লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
গণিত জগতের কিছু মজার তথ্য
গণিত জগতের কিছু মজার তথ্য
এক : আমরা জানি মজার সংখ্যা ‘পাই’-এর মান ৩.১৪। আমরা যদি এর মান উল্টো করে ইংরেজিতে লিখি তবে ইংরেজিতে pie লেখা হয়ে যায়। ওপরের ছবিটি দেখুন।
দুই : Hundred শব্দটি আসলে নেয়া হয়েছে Hundrath শব্দ থেকে, যার অর্থ ১২০, অবশ্যই ১০০ নয়।
তিন : আমরা যদি ১০৮৯-কে ৯ দিয়ে গুণ করি, তবে গুণফল হয় ৯৮০১, যা মূল সংখ্যাটিকে উল্টিয়ে লিখলেই পাওয়া যায়। একই ধরনের মজার গুণফল আমরা পাই ১০৯৮৯ বা ১০৯৯৮৯ কিংবা ১০৯৯৯৮ বা ১০৯৯৯৯৮ বা .... এমনি সব সংখ্যার বেলায়ও। এসব সংখ্যাকে ৯ দিয়ে আলাদা আলাদাভাবে গুণ করলে প্রতি ক্ষেত্রে গুণফল পাওয়া যাবে মূল সংখ্যাটিকে উল্টিয়ে লিখে। যেমন- ১০৯৯৯৯৮-কে ৯ দিয়ে গুণ করলে গুণফল হবে ৮৯৯৯৯০১, যা মূল সংখ্যাটির উল্টা রূপ।
চার : ২১৯৭৮ সংখ্যাটিকে ৪ দিয়ে গুণ করে গুলফল পেয়ে যাব সংখ্যাটিকে উল্টো দিক থেকে লিখে। এর অর্থ ২১৯৭৮ ক্ম ৪ = ৮৭৯১২।
পাঁচ : আমরা যখন যেকোনো বর্গসংখ্যাকে ৮ দিয়ে ভাগ করি, তখন সব সময় ভাগশেষ পাব ০, ১ অথবা ৪।
ছয় : ২ এবং ০ হচ্ছে এমন দুটি পূর্ণসংখ্যা, যা নিজের সাথে নিজেকে যোগ বা গুণ করলে একই ফল দেয়। যেমন- ২ + ২ = ২ ক্ম ২। তেমনি ০ + ০ = ০ ´ ০। তবে এমন অসংখ্য সংখ্যাজোড় রয়েছে যেগুলোর যোগফল আর গুণফল সমান। যেমন- ৩ ও ৩/২। কারণ ৩ + ৩/২ = ৩ ক্ম ৩/২। এখানে যোগফল কিংবা গুণফল সমান ৯/২। একইভাবে ৯ + ৯/৮ = ৯ ´ ৯/৮, এক্ষেত্রে যোগফল বা গুণফল ৮১/৮। এ ধরনের অসংখ্য জোড়সংখ্যা আছে যেগুলোর যোগফল বা গুণফল একই।
সাত : দাবা খেলার একটি বোর্ড ৩২টি ডেমিনো দিয়ে পূরণ করা যায়
১২, ৯৮৮, ৮১৬ উপায়ে।
আট : ১৯ = ১ ক্ম ৯ + ১ + ৯
২৯ = ২ ক্ম ৯ + ২ + ৯
৩৯ = ৩ ক্ম ৯ + ৩ + ৯
৪৯ = ৪ ক্ম ৯ + ৪ + ৯
৫৯ = ৫ ক্ম ৯ + ৫ + ৯
৬৯ = ৬ ক্ম ৯ + ৬ + ৯
৭৯ = ৭ ক্ম ৯ + ৭ + ৯
৮৯ = ৮ ক্ম ৯ + ৮ + ৯
৯৯ = ৯ ´ ৯ + ৯ + ৯
নয় : ১৫৩ = ১৩ + ৫৩ + ৩৩
৩৭০ = ৩৩ + ৭৩ + ০৩
৩৭১ = ৩৩ + ৭৩ + ১৩
৪০৭ = ৪৩ + ০৩ + ৭৩
দশ : ৬৯২ = ৪৭৬১ এবং ৬৯৩ = ৩২৮৫০৯। লক্ষ করুন, ৬৯-এর বর্গফল এবং ঘনফল এই দুটি একসাথে নিলে এতে ০ থেকে শুরু করে ৯ পর্যন্ত সবকটি অঙ্কের উপস্থিতি রয়েছে।
এগার : ১/৩৭ = ০.০২৭০২৭০২৭ ... এবং ১/ ২৭ = ০.০৩৭০৩৭০৩৭ ...।
বার : forty হচ্ছে ইংরেজিতে বানান করে লেখা একমাত্র সংখ্যা, যাতে ইংরেজি অক্ষরগুলো বর্ণক্রমিকভাবে সাজানো রয়েছে।
তেরো : ১৩২ = ১৬৯। এই সংখ্যা দুটিকে উল্টো দিক থেকে লিখে পাই ৩১২ = ৯৬১। একই ধরনের সম্পর্ক দেখা যায় ১২ সংখ্যাটির ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে ১২২ = ১৪৪ এবং ২১২ = ৪৪১।
চৌদ্দ : ১/১০৮৯ = ০.০০০৯১৮২৭৩৬৪৫৫৪৬৩৭২৮১ ..., এখানে ভাগফলটিতে লুকিয়ে আছে ৯-এর নামতা ৯, ১৮, ২৭, ৩৬, ৪৫, ৫৪, ৬৩, ৭২, ৮১।
পনের : ৮ হচ্ছে একমাত্র ঘনসংখ্যা বা কিউব নাম্বার, যা একটি বর্গসংখ্যা থেকে ১ কম, অর্থাৎ বর্গসংখ্যা ৯ থেকে ১ কম।
ষোল : ১০, ১১২, ৩৫৯, ৫৫০, ৫৬১, ৭৯৭, ৭৫২, ৮০৮, ৯৮৮, ৭৬৪, ০৪৪, ৯৪৩, ৮২০, ২২৪, ৭১৯-কে ৯ দিয়ে গুণ করতে আপনি শুধু শেষের দিকে ৯-কে তুলে নিয়ে একদম প্রথমে বসিয়ে দিন, গুণফলটি পেয়ে যাবেন। এটি একমাত্র সংখ্যা, যাতে এই মজার সম্পর্কটি কাজ করে।
সতেরো : FOUR হচ্ছে একমাত্র সংখ্যা, যা ইংরেজিতে লিখলে যতগুলো অক্ষর লাগে, তা এর মানের অর্থাৎ ৪-এর সমান।
আঠারো : শূন্য (০) হচ্ছে একমাত্র সংখ্যা, যা রোমান সংখ্যা ব্যবস্থায় লেখা যায় না।
উনিশ : শূন্যকে (০) গণিতে বিবেচনা করা হয় জোড়সংখ্যা।
বিশ : googolplex হচ্ছে একটি সংখ্যা বা নাম্বার। এই সংখ্যাটি এত বড় যে, তা লিখে রাখার মতো জায়গা আমাদের জানা এই মহাবিশ্বে নেই। কার্ল সাগান বলেছেন, আমরা গুগলপ্লেক্স সংখ্যাটি লিখতে শুরু করেছিলাম, কিন্তু লেখা সহজ কাজ হয়নি। কার্ল সাগান তার বিখ্যাত অরিজিনাল কসমস টিভি সিরিজে জানান : A googolplex is 10 to the power of a googol, or 10 to the power of 10 to the power of 100. If you want to write it, start now…But it won’t ever finish because your computer won’t have enough memory
সংখ্যা নিয়ে একটি মজার খেলা
আপনার বন্ধুকে বলুন, তিনি যেনো আপনাকে না দেখিয়ে আপনার নির্দেশ মতো কিছু গাণিতিক কাজ সম্পন্ন করেন। কিন্তু এসব গাণিতিক কাজ শেষে আপনি জাদুকরের মতো শেষে কত দাঁড়ায়, তা জানিয়ে দিয়ে তাকে অবাক করে দিতে পারবেন। বন্ধুটি ভাববে, আপনি বুঝি সত্যিই কোনো জাদু জানেন। আসলে আপনি শুধু অ্যালজাবরার সাধারণ জ্ঞান খাটিয়ে এ কাজটি করবেন। আর অ্যালজাবরার সাধারণ জ্ঞান খাটিয়ে গণিতের এ ধরনের অসংখ্য মজার খেলা আপনি নিজে তৈরি করে দেখাতে পারবেন।
খেলাটি দেখাতে এবার এক বন্ধুকে বলুন :
এক : তাকে কাগজে যেকোনো একটি সংখ্যা লিখতে বলুন।
দুই : এবার বলুন এ সংখ্যার বর্গ করতে।
তিন : এবার বর্গফলের সাথে মূল সংখ্যাটি যোগ করতে বলুন।
চার : এই যোগফলকে মূল সংখ্যা দিয়ে ভাগ করতে বলুন।
পাঁচ : এই ভাগফলের সাথে ১৭ যোগ করতে বলুন।
ছয় : এই যোগফল থেকে মূল সংখ্যাটি বিয়োগ করতে বলুন।
সাত : এই বিয়োগফলকে ৬ দিয়ে ভাগ করতে বলুন।
এবার বন্ধুর কাগজটি না দেখেই ঝটপট বলে দিন সবশেষ ফলটি ৩। আসলে আপনার বন্ধু অন্য যেকোনো সংখ্যা নিয়েই এ খেলা শুরু করেন না কেনো, এ খেলায় সব সময় সবশেষ ভাগফলটি হবে ৩। আর তাই আপনার বন্ধুকে জানিয়ে দিয়ে তাকে অবাক করে দিত পারবেন। দেখবেন বন্ধুটি অবাক হয়ে আপনার কাছে জানতে চাইবে, আপনি কী করে না দেখেই তা বলে দিতে পারলেন। আগেই বলা হয়েছে, আসলে এ খেলায় সাধারণ অ্যালজাবরার জ্ঞান খাটানো হয়েছে। ওপরের ধাপগুলো লক্ষ করুন, তাতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।
ধরুন, আপনার বন্ধু প্রথম ধাপে নিলেন ক সংখ্যাটি। দ্বিতীয় ধাপের নির্দেশ মতো এর বর্গ করলে দাঁড়ায় ক২। তৃতীয় ধাপে এর সাথে মূল সংখ্যা ক যোগ করলে হয় : ক২ + ক। চতুর্থ ধাপে এই যোগফলকে মূল সংখ্যা ক দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হয় : ক + ১। পঞ্চম ধাপে এই ভাগফলের সাথে ১৭ যোগ করলে যোগফল হয় : ক + ১৮। ষষ্ঠ ধাপে এই যোগফল থেকে মূল সংখ্যা বাদ দিলে থাকে ১৮। সপ্তম ধাপে এই ১৮-কে ৬ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হবে ৩। অতএব এখানে সবশেষ ফল সবসময়ই হবে ৩। আর আপনি তাই বলে দিয়েছেন মাত্র। এভাবে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ও অন্যান্য গাণিতিক প্রক্রিয়া কাজে লাগিয়ে একটু এদিক-সেদিক করে এ ধরনের অসংখ্য গণিতের মজার খেলা তৈরি করতে পারবেন। আর নিজেকে বন্ধুদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন একজন অঙ্কের জাদুকর হিসেবে। তবে খেলাটি আগে থেকেই অনুশীলন করে নিলে তা আকর্ষণীয় হবে বেশি। আর এতে বন্ধুদের ভাগে মজার পরিমাণটাও পড়বে একটু বেশি।
গণিতদাদু