• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > প্যারাগন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৮ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেম
তথ্যসূত্র:
খেলা প্রকল্প
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
প্যারাগন
প্যারাগন

ভয়ঙ্কর যোদ্ধা, পৌরাণিক জাদুকর, বামন, দেবতাঘেরা যুদ্ধক্ষেত্র প্যারাগন। এপিক গেম স্টুডিও থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ গেম প্যারাগন বিশ্বজুড়ে গেমারদের আমন্ত্রণ জানায় নারের সেই রহস্যঘেরা জাদুময় দুনিয়াতে যেখানে প্রত্যেকের অস্তিত্ব নির্ভর করে তাদের ‘স্কিলস’ ব্যবহার করার দক্ষতা আর জাদুশক্তির ওপর। প্যারাগনকে অন্য যেকোনো মোবা গেম থেকে খুব সহজেই আলাদা করা যায়, কারণ এতে রয়েছে অবাধ চলাচলের স্বাধীনতা আর অনন্যসাধারণ কী কনফিগারেশন।সম্পূর্ণ ফ্রি মোড গেম হওয়া সত্তে¡ও গেমারের যেকোনো সিদ্ধান্ত গেমের ঘটনাপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত কওে না। অস্ত্র এবং বিভিন্ন প্রকরণের জাদুর কার্ডস ক্রাফটিং সুবিধা গেমারকে দেয় সর্বোচ্চ ক্রাফটিংয়ের সুবিধা দেয়, যা নেভাউইনটারনাইটস বা ওয়ারিওরস অব অরচিরমত গেমগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে। গেমটির শুরুতে বিভিন্ন শ্রেণী, চ্যাম্পিয়ন, পাওয়ার ট্রেন্ডের মাঝ থেকে নিজস্ব চরিত্র নির্ধারণ করে নিতে হয়। এতে রয়েছে ইচ্ছেমতো ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ এবং চলাচলের সুবিধা। গেমার সম্পূর্ণ ম্যাপে ইচ্ছেমতো বিচরণ করতে পারবেন শুধু একটি শর্তে বেঁচে থাকতে হবে। গেমারের ইচ্ছের প্রতি সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়া হয়েছে। গেমার সম্পূর্ণ ম্যাপে যেখানে খুশি সেখানে যা ইচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ এবং নিরীক্ষণ করতে পারবে। আর সবচেয়ে ভালোলাগার মতো ব্যাপারটি হচ্ছে প্যারাগন সম্পূর্ণভাবে লোডিংয়ের ঝামেলা থেকে মুক্ত। এ ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে এপিক গেম স্টুডিওর গেম প্রণেতারা বলেন, তারা চেষ্টা করেছেন যাতে গেমারের সময়ের অহেতুক অপচয় না ঘটে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য গেম ডেভেলপাররা প্রথমত বিশাল ম্যাপ তৈরি করেছেন, যাতে রয়েছে অন্ধকার মিনিয়ন থেকে শুরু কওে বিশাল অর্ক, আরো অনেক কিছু। এই বিশাল ম্যাপিংয়ের সুবিধা হলো গেমার যখন একদিক দিয়ে গেম খেলতে ব্যস্ত থাকবেন তখন ব্যাকস্ক্রিনে গেমের অন্য উপাদানগুলো লোড হতে থাকবে। ফলে নতুন করে কোনো লোডিং স্ক্রিনের ঝামেলা নেই। এর বৈচিত্র্যময় ক্রাফটিং সুবিধা গেমারকে মগ্ন রাখবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আর যারা একটু কল্পনার জগতে ঘুওে বেড়াতে পছন্দ করেন তাদেও কল্পনার প্রধান উপজীব্যও হয়ে বসতে পারলে জেন্ড অফ ডন। ছবির মতো অসাধারণ সুন্দর প্রাকৃতিক চিত্রকলা গেমারকে মুগ্ধ করে রাখবে। নারের সমগ্র এলাকা জুড়ে রয়েছে অদ্ভুত জাদুময় রাজ্য, যেখানে পর্বতমালা মহাকর্ষেও নিয়ম মেনে চলে না। এখানে আছে ভয়ঙ্কর জঙ্গল, অসংখ্য কারা গুহা, ক্যাম্প, বন্দও এবং ধ্বংসস্তূপ, যেগুলো পুরনো যুদ্ধের ক্ষত বহন করে আজো টিকে আছে। হ্রদ, বিশাল পর্বতমালা, ছোট ছোট পাহাড় যেকোনো অভিযাত্রীর হৃদয় হরণ করবে। উড়ন্ত দ্বীপ আর জাদুময় জলাভূমি মাঝেমধ্যেই গেমারকে স্তব্ধ করে দিতে পারে। এছাড়া রয়েছে পুরনো মন্দির, প্রার্থনাস্থল যেগুলো হিরণময় করে তৈরি করা হয়েছে দেবতাদের সন্তুষ্ট করার জন্য। শুধু এখানে যা নিয়ে বলা হয়েছে তা-ই নয়, বরং আরো বহু ফিচার নিয়ে এপিক গেম স্টুডিও সাজিয়েছে গেমটিকে। তাই প্যারাগনের দশকসেরা মোবা গেম না হয়ে ওঠার পেছনেও কোনো কারণ নেই। চিরায়ত গেমের ঘটনাপ্রবাহের সাথে যখন অত্যাধুনিক গ্রাফিক্স এবং মনোরম গেমিং পরিবেশ ও শব্দশৈলী একাকার হয়ে যায়, তখন গেম ছেড়ে উঠে পড়া সত্যিই অসম্ভব হয়ে ওঠে।

গেম রিকোয়ারমেন্ট

উইন্ডোজ : ৭/৮/১০, সিপিইউ : ইন্টেল কোর সিরিজ, র‌্যাম : ৮ গিগাবাইট। ভিডিও কার্ড : ২ গিগাবাইট। সাউন্ড কার্ড, কিবোর্ড ও মাউস।

একো

মাস্টার এআই প্রোগ্রামিংয়ের সবচেয়ে সুন্দর ‘স্টেট অব দ্য আর্ট’ গেম ‘একো’ বিশ্বব্যাপী শুধু সমাদৃতই হয়নি, মুগ্ধতায় আপন করে নিয়েছে সব গেমারের হৃদয়। একোর সবচেয়ে অদ্ভুত সুন্দর দিক হলো, এটি সত্য করে দিতে পারে যেকোনো কল্পনাকে। অদ্ভুতুড়ে কোনো কিছুর মাত্রাও ঠিক করা নেই এখানে। যেমন-তেমন কোনো একটা পাজল নিয়ে নিজের পরিচিত বাস্তবতার মতো করে নিয়ে সমাধান করতে গিয়ে যেকোনো গেমারের নিজের ক্ষমতার ওপরই মুগ্ধতা এসে পড়বে। ফ্রিজের ওপরে রাখা চিরকুট থেকে ফেলে দেয়া পেপারব্যাক বই, সালাদের ওপরের ড্রেসিং থেকে পানির বোতল সবকিছুতেই নজর রাখতে হবে গেমারের, ‘চোখ ফসকালে চলবে না’। ফুল ব্রাইট কোম্পানির প্রথম প্রচেষ্টার ফসল এই গেম নাড়িয়ে দিয়েছে পুরো গেমিং মার্কেটকে। তৈরি করেছে নতুন ভিত। ফার্স্ট পারসন এক্সপ্লোরেশন জনরার গেমটিতে নিখুঁতভাবে উঠে এসেছে প্রতিটি মানুষের জীবনচিত্র, যা হয়তো গেমার নিজের জীবনের সাথে মিলিয়ে ফেলে হঠাৎ বেশ অবাক হয়ে যাবেন। আছে নানা রকম বই, ইচ্ছেমতো খাবার, যা ইচ্ছে করার স্বাধীনতা। সবকিছু মিলিয়ে গেমটি ছাড়িয়ে গেছে বায়োশক আর দিস ইজ আসকেও। বাস্তবতা-কল্পনা, ধাঁধা, সেগুলোর সমাধান সব মিলিয়ে কোথায় কি গিয়ে ঠেকছে হয়তো নিজেই ঠাওর করতে পারবেন না গেমার। সারাক্ষণ নিভে যেতে থাকা বাতি, বাইরে বাড়তে থাকা ঝড়-বিজলী, ভয়ঙ্কর ব্যাকগ্রাউন্ড থিম সব মিলিয়ে ভূতের বাড়ি মনে হলেও একো মোটেও হরর গেম নয়। এটি ইন্টেলেকচুয়াল স্টেলথ গেমিং জনরার একটি অনন্য সংযোজন।

‘দিস ইজ দ্য মোস্ট পাওয়ারফুল পিস অব স্টোরি টেলিং আই হ্যাভ এভার সিন’ এ রকমই ছিল প্রায় সব গেমারের অভিব্যক্তি। বাংলাদেশি গেমারদের ক্ষেত্রে যে এমনটাই হবে না সেটা মনে হওয়ার কোনো কারণ নেই। সবচেয়ে সুন্দর ভয়েস ওয়ার্ক বাস্তবতার প্রচন্ড কাছাকাছি। গেমে কী হচ্ছে না হচ্ছে, সেসব এখানেই সব বলে ফেলার ইচ্ছে নেই। কারণ প্রতিটি ইমোশনাল মার্ক আপ গেমের সবটা গড়ে তুলেছে অন্য সব গেম থেকে পুরো ভিন্নভাবে। গেমটির সম্পূর্ণ গেমিং আর্কিটেকচার সবকিছুকে এমন চমৎকারভাবে মোহনীয় করে তুলেছে, মনে হবে প্রতিটি জিনিস কাছে নিয়ে আরও নিখুঁতভাবে নিরীক্ষা করতে। সমস্যা হতে পারে যখন অনেক তথ্য সুন্দর করে মেমরিতে গুছিয়ে রাখার জন্য গেমার পিসি-কিবোর্ডের পাশাপাশি খাতা-কলম নিয়েও বসবেন।

সব মিলিয়ে একোতে খুঁত খুঁজে পাবেন না বললেই চলে। গেমিং হিস্ট্রিতে এ রকম সফল ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ, অ্যাম্বিয়েন্ট স্টোরিলাইন বেশ কম। স্টোরিতে থাকতে থাকতে হয়তো গেমারের নিজের বাড়ি ফিরতে নাও ইচ্ছে করতে পারে। একো এমন এক ঘটনা দেখাবে, যা মনে থাকবে সারা জীবন। সুতরাং গেমারদের উচিত আর এক মুহূর্ত দেরি না করে একো রহস্য উদ্ধারে লেগে পড়া।

গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : ৭/৮/১০, সিপিইউ : ইন্টেল কোর সিরিজ, র‌্যাম : ৪ গিগাবাইট, ভিডিও কার্ড : জি ফোর্স ৬০০০ সিরিজ জিটিএস/রাডেওন (সমতুল্য), হার্ডডিস্ক : ৬ গিগাবাইট।
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৮ - মার্চ সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস