• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সরকারের তৈরি অকেজো ৫০০ অ্যাপ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৭ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সরকারের তৈরি অকেজো ৫০০ অ্যাপ
সরকারের তৈরি অকেজো ৫০০ অ্যাপ
সরকারের টাকা আমরা এমন অনেক জায়গায় খরচ করি, যা আসলে আমাদের কোনো কাজে আসে না কিংবা তা সাধারণ মানুষের স্বার্থের অনুকূলে যায় না। সেখানে শুধু টাকা ঢালার উৎসবটাই চলে। ফলে সম্পদের অভাবের মধ্য দিয়ে চলা আমাদের এই দেশটির ওপর অহেতুক আর্থিক চাপ বাড়ে, যা হওয়ার কথা ছিল না। এর জন্য সবার আগে যে কারণটা আসে, তা হলো সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব। পরিকল্পনা গ্রহণ করার সময় এর জন্য প্রয়োজনীয় সম্ভাব্যতা যাচাই না করা কিংবা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব। এরপরও আছে নানা কারণ। এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের সময় থাকতে পারে কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের হাত।
সম্প্রতি জানা গেছে, সরকারের উদ্যোগে তৈরি ৫০০ অ্যাপ সাধারণ মানুষের কোনো কাজে আসছে না। এটি এ ধরনেরই একটি উদাহরণ। এই অ্যাপগুলো কাজে না আসার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, এসব অ্যাপ গুগলের অ্যাপ স্টোরে নেই। আইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকলেও স্মার্টফোনে এগুলো ডাউনলোড করে ব্যবহার করা খুবই জটিল। তা ছাড়া এসব অ্যাপ ব্যবহারে সাধারণ মানুষকে আগ্রহী করে তোলার ব্যাপারে কোনো ধরনের প্রচার নেই।
জানা গেছে, দুই বছর আগে ২০১৫ সালে অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে সরকারের আইসিটি বিভাগ সাড়ে ৯ কোটি টাকা খরচ করে ৫০০ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে। সে সময় আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এসব অ্যাপ বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব আনবে। কিন্তু কার্যত সে বিপ্লবটি আর ঘটেনি। আরও বলা হয়েছিল, স্মার্টফোনে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য বাংলা ভাষায় তথ্যভা-ার তৈরি হবে। যেখানে অ্যাপগুলো কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছে, সেহেতু বাংলাভাষায় সেই তথ্যভা-ার কতটুকু গড়ে উঠল বা উঠল না, সে প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রশ্ন অবান্তর।
গত ২৪ জুলাই অ্যাপগুলো কাজে আসা না আসার ব্যাপারে ডাক ও আইসিটি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ডাক ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তারানা হালিমও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বৈঠকের কার্যবিবরণীর বরাত দিয়ে একটি জাতীয় দৈনিক জানায়, তারানা হালিম বলেছেন অনেক অ্যাপ আছে, যেগুলো ব্যবহার করা যায় না। ডাউনলোড করতে গেলে তিনটি অ্যাপ ছাড়া বাকিগুলো ভালো কাজ করে না। এত টাকা খরচ করে যেসব অ্যাপ বানানো হয়েছে, সেগুলো কেনো কাজ করে না, তা বিস্তারিত জানা দরকার। এদিকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর আইসিটি সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী এই পত্রিকা প্রতিনিধির কাছে বলেছেন, ‘যতদূর জানি, ৫০০ অ্যাপের প্রতিটিই কাজ করে। সেটুকু নিশ্চিত হয়েই এগুলো গুগল প্লে-স্টোরে রাখা হয়েছিল। অ্যাপগুলো কেনো এখন আর সেখানে নেই বা কোন অ্যাপটি কাজ করে না, এ বিষয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ভালো বলতে পারবেন।’ এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট এবং লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের উপ-প্রকল্প পরিচালক সবির উদ্দিনের ভাষ্যমতে, প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি ও দক্ষ অ্যাপ তৈরির লক্ষে্য এসব অ্যাপ তৈরি করা হয়েছিল। এ জন্য বাংলাদেশ সরকার গত মে মাসে যুক্তরাজ্য থেকে ‘গ্লোবাল মোবাইল গভ. অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে। অ্যাপগুলোর আরও উন্নয়নের জন্য এগুলো অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রকল্প চালুর এক বছর পর ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই এই ৫০০ অ্যাপ উদ্বোধনের সময় বলা হয়েছিল, অ্যাপগুলো আইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে ও গুগল প্লে-স্টোরে রাখা হবে। সেখান থেকে তা বিনামূল্যে ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে। ২০১৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৯ মাস অ্যাপগুলো গুগল প্লে-স্টোরে ছিল বলে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে। এরপর সেখান থেকে অ্যাপগুলো সরিয়ে ফেলে গুগল। এখন শুধু আইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে অ্যাপগুলো রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবহার নীতিমালা পরিবর্তনের কারণে গুগল প্লে-স্টোর থেকে এসব অ্যাপ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এগুলো আবার প্লে-স্টোরে রাখতে হলে বাংলাদেশ সরকার ও গুগলের মধ্যে সমঝোতা দরকার। বাইরের ওয়েবসাইটে থাকা অ্যাপ অ্যান্ড্রয়িড স্মার্টফোনে চালানো হলে এর নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে না গুগল। আর সাধারণ মানুষ মূলত গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করে। এ কারণে এসব অ্যাপের ব্যবহার জটিল, সাধারণ মানুষের তা কাজে আসার কথা নয়।
প্রশ্ন হচ্ছে, সাধারণ মানুষের কথা মনে রেখেই কোটি কোটি টাকা খরচ করে এসব অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। অতএব এ ব্যাপারে বিদ্যমান বাধা অপসারণে একটি উপায় খুঁজে বের করতেই হবে।


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৭ - অক্টোবর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস