• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ৯ সিক্রেট: হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট তৈরি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আনোয়ার হোসেন
মোট লেখা:৭৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইসিটি
তথ্যসূত্র:
ক্যারিয়ার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
৯ সিক্রেট: হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট তৈরি
কনটেন্ট মার্কেটারদের সবচেয়ে বড় সংগ্রামটি হলো নিয়মিত যথেষ্ট কনটেন্ট তৈরি করা ও একই সাথে হাই কোয়ালিটি বজায় রাখা। আর এ কাজগুলোই একজন প্রফেশনাল রাইটার প্রতিদিন করে থাকেন। অধিকাংশ কনটেন্টই শুরু হয় লিখিত শব্দ থেকে। আপনি কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করছেন, সেটা কোনো বিষয় নয়। আপনি প্রফেশনাল রাইটারদের কিছু সিক্রেট জেনে সেগুলো থেকে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারেন।
এই পোস্টে আমরা জানব প্রফেশনাল রাইটারদের ৯টি সিক্রেট সম্পর্কে, যে টিপস অ্যান্ড ট্রিকসগুলো তাদেরকে অবিরতভাবে হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করে।
০১. সব সময়ই রিসার্চ মোডে থাকা : আপনার প্রোফাইলে অসাধারণ সব কোয়ালিটি কনটেন্ট দিয়ে সমৃদ্ধ করতে আপনাকে সব সময়ই রিসার্চ মোডে থাকতে হবে।
রিসার্চকে শুধু আপনার পরিকল্পনা বা লেখার সেশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করলে হবে না। আপনার কন্টেন্টের কোয়ালিটি ক্রমেই বাড়তে থাকবে, যদি আপনি এটি নিয়মিত করতে থাকেন। কেননা, নতুন নতুন সব দারুণ আইডিয়া আপনার মাথায় আসতে থাকবে। যখনই কোনো আইডিয়া পাবেন, তখনই সেটা ডেভেলপ করতে শুরু করুন।
আপনি হয়তো ভাবছেন যখন দরকার হবে, তখন নতুন আইডিয়া কাজে লাগাবেন। কিন্তু কোনো কিছু লেখা শুরু করার আগেই সে সম্পর্কিত আইডিয়া ডেভেলপ শুরু করা সহজ। এর জন্য আইডিয়া আসা মাত্র খুঁজতে থাকুন : ০১. এই টপিকে প্রধান পয়েন্টগুলো কী হতে পারে। ০২. অতিরিক্ত তথ্যের জন্য সাইটগুলোর লিঙ্ক। ০৩. আপনার পয়েন্টগুলো সাজাতে দরকারি ওয়েব পেজের লিঙ্ক। রিসার্চ মোডে আপনাকে সব সময়ই ওয়েবে ব্রাউজ করে যেতে হবে। এর ফলে দেখা যাবে, আপনি লিখতে বসার আগেই পুরো আউটলাইনটি তৈরি হয়ে গেছে।
০২. লেখাতে নিজের একটি স্টাইল তৈরি করুন : কখনই অন্য কাউকে নকল করা উচিত নয়। আপনার কনটেন্টের নিজস্ব একটি স্টাইল থাকা উচিত, যা আপনার ব্যক্তিত্ব বা ব্র্যান্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। হুমায়ূন আহমেদ খুবই জনপ্রিয় লেখক। কিন্তু তার লেখার স্টাইল তার নিজস্ব। আপনি তারটা নকল করে বেশিদূর যেতে পারবেন না। মানুষ সেটা পছন্দও করবে না। মানুষ আপনার কাছ থেকে আপনার নিজস্ব স্টাইলের কিছু আসা করে। আপনার কাছ থেকে হুমায়ূন বা সুনীলকে আসা করে না।
একবার আপনি আপনার লেখার স্টাইল তৈরি করে ফেলা মানে সব শেষ নয়। কেননা, একজন লেখক তার লেখার দক্ষতা বাড়ানো কখনই বন্ধ করে না। একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে সব সময় আপনার লেখার দক্ষতাকে শান দিয়ে যেতে হবে। লেখার স্টাইল একজন লেখকের সবচেয়ে বড় মূল্যবান সম্পদ। এটি পেতে ক্যারিয়ার জুড়েই চেষ্টা করে যেতে হয়। বিখ্যাত আমেরিকান লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বলেছেন, ‘দক্ষতা অর্জনে আমরা সবাই শিক্ষানবিস, যেখানে কেউ কখনও মাস্টার হয় না।’
০৩. যেভাবে নিজের স্টাইল তৈরি করতে পারেন : যা-ই লেখেন না কেন, সেটা আপনার নিজের স্টাইল বা ভয়েজেই হওয়া উচিত, তা কখনই অন্যের মতো কিছু একটা হলে হবে না। তবে দক্ষ একজন লেখকে আপনি অনুসরণ করতে পারেন। মূলত সৃষ্টিশীল প্রফেশনাল লেখকেরা নিজেদের উন্নয়নের জন্য তিনটি ধাপের মধ্য দিয়ে যান- অনুসরণ, দক্ষতা অর্জন এবং সবশেষে নতুন কিছু করা। আপনি পড়ে এবং স্টাডি করে দেখতে পারেন কোন লেখকের স্টাইল আপনার ভালো লাগে। তারপর আপনার স্টাইল তৈরি করতে কাজ শুরু করে দিন। নিচের অনুশীলনগুলো চর্চা করে দেখতে পারেন : ০১. ৫ জন কনটেন্ট রাইটার খুঁজে বের করুন, যাদের লেখা আপনি পড়তে উপভোগ করেন। ০২. তাদের প্রত্যেকের একটি করে লেখা নির্বাচন করুন। ০৩. লেখাগুলো প্রতিটি শব্দ ধরে পড়তে শুরু করুন। দরকার হলে শব্দ করে পড়ুন। ০৪. স্টাডি করুন লেখক কীভাবে লেখাটি লিখেছেন- প্রথম বাক্যটি দেখতে কেমন। যেমন- ভূমিকার ধরন, আর্টিকলের কাঠামোটা কীভাবে করা হয়েছে, কীভাবে টপিক ডেভেলপ করা হয়েছে ও আইডিয়া উপস্থাপন করা হয়েছে, কীভাবে আর্টিকলটিতে সমাপ্তি টানা হয়েছে এবং কল টু অ্যাকশন কী ছিল। ০৫. এবার আপনি নিজে চেষ্টা করুন। ০৬. প্রত্যেক লেখকের ক্ষেত্রেই এটি করুন। ০৭. আর্টিকলগুলোকে রিভিউ করুন। ০৮. ৬ নাম্বার আর্টিকলটি একই স্টাইল অনুসরণ করে লিখুন। আপনার স্টাইলের মতো করে অল্প কিছু পরিবর্তন করে লেখাটিকে আরও মানসম্মত করুন। ০৯. এই উপায়ে আপনি আর্টিকল লিখে যেতে থাকুন, যতক্ষণ আপনি নিজেকে দক্ষ না মনে করছেন।
০৪. শুধু একটি বিষয়ের ওপর নজর দিন : কন্টেটের এক অংশে একটিই পয়েন্ট থাকা উচিত। লিখতে বসে সবার আগে যেটা করা উচিত তা হলো, আপনি ঠিক করে নেবেন আপনার পয়েন্টের মূল কথাটি কী হবে? লেখা শেষে এডিটের সময় খেয়াল রাখতে হবে লেখাতে আপনার পয়েন্টটি ঠিক আছে কি না। এর অন্যথা হলে আপনাকে নির্দয় হতে হবে। যেমনটা উইলিয়াম ফকনার বলেছিলেন, ‘প্রিয়তমাকে হত্যা কর’। যেকোনো শব্দ, বাক্য বা অনুচ্ছেদ- যা এই নিয়মকে ভঙ্গ করে সেগুলো অবশ্যই ডিলিট করে দিতে হবে। আপনি সেগুলোকে কতটা পছন্দ করে ফেলেছেন এটা কোনোভাবেই বিবেচনায় আনা যাবে না।
০৫. দৈর্ঘ্যে ও গভীরতায় মিল থাকা উচিত : দুটি বিষয় কোনো লেখাকে পড়ার অযোগ্য করে তোলে। একটি হলো যথেষ্ট বিস্তারিত না বলে কোনো বিষয় ভাসা ভাসা বলে যাওয়া। অন্যটি হলো জায়গার অনুপাতে কোনো বিষয় খুব বেশি বিস্তারিত লিখে যাওয়া। আপনি কনটেন্টকে বড় বা ছোট যেমনই লিখতে চান না কেন, এটা নিশ্চিত করতে হবে যেন আপনি সেই লেখার ততটাই গভীরে যাবেন, যতটা লেখার দৈর্ঘ্য অনুমোদন করে। যেকোনো দৈর্ঘ্যের লেখাই গ্রহণযোগ্য। সেথ গোডিন ও জেগ সাধারণত তাদের প্রতি পোস্ট ১০০ শব্দে লিখে থাকেন। অন্যদিকে কিস মেট্রিস ও ক্রেইজি এগের ব্লগ পোস্টের দৈর্ঘ্য ৮০০ থেকে ১৫০০ প্লাস শব্দ।
আপনার টপিকটিকে একটি ইউনিক দিক থেকে কভার করুন : প্রত্যেক কনটেন্টের একটি টপিক, একটি পয়েন্ট ও একটি স্নেন্ট থাকে।
টপিক : আলোচনা বা কনভারসেশনের বিষয়। পয়েন্ট : একটি মূল ধারণা। স্নেন্ট : একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট অব ভিউ।
হয়তো আপনি একটি ট্রেন্ডিং টপিক কভার করছেন, যে বিষয়ে অন্য কনটেন্ট মার্কেটারেরা লিখছেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে নতুন কিছু যোগ করতেই হবে। চেষ্টা করুন নতুন একটি পয়েন্ট খুঁজে পেতে বা টপিকটি নিয়ে কথা বলার নতুন একটি ইউনিক এঙ্গেল খুঁজে নিন। যদি আপনি এগুলো করতে না পারেন, তবে লেখার জন্য অন্য কোনো কিছু খুঁজে নিন।
০৬. টাইটেলের জন্য যথেষ্ট সময় দিন যতটা দিচ্ছেন লেখার জন্য : যদি টাইটেলের মাধ্যমে পাঠকদের সাথে আপনি যোগাযোগ করতে সমর্থ না হন, তবে আপনার সবচেয়ে মূল্যবান ও মজার কনটেন্টটি অবহেলিত থেকে যাবে। আপনার টাইটেলটি অবশ্যই আকর্ষণ সৃষ্টি করার মতো হতে হবে। একই সঙ্গে এটিকে পূর্বাভাস দিতে হবে যে, পাঠকেরা ক্লিক করে এসে এখান থেকে কী ধরনের তথ্য পাবেন। এখানে ১০ ধরনের টাইটেলের নমুনা দেয়া হলো, যেগুলো ভালো পারফর্ম করে : ০১. # টপ # (তালিকা)। ০২. হাউ টু (কীভাবে উপকারি বা মজার কিছু করা যায়)। ০৩. বেস্ট অব (ক্যাটাগরি বা ধরন)। ০৪. কীভাবে (কিছু করা, যা পাঠকেরা করতে চান)। ০৫. কেন (কিছু)। ০৬. সাক্ষাৎকার (খ্যাতিমান কেউ বা অন্যান্য)। ০৭. ব্রেকিং নিউজ। ০৮. সিক্রেট অব...। ০৯. সংখ্যা। ১০. প্রশ্ন।
০৭. প্রথম বাক্যটিকে সবচেয়ে ভালো করে লিখুন : আপনি তিন সেকেন্ড সময় পাবেন আপনার পাঠকদেরকে টেনে ধরতে এবং তাদেরকে আপনার লেখাটি পড়তে শুরু করাতে। শিরোনামের পর আপনার প্রথম বাক্যটিই এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করবে।
পাঠকদের কখনই ভুল দিকে চালিত করবেন না। আপনার শিরোনাম ও প্রথম বাক্যটি পাঠকদেরকে যেন আপনার মূল পয়েন্টের দিকে নিয়ে যায়। পাঠকদের মনোযোগ পাওয়ার মতো কিছু একটা আপনাকে করতে হবে।
‘ব্যবসায়ে, আপনার ভুল থেকে শেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ’- এই বাক্যটি পড়ে একজন পাঠক হিসেবে আমি চিমন্তা করব, ‘ভুল? কী ধরনের ভুল? হয়তো আমি ও কোনো ভুল ...।’ এই সামান্য সন্দেহ তার মাঝে আগ্রহ তৈরি করবে।
‘তো আপনি তাহলে লক্ষ করেছেন, তাই না?’- এই বাক্যে বলার ধরনটি আকস্মিক ও মজার। একজন পাঠক হিসেবে আমি চিমন্তা করব। ‘কি আবার খেয়াল করব’ এবং তারপর নিজেকে আবিষ্কার করব আর্টিকলের মধ্যে।
‘আপনার ল্যান্ডিং পেজে ভালো ফলাফল চান?’- আপনি হয়তো জানেন যে, হ্যাঁ বা না দিয়ে উত্তর করা যায় এমন প্রশ্ন করা উচিত নয়। তাতে পাঠক উত্তর করবে ‘না’ এবং তারপর তারা অন্য পেজে চলে যাবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সবাই বিক্রিতে ভালো ফলাফল চাইবেই। তাই এটিকে একটি নিরাপদ প্রশ্ন বলা যায়।
০৮. একটি অনন্য সূচনা (লিড) লেখার চেষ্টা করুন : লিড যাকে সাধারণত লেখকেরা তাদের কনটেন্টের ভূমিকা বলে থাকেন। প্রত্যেক ছোট আর্টিকলে এটা হতে পারে প্রথম এক বা দুই অনুচ্ছেদ। বইয়ের ক্ষেত্রে এটা হতে পারে প্রথম অধ্যায়। তবে সব ধরনের কনটেন্টের ক্ষেত্রেই এটা প্রথম ১০০ থেকে ৬০০ শব্দের মধ্যে সীমাবব্ধ। আপনার লিড বা ভূমিকা অবশ্যই খুব বেশি বড় হওয়া উচিত নয়। এটি এমন হবে যে, পরের অংশে কী কী থাকছে তার একটা ধারণা যেন তা থেকে পাঠকেরা পান। তবে লেখার সারকথা কোনোভাবেই এখানে বলে দেয়া যাবে না। কনটেন্টে যে ধরনের লিড ভালো ফল দেয় : ০১. আকর্ষণীয় গল্প। ০২. কম জানা কোনো তথ্য। ০৩. বিপরীত মতামত। ০৪. এমন সব তথ্যের আশ্বাস দেয়া, যা অন্য কোথাও নেই। ০৫. ব্রেকিং নিউজ।
০৯. হাইপ সৃষ্টি না করে বিশ্বাসযোগ্য করুন : বিশ্বাসযোগ্য বা সঠিক নয় এমন কনটেন্টের জন্য আপনার পাঠকেরা সময় নষ্ট করতে চাইবেন না। তাই নিয়মটা হবে এমন- ‘কোনো ধরনের বা হাইপ নয়, নয় কোনো ধরনের সত্যের অপালাপ’।
হাইপ নয়
হাইপের কারণে লোকে নিজেদেরকে প্রতারিত মনে করে। ফলে কেউই হাইপ পছন্দ করে না। তাই এমন কনটেন্ট লিখুন, যা লোকের কাজে লাগবে, তাদের জীবনে ভ্যালু যোগ করবে। আপনি কনটেন্টকে ব্যবহার করতে পারেন তথ্য দেয়ার জন্য বা বিনোদন দেয়ার জন্য। বিক্রি বাড়াতে সেল কপি ব্যবহার করুন।
সত্যের অপলাপ নয়
লোকে আপনাকে বিশ্বাস করলে তারা আপনাকে রিসোর্স হিসেবে দেখবে। তাই আপনার টপিকের ওপর রিসার্চ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি কোনো বিস্মিত হওয়ার মতো কোনো ফ্যাক্টর বা ফিগার উপস্থাপন করতে চান, তবে আপনাকে এর ব্যাকআপ নিতে হবে। আপনার তথ্যের উৎসের উল্লেখ করুন। আপনি কোনো বইয়ের রেফারেন্স দিলে, কাউকে কোট করলে বা কোনো রিপোর্টের উল্লেখ করলে অবশ্যই তাদের লিঙ্ক দিন। আপনাকে বিশ্বাস করাটা লোকদের জন্য সহজ করে দিন। অন্যথা হলে তারা আপনার লেখাপড়া বন্ধ করে চলে যাবে।
উপরের উপায়গুলো চর্চা করে আপনিও লিখতে পারবেন প্রফেশনাল লেখকদের মতো কোয়ালিটি সম্পন্ন লেখা।
ফিডব্যাক : hossain.anower009@gmail.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - অক্টোবর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস