• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে উচ্চশিক্ষা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মাইনূর হোসেন নিহাদ
মোট লেখা:২১
লেখকের নাম: মর্তুজা আশীষ আহমেদ
মোট লেখা:৭৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইসিটিতে উচ্চশিক্ষাআইসিটি, 
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে উচ্চশিক্ষা
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে ড্রপআউট বা ঝরেপড়ার হারটা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি৷ ফলে আমাদের দেশে প্রয়োজনীয় উচ্চশিক্ষিত জনবল নেই৷ এর অন্যতম কারণ আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি৷ অবশ্য অনেকে এর কারণ হিসেবে আমাদের শিক্ষানীতিকে দায়ী করেন৷ এক দশক আগেও আমাদের দেশের ধনী পরিবারের ছাত্ররা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমাতো৷ এর ফলে দেশ থেকে চলে যেত প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা৷ এই অবস্থার পরিবর্তন এবং দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি বিশ্বমানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯১ সালে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন চালু হয়৷ পরিবর্তন আসে দেশের উচ্চশিক্ষার পাঠক্রমে৷ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এখন শিক্ষায় এগিয়ে চলেছে৷ এর পরও তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে উচ্চশিক্ষায় দেশের ছাত্রদের আগ্রহে ঘাটতি লক্ষ করা যায়৷ ইতোমধ্যেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে৷ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে উচ্চশিক্ষায় দেশের ছাত্রদের একটা দিকনির্দেশনা দেয়ার লক্ষ্যেই আমাদের এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন৷ আমাদের আশা, মাধ্যমিকের পর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে উচ্চশিক্ষার একটা গাইডলাইন পাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা৷ এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদনটি যৌথভাবে তৈরি করেছেন মর্তুজা আশীষ আহমেদ এবং মাইনূর হোসেন নিহাদ ৷



১৯৯১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় আইন চালু করার পর এদেশে যত্রতত্র নানা মাত্রার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গজিয়ে উঠতে থাকে৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই ইতোমধ্যে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে৷ অথচ শুরুর দিকে অনেকেরই ধারণা ছিল, যাদের বেশি টাকাপয়সা আছে তাদের জন্যই এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়৷ এখন এ ধারণায় পরিবর্তন এসেছে৷ এখন অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরাও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে৷ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন পড়াশোনার দিকেও অনেক এগিয়েছে৷ কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক র্যা ঙ্কিংয়েও বেশ উপরের দিকে স্থান করে নিয়েছে৷ তাই দেখা যায়, অনেক ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিকের পরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বেশি আগ্রহী৷

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তৃতির ফলে আধুনিক বিশ্বের সাথে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন এবং আধুনিকায়ন ঘটছে৷ এর শুরুটা হয়েছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরে৷ এটি এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়ছে৷ অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পুরনো আমলের পাঠসূচি বদলে আধুনিক পাঠসূচি অনুসরণ করছে৷ তবে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, এতকিছুর পরও তাত্ত্বিক জ্ঞানের সাথে ব্যবহারিক জ্ঞানের অসামঞ্জস্য থেকেই যাচ্ছে৷ আমাদের দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়েই ব্যবহারিকের প্রয়োগ কম৷ ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানের বিস্তৃতি শুধু সার্টিফিকেটসর্বস্ব৷ এতে করে ছাত্র-অভিভাবক সবাই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান৷

প্রায় সবার মধ্যেই কে কোন বিষয়ে পড়াশোনা করবে সেই দ্বিধার পাশাপাশি কোন প্রতিষ্ঠান পড়াশোনার জন্য ভালো, সে ধরনের দ্বিধাও কাজ করে৷ আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক র্যা ঙ্কিংকিয়ে উপরের দিকে স্থান করে নিয়েছে৷ স্প্যানিশ প্রতিষ্ঠান সাইবার মেট্রিক্স ল্যাব তাদের জরিপের ওপর ভিত্তি করে এর র্যা ঙ্কিং প্রকাশ করেছে৷ ভারতীয় উপমহাদেশ অঞ্চলের দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের ৪টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিয়েছে (webometrics.info থেকে জানুয়ারি, ২০০৮ পর্যন্ত সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী)৷ বিস্তারিত জানতে : http://www.webometrics.info/rank_by_ country_select.asp এই সাইটটি ভিজিট করুন৷

দেশীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা

আমাদের দেশে এখন আইসিটিতে উচ্চশিক্ষার যথেষ্ট সুযোগ আছে৷ বিশবিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও মানসম্পন্ন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে৷ এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে অনেকেই ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন৷ দেশীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় আইসিটিতে উচ্চশিক্ষার জন্য আদর্শ, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ধারণা দেয়া হলো৷

বুয়েট

বাংলাদেশ প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা বুয়েট হচ্ছে দেশের সর্বপ্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুটা হয়েছিল আহছানিয়া মিশনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আহছানউল্লাহ টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে৷ আহছানউল্লাহ টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছিল সে সময়ের নামকরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ৷ সময়ের প্রবাহে আজ এটি দেশের সেরা এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়৷ দীর্ঘদিন এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধীনে থাকলেও এখন এটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়৷

উচ্চ মাধ্যমিকের পর শুধু দেশের সবদিক থেকে সেরা ছাত্ররাই এখানে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে থাকে৷ এখানে আইসিটির দুটি বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর কোর্স পড়া যায়৷ এগুলো হচ্ছে কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং৷ স্নাতকের ক্ষেত্রে বছরে একটি সেমিস্টার এবং স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে বছরে ২টি সেমিস্টার চালু আছে, যাতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারে৷ স্নাতকের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে ভর্তি পরীক্ষায় একবার বাদ পড়া ছাত্র দ্বিতীয়বার ‍আর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না৷



স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ছাড়াও এখানে আইসিটিভিত্তিক বিভিন্ন সার্টিফিকেট কোর্সও চালু আছে৷ বিশ্বের নামীদামী প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব স্ট্যান্ডার্ডে এসব সার্টিফিকেট কোর্স পরিচালনা করে৷ সিসকো সিস্টেমসের বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক কোর্স এর মধ্যে অন্যতম৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

একসময় দুই বাংলা মিলিয়ে উচ্চশিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু ছিল কলকাতা৷ বঙ্গভঙ্গের পর থেকেই চিন্তাভাবনা করা হয় ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের৷ ১৮৬১ সালে স্থাপিত হওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই৷ এটি দেশের প্রথম ও প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এখনো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হয়৷ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর সব রাজনৈতিক আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু এই বিশ্ববিদ্যালয় হলেও পড়াশোনা এবং মানের ক্ষেত্রে কখনো এই বিশ্ববিদ্যালয় আপোস করেনি৷ তাই আজো দেশের এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের এক বিশ্বস্ত বিদ্যাপিঠের নাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিটিভিত্তিক যে বিষয়টি সবদিক থেকে আলোচিত তা হচ্ছে কমপিউটার বিজ্ঞানে সম্মানসহ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর কোর্স৷ প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্র এই অনুষদে পড়াশোনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে৷ বছরে একটি সেমিস্টারে এই বিষয়ে ছাত্র ভর্তি করা হয়৷

আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আহছানিয়া মিশন হচ্ছে একটি অলাভজনক সেবা সংস্থা৷ দেশের শিক্ষাক্ষেত্রসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে এর অবদান সর্বজনবিদিত৷ আহছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত দেশের এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথমদিকে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ ১৯৯৫ সালে আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়৷ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এটিই বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়৷ শুরু থেকেই শিক্ষার মান নিয়ে কোনো আপোস না করায় এই বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম৷ সবার কাছে শুরু থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস নিয়ে আপত্তি থাকলেও ঢাকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয় সর্বপ্রথম নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থাপিত হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক র্যা ঙ্কিংয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম৷ বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংখ্যা প্রায় ৮ হাজারের উপরে৷

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ আইসিটি খাতের মধ্যে অন্যতম৷ ৪ বছরের মেয়াদের স্নাতক অনার্স কোর্সে বছরে ২টি সেমিস্টারে ভর্তি করা হয়৷ এগুলো হচ্ছে : স্প্রিং সেমিস্টার এবং ফল সেমিস্টার৷

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন পর্যন্ত সর্বাধিক ছাত্রদের স্নাতক ডিগ্রি দিয়েছে৷ সেই সাথে ছাত্রসংখ্যার দিক থেকেও এই বিশ্ববিদ্যালয় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে৷ শুধু দেশের মধ্যেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ সুনাম আছে৷ অত্যাধুনিক ল্যাব সুবিধার পাশাপাশি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে মানসম্পন্ন ফ্যাকাল্টি৷ স্নাতক ছাড়াও এখানে আইসিটিভিত্তিক বিভিন্ন সার্টিফিকেট কোর্সও চালু আছে৷

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি

দেশে প্রথমদিকে প্রতিষ্ঠিত হওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি৷ ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ১৯৯৬ সালে মাত্র ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে৷ বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি৷ দেশীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সাথে পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে নতুন প্রযুক্তির শিক্ষার উদ্দেশ্য ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির৷

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে বছরে ৩টি সেমিস্টারে ছাত্র ভর্তি করা হয়৷ জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্প্রিং সেমিস্টার৷ মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সামার সেমিস্টার৷ ফল সেমিস্টার সেপ্টেম্বর মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত৷

৪ বছর মেয়াদী বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তির জন্য : এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ পেতে হবে আলাদা আলাদাভাবে৷ ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন অ্যান্ড ক্যামব্রিজ-এ জিসিই ও লেভেলে ৪টি বিষতে কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ এবং ও এবং এ লেভেলে ২টি বিষতে কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ পেতে হবে৷ অথবা আমেরিকান হাই স্কুল ডিপ্লোমা এবং SAT Score থাকতে হবে কমপক্ষে ১১০০৷

শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্রেডিট ট্রান্সফার করতে পারবে৷ ক্রেডিট ট্রান্সফারের জন্য কমপক্ষে ৫ম সেমিস্টার শেষ করতে হবে৷ প্রতি বছরই কিছু শিক্ষার্থী ক্রেডিট ট্রান্সফার করে থাকে৷ ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে ১০২ জন পূর্ণকালীন এবং প্রায় ৪০ জন মানসম্পন্ন ফ্যাকাল্টি সদস্য৷

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়

১৯৯২ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র ১৩৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে৷ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন চালুর পর বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়৷ বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংখ্যা ৬০০০-এর উপরে৷ প্রযুক্তির সাথে প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন নতুন পাঠ্যক্রম৷ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে তিনটি সেশনে ভর্তি হওয়া যায়৷ এগুলো হচ্ছে স্প্রিং, সামার এবং ফল সেশন৷ স্প্রিং সেশন শুরু হয় জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে এবং শেষ হয় এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে৷ একইভাবে সামার সেশন মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে আগস্ট মাস পর্যন্ত এবং ফল সেশন আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত৷

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের বিষয়গুলোর মধ্যে আইসিটিবিষয়ক বিভাগ হচ্ছে কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি৷

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং মাধ্যম রয়েছে৷ শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য এই ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং খুব শক্তিশালী মাধ্যম৷ এই কাউন্সেলিং থেকে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়৷ ছাত্রদের সমস্যা ও ক্যারিয়ার নিয়ে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করা হয়৷



প্রায় সব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা আছে৷ এই সুবিধাটি এখন যুগের দাবি৷ কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনোটিতেই ক্রেডিট ট্রান্সফারের তেমন উল্লেখযোগ্য সুযোগ বা সুবিধা নেই৷ এখান থেকে ছাত্ররা দেশে বা বিদেশে যেকোনো জায়গাতেই ক্রেডিট ট্রান্সফার করতে পারবেন৷ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও এখানে ক্রেডিট ট্রান্সফার করা যায়৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রদের সুযোগ আছে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার৷

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বেশ শক্তিশালী৷ শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্লাব৷ আর সেই সাথে শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন অভিজ্ঞ ফ্যাকাল্টি সদস্য৷ এদের বেশিরভাগই দেশের বাইরে থেকে উচ্চতর ডিগ্রিপ্রাপ্ত৷

ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

১৯৯৩ সালে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি এর কার্যক্রম শুরু করে৷ আধুনিক শিক্ষামান ও উত্কর্ষের আঙ্গিকে শিক্ষা দেয়াই এর উদ্দেশ্য৷

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরে ৩টি সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়৷ স্প্রিং সেমিস্টার : জানুয়ারি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময়৷ সামার সেমিস্টার : জুন থেকে জুলাই৷ অটাম : আগস্ট থেকে ডিসেম্বর৷ এরপর আবার নতুন একাডেমিক ইয়ার শুরু হয়৷

ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর মূল ভর্তির জন্য মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে এবং এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই চূড়ান্তভাবে ভর্তি হওয়া যাবে৷

আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সায়েন্স বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেয়ার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর অব কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, কমপিউটার সায়েন্স, কমপিউটার ইনফরমেশন সিস্টেম, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং- এই পাঁচটি বিষয় চালু আছে৷

আইইউবি শিক্ষার্থীদের জন্য বর্তমানে চাকরির ক্ষেত্রে কী দরকার, তার ওপর দিকনির্দেশনা দেয়া হয়৷ আইইউবি থেকে ক্রেডিট ট্রান্সফার করা যায়৷ এক্ষেত্রে উভয় ভার্সিটির সিলেবাস একই হতে হবে৷ আইইউবি পূর্ণকালীন ফ্যাকাল্টি সদস্য রয়েছেন ১৩৫ জন এবং খণ্ডকালীন ফ্যাকাল্টি সদস্য রয়েছেন ৩০ জনের উপরে৷

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

১৯৯৫ সালের ৮ নভেম্বর এআইইউবির কার্যক্রম শুরু হয়৷ ১৯৯৬ সালে সরকারি অনুমোদন লাভ করে৷ প্রথমদিকে এআইইউবির নাম ছিলো এ্যামা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি৷ ২০০১ সালে এ্যামার নতুন নাম রাখা হয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি৷ মাত্র ৬৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয়েছিলো এর যাত্রা৷

এআইইউবিতে বছরে তিনটি সেমিস্টারে ভর্তি করা হয়৷ জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত স্প্রিং সেমিস্টার৷ মে মাস থেকে আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সামার সেমিস্টার৷ আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর মাঝামাঝি পর্যন্ত ফল সেমিস্টার৷

সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য গণিত আবশ্যক৷ কমপিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ও এবং এ লেভেলে পদার্থ বিজ্ঞান ও গণিত থাকতে হবে৷ এসব শর্ত সাপেক্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া যাবে৷ ভর্তি ফরম ইউনিভার্সিটি অফিসে পাওয়া যাবে৷ ভর্তি পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই শুধু ভর্তির জন্য যোগ্য হবেন৷

এআইইউবিতে ১৪৮ জন পূর্ণকালীন এবং আরোকিছু খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন৷ ইলেক্ট্রিক্যাল বিষয়ে রয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসহ ১৪টি ল্যাব৷ আরো আছে ১২টি ইন্টারনেট সার্ভার৷

ইউনিভার্সিটির কাছেই ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য রয়েছে আলাদা হোস্টেল৷ শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্লাব ও ইনডোর গেমস৷ ড্রামা ক্লাব, ফটোগ্রাফি ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব এবং ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন খেলার সুবিধা৷

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ লক্ষ্য ছিল একটি ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আধুনিক সময়ের সব চাহিদা মেটানো৷ ২০০১ সালে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি নিজস্ব ভবনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করে৷

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে বছরে তিনটি সেশনে ভর্তি করা হয়৷ স্প্রিং সেশন : জানুয়ারি-এপ্রিল, সামার সেশন : মে-আগস্ট, ফল সেশন : আগস্ট-ডিসেম্বর৷

৪ বছর মেয়াদী বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির যোগ্যতা হচ্ছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় আলাদাভাবে জিপিএ ৫.০০ পেতে হবে, ও লেভেলে ৫টি বিষতে এবং এ লেভেলে ২টি বিষতে এ গ্রেড পেতে হবে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ব্যাচেলর অব কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যাচেলর অব ইলেক্ট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ১৪৫ ক্রেডিট৷ ১০৬ জন পূর্ণকালীন এবং প্রায় ৫০ জন খণ্ডকালীন ফ্যাকাল্টি সদস্য রয়েছে৷ ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং থেকে ক্যারিয়ার সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়৷ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধা রয়েছে৷ এক্ষেত্রে কোর্স কারিকুলামের সাথে উভয় ইউনিভার্সিটির মিল থাকতে হবে৷

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

২০০৩ সালের জানুয়ারী মাসে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা দেয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যাত্রা শুরু হয়৷ একই বছরের ২ জুন সরকারীভাবে অনুমোদন পায়৷ এখানে বছরে তিনটি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়৷ এগুলো হচ্ছে স্প্রিং সেমিস্টার, সামার সেমিস্টার এবং ফল সেমিস্টার৷ এই বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কয়েকটি বিষয়ে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যায়৷ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হবার জন্য মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক অথবা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে ২.৫ জিপিএ আলাদাভাবে পেতে হবে৷ ইংরেজী মাধ্যমে যারা পড়াশোনা করে এসেছেন তাদের ও লেভেলে ৫টি এবং এ লেভেলে কমপক্ষে ২টি বিষয়ে এই জিপিএ থাকতে হবে৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সমৃদ্ধ ফ্যাকাল্টি এবং ফ্যাকাল্টি মেম্বার৷ ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের মধ্যে রয়েছে পূর্ণকালীন এবং খণ্ডকালীন অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সমন্বয়৷ তাছাড়া শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা৷

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, গাজীপুর

মুসলিম দেশগুলোর সবচেয়ে বড় সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি)-এর প্রতিষ্ঠিত আইআইটি এখন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) নামে পরিচিত৷ প্রত্যেক মুসলিম রাষ্ট্রে ওআইসি একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে৷ বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়৷ এটি এখন দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়৷ দেশের সবদিক থেকে এবং মেধাবী ছাত্ররাই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এখানে পড়াশোনা করার সুযোগ পায়৷ এখানে আইসিটির কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজিতে পড়াশোনা করা যায়৷

এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাড়াও আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেগুলো খুব ভালো করছে৷ এর মধ্যে অনেকগুলোই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন৷ স্থান সঙ্কুলানের অভাবে এসব বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আলোচনা করা গেলো না।

বাংলাদেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট

 বুয়েট - www.buet.ac.bd
 ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজি (আইইউটি) - www.iutoic-dhaka.edu
 ঢাকা ইউনিভার্সিটি - www.univdhaka.edu
 কুয়েট - www.kuet.ac.bd
 শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় - www.sust.edu
 নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি - www.northsouth.edu
 আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় - www.aust.edu
 আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি - www.aiub.edu
 ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি - www.ewubd.edu
 ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি - www.bracuniversity.ac.bd
 ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভর্সিটি - www.daffodilvarsity.edu.bd

বিদেশে পড়াশোনা

এক সময় বিদেশে পড়াশোনা নিরুত্সাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের প্রবর্তন করা হয়৷ ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার চাহিদার কথা চিন্তা করলে তা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল৷ তারপরও বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেয়ার জন্য গমনেচ্ছু ছাত্রসংখ্যার হার কিন্তু কম নয়৷ বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সেখানে শিক্ষার উন্নত মানের পাশাপাশি কাজ করার বা পাবার সুবিধা আছে, যা আমাদের দেশে সীমিত৷ তবে প্রথমদিকে ভাষা এবং পরিবেশগত কিছু সমস্যা হতে পারে, যা কাটিয়ে ওঠা কোনো সমস্যা নয়৷ আর আইসিটিসহ নতুন প্রযুক্তি বা প্রকৌশল অনুষদে পড়াশোনার জন্য বা হালনাগাদ থাকার জন্য বিদেশে উচ্চশিক্ষার বিকল্প নেই৷ অনেক সময় বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি টেকনিক্যাল বিভাগে কর্মরত পেশাদারদের নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা বা উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে থাকে৷ তাই বিদেশে উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে সবারই কিছুটা ধারণা থাকা দরকার আছে৷

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কোনো নির্দিষ্ট পর্যায় বা সীমা নেই৷ অনেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান৷ আবার স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শেষ করেও উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান৷ আইসিটিতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটগুলোতে পড়াশোনার হালচাল কেমন তা এবার জানতে চেষ্টা করবো৷

বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে প্রথমেই দেখতে হবে কোন দেশে পড়াশোনার কি হালচাল৷ সেই সাথে অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা দেখতে হবে৷ তাই দেশ নির্বাচন খুব জরুরি৷ মনে রাখতে হবে সব দেশে পড়াশোনার সুবিধা এক রকম নয়৷ বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে এখনো ছাত্রদের প্রথম পছন্দ গ্রেট ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া৷ বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সে দেশে ভাষার ব্যবহার কেমন৷ গ্রেট ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া পছন্দের দিক থেকে সবার উপরে আছে৷ কারণ, ভাষাগত সুবিধা৷ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অনেক দেশসহ জাপান, কোরিয়া প্রভৃতি দেশে আইসিটি বিষয়ে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা ভাষাগত সমস্যা৷ এসব দেশে প্রতিদিনের ব্যবহারের ভাষা হিসেবে আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজি ব্যবহার করা হয় না৷ তাই কিছুটা সমস্যা হয়৷ এমন অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ভিসা-কাগজপত্র ঠিক করে অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে চলে যান৷ কিন্তু ওখানকার পরিবেশ দেখে এবং ভাষার ব্যবহার দেখে কয়েক দিনের মধ্যেই ফিরে আসেন৷ তাই যাবার আগে সব ধরনের সুযোগসুবিধা জেনেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত৷

বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি

বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কয়েকটি ধাপে প্রস্তুতি নিতে হয়৷ প্রথমেই দেশ নির্বাচন করে ঠিক করে নিতে হবে কি ধরনের প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে চান৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকেই ছোট বা মধ্যম সারির প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে ভিসা নিয়ে চলে যান৷ পরবর্তী সময়ে সুবিধামতো সময়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে কাঙ্খিত ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফেরা যায়৷

দেশ এবং প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে প্রথমেই জেনে নিতে হবে সেই প্রতিষ্ঠানের চাহিদা কী৷ সাধারণত IELTS, GRE, GMAT প্রভৃতি কোর্সের নির্দিষ্ট স্কোর করলে আবেদন করা যায়৷ জেনে নিতে হবে, সেই নির্ধারিত স্কোর কত৷ এক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সাহায্য নেয়া যেতে পারে৷ আগে ইন্টারনেটের সুবিধা যখন ছিল না, তখন এই খোঁজখবর নেয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোর সাহায্য নেয়া হতো৷ এখনও নেয়া যায়৷ তারপর কোর্সগুলোতে ভালো স্কোর করে আবেদন করতে হবে৷ প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মতি আসলে ভিসার জন্য দূতাবাসে আবেদন করতে হয়৷ এই পদ্ধতিতে সরাসরি ডিগ্রি নেয়া যায়৷

আরেকভাবে বিদেশে উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি নেয়া যায়৷ এর নাম হচ্ছে ক্রেডিট ট্রান্সফার৷ এই সিস্টেমে দেশে থেকেই দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অর্ধেক বা নির্দিষ্টসংখ্যক ক্রেডিট সম্পন্ন করে বাকি অংশ বাইরের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করে পুরো ডিগ্রি অর্জন করা যায়৷ আমাদের দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বেশিরভাগেই ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা আছে৷ এক্ষেত্রে ভর্তি হবার আগে জেনে নিতে হবে ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা কেমন৷

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান বৃত্তি দিয়ে থাকে৷ বৃত্তি নিয়ে অনেকেই ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে৷ তাছাড়া ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফ্রাঞ্চাইজ শিক্ষা কার্যক্রমে বিশ্বের বিখ্যাত আইসিটি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা যায়৷ এজন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলে যোগাযোগ করা যেতে পারে৷

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে চাকরি বাড়ছে

বিজ্ঞান ও প্রকৈাশল শিক্ষার চাহিদা বিশ্বব্যাপী বাড়ছে৷ এর কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য প্রসার এবং টেলিকম সেক্টরের প্রসার চিহ্নিত করা যায়৷ ওয়ার্ল্ড বিজনেস উইক পত্রিকায় গত ২৪ জুন, ২০০৮ তারিখে প্রযুক্তি : যেখানে সকল চাকরি শীর্ষক এক প্রতিবেদতে এ ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে৷

সাইবার সিটিজ ২০০৮ জরিপে ৫১টি শহরের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তাতে দেখা যায় প্রতিটি শহরে উচ্চপ্রযুক্তি খাতে চাকরির সংখ্যা বেড়েছে৷ অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বেশ কিছুদিন এই খাতে চাকরির বাজারে মন্দা বিরাজ করছিল৷ জরিপে দেখা যায় শুধু সিয়াটলে ৭,৮০০ নতুন চাকরি যোগ হয়েছে৷ নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে যোগ হয়েছে প্রায় ৬,০০০ নতুন চাকরি৷ আইসিটিতে এই চাকরি বৃদ্ধির হার প্রায় ১২ শতাংশ৷ সিলিকন ভ্যালিতে প্রতি হাজারে ২৮৬ জন প্রযুক্তিকর্মী কাজ পাচ্ছে৷

সেখানে বছরে এক লাখ ৪৪ হাজার ডলারের প্রযুক্তি চাকরি বেড়েছে এই বছর৷ প্রযুক্তিতে জাতীয় গড় হচ্ছে ৮০ হাজার ডলার৷ এখানেই শেষ নয় প্রযুক্তিকর্মীদের বেতন বেড়েছে প্রায় ৮৭ শতাংশ৷ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অব লেবার প্রেডিক্টস আশা করছে ২০১৬ সালের মধ্যে সাড়ে আট লাখ আইটি চাকরি যুক্ত হবে৷

শেষ কথা

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের দেশের ছাত্রদের ক্যারিয়ার নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে দেখা যায়৷ শুধু সিদ্ধান্তহীনতার কারণে একদিকে যেমন ছাত্রদের সময় নষ্ট হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও হারিয়ে যাচ্ছে অনেক মেধাবী৷ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় এ ব্যাপারে কারো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু শুধু সচেতনতা এবং সুযোগের সদ্ব্যবহারের অভাবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে আমরা বিশ্বব্যাপী শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিতে পারিনি৷ সরকারের পাশাপাশি আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারতো৷ আমরা অস্বীকার করতে পারি না, আমাদের অনেক পরে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে অভিযাত্রা শুরু করে প্রতিবেশী অনেক দেশই আমাদের চেয়ে এগিয়ে গেছে, যা আমরা পারিনি৷ একথাও ঠিক, বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি দিয়েই এগিয়ে আসতে হবে৷ যেহেতু তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নিয়ে তরুণদের আগ্রহ বেশি, তাই তরুণ প্রজন্মকেই এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে৷ নয়-এগারোর পর পুরো বিশ্বেই তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে কর্মসংস্থানের হার কমে গিয়েছিল৷ আমাদের দেশেও তার প্রভাব পড়েছে৷ এখনো তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে পড়াশোনায় আসা ছাত্রদের সংখ্যা কমতির দিকে৷ অথচ আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এই খাতে কর্মপরিধি অনেক বেড়ে যাবে এবং তখন এই বিষয়ে এক্সপার্টদের অন্য দেশ থেকে আমাদের দেশে নিয়ে আসতে হবে৷ দেশ থেকে চলে যাবে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা৷ এটি রোধ করার একটাই উপায় হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে স্নাতক বা সমমানের পেশাজীবী তৈরি করা৷ এর শুরু করার উপযুক্ত সময় এখনই৷

আমাদের দেশে সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে ঘটছে মেধার অপচয়৷ দেখা যায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ক্যারিয়ার কাউন্সিলিংয়ের অভাবে উচ্চশিক্ষা নিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা দিশেহারা হয়ে পড়েন৷ ইতোমধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে৷ এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের যে, কোথায় এবং কিভাবে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা যায়৷ আমরা চেষ্টা করেছি এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আইসিটিতে উচ্চ শিক্ষা নেয়ার সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে৷ আইসিটিতে উচ্চশিক্ষা নিয়ে অনেকেই নিজেদের অবস্থান পরিবর্তনে সক্ষম হয়েছেন৷ শুধু সঠিক পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়নেই সম্ভব সার্থক আইসিটি ক্যারিয়ার গঠন৷ কজ ওয়েব

সাক্ষাৎকার

জাতিহিসেবে আমরা আইসিটিতে যথেষ্ট দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারিনি
হাবিবুল্লাহ এন করিম

সভাপতি, বাংলাশে অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস ১৯৯৮ সালের পর বাংলাদেশে আইসিটিতে মানুষের যে আগ্রহ দেখা গিয়েছিল, তা পরবর্তী সময়ে অনেকাংশেই স্তিমিত হয়ে যায়৷ এর বহুবিধ কারণ রয়েছে৷ উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর একটি হচ্ছে, নয়-এগারোর পর বিশ্ববাজারে আইসিটি প্রফেশনালদের প্রতি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অনাস্থা৷ সে সময় অনেক কোম্পানিকে দেখা যায় উল্লেখযোগ্য হারে কর্মী ছাঁটাই করতে৷ এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল আইসিটির৷ আর তাছাড়া বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা তো ছিলই৷ আরেকটি কারণ হচ্ছে আমাদের নিজস্ব কিছু ব্যর্থতা৷ জাতি হিসেবে আমরা আইসিটিতে যথেষ্ট দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারিনি৷ তথ্য এবং যোগাযোগপ্রযুক্তির ব্যবহারিক এবং তত্ত্বীয় দূরত্ব দূর করতে পারিনি৷ যথেষ্ট জনসচেতনতাও আমরা তৈরি করতে পারিনি৷

এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কিছু কার্যক্রম চলছে৷ আমরা বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের সাথে মিলে আইসিটিতে বর্তমান অবস্থার উন্নয়নে একটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছি৷ এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে আইসিটি প্রফেশনালদের মধ্যে ব্যবহারিক এবং তত্ত্বীয় দূরত্ব দূর করা৷ আশা করি আমরা এই দুর্যোগ উত্তরণে সক্ষম হব৷

ভবিষ্যতে সব কিছুই কমপিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হবে
প্রসের ড. মোহাম্মদ লুত্ফর রহমান
কমপিউটার বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আইসিটি যে বাংলাদেশের জন্য অনেক সম্ভাবনাময়, তা নতুন করে বলার কিছু নেই৷ আর যেহেতু বাংলাদেশে মেধার কোনো ঘাটতি নেই, তাই তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন কিছু করা সম্ভব৷

একথা ঠিক, কিছুদিন আগেও আইসিটি পেশাজীবীদের মধ্যে খানিকটা হতাশা বিরাজ করেছিল৷ কিন্তু আমাদের সবাইকে ভেবে দেখতে হবে ভবিষ্যতে সব কিছুই কমপিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হবে৷ আমাদের মনে রাখতে হবে, কমপিউটার ছাড়া ভবিষ্যত্ পৃথিবী কল্পনা করা যায় না৷ অনেকেই মনে করে কমপিউটার অনুষদে পড়াশোনা করে চাকরি পাওয়া যায় না৷ কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়৷ এখন অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে৷ ভবিষ্যতে আরো হবে৷

শুধু কমপিউটার বিজ্ঞান বা কমপিউটার প্রকৌশল নয়, আধুনিক উচ্চশিক্ষার সব ক্ষেত্রেই কমপিউটার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে৷ আরো কিছুদিন পরে কমপিউটার ছাড়া পড়াশোনা কল্পনাই করা যাবে না৷ তাই সবাইকে এই স্লোগানে শরিক হতে বলবো- “COMPUTER WITH ALL DEPARTMENTS OF EDUCATION.”

আইসিটি খাতে চাকরি নেই কথাটি বোধহয় ঠিক নয়
সৈয়দ আখতার হোনে
সহযোগী অধ্যাপক, কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি

ওয়ার্ল্ড বিজনেস উইক পত্রিকার “Technology : Its Where the Jobs Are” লেখার উদ্ধৃতি দিয়ে সৈয়দ আখতার হোসেন বলেন, প্রযুক্তি বিশ্বে চাকরির হার বর্তমানে ধারাবাহিক গতিতে এগুচ্ছে৷ সাইবারসিটি ২০০৮ জরিপে দেখা যায় ২০০৬ সালে eিk্বের ৫১টি শহরে উচ্চ প্রযুক্তির চাকরি যোগ হয়েছে৷ কিন্তু অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা এই উন্নতিকে অনেক ক্ষেত্রে বাধা দিচ্ছে৷ এই জরিপ চলার সময়ে শুধু সিয়াটলে প্রায় ৮ হাজার নতুন চাকরি যোগ হয়৷ এর পরেই আছে নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসি৷ এই দুই শহরে এই সময়ে প্রায় ৬ হাজার নতুন চাকরি যোগ হয়৷ তাই আইসিটি খাতে চাকরি নেই কথাটি বোধহয় ঠিক নয়৷

জরিপে আরো প্রকাশ পায়, অন্যান্য চাকরির থেকে প্রযুক্তির চাকরিতে বেতন বেড়ে যাওয়ার হার প্রায় ৮৬ শতাংশ৷ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অব লেবার আশা প্রকাশ করে যে, ২০১৬ সালের মধ্যে প্রায় সাড়ে আট লাখ আইটি চাকরি যুক্ত হবে৷ তাই আমাদের উচিত পেছনের দিকে না তাকিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া৷

দেশেবেসরকারি এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নির্ধারণ করার কেউ নেই
মো: ‍আনোয়ারুল কবীর
সহযোগী অধ্যাপক, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মানের যে বিশাল তারতম্যের ব্যবধান, তা কমিয়ে আনতে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে৷ দেশে বেসরকারি এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নির্ধারণ করার কেউ নেই৷ আমাদের দেশীয় কেউ বা কোনো সংস্থা পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিরূপণে এগিয়ে আসেনি৷ কিন্তু একটা মানদণ্ড থাকার খুব প্রয়োজন, যাতে করে ছাত্র-অভিভাবক সবাই জানতে পারেন যে দেশে উচ্চশিক্ষার কী অবস্থা৷ শুধু মান নির্ধারণ বা র্যা ঙ্কিং করলেই হবে না, তা স্বচ্ছ কি-না সেটিও ভেবে দেখতে হবে৷

২০০১ সালের পর থেকে বাংলাদেশে কমপিউটার বিজ্ঞানে ভার্সিটিগুলোতে ছাত্রসংখ্যা আনুপাতিক হারে কমেছে৷ ২০০৪-২০০৫ সালেও এই সংখ্যা গড়ে ১০-১২ জনে এসে দাঁড়িয়েছিল৷ বর্তমানে এই হারের উন্নতি ঘটছে৷ কিন্তু আইসিটি পেশাজীবীদের চাহিদার অনুপাতে বাড়ছে না৷ মোট চাহিদার মাত্র ৫০ শতাংশ পূরণ হচ্ছে৷ এর ফলে ২০১০ সালে বাংলাদেশ আইসিটি পেশাজীবী সঙ্কটে পড়বে৷ এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে এগিয়ে আসতে হবে৷

পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকেই ঢেলে সাজাতে হবে৷ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির শিক্ষা অল্প অল্প করে প্রাইমারি লেভেল থেকেই শুরু করতে হবে৷ মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এই শিক্ষা যুগোপযোগী করতে হবে৷


ফিডব্যাক : mortuza_ahmad@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - জুলাই সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস