লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
দেশে প্রিন্ট-রাইট ব্র্যান্ডের থ্রিডি প্রিন্টার
দেশের বাজারে সর্বপ্রথম থ্রিডি প্রিন্টার নিয়ে এসেছে বিশ্ববিখ্যাত প্রিন্ট-রাইট ব্র্যান্ডের একমাত্র পরিবেশক এমআরএফ ট্রেডিং কোম্পানি। এই থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে যেকোনো বস্ত্তর হুবহু ত্রিমাত্রিক নমুনা তৈরি করা যায়। বিশ্ববাজারে আলোড়ন সৃষ্টিকারী থ্রিডি প্রিন্টিং টেকনোলজি শিক্ষাক্ষেত্র, আইটি শিল্প, গবেষণা, মেডিক্যাল সেবা, নির্মাণ ও খেলনা শিল্পসহ নানা ক্ষেত্রে বৈপস্নবিক পরিবর্তন এনেছে। সাধারণত যেকোনো নতুন প্রযুক্তি বাংলাদেশের বাজারে আসতে দীর্ঘ সময় লাগলেও এমআরএফ ট্রেডিং কোম্পানি বিশ্ববাজারে থিডি প্রিন্টার অবমুক্ত হওয়ার পর অল্প সময়ে প্রিন্ট-রাইট কলিডো থ্রিডি প্রিন্টার দেশে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।
এমআরএফ ট্রেডিং কোম্পানির সরবরাহ করা প্রথম তিনটি থ্রিডি প্রিন্টারের সমন্বয়ে দেশে সর্বপ্রথম থ্রিডি প্রিন্টার ল্যাব চালু করেছে ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি। এর উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার প্রযুক্তিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের এ অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির অবদানকে তিনি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি শিক্ষাকে মুনাফা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা না করে দেশে প্রথম থ্রিডি প্রিন্টার ল্যাব চালু করে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রতিমন্ত্রী তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিইউর কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইউনিভার্সিটিতে একটি অত্যাধুনিক আইটি ল্যাব নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এ বিষয়ে বুয়েটের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক মো: কায়কোবাদ বলেন, থ্রিডি প্রিন্টার ল্যাব বর্তমান সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে এবং এটি দেশের বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার এমএ গোলাম দস্তগীর বলেন, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেলে বিইউকে একটি প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হবে। স্বাগত বক্তব্যে বিইউর ডেপুটি ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার কাজী তাইফ সাদাত বিইউর গবেষণা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিইউর ভিসি কামরুল হাসান, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: ইমাম উদ্দীন, স্থাপত্য বিভাগের প্রধান বিকাশ সাউদ আনসারী ও সিএসই বিভাগের প্রধান সাদিক ইকবাল, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা শামসুল হুদা প্রমুখ। এর আগে প্রতিমন্ত্রী থ্রিডি প্রিন্টার ল্যাবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে একবিংশ শতাব্দীর সেরা উদ্ভাবনের মধ্যে থ্রিডি প্রিন্টার অন্যতম। ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেয় থ্রিডি প্রিন্টার। থ্রিডি প্রিন্টার এমন একটি ডিভাইস, যার মাধ্যমে ডিজিটাল মডেল থেকে বাস্তব বস্ত্তর যেকোনো আকৃতির একটি ত্রিমাত্রিক বস্ত্ত তৈরি করা যায়। অত্যন্ত কম সময় ও শতভাগ নিখুঁতভাবে ত্রিমাত্রিক রেপ্লিকা তৈরি করে থ্রিডি প্রিন্টার। এই সুবিধায় বিইউর শিক্ষার্থীরা অল্প সময়ে নিখুঁত কাজ ও গবেষণা করতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে দুটি থ্রিডি প্রিন্টার দিয়ে বিইউর ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়ানো হবে। বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহার হয়। থ্রিডি প্রিন্টার বেশি ব্যবহার হয় চিকিৎসা ক্ষেত্রে। হাড় ও কৃত্রিম অঙ্গ তৈরিতে বেশি ব্যবহার হয়। ফটোটাইপ, আর্কিটেকচারাল মডেল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য উপকরণ, খেলনা, মডেল টাউন, রেপ্লিকা, মাইক্রোবায়োলজিকার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইটেরিয়া, ভাইরাসের মডেল তৈরিসহ অসংখ্য কাজে এটি ব্যবহার হয়।
থ্রিডি প্রিন্টারে মেশিন প্রপার, কমপিউটার ও ত্রিমাত্রিক ছবি তোলার জন্য একটি ক্যামেরা বা স্ক্যানার থাকে। যে বস্ত্তটিকে প্রিন্ট করা হবে প্রথমে স্ক্যানারের সাহায্যে তার একটি ত্রিমাত্রিক ছবি তোলা হয়। বস্ত্তটির সব দিক ঘুরালে সব খুঁটিনাটি অংশ ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এবার এই ইমেজটিকে কমপিউটারে প্রসেস করা হয়। কমপিউটারে ইচ্ছেমতো এডিটও করা যায়। যেমন- আকার পরিবর্তন, কোনো অংশ বাদ দেয়া বা সংযোজন বা রং পরিবর্তন ইত্যাদি। এবার প্রসেসিং শেষে প্রিন্ট দিলেই মেশিন প্রপারে রাখা মেটেরিয়ালের সাহায্যে বস্ত্তটির একটি বাস্তব রেপ্লিকা তৈরি হয়ে যায়। অর্থাৎ যদি কোনো মানুষের ত্রিমাত্রিক ছবি তোলা হয়, তবে এই প্রিন্টার তার একটি ত্রিমাত্রিক কপি তৈরি করে দেবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই। থ্রিডি সিস্টেম কর্পোরেশনের চাক হাল ১৯৮৪ সালে প্রথম কর্মোপযোগী থ্রিডি প্রিন্টার তৈরি করেন