• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গাজীপুরে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - জানুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গাজীপুরে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়
গাজীপুরে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়

একটি জাতিকে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি ও সমৃদ্ধির স্বর্ণশিখরে নিয়ে পৌঁছাতে হলে সবার আগে যে অপরিহার্য উপাদানটি আমাদের বিবেচনায় আসে সেটি হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষাকে অবহেলিত রেখে কোনো জাতি সমৃদ্ধি অর্জন করেছে, এমন উদাহরণ এ বিশ্বে একটিও নেই। এ বাস্তবতাদৃষ্টেই প্রতিটি দেশ-জাতির বিতর্কহীন সিদ্ধান্ত হচ্ছে, দেশের জন্য যথার্থ কার্যকর শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য বিশ্বের প্রতিটি দেশেই চেষ্টা থাকে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ দেয়ার। অবশ্য দুয়েকটি দেশে এর ব্যতিক্রমও দেখা যায়। সম্প্রসারণবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে কখনও কখনও শিক্ষা খাতের বাজেট বরাদ্দকে ছাড়িয়ে সামরিক খাতের বরাদ্দ শীর্ষস্থান দখল করে নেয়। সে যাই হোক, আমাদের দেশে বরাবর সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ থাকে শিক্ষা খাতে। কিন্তু এরপরও একদিকে বাজেটের আয়তন ছোট হওয়া এবং অপরদিকে অতিমাত্রিক জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ আমাদের এই বাংলাদেশে এই বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে আমরা আমাদের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্য তাদের পছন্দের বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিতে পারি না। উচ্চশিক্ষার বিদ্যমান চাহিদা মেটানোর জন্য দেশে আরও বহুসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। ফলে দেশে কোনো নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা শুনলে আমরা আনন্দিত হই। কারণ, আমরা ধরে নিই দেশে উচ্চশিক্ষার পথ বুঝি আরও একটু সম্প্রসারিত হলো। সম্প্রতি আমাদের জন্য তেমনি একটি খুশির খবর হচ্ছে- গাজীপুরে একটি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় হবে। সরকারের নেয়া এ পদক্ষেপটি নিশ্চয়ই মোবারকবাদ পাওয়ার দাবি রাখে।
খবরে প্রকাশ, গাজীপুরের হাইটেক পার্ক এলাকায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক একটি ডিজিটাল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ আইন-২০১৪’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোহাম্মদ মোশারারফ হোসেন ভূঁইয়া মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে দেয়া প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, এই ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হচ্ছে আইসিটি শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। এছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতির পাশাপাশি দূরশিক্ষণ ও অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা থাকবে। তবে এটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় কিছু অতিরিক্ত বিষয় এই আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। আইনের খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দিলেও মন্ত্রিসভা কিছু অনুশাসন ও পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, বঙ্গবন্ধুর নামে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায় নেয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমতি লাগবে। এ বিষয়টি আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত হওয়ার আগেই সমাধান করা হবে। প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা বা গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগ আকর্ষণীয় হবে। দেশে-বিদেশে আইসিটি ক্ষেত্রে অসাধারণ মেধাবী ও যোগ্য লোকদের আকৃষ্ট করার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা শিক্ষক হবেন, তাদের আকর্ষণীয় বেতন-ভাতা দেয়া হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় একাডেমিক কাউন্সিলে আইসিটিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা থাকবেন। একাডেমিক কাউন্সিলে বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর মনোনীত দু’জন আইসিটি উদ্যোক্তা থাকবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা উন্নয়ন কমিটিতে পরিকল্পনা বিভাগের প্রতিনিধি থাকবেন, যাতে তারা প্রকল্পগুলো ঠিকমতো নিতে পারেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, ডিজিটাল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ আইনের খসড়া তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। পরে শিক্ষামন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবার সাথে বৈঠক করে মতবিনিময় করেন।
আমরা সরকারের এ ধরনের একটি মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সেই সাথে সরকারকে এই মর্মে সতর্ক করতে চাই, যে মহৎ উদ্দেশ্যে এ ধরনের একটি অতি প্রয়োজনীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার সফল বাস্তবায়নে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রের নিয়োগকে দল-মতের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলবাজির দুঃখজনক অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য সুখকর নয়। শিক্ষাঙ্গনগুলো যে কী মাত্রায় দলীয়করণের শিকার হয়ে মাঝেমধ্যে বন্ধ হয়ে যায়, সে অভিজ্ঞতা সহজেই অনুমেয়। যথাযোগ্যজনকে যথাযোগ্য পদে না বসালে, এ সমস্যা প্রতিষ্ঠিতব্য এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও অবধারিত হয়ে দাঁড়াবে। অতএব এ ব্যাপারে সরকারের সচেতন ভূমিকা কামনা করছি।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - জানুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস