• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > টেলিটকের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৭ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
টেলিটকের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন
টেলিটকের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন
টেলিটক। বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি মোবাইল ফোন সেবা কোম্পানি। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি জনগণের কাছে সস্তায় উন্নততর সেবা পেঁŠছাতে পারবে, শুরুতে এমন প্রত্যাশাই ছিল টেলিটকের কাছে। ফলে টেলিটকের সিম কেনায় দেখা গিয়েছিল অভাবনীয় আগ্রহ। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল টেলিটকের গ্রাহকসেবার মান সমেত্মাষজনক নয়। নেটওয়ার্ক মাঝেমধ্যেই খুব খারাপ অবস্থায় থাকে। ফলে এখন টেলিটক সিম গ্রহীতারা অন্য অপারেটিং সিস্টেমের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। টেলিটক গ্রাহকদের মধ্যে পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গ্রাহকেরা জানিয়েছেন- টেলিটকের সেবার মান ভালো নয়। রাত ১২টার পর টেলিটকের নেটওয়ার্ক কাভারেজ কমে যায়। তাদের অভিযোগ, কাস্টমার সেন্টারের সংখ্যা কম এবং লোড দোকান পাওয়া যায় না। সব জায়গায় থ্রিজি নেটওয়ার্ক কাভারেজ নেই। শহরের ভেতরে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়, কিন্তু শহরের বাইরে থ্রিজির কোনো কাভারেজ নেই। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সম্প্রতি ‘টেলিটকের থ্রিজি প্রযুক্তি চালুকরণ ও ২.৫ জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ’ নামের প্রকল্পের একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত সব ঠিকাদার যথাযথভাবে প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেনি এবং সেবা প্রদানে তাদের অবহেলা রয়েছে। জাতীয় মোবাইল অপারেটর হিসেবে টেলিটকের সেবার মান আরও ভালো হওয়া উচিত ছিল। তবে টেলিটকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, সেবার মান বাড়ানোর বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ঢাকার বাইরে থ্রিজি কাভারেজ বাড়ানোর কাজ চলছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে টেলিটকের বিভিন্ন অফার নিয়ে আসা হবে। দ্রম্নত এসব বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য সরেজমিনে ২৭টি স্থানে, ৩২টি উপজেলার ৭২০ জন টেলিটক ব্যবহারকারীর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। টেলিটক চালু হওয়ার পর এর সুফল এবং দুর্বলতাগুলো প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সাথে এগুলো সমাধানকল্পে কিছু সুপারিশও করা হয়েছে।
জরিপ রিপোর্টের ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে- গড়ে প্রায় ৯৬ শতাংশ টেলিটক সিম গ্রহীতা সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তবে এর ব্যবহারকারীর মতে, টেলিটক মোবাইলের কাভারেজ অন্যান্য মোবাইলের কাভারেজের তুলনায় অনেক কম।
প্রতিদিন তিনজন গ্রাহকের মধ্যে একজনের অভিমত, সমস্যায় পড়লে মোবাইল সংযোগ কোম্পানি দ্রম্নত সেবা সরবরাহ করে। অন্যান্য মোবাইল অপারেটরদের এ হার টেলিটকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। অর্থাৎ দ্রম্নত সেবা সরবরাহের ক্ষেত্রে টেলিটক অন্য অপারেটরদের তুলনায় পিছিয়ে আছে। শহরের বাইরে নেট স্পিড ভালো নয়। টাওয়ারের সংখ্যা কম। নেট প্যাকেজ সুবিধাও কম। সংশ্লিষ্টরা জানান, কম বাজেট বরাদ্দ থাকায় প্রকল্পের আওতায় থ্রিজি নেটওয়ার্ক স্বল্প পরিসরে বিভাগীয় ও জেলা শহরে দেয়া হয়েছে, যা গ্রাহক চাহিদার তুলনায় কম।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- থ্রিজি প্রযুক্তি চালু ও ২.৫জি প্রযুক্তি বাস্তবায়নে নেটওয়ার্ক কাভারেজ সম্প্রসারিত হয়েছে। তথ্য বিনিময় ও সরকারি কাজে গতিশীলতা ব্যাপক বেড়েছে। ফলে মোবাইলে কলড্রপের সংখ্যাও কমেছে। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিনিয়োগ স্বল্পতার কারণে চাহিদা অনুসারে বেস স্টেশনে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন কম রেটে কথা বলার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। টেলিটক সাধারণ মানুষের কাছে ‘আমাদের ফোন’ হিসেবে পরিচিত। সাশ্রয় ও প্রতিযোগিতামূলক দামে মোবাইল সেবা দেয়ার জন্য শুরুতে টেলিটক ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। তবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টেলিটককে টিকে থাকতে হলে এর সেবার মান আরও বাড়াতে হবে।
টেলিটক আমাদের একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানে। এর সেবার মানের ওপর জাতীয় ভাবমর্যাদার একটি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে অন্যান্য অপারেটরদের তুলনায় টেলিটকের সেবার মান পিছিয়ে থেকে সে ভাবমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সম্প্রতি পরিচালিত জরিপ প্রতিবেদনে উঠে আসা এর সরলতা ও দুর্বলতা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এর সেবার মান বাড়ানোর ব্যাপারে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে। যেকোনো মূল্যে টেলিটককে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল কোন অপারেটর করে তুলতে হবে।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৭ - আগস্ট সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস