বছরের মধ্যেই দাবা খেলায় মানুষকে হারিয়ে দেবে কমপিউটার। ১৯৯৭ সালে আইবিএমের ডিপব্লু কমপিউটার গ্যারি কাসপারভকে হারিয়ে তার ভবিষ্যদ্বাণী সফল করেছিল। এর আগে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষা ‘টিউরিং টেস্ট’ উতরে যাবে কমপিউটার। সম্প্রতি বিশ্বে প্রথমবারের মতো টিউরিং টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছে ‘ইউজিন গুস্টম্যান’ নামে একটি কমপিউটার প্রোগ্রাম। যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা সম্প্রতি কমপিউটারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ণয়ের জন্য টিউরিং টেস্ট নেয়ার আয়োজন করেছিলেন। এ টেস্টের মাধ্যমে কমপিউটার প্রোগ্রাম ও মানুষের বুদ্ধিমত্তার পার্থক্য নির্ণয় করা যায়। রাশিয়ার গবেষকদের তৈরি ‘ইউজিন গুস্টম্যান’ নামের প্রোগ্রামটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় মানুষের মতো আলোচনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কমপিউটার প্রোগ্রাম যে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছে, তাতে ৩৩ শতাংশ ক্ষেত্রে বিচারককে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে। লন্ডনের রয়াল সোসাইটিতে ৭ জুন এ পরীক্ষাটি হয়। পরীক্ষার তত্ত্বাবধানে ছিল ইউনিভার্সিটি অব রিডিং। ব্রিটিশ গবেষক অ্যালান টিউরিং ১৯৫০ সালের একটি গবেষণাপত্র ‘কমপিউটিং মেশিনারি অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স’-এ টিউরিং টেস্টের কথা উল্লেখ করেন। যন্ত্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা করার পদ্ধতি এটি। কমপিউটার প্রোগ্রাম মানুষের মতো আচরণ করতে পারে কি না এবং প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় মানুষের মতো নাকি যন্ত্রের মতো আচরণ করে, সে বিষয়টিও পরীক্ষা করে দেখা হয়।
থেমে নেই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো
মানুষ ও কমপিউটার সহযোগী হবে, নাকি মানুষকে ছাড়িয়ে যাবে রোবট, তা নিয়েও আশঙ্কা থাকছে। বোস্টন ডায়নামিকসসহ আটটি রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কেনার পর প্রযুক্তি-বিশেস্নষকেরা ধারণা করছেন, রোবট নিয়ে বড় ধরনের পরিকল্পনা করছে গুগল। গুগলের ‘এক্স ল্যাব’ নামে একটি গোপন পরীক্ষাগারের অসিত্মত্বের কথা প্রায়ই শোনা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, গুগলের এক্স ল্যাবে নতুন কিছু তৈরি হচ্ছে। এই গোপন পরীক্ষাগার থেকেই এসেছে স্মার্টগস্নাস, স্মার্টকার

ফিডব্যাক : sabrina.nuzhat.borsha@gmail.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৪ - আগস্ট সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস