• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সভ্যতার মেরুদণ্ডের এ কি হাল!
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - নভেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সভ্যতার মেরুদণ্ডের এ কি হাল!
আজকের দুনিয়ায় ইন্টারনেট আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এক অনুষঙ্গ। ইন্টারনেট ছাড়া একটি দিনও যেন আমাদের জন্য চলা মুশকিল হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট আমাদের জীবনে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এনে দিয়েছে। ইন্টারনেটের সাহায্যে আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কাজ সহজে, কম সময়ে ও কম খরচে সম্পন্ন করছি। ইন্টারনেট জীবনের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। বলা যায়, আধুনিক দুনিয়ায় ইন্টারনেট এক অপরিহার্য বিষয়। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ইন্টারনেটের ব্যবহার সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার স্বাভাবিক দাবি উঠেছে। সে দাবি আমরা এখনও মেটাতে পারিনি। এখনও বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেট জগতে প্রবেশের সুবিধা পায়নি। এরা ডিজিটাল লাইফ উপভোগ থেকে বঞ্চিত। এদের জীবনযাপনের ধরন-ধারণ এখনও সেকেলে। এরা উন্নত মানের জীবনযাপন ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত। আর যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, তাদেরও সন্তুষ্টি নেই আমাদের ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিয়ে। দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবায় সন্তুষ্ট। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
খবরে প্রকাশ- দেশের মোবাইল ফোন গ্রাহকদের অর্ধেকেই নেটওয়ার্ক নিয়ে বিরক্ত। কল কেটে যাওয়া ও বারবার কল করেও লাইন না পাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তাদের। পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবায় সন্তুষ্ট মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ গ্রাহক। আর ৩০ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবায় মোটেই সন্তুষ্ট নন। ইন্টারনেটের ধীর গতি ও মাঝেমধ্যে লাইন ড্রপ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ খুবই বিরক্ত। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা নিয়ে প্রায় এক হাজার সাধারণ গ্রাহকের ওপর পরিচালিত সবশেষ এক জরিপে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। বাংলাদেশ আইসিটি সাংবাদিক ফোরাম ও এক্সপো মার্কেট যৌথভাবে এই জরিপ পরিচালনা করে। এই জরিপে ৯০০ গ্রাহকের মতামত নেয়া হয়। এই গ্রাহকদের দেয়া অভিযোগ ও মতামতের ভিত্তিতে এই জরিপ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। গত বছরের শেষ দিকে এই জরিপটি পরিচালিত হয়।
এই জরিপ মতে- দেশে মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবায় সন্তুষ্ট। এর অর্থ ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ গ্রাহকই ইন্টারনেট সেবা নিয়ে কোনো না কোনোভাবে অসন্তুষ্ট রয়েছেন। জরিপে অংশ নেয়া ১০ দশমিক ৮ শতাংশ বলেছে- ইন্টারনেটের যে গতি বা সেবা, তা মোটামুটি চলে। ৫৭ শতাংশ বলেছে, খারাপ নয়। ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ বলেছে, ইন্টারনেট সেবায় তারা মহাবিরক্ত। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ৬ কোটি ৩২ লাখ। জরিপে আরও দেখা যায়- মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর বিদ্যমান নেটওয়ার্কে ৪৬ দশমিক ২৫ শতাংশ গ্রাহক খুবই বিরক্ত। ৯ দশমিক ২ শতাংশ মনে করে, মাঝেমধ্যে নেটওয়ার্কই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১২ শতাংশ মনে করে- নেটওয়ার্ক কখন বিচ্ছিন্ন হবে, তা কেউ বলতে পারেন না। আর ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ মনে করে, প্রায় সব সময়ই নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মোবাইল কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্ক খুবই খারাপ বলে মনে করেন অর্ধেক মানুষ।
উল্লেখ্য, সারাদেশে ৬টি মোবাইল ফোন অপারেটরের ৪০ হাজার ৭০০ টাওয়ার রয়েছে। অপারেটরদের দাবি, তারা সারাদেশেই নেটওয়ার্ক বিসত্মৃত করতে পেরেছে। সব জেলায়ই তাদের থ্রিজি সেবা পৌঁছে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ঢাকা শহরের বাইরে গেলেই থ্রিজির কোনো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। এমনকি ঢাকা শহরেই থ্রিজি নেটওয়ার্ক মাঝেমধ্যে চলে যায়। রাজধানীর বাইরে ইন্টারনেটের গতি খুবই কম। সম্প্রতি মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক পরিস্থিতির বেশ অবনতি লক্ষ করা গেছে। রাজধানীতে ঠিকমতো কথা বলা যায় না। এরপরও মোবাইল অপারেটরেরা বলছে, থ্রিজির যুগে প্রবেশের পর ইন্টারনেটের গতি বেড়েছে কয়েক গুণ। মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইন্টারনেট হচ্ছে সভ্যতার মেরুদ-। তাই ইন্টারনেট ছাড়া সভ্যতা কল্পনাও করা যায় না। সুতরাং জনগণ যে টাকা দিচ্ছে, এর বিনিময়ে তারা যেন সমেত্মাষজনক সেবা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু যেখানে মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট, আর বাকি ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশই কোনো না কোনো মাত্রায় অসন্তুষ্ট, সেখানে সহজেই অনুমেয় সভ্যতার মেরুদ- ইন্টারনেটের এ কি উদ্বেজনক হাল! উলিস্নখিত জরিপের স্বাভাবিক দাবি, ইন্টারনেট সেবা পরিস্থিতির উন্নয়নে আমাদেরকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, ইন্টারনেট পরিস্থিতির উন্নয়নের সাথে জাতীয় আয় বাড়ানোর বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট। ইন্টারনেট এরই মধ্যে স্বাভাবিক ব্যবসায়-বাণিজ্যের বাইরে-ঘরে বসে দেশী-বিদেশী মুদ্রা আয়ের এক বড় ধরনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। আমাদের জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের কথা আমরা ভাবতেই পারি না ইন্টারনেটকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা ছাড়া। অতএব, ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - নভেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস