• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > দেশের ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবার মান উন্নত করা হোক
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কজ
মোট লেখা:১০৪১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
মতামত
তথ্যসূত্র:
৩য় মত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
দেশের ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবার মান উন্নত করা হোক
দেশের ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবার মান উন্নত করা হোক
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ঘোষিত হওয়ার পর থেকে এ দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এক নতুন প্রাণচাঞ্চল্য ও উন্মত্ততা সৃষ্টি হয়। সরকারও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষক্ষ্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করলেও সেগুলো কাঙিক্ষত গতিতে যে এগুচ্ছে, তা কোনোভাবে বলা যাবে না। তার দৃষ্টান্ত রয়েছে অসংখ্য। যেমন- কালিয়াকৈরের হাইটেক পার্ক এখনও সরকারের নীতি-নির্ধারণী মহলে মুখের বুলি হয়ে আছে, বাস্তবায়নে তেমন উল্লেখ করার মতো অগ্রগতি আমাদের দৃষ্টিতে পরিলক্ষক্ষত হচ্ছে না।
আধুনিক সভ্যতার ধারক ও বাহক এবং আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক অনুষঙ্গ ইন্টারনেট এখনও সাধারণের নাগালের বাইরে। ইন্টারনেট আমাদের জীবনে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এনে দিয়েছে। ইন্টারনেটের সাহায্যে আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কাজ সহজে, কম সময়ে ও খরচে সম্পন্ন করছি। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ইন্টারনেটের ব্যবহার সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার স্বাভাবিক দাবি উঠেছে। সে দাবি আমরা এখনও মেটাতে পারিনি। এখনও বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেট জগতে প্রবেশের সুবিধা পায়নি। এরা ডিজিটাল লাইফ উপভোগ থেকে বঞ্চিত। এদের জীবনযাপনের ধরন-ধারণ এখনও সেকেলে। এরা উন্নত মানের জীবনযাপন ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, তাদেরও সন্তুষ্টি নেই আমাদের ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিয়ে। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ৬ কোটি ৩২ লাখ। দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ ইন্টারনেট সেবায় সন্তুষ্ট। ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবায় সন্তুষ্ট নন। কল কেটে যাওয়া ও বারবার কল করেও লাইন না পাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তাদের। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
পাশাপাশি ইন্টারনেটের ধীর গতি ও মাঝে-মধ্যে লাইন ড্রপ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ খুবই বিরক্ত। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা নিয়ে বাংলাদেশ আইসিটি সাংবাদিক ফোরাম ও এক্সপো মার্কেট যৌথভাবে এই জরিপ পরিচালনা করে। এতে দেখা যায়, দেশে মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবায় সন্তুষ্ট। এর অর্থ ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ গ্রাহকই ইন্টারনেট সেবা নিয়ে কোনো না কোনোভাবে অসন্তুষ্ট রয়েছেন। জরিপে অংশ নেয়া ১০ দশমিক ৮ শতাংশ বলেছে- ইন্টারনেটের যে গতি বা সেবা, তা মোটামুটি চলে। ৫৭ শতাংশ বলেছে, খারাপ নয়। ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ বলেছে, ইন্টারনেট সেবায় তারা মহাবিরক্ত।
জরিপে আরও দেখা যায়- মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর বিদ্যমান নেটওয়ার্কে ৪৬ দশমিক ২৫ শতাংশ গ্রাহক খুবই বিরক্ত। ৯ দশমিক ২ শতাংশ মনে করে, মাঝে-মধ্যে নেটওয়ার্কই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১২ শতাংশ মনে করে, নেটওয়ার্ক কখন বিচ্ছিন্ন হবে, তা কেউ বলতে পারেন না। আর ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ মনে করে, প্রায় সব সময়ই নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মোবাইল কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্ক খুবই খারাপ বলে মনে করেন অর্ধেক মানুষ।
ইন্টারনেট হচ্ছে সভ্যতার মেরুদ-। তাই ইন্টারনেট ছাড়া সভ্যতা কল্পনাও করা যায় না। সুতরাং জনগণ যে টাকা দিচ্ছে, এর বিনিময়ে তারা যেন সমেত্মাষজনক সেবা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু যেখানে মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট, আর বাকি ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশই কোনো না কোনো মাত্রায় অসন্তুষ্ট, সেখানে সহজেই অনুমেয় সভ্যতার মেরুদ- ইন্টারনেটের এ কি উদ্বেজনক হাল! উলিস্নখিত জরিপের স্বাভাবিক দাবি, ইন্টারনেট সেবা পরিস্থিতির উন্নয়নে আমাদেরকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, ইন্টারনেট পরিস্থিতির উন্নয়নের সাথে জাতীয় আয় বাড়ানোর বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট। ইন্টারনেট এরই মধ্যে স্বাভাবিক ব্যবসায়-বাণিজ্যের বাইরে-ঘরে বসে দেশী-বিদেশী মুদ্রা আয়ের এক বড় ধরনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। আমাদের জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের কথা আমরা ভাবতেই পারি না ইন্টারনেটকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা ছাড়া। অতএব, ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং উলিস্নখিত বিষয়গুলো সুবিবেচনায় এনে সরকার যেমন কার্যকর ভূমিকা পালন করবে, তেমনি ইন্টারনেট ও মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডারেরা নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দেয়ার মাধ্যমে জনভোগান্তি দূর করবে তা আমাদের সবার প্রত্যাশা।
আশ্রাফ সিদ্দিকী
পলস্নবী, ঢাকা

প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় যথাযথভাবে উৎসাহ দেয়া হোক
বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষক্ষত্রে, বিশেষ করে ক্রীড়া, সংগীত, চলচ্চিত্র ইত্যাদি ক্ষক্ষত্রে প্রতিভাধরদের বিকশিত, উৎসাহ ও প্রেরণা জোগাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে আসছে। তবে সরকারি পর্যায়ের চেয়ে বেসরকারি পর্যায়ে এসব কর্মসূচি বেশি হতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, সংগীতাঙ্গনে তরুণ প্রতিভাধরদের উৎসাহ ও প্রেরণা দিতে সেরাদের জাতির সামনে তুলে ধরতে বিভিন্ন মিডিয়া ও বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান স্পন্সর করে, যেখানে বিরাট অঙ্কের আকর্ষণীয় ও লোভণীয় পুরস্কারের ঘোষণা থাকে।
এছাড়া সরকারিভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিরাট বহর নিয়ে অংশ নিতে দেখা যায়, যেখানে প্রচুর অর্থ ও সময় অপচয় করে থাকে। যেমন- এশিয়ান গেমস, অলিম্পিক গেমস, আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট, কাবাডিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা। সেই ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত নয়টি অলিম্পিকে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে কপালে জোটেনি একটি পদকও। তাই অলিম্পিকে আমরা এখনও দর্শক। অংশগ্রহণ করা অন্যান্য প্রতিযোগিতার ফলাফলও একই। এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে প্রচুর অর্থ ও সময় অপচয় হয়, কিন্তু ফলাফল শূন্য। অর্থাৎ এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে কোনো সম্মানজনক ফলাফল আমরা দেখতে পাইনি, বরং দেখতে পেয়েছি লজ্জাজনক ফলাফল।
যেকোনো খেলায় জয়-পরাজয় আছে। তবে খেলায় হারজিত যদি হয় সামান্য ব্যবধানে, তা মেনে নেয়া যায় খুব স্বাভাবিকভাবে। কিন্তু খেলায় হারজিত যদি হয় অস্বাভাবিক ব্যবধানে, তবে সেটা মেনে নেয়া কষ্টকর। ফুটবলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমরা বরাবরই ভরাডুবি ফলাফল নিয়ে এলেও এসব খেলাধুলায় বিপুল অঙ্কের অর্থ খরচ করতে আমরা কার্পণ্য করি না। আমি অবশ্যই এর বিরোধিতা করছি না। তার কারণ এগুলোর দরকার আছে সুস্থ-স্বাভাবিক মানসিক বিকাশ ও ডিসিপ্লিন জীবন-যাপনের জন্য।
বিভিন্ন ক্ষক্ষত্রে ব্যর্থতার পরও সরকারি বা বেসরকারি পক্ষ থেকে এসব ক্ষক্ষত্রে পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ হতে দেখা যায়নি, যা এক ইতিবাচক দিক। তবে ব্যর্থতার জন্য কোনো ধরনের সমালোচনা না হওয়ার অর্থ হচ্ছে তা মুখ বুঝে মেনে নেয়ার শামিল। তা মেনে নেয়া সব সময় কষ্টকর।
এদিকে গত ১৪-১৯ আগস্ট রাশিয়ার কাজনে অনুষ্ঠিত তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক ‘আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড’ তথা আইওআই আসরে অংশ নিয়ে দেশের পক্ষক্ষ দুটি ব্রোঞ্জপদক জয় করেছেন তরুণ অলিম্পিয়ানরা। অথচ রাষ্ট্রীয় বা সাংগঠনিক নয়, শুধু ব্যক্তি উদ্যোগে এক যুগ ধরে এই অলিম্পিকে অংশ নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নিজেদের মেধা আর প্রজ্ঞার দ্যুতি ছড়িয়ে বিশ্বসভায় লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে চলেছেন ক্ষুদে এই তথ্যপ্রযুক্তির খেলুড়েরা। এই ক্ষুদে তথ্যপ্রযুক্তির খেলুড়েরা অল্প কয়েক দিনের প্র্যাকটিসে সম্মানজনক এ পুরস্কার জিতেছে, যা বিস্ময়করও বটে।
আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে এসব ক্ষক্ষত্রে সরকার বা বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা পাওয়া যাবে, যা আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বিশ^ দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।
রবিউজ্জামান শাওন
বাঁশেরপুল, ডেমরা


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস