• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > পতাকা: বাংলায় প্রথম প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: এস. রহমান।
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রতিবেদন
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
পতাকা: বাংলায় প্রথম প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ
তথ্যপ্রযুক্তি জগতের সাথে সংশ্লিষ্টরা ‘কোডিং’ শব্দটির সাথে পরিচিত। এটি ভাষার সঙ্কেতায়ন। এই কোডিংয়ের বৃহত্তর পরিসরের নাম ‘প্রোগ্রামিং’। প্রযুক্তির অগ্রসর জগতে প্রোগ্রামিং একটি বহুল আলোচিত শব্দ ও অতীব প্রয়োজনীয় পাঠ্যবিষয়। প্রযুক্তির বিকাশের স্বার্থে বিশ্বজুড়ে এখন পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই প্রোগ্রামিং বিষয়টি। আমরা লক্ষ করেছি, অগ্রসর দুনিয়ার দেশগুলোতে প্রোগ্রামিংয়ের ধারণাটি শিক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্ট করে তোলার জন্য গেমিং, ক্যুইজ ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের স্কুলের উপরের শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিং বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে। একই সাথে ক্যুইজ ও কোডিং প্রতিযোগিতার একটা সংস্কৃতি চালু হয়েছে। কিন্তু দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের কাছে ‘প্রোগ্রামিং’ একটি জটিল বিষয় বলে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, এর ভাষা ইংরেজি, যা আমাদের মায়ের ভাষা নয়। এটি আমাদের দ্বিতীয় ভাষা।
সুখের কথা, সে প্রয়োজন মেটানোর কাজটি সম্প্রতি সূচনা করেছে বাংলাদেশের তরুণ তিন মেধাবী প্রকৌশলীর একটি দল। এরা সম্প্রতি উদ্ভাবন করেছেন বাংলা ভাষায় প্রথম প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। এই দলে আছেন ইকরাম হোসেন, ওসমান গণি নাহিদ ও রাকিব হাসান অমিয়। ইকরাম হোসেন তাদের দলনেতা। পেশায় তিনি একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলী। কাজ করেন টেলেনর হেলথে সিনিয়র সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে। এই দলের সদস্য ওসমান গণি নাহিদ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করে এখন দেশের একটি বেসরকারি আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। আর রাকিব হাসান অমিয় ইউনিভার্সিটি অব কার্ডিফ থেকে কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করে কাজ করছেন অন্য আরেকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আইটি বিভাগে।
এই বাংলা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজটির নাম দেয়া হয়েছে ‘পতাকা’। এর ভাষা ডেভেলপ করেছেন দলনেতা ইকরাম হোসেন। তাদের দাবি, এটিই বাংলা ভাষায় প্রথম প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। উল্লেখ্য, এর আগে ‘চা স্ক্রিপ্ট’ নামে এ ধরনের বাংলা ভাষায় এই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ তৈরি করেছিলেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। তবে চা স্ক্রিপ্ট থেকে পতাকার পার্থক্য রয়েছে বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন ইকরাম হোসেন। তার মতে, চা স্ক্রিপ্ট অনেক ছোট একটি গবেষণা প্রকল্প হিসেবে শুরু করা হয়েছিল। এখন সেই প্রজেক্ট নেই। আর এই প্রজেক্টে শুধু ইংরেজি সিনটেক্সগুলো বাংলায় করা হয়েছিল, যা শিশু ও নবীনদের কাজে লাগার মতো কিছু ছিল না। অপরদিকে পতাকার সিনট্যাস্কগুলো পড়লে বাংলা বাক্যের মতো মনে হবে। এর পাশাপাশি এতে গেম থাকছে, ফলে প্রোগ্রামিং করা মজার হবে। ইকরাম হোসেন আরও জানান, সহজ ভাষায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আনন্দ উপভোগের মধ্য দিয়ে প্রোগ্রামিং শেখনোই ‘পতাকা’ ডেভেলপ করার লক্ষ্য। পতাকাকে যেকেউ গেম লেভেল ডিজাইন করে সাবমিট করতে পারবেন। বাকিরা এগুলো সমাধান বা পূর্ণাঙ্গ রূপ দেবেন। কয়েকটি ক্লিক করেই একটি সুন্দর প্রোগ্রামিং সমস্যা দিয়ে গেম লেভেল বানিয়ে ফেলতে পারবেন। উল্লেখ্য, পতাকার বর্তমান সংস্করণে সব ফিচার যুক্ত করা হয়নি। স্ট্যাবল সিরিজে নতুন অনেক ফিচার যুক্ত হতে পারে।
পতাকার ফিচার
বাংলা প্রোগ্রামিং : পতাকা কোডের প্রতিটি লাইন হবে সম্পূর্ণ বাংলায়। আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারের সাধারণ বাক্যের মতো। তাই বাংলায় প্রোগ্রামিং শেখাটা নবীনদের জন্য সহায়ক হবে। পতাকাকে একটি প্রোগ্রামিং ভাষা মনে না করে বরং সহজে প্রোগ্রামিং আয়ত্ত করার একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
কোড এডিটর : কোড লেখার জন্য থাকছে কোড হাইলাইটিংসহ একটি চমৎকার কোড এডিটর। পতাকায় যেকোনো কোড ইউনিকোড টুল (অভ্র/ইউনিবিজয়) ববহার করা যাবে। অভ্র/বিজয় পিসিতে ইনস্টল করা না থাকলেও সমস্যা নেই। এডিটরে বিল্টইন ফনেটিক বাংলা (অভ্র) লেখার সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া এডিটরের ডানে থাকা কিওয়ার্ডগুলো ক্লিক করলেই তা ইনডেশনসহ অটোটাইপ হয়ে যাবে। ফল সিনটেক্স ভুলে যাওয়ার চিমত্মা নেই। এর রয়েছে এরর রিপোর্টিং সিস্টেম। কোন লাইনে এরর আছে, তা বাংলায় বলে দেবে। এ ছাড়া থাকবে অটো কোড সাজেশন।
ভিজ্যুয়াল গেম (পতাকা প্লে) : কোড লিখে খেলা যাবে প্রোগ্রামিং গেম। শুরুতেই থাকবে একটি টিউটরিয়াল সিরিজ, যেখানে গেমের মাধ্যমে প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণাগুলো (ভেরিয়েবল, কন্ডিশন, লুপ, ফাংশন) সিকুয়েনশিয়্যালি শেখানো হবে। কোডের আউটপুট গেমের আইটপুটে দেখতে পাবেন। কোথাও ভুল করলে সেটাও সেখানে দেখা যাবে। ফলে প্রোগ্রামিং শেখার বেলায় আপনি তুলনামূলকভাবে বেশি সময় মনোযোগ ধরে রাখতে পারবেন। গেমের লেভেলগুলো সাজানো থাকবে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রবলেম দিয়ে। এগুলো সমাধান করে প্রোগ্রামিংয়ের দক্ষতা যাচাই করতে পারবেন। এগুলোর ভিত্তিতে আপনার র্যা ঙ্কিং নির্ধারণ করা হবে।
কোড রিপোজিটরি : একটি পাবলিক কোড রিপোজিটরি থাকবে। সেখানে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং সমস্যার সমাধান সাবমিট করতে পারবেন। যেমন- প্রাইম নাম্বার বের করা। বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুযায়ী অন্যদের সমাধান দেখা যাবে। আপনার কোডের সাথে ওই কোডের পারফরম্যান্স তুলনা করা যাবে। কোড শেয়ার করতে পারবেন। কোডের অ্যালগরিদম ও টুল ত্রম্নটি নিয়েও আলোচনা করতে পারবেন।
মনে রাখতে হবে
প্রোগ্রামিং অর্থ কোনো ভাষার সিনটেক্স শেখা নয়। প্রোগ্রামিং হচ্ছে একটি সমস্যাকে কীভাবে, কোন কোন পদ্ধতিতে সমাধান করা যায়, সেটা ধারণা করার ক্ষমতা। আপনি কোন ভাষায় কোড লিখে সমাধান করলেন, কিংবা কোন ভাষায় মেশিনকে বুঝাচ্ছেন, না ভিজ্যুয়াল ভাষায় চিত্র এঁকে সমস্যার সমাধান করলেন, তা কোনো দেখার বিষয় নয়। বরং কোনো ভাষায় তা রূপ দেয়ার ক্ষমতাটাই এখানে মুখ্য বিষয়। পতাকার উদ্দেশ্য সিনটেক্স শেখানো নয়, বরং প্রোগ্রামিং আসলে কী- এর একটি প্রাথমিক স্বাদ দেয়া। সি/সি++ কিংবা অন্য কোনো প্রোগ্রামি ল্যাঙ্গুয়েজের সিনটেক্স দেখে যারা ভয় পান, সর্বোপরি প্রোগ্রামিং বিষয়টি বুঝতে যাদের অসুবিধা হয়, তাদের জন্য এবং শিশু-কিশোরদের প্রাথমিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে পতাকা ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। আর প্রোগ্রামিং যারা শুধু শুরু করেছেন এবং প্রোগ্রামিং সহজে শিখতে চান, তাহলে পতাকা আপনার জন্য


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - সেপ্টেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস