• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির বেহাল অবস্থা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৭ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির বেহাল অবস্থা
বছরের পর বছর ধরে চলা দুর্নীতি, অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা কিছুই পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের তথা বিএসসিসিএলের। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে এমনটিই জানা যায়। আর এই দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা এমন চরম পর্যায়ে চলছে, যা দেশের যেকোনো নাগরিককে উদ্বিগ্ন করার মতো।
‘গভীর জলের দুর্নীতি ঠেকানো যাচ্ছে না’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ওই দৈনিকটি জানিয়েছে- কোনো কিছুই নিয়মের মধ্যে হচ্ছে না বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের। এমডি নিয়োগ, কর্মকর্তা নিয়োগ, ব্যান্ডউইডথ বিতরণ, নির্মাণ কাজের বিল পরিশোধ, বিদেশ ভ্রমণ- সব কিছুতেই অনিয়ম হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। এসব অনুসন্ধানে একাধিক তদন্ত কমিশনও হয়েছে। তদন্ত কমিশনগুলোর অগ্রগতি নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, কার্যত সেসব তদন্ত কমিশন অসফল হয়েছে। একটি তদন্ত কমিশনের সুপারিশ গত ১০ মাসেও বাস্তবায়ন হয়নি। বরং সুপারিশ অগ্রাহ্য করে আবারও অনিয়ম করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অন্য একটি তদন্ত কমিটি গত পাঁচ মাসেও কাজ শুরু করেনি। আইন অনুযায়ী পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো কাজ সম্পাদনের বিধান না থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনিয়মের মাধ্যমে কাজ সম্পাদনের পর পরিচালনা পরিষদের অনুমোদন নেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ বিদেশ ভ্রমণে জিও জালিয়াতির আলোচিত ঘটনায় প্রায় দেড় মাস আগে তুলে নেয়া বিল গত ৭ জানুয়ারির বোর্ডসভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের একটি বিধিবদ্ধ কোম্পানিতে এ ধরনের অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা কি করে চলতে পারে? কোম্পানিতে নিয়োজিত কর্মকর্তারা কি সব ধরনের জবাবদিহিতার আওতার বাইরে? আর এ ধরনের খোলাখুলি অনিয়ম করে বছরের পর বছর ধরে কি করে বহাল তবিয়তে থেকে চাকরি করে যাচ্ছে এরা? কিন্তু এরপরও পদাধিকার বলে কোম্পানির পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদে থাকা ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী দাবি করেন- ‘কোনো কিছুই নিয়মের বাইরে করা হয়নি। সবকিছুই বিধি ও নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।’ অপরদিকে বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও অনুমতি অনুযায়ীই কোম্পানির সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট দৈনিকটি আরও জানিয়েছে, কোম্পানিটির এমডি নিয়োগ নিয়েও রয়েছে অস্বচ্ছতা। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে বিটিটিবির অধীনে গঠিত সাবমেরিন ক্যাবল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান মনোয়ার হোসেন। ওয়ান ইলেভেন-পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গঠিত বিএসসিসিএলের এমডি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এরপর বারবার চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে একই পদে আজ পর্যন্ত বহাল আছেন। চতুর্থ দফায় তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের ৫ নভেম্বর। এ সময়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বিএসসিসিএলের জিএম মশিয়ুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেয়। এর আগে একই বছরের ২ জুন এ কোম্পানির এমডি নিয়োগের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহফুজুর রহমানকে আহবায়ক করে বাছাই কমিটি গঠিত হয়। গত ২৯ অক্টোবর বাছাই কমিটির আহবায়কের পরিবর্তে যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) ইসমত আরার সভাপতিত্বে বাছাই কমিটির একটি সভা হয়। এ সভায় এমডি পদে নিয়োগের জন্য চারজনের নাম চূড়ান্ত করা হয়। চূড়ান্ত এ তালিকায় মনোয়ার হোসেনের নাম ছিল না। কিন্তু বাছাই কমিটির রিপোর্টকে পাশ কাটিয়ে গত ১৪ নভেম্বর এমডি পদে মনোয়ার হোসেনের চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়। বিএসসিসিএলের আর্টিকল অব অ্যাসোসিয়েশনের ১০০তম বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এমডি নিয়োগে অবশ্যই পরিচালনা পরিষদের অনুমোদন থাকতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের আদেশ জারির এক দিন পর অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর নিজের স্বাক্ষরে একটি আদেশ জারি করে এমডি পদে আবার দায়িত্ব নেন তিনি। পরে ১৭ নভেম্বরের পরিচালনা পরিষদের সভায় এ নিয়োগ অনুমোদন করা হয়।
এ ছাড়া প্রতিবেদন মতে, তদন্ত কমিটির নানা সুপারিশ ঝুলে আছে, কোম্পানির নানা নিয়োগে আছে অনিয়ম এবং আছে জিও জালিয়াতির অভিযোগও। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানির কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কারণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় এ কোম্পানির রয়েছে বড় ধরনের ভূমিকা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে সমধিক সচেতন হতে হবে বৈকি!

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৭ - ফেব্রুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস