• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি উপকরণ বিতরণে চাই পারস্পরিক সমন্বয়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কজ
মোট লেখা:১০৪১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৭ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
মতামত
তথ্যসূত্র:
৩য় মত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি উপকরণ বিতরণে চাই পারস্পরিক সমন্বয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি উপকরণ বিতরণে চাই পারস্পরিক সমন্বয়
সরকার দেশের আইসিটি খাতের উন্নয়নের জন্য অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আইসিটি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। সরকার ২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আইসিটি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে। সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। কেননা, সরকার যথার্থ বুঝতে পেরেছে দেশের আইসিটি খাতের অবস্থার উন্নয়ন করতে হলে স্কুল-কলেজ পর্যায় থেকেই শুরু করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে বলা যায়। কেননা, যথাযথ আইসিটি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল ছাড়া কোনোভাবেই এ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হাসিল করা সম্ভব নয়।
সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে প্রায় ২৬ হাজার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় আধুনিক শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও আইসিটি ল্যাব স্থাপন করেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এর বেশিরভাগই ব্যবহার হচ্ছে না। শিক্ষায় আইসিটির বিকাশ শুধু উপকরণ বিতরণেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। নেই বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক ও প্রশিক্ষণ। শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে না। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা উপকরণ অকেজো হয়ে পড়েছে। তবে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে আইসিটি শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এলোপাতাড়ি শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করছে, তা কার্যত ছাত্রছাত্রীদের কোনো উপকারে আসছে না। ফলে তা জাতীয় অপচয়ে পরিণত হচ্ছে।
বিস্ময়কর হলেও সত্য, সরকার ২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আইসিটি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে। কিন্তু এরপর চার বছরেরও বেশি সময় পার হলেও আইসিটি বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেই। আর এ কারণে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে দেয়া শত শত কোটি টাকার শিক্ষা উপকরণ এখন ‘শোপিস’ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শোভা পাচ্ছে। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বা খ-কালীন কমপিউটার অপারেটর দিয়ে আইসিটি বিষয়ে পাঠদান চলছে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষকদের আইসিটি বিষয়ে স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ দেয়া হলেও তারা নবম ও দশম শ্রেণীর আইসিটি বিষয় পড়াতে পারছেন না।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত আইসিটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের আলোকে ২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে, ২০১১ সালে সপ্তম শ্রেণীতে ও ২০১৪ সাল থেকে অষ্টম শ্রেণীতে, ২০১৫ সালে নবম শ্রেণীতে এবং ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীতে আইসিটি বিষয় বাধ্যতামূলক করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিকল্পনা শাখার একাধিক কর্মকর্তা জানান- চাহিদা, প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতা বিবেচনায় না নিয়ে এলোমেলোভাবে আইসিটি শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। এতে সব প্রতিষ্ঠানে এসব সুবিধা দেয়া না হলেও বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠানে তিনটি করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। সারাদেশে দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানে পৃথকভাবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও আইসিটি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে শিক্ষার মান উন্নয়নের দুই প্রকল্প ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের মাধ্যমে। কিন্তু এই শিক্ষা উপকরণ বিতরণে এসব প্রকল্পের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। আবার বিতরণ করা উপকরণের যথাযথ ব্যবহারও নিশ্চিত করা হচ্ছে না। এমনও দেখা গেছে, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে দুই-তিনবার করে আইসিটি ল্যাব স্থাপন করা হলেও অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে গেছে এর বাইরে।
সরকার প্রায় পাঁচ বছর আগে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় আইসিটি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। অথচ এ বিষয়ের শিক্ষা এখনও চলছে জোড়াতালি দিয়ে। কার্যত আইসিটি শিক্ষার বিকাশে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই। এরপরও নতুন নতুন প্রকল্প চালুর মাধ্যমে এভাবে এলোপাতাড়ি শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এখনও চলমান। অভিযোগ উঠেছে, এতে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। স্বার্থান্বেষী এসব কর্মকর্তার অবহেলার কারণে শিক্ষার মৌলিক ও গুণগত উন্নয়ন হচ্ছে না। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের সূত্র মতে, ২৬ হাজার ৮১টি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫ হাজার প্রতিষ্ঠানেই আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক নেই।
আসলে দেশে সার্বিকভাবে আইসিটি শিক্ষার একটা বেহাল অবস্থা বিদ্যমান। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানোর জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার। নইলে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তৈয়বুর রহমান
দুমকী, পটুয়াখালী

জেলা পর্যায়ে নতুন ১২ আইটি পার্কের কাজ দ্রুত শুরু হোক
সরকার এখন আইসিটি খাতকে এক অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনা করছে এবং এ খাতের উন্নয়নে যথেষ্ট কাজ করে যাচ্ছে। সরকার আইসিটি খাতের উন্নয়নে প্রচুর কাজ করছে ঠিকই, কিন্তু সে কাজগুলো যে সমন্বিত উদ্যোগে হচ্ছে তা বলা যাবে না কোনোভাবেই।
সম্প্রতি জেলা পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও তরুণদের সম্পৃক্ততা আরও বাড়াতে ‘জেলা পর্যায়ে আইটি পার্ক বা হাইটেক পার্ক স্থাপন’ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। নিঃসন্দেহে বলা যায়, এতে ঢাকার বাইরে জেলা পর্যয়ের তরুণ প্রজন্মের আইসিটিতে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ বাড়বে, যা প্রকারান্তে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
প্রকল্পের আওতায় খুলনা, বরিশাল, রংপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নাটোর, গোপালগঞ্জ, ঢাকা ও সিলেট জেলায় ১২টি আইটি পার্ক বা হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হবে। ১ হাজার ৭৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে ভারতের দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিট থেকে ১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা ও সরকারি তহবিল থেকে ২৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা জোগান দেয়া হবে। চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের কোনো প্রকল্পই সময় মতো শেষ হতে দেখা যায় না। আমরা আশা করব, অন্তত এ প্রকল্পের কাজ অর্থাৎ জেলা পর্যায়ে আইটি পার্ক বা হাইটেক পার্ক স্থাপনের কাজ সময় মতো শেষ হয়ে অতীতের সব দুর্নাম দূর করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
মো: আসলাম
লালবাগ, ঢাকা


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৭ - জুন সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস