• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > প্রযুক্তির বিবর্তনে দোদুল্যমান টেক জায়ান্টরা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: ইমদাদুল হক
মোট লেখা:৬২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - নভেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইসিটি
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
প্রযুক্তির বিবর্তনে দোদুল্যমান টেক জায়ান্টরা
প্রস্তরযুগ, কৃষি ও শিল্পযুগ পেরিয়ে দশক আগেই আমরা নোঙর করেছি প্রযুক্তিযুগে। সেলুলয়েডের পর্দা ফুঁড়ে বেগবান ফিনিক্স পাখির মতো ক্রমেই পাখা মেলছে কল্পবিজ্ঞান। প্রস্ফুটিত হচ্ছে বর্ণিল রং আর গন্ধে। এই যুগটি এখন ক্রমেই বিবর্তিত হতে চলেছে উত্তর আধুনিক সভ্যতার নতুন সোপানে। বিদায়ী সভ্যতা থেকে ভার্চুয়াল এই সভ্যতায় সবচেয়ে বড় ফারাক হচ্ছে যুগ যুগ ধরে কোনো কিছুর বিবর্তন হলেও হালে এখন তা আর যুগ যুগ ধরে হয় না। দিন দিন বিবর্তন হচ্ছে। প্রযুক্তির নতুন পেখম মেলে আগামীর কাছে আজ হচ্ছে সেকেলে। বিবর্তনের অংশী হিসেবে টিকে থাকতে তাই প্রাণান্ত লড়াই করতে হচ্ছে টেক জায়ান্টদেরও। বাজার চাহিদার সাথে তাল মেলাতে ভাঙ্গাগড়ার এই চিরায়ত মল্লযুদ্ধেও ফ্রন্টলাইনে রয়েছে প্রযুক্তির মোহনীয় জাল। প্রযুক্তি জায়ান্টদের কাছে এ যেনো ‘ঘোড়ার লিঙ্গের মতো ভয়’। তবু যুদ্ধজয়ের এ-যাত্রা ‘মধ্যাহ্ন আকাশের রং পোড়া ভাতের মতো’। অদূরে দৃশ্যমান ‘নীলিমার কোলে ছিন্নভিন্ন নীল ঈগলের ডানা’।

লোকাল বিকেম গ্লোবাল;
মেক গ্লোবাল সেল গ্লোবাল
ইন্টারনেট অব থিংস, ক্লাউড সভ্যতা আর ভার্চুয়াল রিয়েলিটির দমকে হুমকির মুখে পড়ছে ডাকসাইটে প্রযুক্তি-দৈত্যরা। পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন ব্যর্থতায় একীভূত হয়ে চলছে পুনর্জন্মের প্রচেষ্টা। বছরজুড়ে তাই প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর অভিনবত্ব ঢাকা পড়েছে অধিগ্রহণের খবরে। সেসব খবরই বলে দিচ্ছে যেন মৃত্যুর পথে হাঁটছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিসকো, ডেল, ইএমসি, এইচপি, আইবিএম, ওরাকল, সানডিস্ক। শুধু বিদেশ বিভুঁই নয়, প্রযুক্তির এই বিবর্তনীয় ধারায় যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশও। ইতোমধ্যেই এয়ারটেলকে অধিগ্রহণ করার বন্দোবস্ত পাকা করেছে রবি। একই পথে হাঁটছে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের মাদার কোম্পানিও। নেটওয়ার্ক ভাগাভাগির দিন গত হতে চলেছে। শুরু হচ্ছে নেটওয়ার্ক ভাড়া ব্যবস্থাপনা। ফলে বেশ জোরেশোরে দেশের টেলিকম খাতে আবির্ভূত হয়েছে ইডটকো নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আবার ঝড়ে পড়ছে দেশে হার্ডওয়্যার পণ্য বিপণনের সাথে জড়িত বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। নতুন নতুন আউটলেট খোলার চেয়ে ভার্চুয়াল দোকান খোলায় মনোযোগী হয়ে উঠছে। প্রযুক্তিপণ্যের বিকিকিনিতে ভবিষ্যৎ গন্তব্য হয়ে উঠছে ই-কমার্স খাত। মোবাইল অ্যাপস আর প্রযুক্তিসেবার বাজারের মতো সমান্তরাল বাড়ছে প্রযুক্তিজ্ঞানসমৃদ্ধ মুক্তপেশাজীবীদের কদর। তীব্র প্রতিযোগিতায় পুঁজি নয়, প্রযুক্তিনির্ভর ধারণার বাস্তবায়ন হয়ে উঠেছে মূল চ্যালেঞ্জ। ক্রমেই পল্লবিত হচ্ছে ‘লোকাল বিকেম গ্লোবাল; মেক গ্লোবাল সেল গ্লোবাল’ কনসেপ্ট।

প্রযুক্তি ডিভাইসে বিবর্তন
ইন্টারনেটের আগে পিসির মাধ্যমে আমরা প্রযুক্তি জগতে প্রবেশ করতে শুরু করেছিলাম। বিগ ডাটা আর ইন্টারনেট অব থিংসের বাড়ন্ত ধারণায় ব্যবহৃত প্রতিটি পণ্যেই ঘাপটি মেরে আছে কমপিউার। অর্থাৎ ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ট্যাব পর্ব শেষ হলে স্মার্টচশমা, ঘড়ি আর হ্যালোজেন পর্ব স্পষ্টতই জানিয়ে দিচ্ছে দশক দশক ধরে কমপিউটার তৈরির ভিত্তি সিলিকন, প্রসেসর ইউনিটে ব্যবহৃত কন্ডাক্টরের বিদায় ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে। একইভাবে ডাটা পরিবহন ও স্থানান্তরে ব্যবহার হওয়া ইলেকট্রনের জায়গায় আসছে লাইট বা আলো। দরজায় কড়া নাড়ছে ফোটনভিত্তিক কমপিউটার। তখন আজকের পিসিটি বাড়তি মনে হবে। তথ্য সংরক্ষণে হার্ডডিস্ক, এসডি কার্ড, পেনড্রাইভের জায়গা হবে জাদুঘরে। সার্ভার স্থাপনের ঝক্কি নিতে রাজি হবে না করপোরেট বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ঘরের প্রতিটি আসবাবই থাকবে ইন্টারনেট তথা অন্তর্জালে জড়িয়ে। প্রযুক্তি ব্যবহার হবে পোশাকেও। পাঠ করতে পারবে মনের ভাষা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যক্তিকে দেবে প্রশান্তি। দরজার সমানে দাঁড়াতেই চিচিং ফাঁক খুলে যাবে প্রধান ফটক। ট্যাপের নিচ থেকে হাত সরাতেই পানি পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। চোখ বন্ধ করলেই বন্ধ হবে ঘরের বাতি। অফিসে বসেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে ঘরের তাপমাত্রা, সারিয়ে নেয়া যাবে ওয়াশিং মেশিন, মুঠোফোন থেকেই খুলে দেয়া যাবে তালাবন্ধ ঘর। বিদেশ বিভুঁইয়ে থেকেও পরিবার পরিজনের দেখভাল করা যাবে। পানির তীব্র স্রোতের বিপরীতে অথবা দমকা বাতাসেও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে হাজির হবে পণ্যপরিবাহী ÿুদে রোবট ‘রোবোবি’। ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) এর কল্যাণে ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো থাকবে একটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত। প্রযুক্তির সংমিশ্রনে ডিভাইসগুলো পাবে নতুন মাত্রা। স্মার্টঘড়ি, স্মার্টফোন, স্মার্টফোন, স্মার্টটিভির মতো প্রতিটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসই স্মার্ট হতে থাকবে। আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে এসব ডিভাইস নিজেরাই বিশ্বের তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে তথ্য বিনিময় করতে পারবে। বাড়ির বহু জিনিসকে অনলাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করছে এই আইওটি । যার মধ্যে রয়েছে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক থার্মোস্টার্ট থেকে শুরু করে টুথ ব্রাশ। প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে অনলাইনে আসা অটোমেটিক টেলার মেশিন বা এটিএম হলো আইওটি’র অন্যতম প্রথম সার্ভিস। তারপরও অধিকাংশ মানুষই (৮৭ শতাংশ) এখন ‘ইন্টারনেট অব থিংস’ সম্পর্কে জানে না। তবে ২০০৮ সালে আইওটি বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায়। ফোর্বস বলছে, এ বছর ৪.৯ বিলিয়ন ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইস থাকছে। আর ২০২০ সালে ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইসের সংখ্যা ৫০ বিলিয়ন ছাড়াবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এরইমধ্যে ২০১৫ সালে ১.৪ বিলিয়ন স্মার্টফোন বাজারজাতকরণের লÿ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, ২০২০ সালে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী হবে ৬.১ বিলিয়ন। একই সময়ে এক বিলিয়ন গাড়ির এক-চতুর্থাংশ ইন্টারনেট সংযুক্ত হবে। পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে চালকের সহায়তা ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচলকারী গাড়ি পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করছে। এ গাড়িগুলো প্রতি সপ্তাহে ১০ হাজার মাইল পাড়ি দিচ্ছে। অপরদিকে পরিধানযোগ্য ডিভাইসের বিশ্ববাজার ক্রমে বাড়ছে। ২০১৫ সালে এ বাজার বেড়েছে ২২৩ শতাংশ। প্রযুক্তি সংশেস্নষ সফলতায় ইন্টারনেট সংযুক্ত কাপড় আসছে। ২০২০ সালে ১০.২ মিলিয়ন ইউনিট স্মার্ট পোশাক বাজারজাত করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একইভাবে ট্র্যাকিং ও শনাক্ত করার কাজে তথ্য বিনিময়ে বর্তমানে ব্যবহৃত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ট্যাগ এর বর্তমান বাজার ১১.১ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ২১.৯ বিলিয়নে পৌঁছাবে। মেশিন-টু-মেশিন সংযোগের বাজার বর্তমান পাঁচ বিলিয়ন থেকে ২০২৪ সালে ২৭ বিলিয়নে পৌঁছাবে। জেনারেল ইলেকট্রনিক্স বলছে, আগামী ২০ বছরে বিশ্ব অর্থনীতিতে ১০ থেকে ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার সরবরাহ করবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্টারনেট। ইন্টারনেট সংযুক্ত রান্নাঘর প্রতিবছর খাদ্য ও পানীয় ইন্ডাস্ট্রির ১৫ শতাংশ খরচ বাঁচাতে পারে। সিসকো ধারণা করছে, আইওটি আগামী ১০ বছরে পাবলিক সেক্টরে ৪.৬ ট্রিলিয়ন ডলার ও প্রাইভেট সেক্টরে ১৪.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসায় বাড়াবে।
অর্থাৎ এভাবেই নিয়ত পাল্টে যাওয়া প্রযুক্তির এই জয়রথের সঙ্গে তাল মিরিয়ে চলতে না পারা এবং কাজের ধরন বদলে যাওয়ায় একদিকে যেমন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদেরকে সময়ের সাথে হালনাগাদ রাখার চেষ্টা করছে; নতুন করে বিনিয়োগ করছে। অপরদিকে ব্যবসায় মন্দায় পড়ে কর্মী ছাঁটাই করছে প্রযুক্তি-দৈত্যরা। ব্যবসায় চাঙ্গা রাখতে কোম্পানিগুলোর মধ্যে আত্মচুক্তির হার যেমন বাড়ছে। তেমনি অধীগ্রহণ আর একীভূতকরণের মাধ্যমে চলছে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। অপরদিকে প্রযুক্তিবিশ্বকে হাতের মুঠোয় আনতে বেলুন উড়িয়ে অন্তপুরেও ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেয়ার মিশনে নেমেছে একসময়ের প্রযুক্তি জায়ান্টদের পেছনে ফেলে বিশ্ব মাত করা গুগল।

অধিগ্রহণ আর একীভূতকরণ
সময়ের ফেনিল স্রোতে ম্রিয়মাণ হতে চলেছে প্রাচীন প্রযুক্তি-দৈত্যরা। এদের অনেকেই এখন মৃতপ্রায়। পতনোন্মুখ অবস্থা থেকে ঘুড়ে দাঁড়াতে তাই পরিচালন ব্যয় কমানোর দিকে মন দিয়েই ক্ষান্ত নয় তারা। চলছে অধিগ্রহণ আর একীভূতকরণের কৌশল গ্রহণ। ব্যবসায় ঢেলে সাজাতে বিকিকিনির মাধ্যমে তহবিল গঠন করে নতুন উদ্ভাবনা নিয়ে চলছে পত্রিকার শিরোনাম হওয়ার চেষ্টা। কিন্তু তারপরও হালে পানি পাওয়া যেন দুষ্কর হয়ে উঠেছে কৌশলগতভাবে এগিয়ে থাকা নবীন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর চেয়ে। এই অধিগ্রহণ/একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় অল্প মেয়াদে একপক্ষ পুষ্ট হলেও অন্য পক্ষ বিলীন হচ্ছে। আর দীর্ঘমেয়াদে প্রযুক্তি-দৈত্যদের ক্ষেত্রে এই অধিগ্রহণ বা একীভূতকরণ উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য খুব বেশি সুফল বয়ে আনছে না। খুব কমসংখ্যক প্রতিষ্ঠানই হাসছে। আর সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানই শেয়ার মূল্য পতন, করপোরেট দোদুল্যমানতায় এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কর্মী ছাঁটাইয়ে ঘটনায় ঝড় তুলছে চায়ের টেবিলে।

ভাঙ্গাগড়ার খেলায় প্রযুক্তি-দৈত্যরা
ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের জনপ্রিয়তম ওয়েবসাইটের ইউটিউব আজ গুগলের একটি সেবা। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, দশক আগেও ইউটিউব ছিলো একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। সেবাটির অমিত সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই এটি হজম করে ফেলে গুগল। তৎকালীন ইউটিউবের মতো ছোট-বড় সব স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠানকে হরহামেশাই কিনে নিচ্ছে গুগল, ইয়াহু, ফেসবুক, মাইক্রোসফটের মতো সব বড় প্রতিষ্ঠান। গত বছর দুয়েক সময়ের মধ্যে এক ইয়াহুই এমন স্টার্ট-আপ কিনে নিয়েছে ১৫টিরও বেশি। এমন স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান ছাড়াও প্রতিষ্ঠিত অনেক কোম্পানিকেও কিনে নেওয়ার নজির কম নেই। ল্যাপটপ নির্মাতা কমপ্যাককে যেমন কিনে নিয়েছিল এইচপি। মাইক্রোসফটের কাছে নকিয়ার বিক্রি হয়ে যাওয়ার ঘটনাও সাড়া ফেলেছে বিশ্বজুড়ে। মটোরোলার গুগলের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া, ফেসবুকের ইনস্ট্যাগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেওয়ার মতো সব ঘটনায় হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন সংঘটিত হয়েছে। এর বাইরেও প্রযুক্তিবিশ্বে আলোচিত বিকিকিনির খবর কম নেই। যেমন, এর মধ্যে বলতে হবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) হেডসেট নিয়ে কাজ করা অকুলাস রিফটের কথা। অকুলাস রিফট তাদের প্রথম ভিআর হেডসেট বাজারে নিয়ে আসার আগেই একে কিনে নেয় সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয়তম ওয়েবসাইট ফেসবুক। গত বছরের মার্চে এর জন্য ফেসবুককে খরচ করতে হয় ২০০ কোটি ডলার। এদিকে ফেসবুকই আবার ২০১২ সালের এপ্রিলে কিনেছিল ফটো শেয়ারিংয়ের অ্যাপ ইনস্ট্যাগ্রামকে। সেটার জন্যও ফেসবুককে ব্যয় করতে হয় ১০০ কোটি ডলার। এদিকে জনপ্রিয় ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম টাম্বলারকে ইয়াহু কিনে নিতে খরচ করেছিল ১১০ কোটি ডলার। আবার পেপ্যাল মূলত আলাদা সেবা হিসেবে পরিচালিত হলেও একে ২০০২ সালেই কিনে নেয় ইবে। ১৫০ কোটি ডলার এর জন্য ব্যয় করে ইবে। তবে ২০১৪ সালে আবার সিদ্ধান্ত হয় যে পেপ্যাল পৃথক পাবলিক ট্রেডিং কোম্পানি হিসেবে কাজ করবে এবং চলতি বছর থেকে তা কার্যকর হয়।
বছর সাতেক আগে ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ৭.৯ বিলিয়ন ডলারে এন্টারপ্রাইজ অ্যাপ্লিকেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সলিউশনে ওই সময়ের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিইএ সিস্টেমস ইনকর্পোরেশনকে কিনে নেয় ওরাকল। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির হাতে আসে সময়ের জনপ্রিয় ওয়েব লজিক সফটওয়্যার। আজকের দিনেও সফটওয়্যারটি ডেভেলপরাদের জন্য ফিউশন মিডলওয়্যার পণ্য হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। তবে বিইএ এখন ইতিহাসের অংশ।
বছর সাতেক আগে, ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ৭.৯ বিলিয়ন ডলারে এন্টারপ্রাইজ অ্যাপ্লিকেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সলিউশনে ওই সময়ের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিইএ সিস্টেমস ইনকরপোরেশন-কে কিনে নেয় ওরাকল। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির হাতে আসে সময়ের জনপ্রিয় ওয়েব লজিক সফটওয়্যার। আজকের দিনেও সফটওয়্যারটি ডেভেলপরাদের জন্য ফিউশন মিডলওয়্যার পণ্য হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। তবে বিইএ এখন ইতিহাসের অংশ।
এর দশক আগে ১৯৯৮ সালে, ষাটের দশকের শীর্ষ কমপিউটার সার্ভার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ইক্যুইপমেন্টকে ৯.৬ বিলিয়ন ডলারে কিনে নেয় কম্প্যাক। বিনিময়ে অধিগ্রহণের মাধ্যমে উত্তরাধিকার সূত্রে কম্প্যাক পেয়েছিল পিসি শিল্পে স্থবির হয়ে পড়া ডিইসির উচ্চ পরিচালন ব্যয় ও হাতেগোনা প্রত্যাশিত পণ্য, যা পরবর্তী সময়ে খুব একটা সুফল বয়ে আনেনি।
২০০৫ সাল। শোনা যাচ্ছিল ১৩.৫ বিলিয়ন ডলারে ডাটাস্টোরেজ কোম্পানি ভেরিতাস কিনতে যাচ্ছে অ্যান্টিভাইরাস জায়ান্ট সাইমেনটেক। করপোরেট ডাটা সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় একটি ওয়ান স্টপ শপ হয়ে উঠতেই এই পরিকল্পনা করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে এবং সাইমেনটেকের দরপতন ঘটে। এক পর্যায়ে ১০.৫ বিলিয়ন ডলারই সই। এরপরের দশকটি শুধুই হতাশার। অবশেষে দায়ের চাপ সামাল দিতে না পেরে মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয় সাইমেনটেক।
এবার ওরাকলের পথে ১০.৩ বিলিয়ন ডলারে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পিপলস সফট অধিগ্রহণের প্রবঞ্চনা। সে এক নাটকীয়তা বটে। অ্যান্টিভাইরাস ইস্যুতে ইউএস ডিপার্টমেন্টাল অব জাস্টিস থেকে পদক্ষেপ গ্রহণের আগে স্ববিরোধী দুইটি চুক্তি করেছিল ওরাকল। প্রত্যাখ্যাতও হয়। সবশেষে ২০০৪ সালের নভেম্বরে চুক্তির পরিসমাপ্তি ঘটে। পিপলস সফট এখনও রয়েছে ওরাকলের পোর্টফোলিওতেই।
১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইলেকট্রনিক ডাটা সার্ভিস ডিজিটাল ইক্যুইপমেন্ট। প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছর পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রস পেরটের সাধের প্রতিষ্ঠানটি ১৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনে নেয় এইচপি। চুক্তি সম্পাদনের আগ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত ভুগছিল। আর এখন এইচপি নিজেই তার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ব্যস্ত। এক পর্যায়ে কার্লি ফিরোনিয়ার সময়ে ২০০২ সালে পিসি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কম্প্যাককে কিনে নেয় হিউলেট প্যাকার্ড (এইচপি)। আর এই অধিগ্রহণ কর্মটি হয়েছিল ১৯ বিলিয়ন ডলারে। কিন্তু ওই সময়ে পিসি ব্যবসায় নিয়ে এইচপিও খুব একটা স্বস্তিতে ছিল না। ডিইসির সাথে একীভূত হয়ে আংশিকভাবে এই ব্যবসায় মন্দায় জড়িয়ে পড়েছিল। ফলে দেখা দেয় চরম বিপর্যয়। বেসামাল অবস্থায় ৩০ হাজারেরও বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করে।
২০০০ সালের জুন। ডটকম তখন পাখা মেলছে। এমন সময়ে ১৫ বিলিয়ন ডলারে অপটিক্যাল নেটওয়ার্কিং কম্পোনেন্ট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ই-টেক ডায়নামিকসকে কিনে নেয় অপটিক্যাল টেকনোলজি কোম্পানি জেডিএস ইউনিফেজ। শুরুতে বেশ ভালোই করেছিল একীভূতকরণে পটু এই কোম্পানিটি। ই-টেক চুক্তির পর ৪১ বিলিয়ন ডলারে কম্পোনেন্ট মেকার এসডিএলকে কিনে নেয়। বলতে গেলে জ্বলে উঠেছিল স্ফুলিঙ্গের মতো। কিন্তু এই জ্বলে ওঠা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গেল গ্রীষ্মে ভেঙ্গে দুই ভাগ হয়েছে। এর একটি অপটিক্যাল টেক মেকার লুমেনটাম এবং অপরটি হচ্ছে নেটওয়ার্ক সার্ভিস কনসালট্যান্সি ফার্ম-ভিয়াভি।
২০০০ সালের মার্চে ঘটে একই ধরনের আরেকটি অধিগ্রহণের ঘটনা। ২০ বিলিয়ন ডলারে ডোমেইন রেজিস্টার কোম্পানি নেটওয়ার্ক সলিউশন কিনে নেয় ই-মেইল সিকিউরিটি কোম্পানি ভেরিসাইন। নেটওয়ার্ক সলিউশন শুধু ডোমেইনই বিক্রি করত না। এটি ডটকম, ডটনেট, ডটঅর্গ এবং ডটটিএলডি দেখভাল করত। কিন্তু অধিগ্রহণের পর সিকিউরিটি অ্যাক্ট ভঙ্গের অভিযোগে সেই ক্ষমতা হারায় ভেরিসাইন।
জানুয়ারি, ২০০০। মিডিয়া জায়ান্ট হিসেবে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়ে ১৮১.৬ বিলিয়ন ডলারে টাইম ওয়ার্নারকে কিনে নেয় এওএল। কিন্তু আট বছরেই মোহভঙ্গ হয়। ২০০৯ সালে ছাড়াছাড়ি হয়ে উভয়েই ফিরে যায় স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে।
এভাবেই ২০১৩ সালে অ্যাপলের পেটে চলে যায় কিনেক্ট সেন্সর উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠান প্রাইম সেন্স। চমক সৃষ্টির এক বছরের মাথায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলারে ইসরায়েলের এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটিকে কিনে নেয় অ্যাপল। ২০১৪ সালের মার্চে ৩০ মিলিয়ন গানের ভা-ারসহ মিউজিক ডাটা ফার্ম ইকোনেস্ট কিনে নেয় স্পুটিফাই। ওই বছর জুলাইয়ে মোবাইল অ্যানালিটিক্যাল ফার্ম ফ্লারিকে কিনে নেয় ইয়াহু।
অপরদিকে ফ্ল্যাশ মেমরি নির্মাতা সানডিস্ককে কিনে নিচ্ছে হার্ডডিস্ক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল। বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা চলেছে বেশ কয়েক দিন। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান দুটি আনুষ্ঠানিকভাবে এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানায়। ১৯০ কোটি ডলারে এ অধিগ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয়। সানডিস্কের শেয়ারহোল্ডারেরা তাদের প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নগদ ৮৫ ডলার ১০ সেন্ট এবং ০.০১৭৬টি ওয়েস্টার্ন ডিজিটালের শেয়ার পাবে। ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা পরিষদ জানায়, হার্ডডিস্ক ড্রাইভ, সলিড স্টেট ড্রাইভ (এসএসডি), ক্লাউড ডাটা সেন্টার স্টোরেজসহ ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল ও সানডিস্কের বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য তথ্যকেন্দ্র ব্যবস্থায় নতুন উদ্যমে সেবা সরবরাহ করবে। একত্র হওয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান দুটি ব্যয় কমিয়ে একে অন্যের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখতে পারবে। আগামী এক বছরের মধ্যে অধিগ্রহণের প্রভাব প্রতিষ্ঠানের আয়ে পড়তে শুরু করবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে ওয়েস্টার্ন ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভ মিলিগান বলেন, ‘একত্র হওয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি আগের তুলনায় অধিক দক্ষতায় কাজ করার সুযোগ পাবে। একই সাথে স্টোরেজ শিল্পে বড় পরিবর্তন আনবে।’
অধিগ্রহণ মিছিলে পিছিয়ে নেই ডিজিটাল সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ফেসবুক। ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটস অ্যাপ, অক্যুলাস ভিআরসহ অর্ধশতাধিক কোম্পানি নিজের পকেটে পুরেছে। ডেলের ইএমসিকে কিনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত প্রযুক্তিবিশ্বে সবচেয়ে বড় বেচাকেনার খবর ছিল হোয়াটসঅ্যাপকে ফেসবুকের কিনে নেওয়া। গত বছরের অক্টোবরে হোয়াটসঅ্যাপকে কিনে নিতে ২২ বিলিয়ন বা দুই হাজার দুইশ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করতে হয় ফেসবুককে। ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং একটি অ্যাপের জন্য এক বিপুল অংকের অর্থ ফেসবুক খরচ করবে, সেটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। ফেসবুকের জন্য এখনও পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ খরচের কেনার ঘটনা।
আর অধিগ্রহণ নেশায় যেন বুঁদ হয়ে আছে টেক জায়ান্ট গুগল। শুরুতে সার্চ ইঞ্জিন হিসেবেই প্রযুক্তিবিশ্বে নিজেদের আধিপত্য ভালোভাবেই বজায় রেখেছিল। এরপর অনলাইননিভর্র আরও বেশকিছু সেবা নিয়ে আসে তারা। এর মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম, ক্রোম ব্রাউজারের মতো সব সফটওয়্যারের কল্যাণে গুগল আধুনিক জীবনে এক অনস্বীকার্য নামে পরিণত হয়। পেপ্যালের তিন সাবেক কর্মী ২০০৫ সালে তৈরি করে ইউটিউব নামের এক ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস। শুরু থেকেই সাড়া ফেলতে শুরু করে ইউটিউব। আর এর সম্ভাবনার জায়গাটি খুব ভালোভাবেই ধরতে পারে গুগল। এর যাত্রার এক বছরের মধ্যেই একে কিনে নেয় অনলাইন জায়ান্ট গুগল। আর এর জন্য গুগল তখনই খরচ করে ১.৬৫ বিলিয়ন ডলার বা ১৬৫ কোটি ডলার। ইউটিউবের আজকের যে জনপ্রিয়তা তৈরি হবে সময়ের সাথে, সেটা বোধহয় তখনই আঁচ করতে পেরেছিলেন গুগলের দুই প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন ও ল্যারি পেজ। একইভাবে ২০০৭ সালের জুলাইয়ে ৬২৫ মিলিয়ন ডলারে ই-মেইল এন্টি স্প্যাম প্রতিষ্ঠান পোস্টিনি-কে কিনে নেন তারা। ওই বছরই ৩.১ বিলিয়ন ডলারে অনলাইন অ্যাডভারটাইজিং নেটওয়ার্ক ‘ডাবল ক্লিক’ এর মালিকানা বুঝে পায়। ২০০৯ সালের নভেম্বরে মোবইল ফোনের জন্য বিজ্ঞাপন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাডমোব-কে অধিগ্রহণ করে ৭৫০ মিলিয়ন ডলারে। একই ধরনের প্রতিষ্ঠান অ্যাডমেল্ডকে নিজেদের করে নেয় ২০১১ সালের আগস্ট মাসে। হার্ডওয়্যারেও গুগলের আগ্রহ ছিল অনেক দিনের। তারই চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটে ২০১১ সালে। এক সময়কার বিখ্যাত মোবাইল নির্মাতা মটোরোলার মোবাইল নির্মাণ ইউনিটকে কিনে নেয় তারা। স্মার্টফোনের বাজারে অ্যাপলকে টেক্কা দিতেই মটোরোলা মোবিলিটির দিকে হাত বাড়িয়েছিল গুগল। এর জন্য তাদের ব্যয় করতে হয় পাক্কা সাড়ে ১২ বিলিয়ন ডলার বা এক হাজার ২৫০ কোটি ডলার। এই পরিকল্পনা অবশ্য গুগলের জন্য তেমন একটা কাজে লাগেনি। কেননা, সাড়ে তিন বছরের মাথাতেই মটোরোলা মোবিলিটিকে আবার গুগল বিক্রি করে দেয় লেনোভোর কাছে। এবারে তারা মটোরোলার দাম পায় ২.৯১ বিলিয়ন ডলার বা ২৯১ কোটি ডলার। ছোট-বড় স্টার্ট-আপ কেনার দিকে গুগলের মনোযোগ শুরু থেকেই ছিল। ইন্টারনেটের প্রসারের সাথে সাথে স্মার্ট ডিভাইস ও স্মার্ট সিস্টেমের দিকে প্রযুক্তিবিশ্ব ঝুঁকে পড়তে থাকলে এসব প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকেই কিনেছে গুগল। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কোম্পানিটির নাম নেস্ট ল্যাব। স্মার্ট হোম নিয়ে কাজ করা নেস্ট বেশকিছু চমকজাগানো প্রযুক্তি বাজারে নিয়ে আসলে শেষ পর্যন্ত গুগল তাদের কিনে নেয় গত বছরের জানুয়ারিতে। এর জন্য গুগলকে ব্যয় করতে হয় ৩.২ বিলিয়ন বা ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার। আর ২০১২ সালের মে মাসে ১২.৫ বিলিয়ন ডলারে কিনে নেয় স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মটোরোলা মোবিলিটি। একই বছর আগস্টে ৪৫০ মিলিয়ন ডলারে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান ওয়াইল্ড ফায়ার ইন্টারঅ্যাক্টিভকে হস্তগত করে। একইভাবে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ৩.২ বিলিয়ন ডলারে নেস্ট এবং ৬৫০ মিলিয়ন ডলারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড মেশিন লার্নিং প্রতিষ্ঠান ডিপমাইন্ড টেকননোলজি অধিগ্রহণ করে এই টেক টাইকুন।
২০১১ সালে মাইক্রোসফটের কাছে স্কাইপের বিক্রি হয়ে যাওয়ার ঘটনাটিও সাড়া ফেলে প্রযুক্তিবিশ্বে। স্কাইপ ততদিনে ভিডিও এবং চ্যাটিংয়ে জনপ্রিয়তম সেবার আসন দখল করে নিয়েছে। ফলে স্কাইপের দিকে লক্ষ রেখেছিল অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই। তবে শেষ পর্যন্ত স্কাইপকে কিনে নেয় মাইক্রোসফট। এর জন্য তাদের খরচ করতে হয় ৮.৫ বিলিয়ন ডলার বা ৮৫০ কোটি ডলার। বিকিকিনির তালিকায় আরেক চমকের নাম নকিয়া। স্মার্টফোন বাজার দখল করতে শুরু করার আগ পর্যন্ত ফিনল্যান্ডের মোবাইল নকিয়াই ছিল মোবাইল নির্মাতার শীর্ষে। উন্নত মোবাইল হ্যান্ডসেটের প্রায় সমার্থকেই পরিণত হয়েছিল নকিয়া। তবে স্মার্টফোন বাজার দখল করতে শুরু করায় দ্রুতই বাজার হারাতে থাকে নকিয়া। একদিকে অ্যাপলের আইফোন, অন্যদিকে অ্যান্ড্রয়েড নির্ভর নানা ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনতএই প্রবণতায় নকিয়া কখনই স্মার্টফোনের বাজারে সুবিধা করতে পারেনি তাদের উইন্ডোজ ফোন দিয়ে। ফলে নকিয়ার অবস্থা ক্রমেই সঙ্গীন হতে থাকে। এই অবস্থা থেকে নকিয়াকে উদ্ধার করে স্মার্টফোনের বাজারে নিজেদের একটি অবস্থান তৈরি করতে নকিয়াকে কেনার সিদ্ধান্ত নেয় মাইক্রোসফট। শেষ পর্যন্ত ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ৭.২ বিলিয়ন বা ৭২০ কোটি মার্কিন ডলারে নকিয়া বিক্রি হয়ে যায় মাইক্রোসফটের কাছে।
গুঞ্জন চলছিল অনেকদিন থেকেই। সব গুঞ্জনের অবসান ঘটে চলতি অক্টোবরের ১২ তারিখে। ওইদিনই ডেল আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, তারা কিনে নিতে যাচ্ছে ডাটা স্টোরেজ কোম্পানি ইএমসিকে। আর এর জন্য তারা ব্যয় করতে যাচ্ছে ৬৭ বিলিয়ন ডলার বা ছয় হাজার সাতশ কোটি ডলার। এতে করে প্রযুক্তিবিশ্বে সবচেয়ে খরুচে কেনার রেকর্ড গড়েছে ডেল। পিসি নির্মাতা হিসেবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কোম্পানি ডেল সাম্প্রতিক সময়ে চাপের মুখে ছিল। বিশ্বব্যাপী পিসির কমে যাওয়াতে অনেক কোম্পানিই পিসির দিক থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। তাই আগামীর প্রযুক্তিবিশ্বের দিকে নজর রেখেই ডেল নিজেদের ব্যবসায়িক কৌশল বদলে নিতে এবং পরিধি বাড়াতে ইএমসিকে কিনে নিয়েছে ডেল। ভবিষ্যতের প্রযুক্তিবিশ্বে ইএমসিকে কিনে নেওয়া নতুন এই ডেল একটি নজির হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন ডেলের প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ডেল।
মূলত ম্যাকিন্টোশ সিস্টেমের পাশাপাশি আইফোন আর আইপ্যাডই অ্যাপলের মূল আকর্ষণের জায়গা ছিল। তবে এর বাইরেও আইপড দিয়ে শুরু থেকেই সংগীতের জগতের সাথে যোগাযোগের সূত্র ধরে রেখেছিল অ্যাপল। এর সাথে আইটিউনস যুক্ত হয়ে অনলাইন সংগীতের বাজারে অ্যাপলের অবস্থান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এই অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে সংগীত জগতের আরেক সুপরিচিত নাম বিটসকে কিনে নেয় তারা। একদিকে বিটসের অডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস, অন্যদিকে বিটসের বিশ্বমানের মিউজিক ডিভাইস দুটিকেই কাজে লাগানোর উদ্দেশ্য নিয়ে বিটসকে কিনতে ৩০০ কোটি ডলার খরচ করে অ্যাপল।

প্রযুক্তিবিশ্বে নতুনের আবাহন এবং
প্রযুক্তি দুনিয়ায় অধিগ্রহণ আর একীভূতকরণের এই গল্পটি এখন উপন্যাসে রূপ নিয়েছে। গুগল, ফেসবুক, টুইটার, অ্যামাজন, ই-বে ইত্যাদির বাইরেও সেই নতুন উপন্যাসে ২০০৯ সালে যুক্ত হয় নতুন একটি পালক। ডাটার গুরুত্ব বাড়ার সাথে এটি সংরক্ষণে যখন ব্যয় বাড়তে থাকে, ঠিক তখনই ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিপুল তথ্য সংরক্ষণের জন্য ওয়াল স্ট্রিটে নতুন ধারার ডাটার স্টোরেজের ব্যবস্থা নিয়ে অভিষেক ঘটে সিলিকন ভ্যালির স্টার্টআপ পিওর স্টোরেজ। এরা উপহার দেয় সলিড স্টেট ড্রাইভের চেয়ে আকারে ছোট, অধিক শক্তিশালী এবং ১০ গুণ ক্ষেপ্রগতিতে ডাটা পরিবহন ক্ষমতাধর ফ্ল্যাশ ড্রাইভ। স্টার্টআপ থেকে জন্ম নেয়া এই প্রতিষ্ঠানটির এখন বাজার মূল্য ৩ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে সম্প্রতি পিওর স্টোরেজের মতো একই ধরনের প্রতিষ্ঠান ইএমসি কিনে নেয় ডেল। একই সময়ে লাস ভেগাসের একটি অনুষ্ঠানে নতুন ধারার তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা বাজারে আনার ঘোষণা দেয় অ্যামাজন। তাদের ঘোষিত সুবিধায় তথ্য সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো বাড়তি ডিভাইস সেটআপ করতে হচ্ছে না। শুধু অনলাইনে তথ্য সরবরাহ করলেই চলবে। আর এই বার্তাটা খুবই সোজা। তথ্য সংরক্ষণের জন্য দশকব্যপী ইএমসির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে যে হার্ডওয়্যার কেনা হতো, তার দিন ফুরালো। তথ্য সংরক্ষণ সেবা সফটওয়্যারের জন্যও আর দ্বারস্থ হতে হবে না হার্ডওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে। নতুন প্রযুক্তি নিয়ে সেখানে হানা দিচ্ছে ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগল, আমাজান। তথ্য সংরক্ষণ ডিভাইস বিক্রির মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জনের এই খাতটিতে এবার ভাগ বসাতে এসেছে ক্লাউড কমপিউটিং প্রতিষ্ঠানগুলো। সঙ্গত কারণেই বাড়তি পয়সা, জায়গা ও দেখভালের যন্ত্রণা এড়াতে ডেল, এইচপি বা আইবিএমের কাছ থেকে তথ্য সংরক্ষণের জন্য হার্ডওয়্যার কেনায় অনাগ্রহী হয়ে উঠছে প্রযুক্তিভোক্তারা। কেননা, ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে তারা যেকোনো প্রান্ত থেকেই তথ্য সংরক্ষণের সুবিধা দিচ্ছে গ্রাহককে নতুন নতুন টেক কোম্পানিগুলো। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহক অনাগ্রহে ব্যবসায় ঝুঁকিতে থাকা এক সময়ের ডাকসাইটে ইএমসির মতো প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করেছে ডেল। ক্লাউড সেবার অভিযাত্রায় ইএমসির মতো একই ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে খোদ ডেলসহ আইবিএম, এইচপি এবং সিসকো। সেই সুযোগ নিয়ে বেশি গতিতে তথ্য বিনিময়ে সক্ষম হার্ডড্রাইভের বিকল্প অনলাইন স্টোরেজ সেবা নিয়ে গ্রাহক আকর্ষণ করছে অ্যামাজন। একইভাবে প্রযুক্তি সেবার নবধারার টেক ব্যবসায় দখলে এগিয়ে রয়েছে গুগল এবং ফেসবুক। হার্ডওয়্যার নির্ভরতা কমিয়ে নিজেরাই তথ্য সংরক্ষণের জন্য নতুন ব্যবস্থা চালু করে তা সবার সাথে শেয়ার করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এতে ব্যবসায় স্থাপন খরচ যেমন কমেছে, তেমনি তীব্র প্রতিযোগিতায় খরচ কমিয়ে ব্যবসায়ী পর্যায়ে মুনাফা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করেছে। এমন সঙ্কট মুহূর্তের পেছনে মূল কারণ হিসেবে প্রযুক্তিকে নিজেদের ঘরে বন্দি রাখার ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাদের মতে, সেবার বিনিময়ে ডিভাইস কেনার শর্ত থেকে নিস্তার পেতে স্বাভাবিকভাবেই ডেল, এইচপি, সিসকোর মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিরাগভাজন হয়েছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো। অপরদিকে ক্লাউড প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজেদের ব্যবসায় সম্প্রসারণের পাশাপাশি তা সহজেই সবার জন্য ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়ে বাজার দখল করছে অ্যামজান, ফেসবুক, গুগল ও মাইক্রোসফট। এ বিষয়ে ব্লুমবার্গের ব্যবসায় বিষয়ক ফিচার লেখক এলন মাস্ক তির্যক সুরে বলেছেন, বলতে গেলে প্রহেলিকার পথে হাঁটছে এক সময়ের প্রযুক্তি-দৈত্যরা। ভেতরে ভেতরে ধুঁকে ধুঁকে না মরে এখন আইবিএম, এইচপি, ইএমসি, ডেল ও সিসকো একীভূত হলেই তো পারে! তা না হলে ক্লাউড শরে বিদ্ধ হতে পারে তারা।
একইভাবে সময়ের সাথে তাল মেলাতে না পারায় কর্মী ছাঁটাই করতে যাচ্ছে ভিডিও গেমস অ্যাংরি বার্ডস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোভিও। ফিনল্যান্ডভিত্তিক এই প্রযুক্তি কোম্পানিটি জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানের এক-তৃতীয়াংশ কর্মী ছাঁটাই করবে তারা। গেমস, মিডিয়া ও কনজিউমার প্রোডাক্টসে মনোনিবেশ বাড়িয়ে অন্যান্য ব্যবসায় থেকে সরে আসতে চাইছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এ কারণেই কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত আগস্টে প্রতিষ্ঠানটি এ বছরের জন্য মুনাফা কমার পূর্বাভাস দেয়। সে সময় ২৬০ জন পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা জানানো হয়। সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কর্মী ছাঁটাই করা হবে ২১৩ জন। ২০০৯ সালে অ্যাংরি বার্ডসের পর আর কোনো হিট গেম তৈরি করতে পারেনি রোভিও। এতদিন অ্যাংরি বার্ডসের ফল পেলেও আয় বাড়ানোর নতুন কোনো মাধ্যম তৈরি হচ্ছে না। ফিনল্যান্ড থেকেই সব কর্মী ছাঁটাই করা হবে। উল্লেখ্য, গত বছর ১১০ জন কর্মী ছাঁটাই করে রোভিও।

এগিয়ে যাচ্ছে অ্যামাজন
তবে রোভিও, ডেল, এইচপির চেয়ে ভিন্ন পথে হেঁটে ধীরে ধীরে এদের চেয়ে বয়সে নবীন অনেক প্রতিষ্ঠানই এগিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে অনলাইন কেনাকাটার পাশাপাশি অন্য অনেক খাতেই ব্যবসায় প্রসার করছে অ্যামাজন। তার মধ্যে ওয়েব সেবা খাতকে একটু বেশিই গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। সাম্প্রতিক অগ্রগতি তাদের আশাবাদী করবে বলেই মনে করছেন বিশেস্নষকেরা।
সপ্তাহখানেক আগে অ্যামাজনের ওয়েব সেবার প্রধান অ্যান্ডি জ্যাসি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রযুক্তি সম্মেলনে বলেছিলেন, তাদের নতুন সেবাটি ওরাকলের গ্রাহকদের আকৃষ্ট করবে। এডবিস্নউএস (অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস) ডাটাবেজ মাইগ্রেশন সার্ভিসটিতে এ অল্প সময়ে এক হাজার প্রতিষ্ঠান গ্রাহক হিসেবে যোগ দিয়েছে বলে সম্প্রতি জানান জ্যাসি। অল্প সময়ে সেবাটির গ্রাহকসংখ্যার এ বৃদ্ধিকে সফলতা হিসেবেই দেখছেন অ্যামাজনের এ নির্বাহী।
এদিকে অরোরাসহ বেশকিছু সেবার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ক্লাউড কমপিউটিং খাত পরিচালনা করছে। এডবিস্নউএস ডাটাবেজ মাইগ্রেশন সার্ভিসটি প্রতিষ্ঠানের ডাটাবেজ সেবার গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য ডাটাবেজ খাতের নিজস্ব গ্রাহকদের ওপর ওরাকলের শক্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। গ্রাহকেরা সেবাটি পছন্দ করেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশন চালাতে এটি ব্যবহার করছেন। তবে ওরাকল সেবাটি যেভাবে সরবরাহ করে এবং এর জন্য যে পরিমাণ চার্জ করে, তা গ্রাহকেরা খুব সহজভাবে নেন না বলেই মনে করেন অনেকে। ডাটাবেজ গ্রাহকদের জন্য ওরাকলের নীতিও অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু তাই বলে অন্য সেবায় স্থানান্তরের খুব বেশি সুযোগ নেই।
এসব কারণেই অ্যামাজনের উন্নতি এখন খুঁজতে হয় না। সঙ্গত কারণেই ডাকসাইটে প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এরা ভালো করছে। প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলো যখন কর্মী ছাঁটাই করছে, তখন ছুটির মৌসুমে এক লাখ কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন। প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানায়, গত আগস্ট থেকে তারা ছুটির মৌসুমের কথা বিবেচনায় ২৫ হাজার পূর্ণকালীন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। আরও বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। অ্যামাজনের উত্তর আমেরিকা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক রথ জানান, গত বছরের ছুটির মৌসুমে যে খ-কালীন কর্মী নেয়া হয়েছিল, তারা পূর্ণকালীন হিসেবে কাজ করেছেন। গত বছর খ-কালীন হিসেবে ৮০ হাজার কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রে অ্যামাজনের প্রায় ৯০ হাজার কর্মী কাজ করছেন।
আসছে বড়দিনের মতো উৎসবের মৌসুম। এ সময়ে মানুষ প্রিয়জনদের উপহার দিতে পছন্দ করে। কয়েক বছর ধরে এ ধরনের উৎসব মৌসুমে উপহার কিনতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। চলতি বছর তাদের অবস্থা এতটাই রমরমা যে, পণ্য সরবরাহে প্রয়োজনীয় কর্মী পাচ্ছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতে ই-কমার্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো চলমান উৎসব মৌসুমে সরবরাহ কর্মী নিয়োগ দিতে চাইছে। কিন্তু তারা যে পরিমাণ কর্মী চাচ্ছে, বাস্তবে পাচ্ছে তার চেয়ে অনেক কম। এক সূত্রে জানা যায়, ভারতের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সরবরাহ কর্মী সঙ্কট চলতি উৎসব মৌসুমে ৭০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানের একটি বড় জায়গা হিসেবে ই-কমার্স খাত এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

ক্ষমতা হারাচ্ছে আইবিএম
চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনসের (আইবিএম) রাজস্ব আয় ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯২৮ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকেরা প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় ১ হাজার ৯৬২ কোটি ডলার হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, রাজস্ব আয় কমার পেছনে ডলারের শক্তিশালী মান বড় ভূমিকা রেখেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়েও কমেছে আইবিএমের রাজস্ব আয়। ফলে তারা বার্ষিক মুনাফার পূর্বাভাসও কমিয়ে এনেছে। এ নিয়ে টানা ১৪তম প্রান্তিকে রাজস্ব আয় কমল মার্কিন প্রতিষ্ঠানটির।
ছোটখাটো অনেক ব্যবসায় থেকেই নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ক্লাউড কমপিউটিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতেও ভালো করতে পারছে না তারা। অন্যান্য দেশের মধ্যে চীনেই আইবিএমের অবস্থা তুলনামূলক বাজে। বেশকিছু নতুন চুক্তির কারণে দেশটিতে তাদের খরচ বেড়েছে। এতে দেশটিতে তাদের রাজস্ব আয় ১৭ শতাংশ কমেছে। এ বিষয়ে আইবিএমের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মার্টিন স্ক্রয়েটার এক বিবৃতিতে জানান, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনে সম্মিলিতভাবে বিক্রি কমেছে ৩০ শতাংশ। অপর এক বিবৃতিতে নিউইয়র্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের অর্ধেকের বেশি আয় আসে দেশের বাইরে থেকে। কিন্তু এ বছর বৈশ্বিক বাজারে শক্তিশালী ডলারের কারণে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। এদিকে অবস্থা ভালো না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি তাদের বার্ষিক মুনাফার পূর্বাভাসও কমিয়ে নিয়েছে। তাদের হিসাব মতে, বছর শেষে শেয়ারপ্রতি পরিচালন মুনাফার পরিমাণ দাঁড়ানোর কথা ছিল ১৫ ডলার ৭৫ সেন্ট থেকে ১৬ ডলার ৫০ সেন্টের মধ্যে। কিন্তু এখন তারা এ পূর্বাভাস কমিয়ে ১৪ ডলার ৭৫ সেন্ট থেকে ১৫ ডলার ৭৫ সেন্টের মধ্যে নিয়ে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি এখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান ওরাকল ও মাইক্রোসফটের মতো হার্ডওয়্যার থেকে ক্লাউডের দিকে ঝুঁকছে। এদিকে সেলসফোর্স ও অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটভিত্তিক সফটওয়্যার ও সেবা বিক্রিতে অনেকখানি এগিয়েছে। তাদের ওয়েব সফটওয়্যার ইউনিটের সাথে বাজারে টেক্কা দিতেই ক্লাউডে ঝুঁকছে ওরাকল, মাইক্রোসফট ও আইবিএমের মতো প্রতিষ্ঠান। এ পরিস্থিতির সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে চেষ্টা করে যাচ্ছে আইবিএম। তবে এজন্য সময়ের প্রয়োজন বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এদিকে রাজস্ব আয় কমার খবরে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এক কোম্পানিকে অন্য কোম্পানির কিনে নেওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে ছোট ছোট কোম্পানিগুলোকে বড় কোম্পানিরা হরহামেশাই কিনে নিতে থাকে। প্রযুক্তিবিশ্বে এই ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নতুন এবং সম্ভাবনাময় স্টার্ট-আপগুলোকে কিনে নেওয়ার জন্য ওঁত পেতে থাকে বড় বড় কোম্পানিগুলো। কিন্তু হালে নতুনদের পুরো হজম করতে গিয়ে বেগ পেতে হচ্ছে। বাজার যুদ্ধে টিকে থাকতে অধিগ্রহণের থেকে ঝুঁকছে একীভূতকরণ পক্রিয়ায়। পুরোনো টেক জায়ান্টরা দ্যুতি হারালেও নতুন নতুন চমক নিয়ে বয়সে নবীন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ এগিয়ে যাচ্ছে

লড়ছে মাইক্রোসফট
অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো যখন নতুন কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে, তখন ব্যয় কমাতে কর্মী ছাঁটাই প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে মাইক্রোসফট। ৭ হাজার ৮০০ জনের পর গত মাসের মাঝামাঝি আরও এক হাজার কর্মী ছাঁটাই করল প্রতিষ্ঠানটি। গত জুলাইয়ে ৭ হাজার ৮০০ কর্মী ছাঁটাই করা হবে বলে ঘোষণা দেয় মাইক্রোসফট, যা তাদের মোট কর্মীবাহিনীর ৭ শতাংশ। ব্যয় কমাতেই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সত্য নাদেলা এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন করে এক হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হলো মাইক্রোসফট থেকে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত সপ্তাহে অনেকটা নীরবেই কর্মী ছাঁটাই করে মার্কিন এই প্রতিষ্ঠানটি। এর আগের কর্মী ছাঁটাই প্রক্রিয়ার প্রায় পুরোটাই হয়েছে নকিয়া ইউনিট থেকে। তবে সাম্প্রতিক কর্মী ছাঁটাই নকিয়া ছাড়া অন্যান্য ব্যবসায় থেকেও করা হয়েছে। রয়টার্সও তাদের এক প্রতিবেদনে মাইক্রোসফটের কর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়টি জানায়। এ বিষয়ে মাইক্রোসফটের সংশ্লিষ্ট কারও সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
মাইক্রোসফট সম্প্রতি তাদের তৃতীয় প্রান্তিকের আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, তাদের রাজস্ব আয়ের পরিমাণ পূর্বাভাসের চেয়ে ভালো। বিশেষ করে ক্লাউড ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটির আয় বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে জানানো হয়। উইন্ডোজ সার্ভার ও অ্যাজারের মতো ক্লাউড প্লাটফর্ম থেকে মাইক্রোসফটের রাজস্ব আয় বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বেড়েছে ৮ শতাংশ। এতে খাতটি থেকে তাদের আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৯০ কোটি ডলারে। চলতি প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) খাতটি থেকে তাদের রাজস্ব আয় ৬২০ থেকে ৬৩০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে বলে আশা করছে মাইক্রোসফট। প্রসঙ্গত, প্রযুক্তি খাতের প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই গত এক বছর বা এরও বেশি সময় ধরে খরচ কমানোর জন্য কর্মী ছাঁটাইয়ের কৌশল গ্রহণ করেছে। এতে কর্মসংস্থান ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। ডাটাবেজের মতো খাতে এক সপ্তাহে এক হাজার গ্রাহক যোগ হওয়াকে বিশেষ কিছু হিসেবে দেখতে নারাজ অনেক বিশেস্নষক। কিন্তু এ ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অ্যামাজন ও ওরাকলের মধ্যকার প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে, তা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটি তাদের অরোরা ডাটাবেজ সেবার গ্রাহক বাড়ছে বলেও উল্লেখ করে। তবে সেবাটির গ্রাহকসংখ্যা বা এ নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য এখনও জানায়নি মার্কিন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ও ডিভাইস বিভাগের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট টেরি মেয়ারসন আসুসের হলোলেন্সের নিজস্ব সংস্করণ তৈরির সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা করেন। গত মাসে উইন্ডোজ ১০ ইভেন্টের পর থেকেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বিষয়ে জোর দিতে শুরু করেছে মাইক্রোসফট। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি আগামী বছরের শুরুর দিকে ডিভাইসটি বাজারে আনতে পারে। এর দাম পড়বে ৩ হাজার ডলারের মতো।
মাইক্রোসফট বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট তৈরির বিষয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে আসুসের পাশাপাশি এসার, ডেল, এইচপিসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেটে যাতে উইন্ডোজ সমর্থন করে, সেজন্যই কাজ করে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। সম্প্রতি বিবিসিকে দেয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে হলোলেন্সের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন মাইক্রোসফট সিইও সত্য নাদেলা। হলোলেন্স নিয়ে আপাতত পাঁচ বছরের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। এ সময়ের মধ্যে প্রথম ডিভাইসটি ছাড়া হবে ডেভেলপারদের জন্য। সাধারণ গ্রাহকদের জন্য বাজারে ছাড়ার আগে ডিভাইসটি ব্যবসায় খাতে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি। মাইক্রোসফট চাচ্ছে তাদের ডিভাইসের পাশাপাশি অন্য প্রতিষ্ঠানের তৈরি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেটেও যাতে উইন্ডোজ সমর্থন করে। এজন্যই তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা চালাচ্ছে। এর মধ্যে আসুস হলোলেন্সের নিজস্ব সংস্করণ তৈরিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এজন্য মাইক্রোসফটের সাথে আলোচনা চালাচ্ছে তাইওয়ানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি।

বাড়ছে গুগল শাসন
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ। এ সময়ে তাদের মোট রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৮৬৮ কোটি ডলার। আবার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ৫১০ কোটি ডলারের শেয়ার বাই ব্যাক করার পরিকল্পনা করছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে অ্যালফাবেটের নিট মুনাফা দাঁড়ায় ৩৯৮ কোটি ডলার বা শেয়ারপ্রতি ৫ ডলার ৭৩ সেন্টে। আগের বছরের একই সময়ে আয়ের এ পরিমাণ ছিল ২৭৪ কোটি ডলার বা শেয়ারপ্রতি ৩ ডলার ৯৮ সেন্ট। কিছু খরচ বাদ দিতে পারলে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারপ্রতি ৭ ডলার ৩৫ সেন্ট আয় করতে পারত বলে জানায়।
বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অ্যালফাবেটের রাজস্ব ১৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৮৬৮ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। সার্চ ট্রাফিক সংক্রান্ত কারণে অ্যাপলসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে বড় অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করতে হয় অ্যালফাবেটকে। এ হিসাব বাদ দিলে তাদের রাজস্ব আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৫০৪ কোটি ডলার। সেলফোনের সার্চ সেবা থেকে এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির আয় অনেকখানি বেড়েছে। পাশাপাশি খরচ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগও ইতিবাচক ফল দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো তাদের বিপুলসংখ্যক শেয়ার কিনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ ধরনের ঘোষণায় তাদের শেয়ার দর ৯ শতাংশ বেড়েছে। ৫১০ কোটি ডলারের শেয়ার কিনে নেয়ার সিদ্ধামেত্ম অনেকেই অবাক হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির নগদ রয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের মতো। অনেক দিন ধরেই বিশেস্নষক ও বিনিয়োগকারীরা শেয়ারহোল্ডারদের কিছু অর্থ পরিশোধের তাগাদা দিয়ে আসছেন।
গুগল তার মূল প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে ব্যবসায়ের বিভিন্ন ধারায় নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোরই চেষ্টা করছে। নেস্টের মতো স্মার্টহোম ব্যবসায় থেকে সার্চ, ইউটিউব ও অ্যান্ড্রয়িডকে পৃথক করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান হিসেবে অ্যালফাবেটের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গুগলের নামের সব শেয়ার অ্যালফাবেটের নামে করে ফেলা হয়েছে। তবে অ্যালফাবেট পরিচালনা পর্ষদের সব সদস্য এবং শেয়ারের মালিকানা একই আছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা জানান, অ্যালফাবেট নামে শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হলো। বাকি সব কার্যক্রম আগের মতোই আছে। সেখানে কোনো পরিবর্তন নেই। এটি একটি আইনগত পরিবর্তন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের আর্থিক প্রতিবেদন যখন প্রকাশ করবে, তখন কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দেয়া হয়। সেখানে গুগল এবং অ্যালফাবেটের আর্থিক বিবরণী আলাদাভাবে প্রকাশ করা হবে। একটি হবে গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাইয়ের নামে। অন্যটি অ্যালফাবেটের প্রধান নির্বাহী ল্যারি পেজের নামে। তবে গুগলের সব সেবা আগের মতোই থাকছে। সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে না বলে জানান গুগলের এক মুখপাত্র। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মানের ওঠানামা প্রতিষ্ঠানটির গত প্রান্তিকের রাজস্ব আয়ে প্রভাব ফেলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়। মুদ্রার ওঠানামাকে বিবেচনায় না আনলে তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় হয়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ। যেখানে গত প্রান্তিকে এ হার ছিল ১৮ শতাংশ। সার্চ ব্যবসায় গুগলের আয়ের বড় একটি উৎস। মোবাইল ডিভাইসের ব্যবহার বাড়ায় মোবাইল সার্চের বিজ্ঞাপন প্রচারের হার বেড়েছে। আর এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় গুগলের সার্চ সেবাই লাভবান হচ্ছে বেশি।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - নভেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস